Saturday, 16 March 2013

উন্মাদ নামা ~ ১০



কিছু জিনিসের জীবনমুখি মানে


*******************************

প্রশংসা- নিঃস্বার্থ ভাবে সব্বার জন্যে করেও আপনি যেটা কোনোদিনও আশা করেননি


নিঃস্বার্থ- যে গুনটার জন্যে আপনাকে বারবার ঘা খেতে হয়


ঘা- যেটা অসুখ হওয়া সত্ত্বেও প্রেমিকাকে বলে বেশি আদর খাওয়ার সুযোগ থাকেনা


প্রেমিকা- যে স্বেচ্ছায় প্রাক্তন হলে সবচাইতে বেশি ভালোবাসা পায়


প্রাক্তন- জয় গোস্বামীর অন্যতম সেরা কবিতা


কবিতা- ইয়ে নাম্বার ওয়ানের প্রতিযোগীরা যেটা বলার মত করে গান গেয়ে থাকেন


গান- যেটার আদান প্রদান দিয়ে শতকরা নিরেনব্বুই ভাগ সম্পর্কের সুচনা ঘটে


সম্পর্ক- যেটা মেয়ে বন্ধুদের সামনে আপনার এখনও হয়নি আর ছেলে বন্ধুদের সামনে ইচ্ছেমত হারে বেড়ে চলেছে


ইচ্ছেমত- সিনেমার নায়করা মাধ্যকর্ষন নিয়ে যেভাবে খেলাধুলো করে থাকেন


খেলাধুলো- যেটায় আপনি চিরকাল ভালো


চিরকাল- যেই সময়টাই সেই শেষে আপনাকেই সবটা সামাল দিতে হয়


শেষে- যখন আপনার কথাই সত্যি বলে প্রমানিত হয়


প্রমানিত- নিজের বাড়ির পায়েস আর সিন্নির স্বাদই যে সবচাইতে বেশি ভালো


সিন্নি- যে খাবার জিভের আগে মাথায় ঠেকাতে হয়


মাথা- যেটা আপনার অকারনে কোনোদিনও গরম হয়নি


গরম- যেটা এবারের মত আর কোনোবার নাজেহাল করেনি


নাজেহাল- শুধু একটু ভালো থাকতে চেয়ে আপনাকে যা রোজ্ হতে হয়


ভালো- নিজের যেটা আপনি ছাড়া আর সবাই বোঝে


নিজের- যার পায়ের ওপর দাঁড়াতেই এত্ত স্ট্রাগল


স্ট্রাগল - যেটা করতে আপনি কক্ষনও ঘাবড়ে যান না


ঘাবড়ে- কল্পনায় মাস্তানদের আপনি যা দিয়ে থাকেন


মাস্তান- কলেজের যেটা ছিলাম বলে বউয়ের কাছে গল্প করতে হয়


গল্প- যেটার ছোট ফর্মের প্রতি আমি ভয়ংকর ভাবে বায়াসড


বায়াসড- নবনীতা দেবসেনের ব্যাপারে আমার মনের অবস্থান


মন- যেটা আছে বলেই কাদার থেকে বৃষ্টি টা আলাদা করে নেওয়া যায়


Thursday, 14 March 2013

উন্মাদোভিভাষন



শিক্ষক দিবস 
অষ্টমশ্রেনির এক ছাত্রের ভাবনায়


পাঠরতা শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও শিক্ষিকা মহাশয় গন, সম্মানীয় অন্যান্য পেশার বিশিষ্ট বিশিষ্টবর্গ, শিক্ষাবন্ধু ও শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিগন সহ আমার প্রিয় সহপাঠী (যারা একই সাথে ফেসবুক পড়ি) দের , প্রণাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ও কাঠ বেকারদের কষ্টে যষ্ঠিমধু হয়ে, আজকের এই মহান দিবসে, আমার ছোট্ট বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ জ্ঞাপন।

আজকের এই স্বপ্রতিভ চমৎকার উপস্থিতি ও সমাবেশের কারণ সম্বন্ধে আমরা সকলেই অবগত। আজ মহান শিক্ষক দিবস। সেটার সফল উদযাপন উপলক্ষে এবং আমাদের তথা জাতির ভবিষ্যত তৈরীর ভারাপন যাদের হস্তে অর্পিত, তাদের কঠোর প্রচেষ্টার প্রতি যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা জ্ঞাপন করার জন্য, তাঁদের প্রতি আমাদের কায়মনোবাক্যে সম্পূর্ন কৃতিত্ব প্রদানের উপলক্ষে এই আয়োজন।

প্রতি বছর সারা ভারতে ৫ ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারত প্রজাতন্ত্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও প্রখ্যাত কূটনীতিবিদ, ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর জন্মদিনের দিনটি তাঁর ইচ্ছানুসারে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয়।

শিক্ষার প্রসারে তীব্র আগ্রহী এই ক্ষনজন্মা মনীষী, যখন ১৯৬২ ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, তখন তাঁর ছাত্র, বন্ধু বান্ধব সহ নিকট আত্মীয়েরা, তাঁর জন্মদিবস ঘটা করে উদযাপন করার বায়না করলে-, তিনি বলেছিলেন, এই দিনটিকে তাঁর জন্মদিন হিসাবে পালন না করে “শিক্ষক দিবস” হিসাবে পালন করলে তিনি বেশী খুশী ও গর্বিত হবেন। সেই থেকেই ডাঃ রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনটিকেই “জাতীয় শিক্ষক দিবস” হিসাবে সারাদেশে পালন করা হয়।

