Sunday, 29 December 2013

বই বিলাস



আজকের পাঠক ও বই বিলাস

আমার বইয়ের গন্ধটা শুঁকতে ভারি ভাল লাগে, আনকোরা নতুন বইয়ে কত রকমের আলাদা আলাদা গন্ধ।শুকে দেখবেন কখনো, আঠার গন্ধ, কাগজের গন্ধ, ছাপার কালির গন্ধ, কাঠ মলাটের গন্ধ, মলাটের রঙিন রঙের গন্ধ, বইপোকা তারানোর কীটনাশকের গন্ধ সহ আরো কত্তো রকমের নিজশ্ব গন্ধে ভরপুর। পুরাতন হলেও কত মানুষের হাতের স্পর্শের গন্ধ। বড় পাগল করা সেই গন্ধ। যে বই শতছিন্ন, মানে সে বই বহু পাঠকের মগজে মননে স্থান পেয়েছে, সুতরাং সেই বইয়ের গন্ধ আমি প্রানপনে নিই, যে কোন সুগন্ধি ফুলের গন্ধের থেকে এমন বইয়ের গন্ধ আমার কাছে ভীষণ মন্ত্রমুগ্ধকর। এরপর যদি ওই বইয়ের লেখা যদি মনে ধরে গেল, তখন সব গন্ধ ছাপিয়ে সাহিত্যের গন্ধেই অনেকবার ওই বই বারবার খুলতে ইচ্ছা করে, হৃদয়ের কৌটোতে ভরে রেখেদিই চিরদিনের তরে।

আজকাল বই উপহার দেবার চল অনেকটাই কমেগেছে। ছোটবেলায় জন্মদিন, কুইজ প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন ছুতোতে বইই উপহার দেওয়া হত। এখন অবশ্য মেকি উচ্চসামাজিকতা আর বিপণন সর্বস্ব যুগের প্রভাবে ক্যাডবেরি, সফট টয়, কিন্ডারজয়ের যুগ। এতেকরে শিশুদের তাৎক্ষনিক আনন্দ প্রদান করা যায় ঠিকিই, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি জ্ঞানমূলক কোন ভাল হয় কি? সুঅভ্যাসের জন্য শিশুকালের থেকে বড় ভাল সময় আর কিইবা আছে। আমাদের গুরুজনেরা আমাদের শিশুকালে রামায়ন মহাভারত, জাতকের গল্প, ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমী, নন্টেফন্টে, মহাপুরুষদের জীবনি সহ কত্তো দারুন দারুন বই উপহার দিতেন। কিন্তু আমরা কি আমাদের আগামী প্রজন্মকে সেরকম কিছু দিয়েছি? আসলে আমাদের অধিকাংশের নিজেদেরই তো পড়ার অভ্যাস নেই, তাহলে শিশুদের কিভাবে উৎসাহিত করব? ওরা কেন পড়াশোনাটাকে একটা দুর্বোধ্য কিছু ভাবনে না? কারন পাঠ্যপুস্তক তো সমস্ত পৃথিবিতেই প্রায় রসকষহীন। সেই পাঠ্যপুস্তকের বাইরে তাদের জন্য লোভনীয় পড়ার বই তো আমাদেরই যোগান দিতে হবে তাদের। আমাদের না পড়ার রোগটাই আগামী প্রজন্মের কাছে কিন্তু মহামারি রূপে ফেরত আসবে।

ছোট বেলায় মা ঠাকুমারা বলতেন আজ সিনেমা হলে অমুক বই এসেছে, টিভিতে তমুক বই দেবে ইত্যাদি। মানে তখন সিনেমাতেও একটা একটা বই থাকত, গল্প থাকত, মৌলিকতা থাকত। আর সেগুলো সেই দর্শক মনের স্মৃতিকোঠায় আজীবন রয়ে যেত। সিনেমা নাটক যাত্রা অবশ্যই আজকের ভাষায় এন্টারটেনমেন্ট, কিন্তু সেটা অবশ্যই একটা কাহিনী নির্ভর হওয়া উচিৎ। আজকের প্রজন্ম আর সিনেমাকে বই বলে না, মুভি বলে। ঠিকিই তো একটা নতুন মুভি এলেই পুরাতনটা মন থেকে মুভ হয়ে মানে সরে যায়, তারপর মুছে যায়। প্রতিটি বইয়ের ভিতরে তো একটা করে কাহিনী থাকে, আজকালকার প্রায় সব সিনেমায় ওই কাহিনী টা ছাড়া সবকিছু থাকে, তাই ওটার আর বই হওয়া হয়না। সিনেমাকে বই বানাতে হলে শুধু শিক্ষিত হলে হবেনা, পাঠক হতে হবে, পড়তে হবে, প্রচুর প্রচুর পড়তে হবে। তবে না মনের ভিতর একটা গোটা লাইব্রেরি তৈরি হবে। আর তারপরে সেই এক মস্তিষ্ক লাইব্রেরি সমৃদ্ধ পরিচালক সিনেমা বানাবেন, তখন শুধু সেটা এন্টারটেনমেন্ট না হয়ে আবার একটা বই হবে।

আমাদের কিশোর বেলাতেও উৎসবের মরসুমগুলোতে একটা উন্মাদনা থাকত। পত্রিকার উন্মাদনা। কত লিটিলম্যাগ ছাপা হত পাড়ায় পাড়ায়। তাতে বড়রা কবিতা প্রবন্ধ ছাপাতেন, তাদের ভিতরেও একটা উন্মাদনা থাকত। একটু বড় আকারের পত্রিকা গুলোতে নামী লেখকদের পাশাপাশি কত অনামি লেখকদের লেখা পাঠক হৃদয় হরন করত। আজকাল সে সবই সুখস্মৃতি। কার্টুন নেটওয়ার্ক, এংরিবার্ড বা ক্যান্ডিক্রাশ, বা আরেকটু সাহসি দের কাছে অবাধ সহজলভ্য পর্ণের পাঁকে আটকা পরা আজকের কৈশর কি জানে, যে লিটিলম্যাগ কি? পূজো সংখ্যা পত্রিকা কি? সুতরাং ছাপানো পত্র পত্রিকার সংখ্যা স্বভাবতই খুব কমে গেছে, মুষ্টিমেয় কর্ম পাগল মানুষ সেই সভ্যতাকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আগামীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। অনেকাংশেই নিজের পকেটের পয়সা ধ্বংসে।  যারা হয়ত সারাজীবনে নিজের জমাখরচের খাতা ছাড়া, কোনদিনিই কোথায় এক কলমও লিখতেননা, বা সুযোগও পেতেননা, এই বর্তমান বৈদ্যুতিন সভ্যতার বিকাশের ফলে তাদের সামনে সেই জগৎ টা খুলে দিয়েছে। আজকের দিনে ভাললেখার পাঠক খুবই কম। কারন বেশিরভাগ জনই দুলাইনের চুটকি বা মস্করার ঝোঁক বেশি, অথবা বাকিরা লেখক। তারা অন্যের লেখা পড়েনও না, মন্তব্য করা তো দুরস্থান। তাহলে পাঠক কই?

