ছবিঃ ইন্টারনেট
ফাগুনের আগুনে পুড়ে যাক জ্বলন্ত হৃদয়,
সেখান হতেই জন্ম নেবে, একটা ট্রাজিক প্রেমগাথা।
হয়তো বা জানবে না কেউ! সবার অলক্ষ্যে বাষ্প হবে চোখের জল ।
প্রকাশ্যে তোমাকে দেখার আতিশয্যে চোখ থেকে পায়ের সমস্ত রোম উত্তেজনায় শিহরণে খাড়া
হয়ে যাওয়া, হয়তো কেউই খেয়ালই করবেনা। হয়তো আনন্দাশ্রু লুকাতে চোখে থাকবে
সানগ্লাসের বিলাস।
আমি জানি,
আমি কাঁদছি, তবে তুমিও পাথর হয়ে গেছো
নিশ্চিত। তোমার উদাসীনতায় আমার উষ্ণ রক্ত শীতল জল হয়ে গেছে। আর পরিস্থিতির চাপ
নিশ্চই তোমার রক্তকে শুষ্ক বরফ বানিয়ে ছেরেছে।যার শীতলতা আমায় আরো অতলস্পর্ষী করে
তুলছে।
তাই যতনা নিজের জন্য কষ্ট হয়, তার চেয়ে ঢের গুন বেশী তোমার জন্য
"মায়া" হয়।
না পাওয়াটা আজকাল আর তেমন পীড়াদায়ক নয় আমারজন্য। আগুনে পাখির
ডানাতেই তো আগুন থাকে,
পালক পুড়ে যাবার প্রশ্নই নেই। আমি কচ্ছপের মতই যন্ত্রনাকে আমার
পিঠের বর্ম বানিয়েছি। শুধু ওই কুর্মের সেই বয়সটা চাই, যাতে
আরো আরো আরো... বেশি পুড়তে পারি তোমার স্খলিত বির্যের মত প্রেমানলে।
উফ !!! .... কি ভীষন সেই দহনজ্বালা!!
সাথে এক অপার্থিব তৃপ্তিকারক ও বটে।
ক'জনের ভাগ্যে এমন জীবন্ত তন্দুর জোটে?হৃদয় থেকে
নিংড়ানো বিন্দু বিন্দু রক্ত, অশ্রুরুপে নির্গত হয়ে আমার
শরীর তন্দুরে ঘৃতাহুতি স্বরুপ দিচ্ছে।
জানি সামনে অনাজা বিস্তীর্ন ভবিষ্যত, উত্তরমুখী
এবং নিরুত্তর।
জমাট অন্ধকার, তরল আলকাতরার মত।
তোমার হাতটা ধরতেই তো বেড়িয়েছিলাম। সে ছিল এক প্রলয়ের ক্ষন। তবে
সেই সকলই এখন ক্ষয়াটে স্মৃতি।
কিন্তু, অন্ধকার আর আমি লীন হয়ে গেছি।
সমার্থকই হবে হয়তো। আমার জন্মের ক্ষনে কি শৃগাল বা বায়স্পক্ষীর তান্ডব দেখা গেছিল?
নাকি অপদেবতাদের বিশেষ বরে আশির্বাদপ্রাপ্ত আমি? কর্পূরের যেমন জন্মই হয় উবে যাবার জন্য, আমারও
বোধহয় তেমনই কিছু একটা রয়েছে।
তাই ভবিষ্যত আর ভাবি না।
জানো,
আমার মনের পাড়ায় পূর্নিমার চাঁদ কোনদিনই আসেনি। পথ ভুলেও না।
কারন সংকীর্ন এও পথটা বড়ই রুক্ষ। পথটা যদি নারী হত, তাহলে
যৌবন কালে রজঃস্বলা হয়েওবা হয়ত পথটাকে পিচ্ছিল বানাতে ই পারতো, যে পথে চাদেরা আশাযাওয়া করতে পারতো। কিন্তু আমার মতই এ পথ মৃত।
যে আসত সে এক পিঙ্গল বর্ণের ঘষা তামার পয়সার মত, ------- অচল।
আচ্ছা কান্নাতে বেশি সুখ ? নাকি হাঁসিতে !? নাকি ঘৃনা আর প্রতিহিংশা তে?
জানো তো আমি দারুন একরোখা, আর স্বার্থপর, নিজে জ্বলছি, আগেও জ্বলব, কিন্তু এর ভাগ কাওকে দেবো না।
খুব শখ ছিল, তোমার বুকে মাথা রেখে তেপান্তরের মাঠে নিজেকে
সঁপে দিতে।
আমার আদুর শরীরটাকে তোমার বাহুবন্ধনিতে পিষ্ট করে, নিজেকে মিষ্টি যন্ত্রনা তো দেওয়া হল না। আমার নারীত্বের শাপমোচোনই ঘটলো
না। বয়েসের ভারে শরীর, চামরা-বুক সহ , সকলই হয়ত-বা ঝুলে পড়বে, কিন্তু আমার স্তনবৃন্ত
কোনদিনিই পরিস্ফুটিত হবে না। অক্ষত যোনীর মুহুর্মূহ অভিসন্তাপে আমি বিদ্ধ। শিল্পীর
পূর্নতা শৃষ্ট কর্মের উন্মোচনে। আমি ঈশ্বরের সৃষ্টি, কিন্তু
হতভাগ্যের মত অনাবৃতই রয়ে গেলাম। সলজ্জ নির্লজ্জতার অধরা মাধুরি, অধরাই রয়ে গেল।
আমার সকল গোপনীয়তা তো তোমার কাছে বলব বলেই, আজ
পর্যন্ত সেগুলো সবই গোপন।
আহ !!! ......