আজ সমস্ত দেশ জুড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের সম্মান দিতে এই দিনটি স্মরণ বিভিন্নভাবে স্মরণ করে থাকেন। শিক্ষাবিনা জীবন অসম্পূর্ন ও পঙ্গু। তাই শিক্ষক আমাদের সমাজের মেরুদন্ড । তাঁরা শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন সহ সামাজিকতার প্রতিটি ধাপ কে, ছাত্র মননের অভ্যন্তরে এক ঠাস বুনট নির্মাণের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে একটা গোটা জাতিকে গঠন করে তোলেন। দেশের একজন আদর্শ নাগরিক হয়ে উঠতে সহায়তা করেন।

আমাদের প্রথম শিক্ষক নিশ্চই আমাদের প্রনম্য অবিভাবকগন। কিন্তু বৃহত্তর ধরিত্রির চারণ ভূমিতে সফলকাম একজন “মান ও হুশ” যুক্ত মানুষ হয়ে উঠতে গেলে বিদ্যালয়ের ভুমিকা অনস্বিকার্য। সেখান থেকেই শিক্ষকেরা তাঁদের জীবনব্রততে নতুন নতুন শিক্ষার্থীদের স্থান করে দেন। শুধু মাত্র নমষ্য শিক্ষকেরাই নন, বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার কাকুটির কাছ থেকেও আমরা পরিচ্ছন্নতার পাঠ রোজ শিখে চলি, তিনিও পক্ষান্তরে আমাদের সামাজিক শিক্ষক, তাঁদের জন্যও আমাদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাও সম্মান রইলো।

শিক্ষকেরা নিজ ছাত্রদের খুবই আন্তরিকতার সাথে সন্তানস্নেহে শিক্ষাপ্রদান করে থাকেন। অত্যান্ত যত্নসহকারে সাবধানে প্রতিটা বিষয়কে শুধুমাত্র মুখস্ত না করিয়ে, অন্তরে প্রেথিত করার জন্য বারংবার প্রচেষ্টাতেও কোন কুণ্ঠাবোধ করেন না। অনেক মনীষীই শিক্ষকদের জৈবিক পিতামাতাদের থেকে এগিয়ে রাখেন, কারন জৈবিক পিতামাতা শুধু জন্মদান করেন। আর শিক্ষকগন সেই শিশুদের সমাজ তথা পৃথিবীতে জীবনধারণ করার বিদ্যা রপ্ত করিয়ে, ব্যাক্তিত্ব গঠন তথা উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট রূপদানকরে, ভবিষ্যত কে সু-শিক্ষার আলোকে আলোকিত করে তোলেন। সুতরাং একজনও শিক্ষক ভুলে যাওয়া তো দুরস্থান, সামান্যতম উপেক্ষাও সুশীল সমাজের পক্ষে ভয়াবহ।

আমাদের সর্বক্ষন ও সর্বক্ষেত্রে শিক্ষকদের নিঃশর্ত তথা সার্বভৌম ভাবে আকুন্ঠ সম্মান প্রদর্শন করা উচিৎ। আমাদের পাশাপাশি, আমাদের অবিভাবকগন দের পক্ষ থেকেও শিক্ষকদের পুর্ন সম্মান দেখানো উচিৎ। কারন শিক্ষকেরা তাদের সম্পূর্ন জীবন কে, অপত্য বাৎসল্যে, ভালবাসার মোড়কে, অন্যের বাচ্চাদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে, ভালো মন্দের পার্থক্য নিরুপনের মাধ্যমে, সৎ প্রচেষ্টা কে দীর্ঘায়িত করার ক্রমঅনুপ্রেরনা যোগানের মাধ্যমে, ব্যার্থতার সময় পাসে থেকে উৎসাহ প্রদান করে, সাফল্যের অংশীদার হয়ে পরবর্তী সঠিক পদক্ষেপের সুপরামর্শ দান করে, ভবিষ্যৎ সমাজ কে সামাজিক ও আর্থিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে, সর্বপরি আমাদের জীবনের গুরুত্ব, সহজ ভাষায় আমাদেরই বোঝাতে, তাঁরা তাঁদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।

শিক্ষকেরা, শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে, তার সকল রকম মুসকিলে পাসে থেকে, একজন প্রকৃত বন্ধুর ভুমিকা পালন করেন, আবার তিনিই এই ধাঁধায় পরিপুর্ন জটিল পৃথিবীতে সঠিক পথের দিশা বাতলে দেন, বিভিন্ন মনিষীদের জীবনের নানা ঘটনাবলীর সু বিশ্লেষণ করে ও নিরন্তর ঘটে চলা দৈনন্দিন গুরুত্বপুর্ন ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা করে আমাদের পথপ্রদর্শন করে থাকেন। যারদ্বারা আমাদের অপরিমিত জ্ঞানের ভান্ডারকে প্রজ্ঞাপূর্ণ ভাবে পরিপুর্ন করে তুলতে পারি।

আজকের এই বিশেষ দিনটি একটি উপলক্ষ্য মাত্র। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ শুধু মাত্র আজকের দিন নয়, সারা জীবন ধরে শিক্ষকদের প্রতি পুর্ন আস্থাসহ তাঁদের সম্মানপ্রদর্শন করা, তাঁদের দেখানো পথ কে অনুসরণ করে চলে, সর্বপোরি তাঁদের আদেশ কে সসম্মানে গ্রহন করে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।
জয় হিন্দ।

(জন্মাষ্টমীর তালের বড়া খেতে খেতে)

উন্মাদীয় ভাষাতে দুষ্ট