আজকের যুগে যদি কেও ভাবেন লেখালেখিকে পেশা করবেন তাহলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। আরে বাবা সবাই কি আর জেকে রাউলিং বা চেতন ভকত হতে পারেন! নিদেনপক্ষে একটা শ্রীজাত! সেটাও সম্ভব নয় যে লেখার জন্য চাকুরি বা পেশা ছেরে দেবেন। আগেকার দিনে বই বিক্রির একটা অংশ লেখকেরা পেতেন, ভাল লেখকের বই বিক্রি বেশি, সুতরাং দিন চলে যেত। আজকাল তো বইই কেনেননা কেও তাহলে প্রকাশক লেখককে টাকা দেবে কি করে ? সুতরাং অন্য পেশা না থাকলে লেখক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া অসম্ভব।পেটচালানোর জন্য নিদেনপক্ষে রেলস্টেশনে মাদুলিও বিক্রি করতে হতে পারে।আর বাকি সকল পেশাই তো আগামীর চেষ্টার জন্য পরে রইল। তবে ওই মাদুলি বিক্রির পরে কবি বা সাহাত্যিক মন কতটা অবশিষ্ট থাকবে সেটা বলাই বাহুল্য। তবে তার পরেও অনেকেই সাফল্য লাভ করেন, তাই তো তাঁরা বুদ্ধিজীবি হিসাবে গন্য হন। ,

সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি যখন বইয়ের ছবি আপলোড দেবেন। দেখবেন কত পাঠক, কত বন্ধু বলবে আমারও আছে, কেও  বলবে-- ইশ, আমার যদি থাকতো। অনেক বুক রিডার গ্রুপে দেখি, লাইব্রেরীর ছবি দিলেই লোকজন আহ-উহ করে বলে উঠে, আহা আমি যদি যেতে পারতাম তোমাদের ওই খানে। কিন্তু যায় কজন মানুষ? আর পড়েই বা কই? সামান্য ফেসবুকেই একটা সামান্য লম্বা পোষ্ট হলে সেটাকে দায়িত্ব নিয়ে সবার আগে এড়িয়ে গিয়ে অন্যস্থানে আড্ডা বা চুটুল জোকস খোঁজে। লেখক যদি পড়াবার জন্য ট্যাগ জোড়েন এবং সেই ভুলক্রমে ওই  যদিপোষ্টে লাইক পরে গেল, তাহলে পরে পড়তে হবার ভয়ে নোটিফিকেসন অফ করে দেয় সেই পোষ্টের। ইনারা আসলে পাঠক নামের জোচ্চোর। চায়ের দোকান হাটে মাঠে ঘাটে অনেকের সাথেই তো আমাদের সামাজিকতা করতে হয় রোজ, হাতে বই দেখলেই প্রশ্ন। 'এখনো এই সব পড়িস? আর পড়ে কি হবে? ব্যাবসা ভাল চলছেনা নাকি? বাড়িতে ঝগড়া? তীক্ষ্ণ আর চটুল সব প্রশ্নবানে জর্জরিত। ভাবখানা এমন যে,  জেনে জেনে জানোয়ার হবার মানে কি?' আরে সত্যজিৎ রায় তো হীরক রাজার দেশেতে বলেই দিয়েছেন মর্মকথা, জানার কোনো শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই। পড়াশোনা করে যে, অনাহারে মরে সে। 


সিনেমাতে তো পলাতক শিক্ষকও ছিল তার কথা কেউ মনে রাখে নি। মনে রেখেছে একজন একনায়ক রাজার কথা। আর সেই রাজার অন্তিম পরিনতির কথাও বেমালুম ভুলে মেরেছে।আর সেই শিক্ষকের জয়ের কথাটাও।তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায়, ভাবের ঘড়ে চুরি কেন?  আমার বন্ধুদের মধ্যে আরেকটা বহুল প্রচলিত বুলি, আগে খুব পড়তাম, রবীন্দ্র-সমরেশ- সুনীল- শ্রীজাত। এখন আর পড়ি না, পড়ার অভ্যাস ও গেছে। সময় না পেলে ভিন্ন কথা। কিন্তু আগে পড়ার অভ্যাস ছিল এখন নাই, এ কি কথা? আরে প্রেম কি দুম করে পালানোর বস্তু নাকি? বিশেষ করে বইয়ের প্রতি প্রেম হল বাল্যপ্রেম ও উভমুখী, যে প্রেম কিছু না কিছু দেবেই। সুতরাং সেই প্রেম কে ভুলে যাওয়া??  তার মানে হলো সেই মানুষ কোনোকালেই ভালোবেসে পড়তো না বা পড়ার প্রেমে পড়েনি। আমরা চিরকালই পড়ুয়া জাতি হিসাবে সমাদর লাভ করেছি। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মে আমাদের পাঠভ্যাসও নির্জলা পাঠ্যপুস্তক কেন্দ্রিক। আমরা তো বয়ঃসন্ধিতে বা স্কুল জীবনের শেষের দিকে বটতলার চটি বইও গোগ্রাসে গিলতাম। যদিও ব্যাপারটা নির্লজ্জ কিন্তু সত্যিই আমরা পাঠক ছিলাম। এখনও মানুষ বই পড়েন, পাঠক কমেনি কমছে শুধু মার্গশ্রেনির পাঠকের সংখ্যা, কিন্তু জনসংখ্যা বেশ কয়েক কোটি বেড়েছে ।


মনে হতে পারে আমি নিজের ঢোলই পেটাচ্ছি। আসলে ভার্চুয়াল দুনিয়াই এতো বন্ধুর মাঝেও যখন কয়েকদিন পোষ্ট না করলে, কয়েকজন হাতেগোনা বন্ধু  খোঁজ নেন, কিছু হল নাকি? আমি ভালো আছি তো? সুতরাং মুখোশের পৃথিবিতেও খোঁজ খবরের আওতায় রয়েছি। আবার ক্রমাগতভাবে উৎসাহ দিয়ে যাওয়া আপনজনেরা, অকপটুরা,  বিশেষ করে আমার বড়দাসম জয়দা, অমলিন দা, ভাস্করদা, পটল, সুব্রত সহ প্রায় জনা পঞ্চাশ ষাট মানুষ,  এনারা না থাকলে এই আঙ্গুলের ডগার পৃথিবী টাও পানসে হয়ে যেত। এদের জন্যই এই বাজনা, এনারা সহ্য করেন বা প্রশ্রয় দেন বলেই। আমার লেখালেখি মূলত নিতান্তই "নেই কাজ তো খই ভাজ" প্রজাতির, এর মাঝে দয়া করে কেও কর্ষতা খুজবেন না, সাহিত্য রস তো ছেরেই দিন। আমি পড়তে ভীষণ ভালবাসি, মোবাইল হাতে পেলে কিছু সময় ফেসবুক আর জরুরী মেল আদানপ্রদানের সময়টুকু বাদ দিয়ে, সারাক্ষন উইকিপিডিয়া ঘাটতে থাকি। একবার ওই রসে মজলে বাকি সব নেশা মিথ্যা মনে হবে।সারাদিনে গোটা দু-তিন খবরের কাগজ ও মুখস্ত করে ফেলি। সময় কেটে যায় কোথা দিয়ে। আমি মেধাগতভাবে অত্যন্ত নিন্মশ্রেনির, তার একটা কারন আমার চরম ভুলো মন, শত্রুর সাথেও যেচে কথা বলি। কারন, হয় ভুলে গেছি যে কেন তার সাথে ঝগড়া হয়েছি, বা আদৌ ঝগড়া হয়েছিল তো!!! এই কারনে এই পড়ার অভ্যাস না থাকলে কবেই গজনীর আমির খান হয়ে যেতাম।