সে সবই গোপন রয়ে যাবে। যুগযুগান্তর, একদিন আমার সাথেই আবার
ইচ্ছা গুলো, আমার সকল গোপনীয়তার শেষ রেখাটি অবলুপ্ত হয়ে
যাবে।
বন্যতার সাধের কাঙালী ছিলাম ; নিতান্ত আটপৌরে সোহাগ টুকুও যে
অধরাই রয়ে গেল।
আমি কাকে বলব আমার সকল আবদার ? কোথায় অনুযোগ করবো?
আমার খুনসুটি কে সহ্য করবে?
নাহঃ। আমি মরবো না। কারন এমনভাবে বেচে থাকার চেয়ে মৃত্যু অনেক
অনেক বেশি সহজ।
----
আর সহজলভ্য বস্তুতে আমার কোনকালেই লোভ নেই।
আগে তোমার জন্য কবিতা লিখতাম,
আজ কাল কবিতা তোমায় অনুসরণ করেছে ।
আমার মনের পাড়ায় তাদের পদসঞ্চালনার শব্দ কানেই আসে না। কেবলই
নিঃস্তব্ধতার আর্তনাদ। হাহাকার করে বেরাচ্ছে কত না বলা কথার দল। যারা দলা পাকিয়ে
গলার কাছে মাঝে মাঝেই অবোরোধ করে।কান্না তো চোখে প্রকাশ পায়, কিন্তু
এর উৎস মূখ কোথায়? নাভির তলদেশ? নাকি
বাদিকের যেখানটা ধুকপুক করছে , সেখানটা?
আমি আজও সাজি, অত্যন্ত উগ্র সে কামিনী সাজ। আমি সাজি
মাঝরাত্রে, একাকি, নির্জনে,
প্রায়ান্ধকারে। নিজে নিজে দেখার জন্য। পিশাচসিদ্ধ যোগীনির মত
উন্মত্ত সে ভয়ঙ্কর সে সাজ।
হ্যাঁ,
তোমার কথা ভেবেই সাজি। আর মনকে বলি, দেখ
নির্লজ্জ, মনটাকে যদি এইভাবে সাজাতে পারতিস, আজকে এই খালি বাসরে নি:সঙ্গ হুতাস যাপন করতে হতো না।
সে থাকতো তোরই কাছে।
কিন্তু আমি যে জানি অন্য কথা,
এ ভুল আমার নয়, ভুল সময়ের। হ্যা ভুল
সময়ে জন্ময় আমাকে আজ মীরা বানিয়েছে।
জীবনের চক্রবুহ্যে সময় কে একদিন কি নাগালে পাবো না !?
সমস্ত স্পৃহা, লোলুপতা মিটিয়ে নেব
মুহুর্তে।
প্রজাপতি আজ বোধহয় শুয়ো থেকে জন্মায় না। প্রজাপতির হতে চাই আমি, ওর শুড়
আছে, কিন্তু আমি শুঁয়ো, আমার ঠোট
আছে, আর আছে ওই ঠোঁটে অজস্র জ্বলাপোড়া, নিকরা ও হওয়ার তীব্র আকাঙ্খা।
জানো,
আমি সুদুরেরও পিয়াসী, --- এ'টা কবির কল্পনা নয়। না কল্পনা নয়।
এ আমার আরশি। আমার নিজের জগত।
জানো,
ভালোবাসাতে আমি আজ কানায় কানায় পূর্ণ।
আমার দরকার ভালো বাঁসা।
বাবুই হলে নিজেই বুনে নিতুম। তোমার চওড়া কাধে ঘামের গন্ধে ম ম
করে পাগল করে দেওয়া রোমশ বুকেই তো আমি বাসা বানাতে চেয়েছিলাম।
কেউ কেউ আছে এক মুহুর্তের ভালবাসার ভারে সারাজীবন কাটিয়ে দেয় ; ওটাই তার
বাঁচার রসদ।
আর,
কিছুজন সারাজীবন এক মুহুর্তের ভালবাসার জন্য চাতক হয়ে থাকে।
কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয় না।
আমি অবশ্যই প্রথম দলে। পেতে আর কোন কিছুই বাকি নেই। কিন্তু আমি
যে, কাম-ক্রোধ-লালসা-অহঙ্কার-মদ-মাৎসর্য এই ছটি রিপু ধাতু
দিয়েই গড়া,--তোমারই মত। তাই অল্পেতে আমার তৃষ্ণা কেমনে
মিটবে? আমার জঠরাগ্নি নাহয় শস্য দিয়ে ভরবে, আমার মন শরীর কে ভরাবো কি দিয়ে, তারা চরম
ক্ষুধার্ত, মন্বন্তরের অভিযাত্রী সে।
আমি আকণ্ঠমগ্ন থাকতে চাই, তোমার উষ্ণ প্রেম গরলে।
আমি জ্বলতে চাই। আগ্নেয় লাভা পানের মধ্যে যে দগ্ধ সুখ, তা তোমরা
কেমনে জানবে !!?
জানি,
আমি শীঘ্রই বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়ে যাবো।
কেউই জানবে না আমার অস্তিত্ব ছিল বলে।
জানবে শুধু তুমি, তোমার প্রতিটি রোম।
--------
শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত।
শুধু এটাই জেনে রেখো, আমি তোমায় এঁটো করেছি। তোমাকে যে
ই ভোগ করুক, সেটা আমার উচ্ছিষ্ট বই আর কিছু নয়।
---------
এটাই আমার তৃপ্তি, এটাই স্বার্থকতা।।।
#উন্মাদ_হার্মাদ