তবুও এত ফেসবুক, টুইটার, মোবাইল, চায়ের দোকান,আড্ডাবাজি, ব্লগিংয়ের কূটকচালি ফকচেমির ফাঁকেও আমার পড়তে বেশ ভালই লাগে। সব ট্রলেই যে ভাল লেখা থাকে তা নয়, বরং যারা লেখেন আমার খুব শ্রদ্ধা হয় তাদের দেখে। অন্তত এদের জন্যই সাহিত্যচর্চাটা এখনও টিকে আছে। কোন মহান কবি বা সাহিত্যিক কি মাতৃগর্ভ থেকে বেড়িয়েই কালি দোয়াত চেয়েছিলেন? তারাও আমাদেরই মত সাধারন মানুষই হিসাবে জন্মেছিলেন, নিষ্ঠা, অধ্যাবসায়, প্রেম, আর পড়ার অভ্যাসের গুনে ভাগ্য বা অদৃষ্ট তাদের খ্যাতির চুড়োয় পৌছে দিয়েছে। সুতরাং আজ যারা চেষ্টা চালাচ্ছেন, কাল তাদেরই মধ্যে থেকে কেউ কেউ বিখ্যাত হয়ে যাবেন বলেই বিশ্বাস রাখি। প্রয়োজন -লেগে থাকা আর আরো আরো বেশি করে পড়া। ভাল হোক বা খারাপ, আগে তো পড়তে হবে, তারপর তো ভালমন্দের বিচার, তাই আমি প্রায় সব কিছুই পড়ি। তার কোনোটা থেকে কস্তূরীর গন্ধ বিচ্ছুরিত হয় তো কোনোটা স্বাদগন্ধহীন।  সময় বের করতে না পারলে মন খারাপ হয়। পড়ার জন্য মন উশখুশ করে। অনেক ভাল ভাল অন্তর্জালীয় ঠেকে তো শুধু ভাল ভাল লেখা পড়ার শখেই অনলাইনে আসি। আর যখন সম্পূর্ন পড়ার মুডে থাকি তখন মনে হয় বাকি পৃথিবীই মিথ্যা, পড়াই সত্য। সবই তো প্রায় এখনো পড়ার বাকি! মোবাইলের ঘন্টি সবসময় তাল কেটে দেয় সেই মহেন্দ্রক্ষন গুলোর, সেই পেট ও সংসারের দায়। সব বই কিনে পড়া সম্ভব হয় না। অতো সমর্থ বা সাধ্য কোনোটাই নেই। লাইব্রেরী যাব? সে সময় নেই। পেটের জ্বালায় কিছু তো কর্ম করতে হয়, সুতরাং গ্রন্থাগার নৈব নৈব চ।

ভাগ্যিস আমার বই ধার দেওয়ার কয়েকজন বন্ধু আছে, তারাই ভরসা। তাঁরা দিয়ে খুশি হন, আর আমি পেয়ে ধন্য নই। আর বই মেলার জন্য তো আগে পার্থ-প্রদীপের মত গুটিকয় মানুষ ছিল, এখন কৌশিক দা আছে। যাদের সাথে ওই সৎসঙ্গ গুলো ঘোরা হয় নিয়ম করে।।এমন ভাবেই দিন চলে যাচ্ছে গড়িয়ে গড়িয়ে। আজকাল আনন্দ পাব্লিসার্স, পেঙ্গুইন, সহ নানা প্রকাশনা হাউজ ছাড়াও আমাজন ফ্লিপকার্ট থেকে তো অনলাইনে অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে, সেই সুযোগও মাঝে মধ্যে নিই। শুধু পছন্দ আর পকেটের যুগলবন্দি হলেই হল।তবে আমার ওই একই রোগ, আমি কোন কাজেই একদম নিয়মিত করতে পারিনা। তবে অন্যকাজ শুরুকরে শেষ না করার ঘোড়ারোগ থাকলেও পড়াটা ঠিকিই শেষ করি, নাহলে যে সারারাত উশখুশ করব।

খাপছারা উদভ্রান্ততা তো আমার চরিত্রের মুকুট। তাই  আমি বই কিনলে কলেজ স্ট্রিট থেকেই কিনতে ভালোবাসি, রীতিমত দড়দাম করেই কিনি, দিলে দাও না হলে অন্য দোকান, ওর মজাই আলাদা। তবে আমাকে যারা বই ধার দেয় গুটি চারপাঁচ মানুষ, তাঁদের ভালোবাসাতেই আমি মুগ্ধ, আর আমার বইয়ের নেশার কারিগরও তাঁরাই। তাদের বাড়ি গেলেই এক গাদা বই বগলদাবা করে নিয়ে আমি বাড়ি ফিরি। তাঁদের আলমারীর সেল্ফ ভর্তি শুধু বই আর বই। চিন্তা করেই আনি, কারন যত্ন করে পড়ে ফেরত দিতে হবে। ভুলো মন, সব সময় ফিরত দেবার কথা মনেও থাকেনা, ওই নতুন বই আনতে গেলে, তবেই ফিরতের কথা মনে পড়ে।

আমার ঘরে বই রাখার স্থান বড়ই অপ্রতুল কারন আমার রুম ভর্তি নানা রকম জিনিস, বেশিরভাগই অদরকারী। মেয়েদের দুষ্টুমির জন্য বই সাধারন ভাবে শোবার ঘরে সুরক্ষিত নয়, আর সেলফের অভাব না থাকলেও তাতে অন্তত বই রাখার জায়গা নাই, মেয়ে ও তার মায়ের সামগ্রী তেই ভর্তি। ওদের খেলনা, সাজ, পোষাক ইত্যাদির দাপটে আমিই এককোনে কোনমতে ঠাই নিয়ে আছি উদ্বাস্তুর মত। তাই বই পড়ে থাকে- জানালার স্লপে, DTH মেসিনের উপরে, ফ্রিজের মাথায়, বিছানার ফাঁসে, বৈঠকখানার চা টেবিলে, অফিসের চেয়ার টেবিল আলমারি ফ্লোর সর্বত্র বই আর বই আর ভীষণ অগোছালো। মেয়েরা কথা বলতে পারেনা তাই তারা শাষন করেনা, নতুনা, আমি এই "বই ও অগোছালো" শির্ষক বিষয়ে সকলের কাছে শাষনের পাত্র। একলাট বই শেষ মানেই আবার নতুন বই ধার আনতে হবে। আমার সাথের মানুষেরাও এটা জানে, আর আমার এই রোগের কথা মানেন ও প্রশ্রয়ও দেন, তাই আমার এই বাহুল্যতা কিছুটা সাজে, আমার অগছালো জীবন তো তারাই পরিপাটি করে রেখেছে আর এদের উপরে ভর করেই চলছে আমার দিনযাপন।

তবে এই সুখ খুব বেশিদিন থাকবে বলে মনেহয়না। আজকাল অনলাইন গ্রন্থাগারে ইংরাজি সহ বিদেশী বইয়ের অভাব নেই। সেদিন আর দেরিনেই, বা হয়ত এসেই গেছে, যেদিন বাংলা বই পড়ার জন্য আর পাঠাগার বা বন্ধুর বাড়িতে ছুটতে হবেনা। কলেজস্ট্রিট ইতিহাস না হলেও গুরুত্ব হারাবে। অনলাইনেই সব পাওয়া যাবে। বাংলা ফন্ট এখন সহজলভ্য ইন্টারনেটে বা মোবাইল ডিভাইস গুলোতে। বাংলা হরফে লেখা স্ট্যাটাস বা মন্তব্যের তুফান তোলা পোষ্টে খুব শিজ্ঞিরই ছেয়ে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। বড় দুঃখের হবে সে দিন আমার মত উন্মাদদের জন্য। সবই থাকবে,লেখক- পাঠকের সম্পর্কের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে, শুধু থাকবে না নতুন বইয়ের গন্ধ। থাকবেনা আমার বই সংক্রান্ত অগোছালতা, প্রয়োজন হবেনা সেলফের। আর তার সাথে সাথে হারাবো আমার কাছের মানুষগুলোর ভালবাসা মিশ্রিত কপট রাগান্বিত শাষন।

উন্মাদীয় বানানবিধিতে দুষ্ট

Sunday, 21 July 2013

মহান একুশে জুলাই



মহান স্মরণ দিবস 


মহান ২১ শে জুলাই, ঠিক কি কারনে শহীদ হয়েছিলেন, সেটা জানা না থাকিলেও এই শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবসে কিছু শিখি।

২০১৫ সালে কৃতি ছাত্ররা মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে কথাঞ্জলী পুরষ্কার পেয়ে ও পড়ে শিক্ষক হয়ে, গ্রামের পাঠশালায় তারা শিক্ষাদান করতে গেছেন।

গ্রামের একটি পাঠশালায় ক্লাস শুরু হওয়ার আগে ছাত্ররা হইচই করছে (প্রশঙ্গত:- এখানে কোন হজবরল নেই, সকলেই দামাল)। এমন সময় পন্ডিত মশাই প্রবেশ করলেন।


পন্ডিত : ওরে কেষ্ট, বেচা, দেবু, সোমু, রুদ্র, নির্মল, কানন, মধু, গোবরা, গণশা ।

ছাত্ররা : (সমস্বরে) পেজেন সার।
পন্ডিত : সে তো চোখেই দেখতে পাচ্চি। বলচি গোলমাল করচিস কেন? এখানেও কি সিন্ডিকেট বানিয়েচিস নাকি?

ছাত্ররা : (সমস্বরে) এই গোলমাল করচিস কেন?

পন্ডিত : থাম, থাম, হতভাগার দল। ওরে দেবু, কাল ইস্কুলে আসিসনি কেনে রে?

দেবু: আজ্ঞে, কাল আমার মুখ দিয়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল।

পন্ডিত : ওটা তো 
একটা ছোট্ট ঘটনা। বিড়ি টেনেছিলি বুঝি? না কি তাজা পেটো খেয়েছিলি??

দেবু: আজ্ঞে, না স্যার। সে তো আপনার কাঠ ক্যালানি খেয়ে কবেই ছেড়ে দিয়েছি। মা বললেন, তোর পেটে কি আগুন লেগেছে? ওতো খাই খাই করছিস কেন? তাই...

পন্ডিত : বটে। হ্যাঁ রে কেষ্টা। তুই কাল আসিসনি কেন রে?

কেষ্টা : কাল তো আপনার সঙ্গে হাটতলায় দেখা হয়েছে। আমি ঢিল মারা পেকটিস করছিলাম। প্যাক্টিক্যাল কেলাস স্যার।

পন্ডিত : ও, তুমি শুধু দেখা করতে আসো। পড়তে আসো না? কিরে বেচা কিছু বলবি? ওই চারসোর ঘরের নামতা টা মুখস্ত হয়েছে??

বেচা: পৃথিবীর আকার কিরূপ, স্যার?

পন্ডিত : ব্যাটা বড় হয়ে বেচবি তো মাছ, কোশ্চেনের ছিরি দেকো! তবে ইম্পর্টেন্ট কোশ্চেন, টুকে নে। এটাই আমি কথাঞ্জলী তে পড়েছিলাম। মহর্ষি সুদীপ্ত একবার পিসিঠাম্মা কে এই একই প্রশ্নই করেছিলেন। পিসি তাকে নিরাস করেন নি, বিশ্বলোক দর্শন করিয়েছিলেন। পৃথিবীর আকার চতুষ্কেকাণ।

যথা−ঈশান, অগ্নি, নৈর্ঋত ও বায়ু। যদিও কুচুটে লোকে অনেক কিছুই বলে জানবি, সে সকলই কুৎসা মাত্র।

ছাত্রী : পন্ডিত মশাই। একটা ট্রান্সেলেশন বলে দিন না?

পন্ডিত : কী ট্রান্সেলেশন, দিদি?


(পুরাকালে এখানে অনেকে ছাত্র ছাত্রী দের, বাবা বা মা নামে স্নেহের ডাক ডাকতেন, এখন "দিদি" ডাকই সার্বজনীন। দেবী দূর্গাকেও অনেনেকে দেবী দূর্গার বদলে দিদি দুর্গা নামে ডেকে থাকেন।)?

ছাত্রী : আজকাল হাতিবাগান বাজারে ছয় আনা সের কুচো চিংড়ি দিয়ে একটা বড় পরিবার ভালোভাবে চলে যায়।

পন্ডিত : ওরে বাবা, টুকে নে। ইম্পর্টেন্ট কোশ্চেন। ব্রাত্যকে ব্রাত্য করা হয়েছিল এই প্রশ্নের জবাব না দিতে পারার জন্য। "টুডে, টুমরো এলিফ্যান্ট গার্ডেন মার্কেটে সিক্স এনাস সের স্নল লবস্টার, এ বিগ ওয়াইফ গোজ ওয়েল"
নির্মল : আচ্ছা পন্ডিত মশাই, তার বংশে বাতি দিতে কেউ নেই, এর ইংরেজি কী?

পন্ডিত : এসব ইম্পর্টেন্ট কোশ্চেন কোত্থেকে খুঁজে বার করছিস?  বিরোধীদের চক্রান্ত নেই তো?? 
পিসিঠাম্মার বানী অনুসারে যদিও ওটা সিপিয়েন। নে টুকে নে। দেয়ার ইজ নো ওয়ান গিভ ক্যান্ডেল ইন হিজ ব্যাম্বু। 
এই কানন, ইংরেজিতে চিমনি বানান কর? নির্মল- ব্যাম্বু ব্যাপার টার উপরে ইসস্পেসাল ধ্যান দাও। এটি পিসিঠাম্মা মাতার অন্যতম প্রিয় শব্দ ছিল।

কানন : সি এইচ আর এমনি−চিমনি।

পন্ডিত : মার গেঁড়েচে। সি এইচ আর এমনি−চিমনি। ওকে নীল ডাউন করে দাও। তোদের যে প্রথন দু মাসেই ৯৯% শেখানো কমপ্লিট করালাম তার এই অবস্থা??

চলো এবার আমরা লবান্নে পড়তে বসবো। কারন পিসিঠাম্মা দেবি কখনো এক স্থানে বসা পছন্দ করতেন না।

ছাত্র : ডিম্ব কোন লিঙ্গ, স্যার?

পন্ডিত : কি কি লিঙ্গ?? তুই ও শেষে চক্রান্তকারী দের পাল্লায় পড়লি নাকি?? যাই হোক ইম্পর্টেন্ট কোশ্চেন। ডিমের ভেতর মেল হবে কি ফিমেল হবে, কে জানে রে, বাবা। নে টুকে নে। উভয় লিঙ্গ।

ছাত্র : পন্ডিত মশাই। ঘুড়িতে লাট খাচ্ছে, ইংরেজি কী?

পন্ডিত : ও, খুব ঘুড়ি ওড়ানো হয় বুঝি? টুকে নে। ইম্পর্টেন্ট কোশ্চেন। দি কাইট ইজ ইটিং গভর্নর। এই তুই বানান কর, ফটকে।

ছাত্র : ফটকে? ফ আর পা গেছে আটকে−ফটকে।

পন্ডিত : বটে। আচ্ছা বানান কর, রুক্সিণী।

ছাত্র : রুক্সিণী? স্বরে আ।

পন্ডিত : রুক্সিণীতে স্বরে আ কোত্থেকে পেলি? নাহ তোদের দেখছি শ্রী তাপসশাস্ত্রীর মাল শাস্ত্র পড়াতে হবে।

ছাত্র : গোড়া থেকে আউড়িয়ে নিচ্ছি।

পন্ডিত : আউড়িয়ে নেওয়াচ্ছি। হরিদাস পাল। ওকে ঠ্যাং তুলে হ্যান্ড আপ অন দি বেঞ্চ করে দাও। এই তোরা একটা খবর শোন। তোরা সবাই কাল ফরসা জামা-কাপড় পরে ফিটফাট হয়ে আসবি। কাল ইন্সপেক্টর সাহেব আসছেন।

ছাত্র : আচ্ছা স্যার, সাহেব ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে আমরা কী করব?

পন্ডিত : আমি সব ম্যানেজ করে নেব। সে তোদের ভাবতে হবে না। দিদির কথাঞ্জলী আর একুশে আইন মর্মোদ্ধার করে, ৩৪ বছরের ঘাপলা সরবত সম্বচ্ছর খেয়ে তবেই ইংরেজিতে দখল হয়েছি। আমায় ঠেকায় কোন ব্যাটা। যা, এখন ছুটি। সবাই বাড়িতে যা, বাড়ি যা।

(পরের দিন সকালে পাঠশালায় ছাত্ররা উচ্চ স্বরে ইংরেজি পড়ছে)

পন্ডিত : এই, চুপ, চুপ। ইন্সপেক্টর সাহেব এসে গেছেন। গুড মর্নিং, স্যার।

ইন্সপেক্টর: গুড মর্নিং। এত কম ছাত্র কেন?

পন্ডিত : হতভাগা ছেলেরা জেলায় জেলায় শিক্ষা লাভ করতে গেছে, তাই সব আসেনি। আর কন্যাশ্রী রা সবুজসাথী চালাচ্ছে। কিছুজন তো যুবশ্রী, তাই তারা উৎসব করছে।  বাকি সব চাকরি পেয়ে গেছে।

স্যার, ইয়েস্টারডে ইঙ্কপূজা ছিল কি না। তারই উৎসব স্যার।

ইন্সপেক্টর: ইঙ্কপূজা?

পন্ডিত : হ্যাঁ, হ্যাঁ, ভেরি ভেরি ব্ল্যাক ওমেন। সোর্ড হ্যান্ড।

ইন্সপেক্টর: আই সি। ইউ মিন খালিপূজা?

পন্ডিত : খালিপূজা নয়। তাহলে তো এমটি পূজা বলতুম। কালিপুজো, কালিপুজো।

ইন্সপেক্টর: আচ্ছা, পন্ডিত। টুমি বাংলা বলো। হামি বাংলা বুঝতে পারি। আমি ঈষ্ট জর্জিয়া।

পন্ডিত : বাট স্যার, মাই ইংলিশ কামস মোর। অর্থাৎ আমার ইংরেজিটাই বেশি আসে। ফাদার্স নিয়ার টুয়েন্টি ওয়ান ইয়ার্স ইংলিশ লার্ন কি না। এন্ড আই লার্ণ কথাঞ্জলী অলসো।

ইন্সপেক্টর: ইউ আর এ বিগ ফুল। বাট মি অলসো কথাঞ্জলী।

পন্ডিত : সলালি, সলালি টেল, স্যার। ছেলেরা না শুনে ফেলে। আপনি ডেলো কায়দায় বলুন স্যার।

ইন্সপেক্টর: আপনি কী রকম পড়াচ্ছেন, আমাকে শোনান।

পন্ডিত : অল রাইট, স্যার। বাবা গণেশ, বলো তো ছাপ্পান্ন কড়ায় কত গন্ডা?

গণেশ : পন্ডিত মশাই, ঝালাই করা না পেটা করা?

পন্ডিত : দাঁড়া। সাহেব চলে যাক। তোকে মেরে আরও ধোলাই করে ছাড়ব। পুরো মদন বানিয়ে ছারবো।

ইন্সপেক্টর: ধোলাই কেয়া হায়?

পন্ডিত : ও মানে, ইয়ে মানে, কী বলি রে বাবা, মানে ইয়ে, ক্লথ ওয়াশিংয়ের কথা হচ্ছে, স্যার। আচ্ছা ভ্যাবলা, বলো তো ভুতপূর্ব হেড মাস্টার মানে কী? 
 তাছারা আপনি একবার বলুন যে আপনি হজরলব দলের সমর্থক, দেখবেন এই দুষ্টু দামালের দল আপনাকে যেমন ভাবে আদর করে দেবে,ওটাকেই ধোলাই বলা হয়।

ছাত্র : পারব না তো, স্যার।

পন্ডিত : টুকে নাও। যে হেড মাস্টার পূর্বে ভুত ছিলেন।

ইন্সপেক্টর: ননসেন্স।

পন্ডিত : এই মরেছে। ভ্যাবলা, তুমি বলো, বাবা। আমি তোমায় হাড়ে হাড়ে চিনি, ইংরেজি কী?

ছাত্র : হাড়ে হাড়ের ইংরেজি কী, স্যার?

পন্ডিত : বোন টু বোন।

ছাত্র : আর চিনি?

পন্ডিত : চিনির ইংরেজি জানো না? সুগার। টুকে নাও। আই সুগার ইউ বোন টু বোন।

ইন্সপেক্টর: হা হা হা। আচ্ছা পন্ডিত, গুড বাই।

পন্ডিত : গুড বাই। দেখলেন তো স্যার, আমার লার্নিংয়ের রান, মানে বিদ্যের দৌড়। টুয়েন্টি ওয়ান ইয়ার্স ইংলিশ লার্নিং ফাদার…

ইন্সপেক্টর: শাট, শাট আপ।

পন্ডিত : ও বা…বা (ইন্সপেক্টর চলে যায়)

ছাত্র : স্যার, একটা কথা বলব?

পন্ডিত : এক শ বার বলবে।

ছাত্র : আপনাকে বিগ ফুল বললেন কেন?

পন্ডিত : বিগ ফুল মানে বড় ফুল। ওই জোড়া ফুলের একটা। বিলেতে গিয়েই সাহেব নিজের বাগান থেকে যেটি সবচেয়ে বড় ফুল সেটি আমার জন্য উপহার পাঠাবেন। আমার পড়ানোর কায়দা শুনে সাহেবের তাক লেগে গেছে।

ছাত্র : স্যার।

পন্ডিত : কী?

ছাত্র : স্যার, দশহরা (নবান্নর সেই কালীন সংস্করণ) কী একটা চিঠি নিয়ে আসছে।

পন্ডিত : ও কিছু নয়। সার্টিফিকেট এসে গেল। সাহেবদের কাজই ঝটপট।

দপ্তরি : না, পন্ডিত মশাই। আপনি কিষেনজী হয়ে গেছেন। সাহেব আপনাকে বরখাস্ত করেছেন। পড়ে দেখুন।

পন্ডিত : সে আমি আগেই বুঝতে পেরেছি রে। এর পরও যদি ডিসমিস না করে তো ব্যাটার নিজের চাকরি নিয়েই টানাটানি পড়ে যেতো। এমনিতেই যা বেকায়দায় ফেলে দিয়েছি বাছাধনকে, ডিসমিস না করে যায় কোথায়?
............................................
(নির্বিষ ভাবে ফেসবুক থেকে আংশিক সংগ্রহীত ও উন্মাদীয় মসলাসহযোগে পরিবেশত, উন্মাদীয় বানানবিধি অনুসৃত)


ছবিঃ ইন্টারনেট 

Tuesday, 16 July 2013

চন্দ্রাহতের মন্ত্রনা- ৬

বেশ কিছু নতুন ধরনের বুদ্ধিজীবির প্রকোপ হয়েছে আজকাল এই সোস্যাল মিডিয়াগুলোতে। সারা দিন বহু পোষ্ট হয় রোজ, ভালো-মন্দ পাঁচমেশালি। এরা তার পাস মারায় না ভুল করেও। কিন্তু ধর্ম সংক্রান্ত পোষ্ট এলেই ভাদ্রমাসের কুত্তার রমনেচ্ছার মত কোথাথেকে এরাও যেন হাজির হয়ে যায়। এদের হিন্দু মুসলিম বিভেদ নেই। সর্ব ধর্মেই সমানসংখ্যায় ইনারা বিরাজমান। খানিক উচ্চস্বরে চেল্লাচেল্লি, কাঁচা ও পাকা খিস্তির ঝর্না ঝরঝরিয়ে, মা বাপ সহ যত, পোষ্টদাতার নিকটাত্মীয় আছে সকলের শাস্ত্রমতে পিন্ডি দান করে, আবার ডোডো পাখির মত ভ্যানিস হয়ে যায়, ওই ধরনের নতুন পোষ্ট না আসা পর্যন্ত। আর এদের তর্কের মূল সারাংশ খোজার থেকে, বেশ্যার কুমারিত্বের অনুসন্ধান অনেক সহজবোধ্য কাজ।


কারন হিসাবে ভেবে নেওয়া যেতে পারে যে, 

১) এদের কথা বাস্তবে শোনার মত কেউ নেই, তাই সামান্য ঝগড়ার চান্স পেলেই, খেঁকি কুত্তার মত ঝাঁপিয়ে পরে।

২) বৌদি বমানে ওনার বউ নিয়মিত কর্মচারী দ্বারা দোকানের ঝাপ খোলা বন্ধ করেন, মজবুত ডান্ডা দিয়ে।

৩) খিঁচুনি রোগী।

৪) চর্ম ও যৌন রোগের ডিপো।

৫) ছেলে খানকির ছেলে ছারা কথা বলে না।

৬) মেয়ে ভালো রোজগার দেয়, কল সেন্টার কর্মী।
ইত্যাদি ইত্যাদি......
তাহলে ভাবুন, আপনি এদের সাথে তর্কে জড়াতে চান?? ইনারা মানসিক পঙ্গুত্বের শিকার। যা ঠিক হবার উর্দ্ধে।

বর্তমান পিতামাদের উদ্দেশ্যে একটাই অনুরোধ। কন্ডোম ব্যাবহার বাড়ান। নতুবা এই উচ্ছিষ্ট বীর্যথেকে জন্ম নেওয়া এই বুদ্ধিজীবিরা আপনাদেরও কিন্তু ছারবে না। এরা জাপানের নামে বুলেট ট্রেন বোঝে না, তেল বোঝে। চুল্লুতে তুলসি পাতা দিয়ে শুদ্ধ করে নেবার পদ্ধতি এনাদেরই অন্যতম মহান আবিষ্কার। এরাই তারা যারা দুবছর নিরিবিচ্ছন্ন ভাবে বিদেশে কর্মসন্ধানে থেকেও, বাড়ি ফিরে স্ত্রীর কোলে ৬ মাসের ছেলেটিকে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে তোলেন। আর সন্ধ্যা বেলা বন্ধুদের পিতা হবার আনন্দে পার্টিও দেন।

যদিও এরাই আমাদের আদি পূর্বপুরুষ। নরতর শাখামৃগ। মৃগ মানে হরিণ, এই আনন্দেই আজ লুঙ্গি ড্যান্স হবে, আর শেষ রাতে চাদরে কোঁথ পেরে হেগে গাদা করবে।

চলুন এদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

বি:দ্র:- বিশেষজ্ঞ খিস্তিবাজ দের সাদর আমন্ত্রন। মহিলাদের বসিবার মাল্টিবার ও সাইকেল রাখিবার পৃথক ব্যাবস্থা আছে। ইমানদন্ড গচ্ছিত রাখাও হয়। 

(বাজার চলতি চালু খিস্তি শুনে শুনে বোর হয়ে গেছি, তাই কমেন্টে শুধুমাত্র গবেষনামূলক খিস্তিই গ্রাহ্য)


Friday, 10 May 2013

উন্মাদ নামা - ১


কিস (তি)- খিস(তি)-ইস (তিরি)-হিস-নিস-পিস
*********************************


বৈশাখী দ্বিপ্রহরে চাঁদি ফাটা রোদ্দুর, হন্তদন্ত হয়ে অফিস থেকে ফিরলাম (উন্মাদেরও অফিস থাকে), বেলা সাড়ে বারোটার সময়। রাস্তার পিচ গলে যাবার উপক্রম, হেলমেট পরিহিত অবস্থায় মোটর বাইক চালানোর সময় গ্রীষ্মের লু... 


কামাতুর প্রেয়সীর থেকেও ঊষ্ণ চুম্বনের অত্যাচারে জর্জরিত হতে হতে ঘরে আসিবা মাত্রই দেখি আমার শ্রীমতি, স্বপারিসদ বহু আত্মীয় স্বজন লইয়া সংক্রান্তির মেলা বসিয়ে রেখেছেন, মাতাশ্রী, জ্যাঠা- জ্যেঠিমা, বোন- বোন জামাই , সহ আরো অনেকের শুভাগমন হয়েছে। গুটি গুটি পায়ে নিজের ঘরে এসে, স্নান সেরে আসতেই , শ্রীমতি পরম মমতায় মধ্যাহ্নভজনের আসর বসালেন আমার একারই জন্য, যথারীতি আমি খেতে বসলাম।


আহা হা হা হা, দুটো জ্যান্ত বেগুনি (লালচে রঙের), সাদা ধুমায়িত বাশকাঠি চালের ভাত, মুসুর ডাল, পাট শাক ভাজা, 

আর........................... ইলিশ.........

আহা হা হা হা হা হা ...........................

কত দিন পর নাকে এ সুখ শুঁকলাম, খাবার আগেই অর্ধেক ভোজন পরিপূর্ন হলো। তেলে ভাজা ১ পিস, পেয়াজ দিয়ে হরহরে ইলিশের ঝোল, আর সরষে ইলিশ, একপিস পাতুরি। বাড়িতে জামাই এসেছে, সুতরাং আয়োজনে কমতি নেই। সকলের পছন্দের ফরমায়েস মতই পদ বানানো হয়েছে দেখলাম।


 ওহ চর্ব্য, চোষ্য, লেহ্য, পেয় ও ধৌম্য সকল প্রকার ভক্ষন রীতি অনুসারেই আহারাদি শেষ করলাম। মাতৃদিবস বলে কথা।

“ইল” মানে জলের মধ্যে বা জলস্থিত, ‘ইশ’ মানে রাজা বা শাসক বা অধিকর্তা। তো সেই জলের রাজাকে উদরে চালান করে , পাখাটা চালাতে না  চালাতেই একটা রেডিমেড কবিতা পেল, ...

ইলিশ এর জলিশ, উফ...
চনচনে খিদে্‌
মোক্ষম মালিশ...
স্নান তো করায় ছিলো,
এবার বুকে বালিশ...
সামনে ল্যাপটপ,
গৃহকর্তীর নালিশ...
উচ্চস্বরে পালিশ...


আমি আবদ্ধ কবিগিরিতে তে...

ঈশ............


(উন্মাদীয় বাবানবিধী)

Wednesday, 3 April 2013

উন্মাদ নামা ~ ১১

ফেসবুকে, এই ভার্চুয়াল বিশ্বে, আমরা পরস্পরকে সামনা সামনি চিনি না। কিন্তু আমরা চিনতে চাই। কিন্তু সে কাজটা সোজা নয়।

কাজটা সোজা করতে আমরা প্রত্যেকটা লোককে দাগিয়ে দি। এ লাল, এ নীল, এ সবুজ, এ হলুদ।
কিন্তু পরিবারে, যেখানে আমরা সবাই সবাইকে চিনি, দেখবেন ওই দাগানোটা নেই। আমরা নাম জানি, লোকটার বহুমাত্রিকতা জানি।


একটা মানুষ অনেক কিছু দিয়ে তৈরী। শুধু তার রাজনীতি নয়। তার প্রেম আছে, ভালবাসা আছে, কাজ আছে, আড্ডা আছে, সব আছে। কিন্তু শুধু রাজনীতি দিয়ে দাগিয়ে দেওয়াটা ঠিক? তাহলে কি সেই মানুষটাকে বোঝা যায়?


কিন্তু এখানে আমরা সেই ভুলটাই করি। সমানে।

ফলে শত্রুতা তৈরী হয়। সবথেকে ভদ্র মানুষটাও, হঠাৎ রেগে, জাত তুলে, বুদ্ধির উৎকর্ষ তুলে কথা বলে ফেলেন।


পুরোটা দেখুন, আধখানা নয়, শুধু একটা অংশ নয়। নইলে কিন্তু অন্ধের হস্তীদর্শন হবে। চিনতে হয়ত একটু সময় লাগবে, কিন্তু ভালভাবে চিনবেন। ভেবে দেখবেন।


Saturday, 16 March 2013

উন্মাদ নামা ~ ১০



কিছু জিনিসের জীবনমুখি মানে


*******************************

প্রশংসা- নিঃস্বার্থ ভাবে সব্বার জন্যে করেও আপনি যেটা কোনোদিনও আশা করেননি


নিঃস্বার্থ- যে গুনটার জন্যে আপনাকে বারবার ঘা খেতে হয়


ঘা- যেটা অসুখ হওয়া সত্ত্বেও প্রেমিকাকে বলে বেশি আদর খাওয়ার সুযোগ থাকেনা


প্রেমিকা- যে স্বেচ্ছায় প্রাক্তন হলে সবচাইতে বেশি ভালোবাসা পায়


প্রাক্তন- জয় গোস্বামীর অন্যতম সেরা কবিতা


কবিতা- ইয়ে নাম্বার ওয়ানের প্রতিযোগীরা যেটা বলার মত করে গান গেয়ে থাকেন


গান- যেটার আদান প্রদান দিয়ে শতকরা নিরেনব্বুই ভাগ সম্পর্কের সুচনা ঘটে


সম্পর্ক- যেটা মেয়ে বন্ধুদের সামনে আপনার এখনও হয়নি আর ছেলে বন্ধুদের সামনে ইচ্ছেমত হারে বেড়ে চলেছে


ইচ্ছেমত- সিনেমার নায়করা মাধ্যকর্ষন নিয়ে যেভাবে খেলাধুলো করে থাকেন


খেলাধুলো- যেটায় আপনি চিরকাল ভালো


চিরকাল- যেই সময়টাই সেই শেষে আপনাকেই সবটা সামাল দিতে হয়


শেষে- যখন আপনার কথাই সত্যি বলে প্রমানিত হয়


প্রমানিত- নিজের বাড়ির পায়েস আর সিন্নির স্বাদই যে সবচাইতে বেশি ভালো


সিন্নি- যে খাবার জিভের আগে মাথায় ঠেকাতে হয়


মাথা- যেটা আপনার অকারনে কোনোদিনও গরম হয়নি


গরম- যেটা এবারের মত আর কোনোবার নাজেহাল করেনি


নাজেহাল- শুধু একটু ভালো থাকতে চেয়ে আপনাকে যা রোজ্ হতে হয়


ভালো- নিজের যেটা আপনি ছাড়া আর সবাই বোঝে


নিজের- যার পায়ের ওপর দাঁড়াতেই এত্ত স্ট্রাগল


স্ট্রাগল - যেটা করতে আপনি কক্ষনও ঘাবড়ে যান না


ঘাবড়ে- কল্পনায় মাস্তানদের আপনি যা দিয়ে থাকেন


মাস্তান- কলেজের যেটা ছিলাম বলে বউয়ের কাছে গল্প করতে হয়


গল্প- যেটার ছোট ফর্মের প্রতি আমি ভয়ংকর ভাবে বায়াসড


বায়াসড- নবনীতা দেবসেনের ব্যাপারে আমার মনের অবস্থান


মন- যেটা আছে বলেই কাদার থেকে বৃষ্টি টা আলাদা করে নেওয়া যায়


Thursday, 14 March 2013

উন্মাদোভিভাষন



শিক্ষক দিবস 
অষ্টমশ্রেনির এক ছাত্রের ভাবনায়


পাঠরতা শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও শিক্ষিকা মহাশয় গন, সম্মানীয় অন্যান্য পেশার বিশিষ্ট বিশিষ্টবর্গ, শিক্ষাবন্ধু ও শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিগন সহ আমার প্রিয় সহপাঠী (যারা একই সাথে ফেসবুক পড়ি) দের , প্রণাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ও কাঠ বেকারদের কষ্টে যষ্ঠিমধু হয়ে, আজকের এই মহান দিবসে, আমার ছোট্ট বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ জ্ঞাপন।

আজকের এই স্বপ্রতিভ চমৎকার উপস্থিতি ও সমাবেশের কারণ সম্বন্ধে আমরা সকলেই অবগত। আজ মহান শিক্ষক দিবস। সেটার সফল উদযাপন উপলক্ষে এবং আমাদের তথা জাতির ভবিষ্যত তৈরীর ভারাপন যাদের হস্তে অর্পিত, তাদের কঠোর প্রচেষ্টার প্রতি যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা জ্ঞাপন করার জন্য, তাঁদের প্রতি আমাদের কায়মনোবাক্যে সম্পূর্ন কৃতিত্ব প্রদানের উপলক্ষে এই আয়োজন।

প্রতি বছর সারা ভারতে ৫ ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারত প্রজাতন্ত্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও প্রখ্যাত কূটনীতিবিদ, ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর জন্মদিনের দিনটি তাঁর ইচ্ছানুসারে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয়।

শিক্ষার প্রসারে তীব্র আগ্রহী এই ক্ষনজন্মা মনীষী, যখন ১৯৬২ ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, তখন তাঁর ছাত্র, বন্ধু বান্ধব সহ নিকট আত্মীয়েরা, তাঁর জন্মদিবস ঘটা করে উদযাপন করার বায়না করলে-, তিনি বলেছিলেন, এই দিনটিকে তাঁর জন্মদিন হিসাবে পালন না করে “শিক্ষক দিবস” হিসাবে পালন করলে তিনি বেশী খুশী ও গর্বিত হবেন। সেই থেকেই ডাঃ রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনটিকেই “জাতীয় শিক্ষক দিবস” হিসাবে সারাদেশে পালন করা হয়।

আজ সমস্ত দেশ জুড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের সম্মান দিতে এই দিনটি স্মরণ বিভিন্নভাবে স্মরণ করে থাকেন। শিক্ষাবিনা জীবন অসম্পূর্ন ও পঙ্গু। তাই শিক্ষক আমাদের সমাজের মেরুদন্ড । তাঁরা শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন সহ সামাজিকতার প্রতিটি ধাপ কে, ছাত্র মননের অভ্যন্তরে এক ঠাস বুনট নির্মাণের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে একটা গোটা জাতিকে গঠন করে তোলেন। দেশের একজন আদর্শ নাগরিক হয়ে উঠতে সহায়তা করেন।

আমাদের প্রথম শিক্ষক নিশ্চই আমাদের প্রনম্য অবিভাবকগন। কিন্তু বৃহত্তর ধরিত্রির চারণ ভূমিতে সফলকাম একজন “মান ও হুশ” যুক্ত মানুষ হয়ে উঠতে গেলে বিদ্যালয়ের ভুমিকা অনস্বিকার্য। সেখান থেকেই শিক্ষকেরা তাঁদের জীবনব্রততে নতুন নতুন শিক্ষার্থীদের স্থান করে দেন। শুধু মাত্র নমষ্য শিক্ষকেরাই নন, বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার কাকুটির কাছ থেকেও আমরা পরিচ্ছন্নতার পাঠ রোজ শিখে চলি, তিনিও পক্ষান্তরে আমাদের সামাজিক শিক্ষক, তাঁদের জন্যও আমাদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাও সম্মান রইলো।

শিক্ষকেরা নিজ ছাত্রদের খুবই আন্তরিকতার সাথে সন্তানস্নেহে শিক্ষাপ্রদান করে থাকেন। অত্যান্ত যত্নসহকারে সাবধানে প্রতিটা বিষয়কে শুধুমাত্র মুখস্ত না করিয়ে, অন্তরে প্রেথিত করার জন্য বারংবার প্রচেষ্টাতেও কোন কুণ্ঠাবোধ করেন না। অনেক মনীষীই শিক্ষকদের জৈবিক পিতামাতাদের থেকে এগিয়ে রাখেন, কারন জৈবিক পিতামাতা শুধু জন্মদান করেন। আর শিক্ষকগন সেই শিশুদের সমাজ তথা পৃথিবীতে জীবনধারণ করার বিদ্যা রপ্ত করিয়ে, ব্যাক্তিত্ব গঠন তথা উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট রূপদানকরে, ভবিষ্যত কে সু-শিক্ষার আলোকে আলোকিত করে তোলেন। সুতরাং একজনও শিক্ষক ভুলে যাওয়া তো দুরস্থান, সামান্যতম উপেক্ষাও সুশীল সমাজের পক্ষে ভয়াবহ।

আমাদের সর্বক্ষন ও সর্বক্ষেত্রে শিক্ষকদের নিঃশর্ত তথা সার্বভৌম ভাবে আকুন্ঠ সম্মান প্রদর্শন করা উচিৎ। আমাদের পাশাপাশি, আমাদের অবিভাবকগন দের পক্ষ থেকেও শিক্ষকদের পুর্ন সম্মান দেখানো উচিৎ। কারন শিক্ষকেরা তাদের সম্পূর্ন জীবন কে, অপত্য বাৎসল্যে, ভালবাসার মোড়কে, অন্যের বাচ্চাদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে, ভালো মন্দের পার্থক্য নিরুপনের মাধ্যমে, সৎ প্রচেষ্টা কে দীর্ঘায়িত করার ক্রমঅনুপ্রেরনা যোগানের মাধ্যমে, ব্যার্থতার সময় পাসে থেকে উৎসাহ প্রদান করে, সাফল্যের অংশীদার হয়ে পরবর্তী সঠিক পদক্ষেপের সুপরামর্শ দান করে, ভবিষ্যৎ সমাজ কে সামাজিক ও আর্থিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে, সর্বপরি আমাদের জীবনের গুরুত্ব, সহজ ভাষায় আমাদেরই বোঝাতে, তাঁরা তাঁদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।

শিক্ষকেরা, শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে, তার সকল রকম মুসকিলে পাসে থেকে, একজন প্রকৃত বন্ধুর ভুমিকা পালন করেন, আবার তিনিই এই ধাঁধায় পরিপুর্ন জটিল পৃথিবীতে সঠিক পথের দিশা বাতলে দেন, বিভিন্ন মনিষীদের জীবনের নানা ঘটনাবলীর সু বিশ্লেষণ করে ও নিরন্তর ঘটে চলা দৈনন্দিন গুরুত্বপুর্ন ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা করে আমাদের পথপ্রদর্শন করে থাকেন। যারদ্বারা আমাদের অপরিমিত জ্ঞানের ভান্ডারকে প্রজ্ঞাপূর্ণ ভাবে পরিপুর্ন করে তুলতে পারি।

আজকের এই বিশেষ দিনটি একটি উপলক্ষ্য মাত্র। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ শুধু মাত্র আজকের দিন নয়, সারা জীবন ধরে শিক্ষকদের প্রতি পুর্ন আস্থাসহ তাঁদের সম্মানপ্রদর্শন করা, তাঁদের দেখানো পথ কে অনুসরণ করে চলে, সর্বপোরি তাঁদের আদেশ কে সসম্মানে গ্রহন করে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।
জয় হিন্দ।

(জন্মাষ্টমীর তালের বড়া খেতে খেতে)

উন্মাদীয় ভাষাতে দুষ্ট 

Saturday, 2 February 2013

সুখে থেকো...

তোমাকে ভালোবাসার কথা বলে
কোন লাভ নেই জানি।
তবুও দিনের পর দিন, মাসের পর মাস,
প্রতিটি সময়ে তোমাকে ভালবেসে
যেতে ইচ্ছে করে.....


উপেক্ষাকে উপভোগ করতে পারলে, আর
একাকিত্বকে সাথী বানাতে পারলে,
তার মতন সুখী আর কে!!
তোমায় সুখে থাকতে দেখেই আমার সুখ,
আমার কাছে ভালবাসা একমাত্রিক ও নিঃশর্ত।
সে তুমি আমায় যা ই ভাবো,
কুছ পরোয়া, এভাবেই রয়ে যাবো।


মাটির ঘষা লেগে পাথরও ক্ষয়,
তুমিও নিশ্চিত ক্ষয়বে,
আমি সেই দিনের অপেক্ষায়।
সুখে থেকো......

Thursday, 31 January 2013

উন্মাদ নামা ~ ৯

অনেক নারীই শুধুমাত্র দুটো পেটের ভাত আর লজ্জা নিবারণের কাপরের জন্য শয্যা সঙ্গীনি হতে রাজী হয়ে যায়।

এদের কেউ কেউ বারবনিতা হলেও, বাকিরা কিন্তু গৃহবধু।

Saturday, 19 January 2013

উন্মাদনামা ~ ০৮

যবে থেকে আমি রামায়ন মহাভারত বেদ কোরান বাইবেল ত্রিপিটক পড়া শুরু করেছিলাম, সেদিন থেকেই সাম্প্রদায়িক হয়ে গেছিলাম। আমার শিক্ষার মৌলবাদী করন ঘটেছিল ও ধর্মের রঙে রাঙা হয়ে গেছিল। এবার ভাবছি লাদেন, দাউদ, জর্জ বুস, হিটলার, কেশব বলিরাম, গোলওয়ালকর বা কাসভদের জীবনি পড়ে ধর্মনিরপেক্ষ হব। কেইবা চাইনা হোয়াইট কলারের জীবনযাত্রা? আপনিই বলুন..

কে কে সহপাঠী হতে ইছুক??