সময় চর্চা
দ্বিতীয় খন্ড
হ্যাঁ, ডাক আমার ও এসেছিল, প্রকৃতির ডাকের কথা আমরা জানি, কারো কারোর জন্য, এ তার থেকেও মারাত্বক। আধুনিক আফিম যদি ফেসবুক হয়, তবে এ খেলা নিশ্চয় পুরাতন রেশের খেলা কেও হার মানাবে।
কামান বুলাওয়া আয়া হ্যায়।
সারাদিন মনের আনাছে কানাচে সেই ভোট বাদ্যি, রেজাল্টের অপেক্ষা। সত্যি
বলছি, স্কুলের সময় ও এত্তো টা উত্তেজনা অনুভব করিনি, বা সেই সময় এই
অনুভুতিটা এত প্রবল ছিল না। বুথ ফেরত সমিক্ষা ১ দিন দেখে, পরদিন সন্ধে ওই
"খাড়া বরী থোর ", ক্লাব আর বেচারা ক্যারামবোর্ডের উপরে স্ট্রাইকার দিয়ে,
সময়কে শাষনে রাখার চেষ্টা।
কিন্তু বিপ্লব?!
তার ও একটা
মৃদু আশা, ইদের চাঁদের মত দেখা দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান দা, বাড়িতে মা বা বউ,
কাউকে সামলাতে না পেরে, তিনি বিপ্লবের পথে, আমাদের শহরে অস্থায়ি আস্তানার
খোঁজে। প্রথম কয়েকদিন হোটেলে ঈ কাটিয়েছে। ঘড় পাইনি। আসলে আমরা মানে
বাঙ্গালিরা, প্রায় সকলেই কমিউনিস্ট তো, (মমতা ব্যানার্জী ও নিজেকে কমিউনিষ্ট বলেন) তাই মেনে ও চলি বাস্তব জীবনে,
ইশ্বরের অস্তিত্ব মানি না, কিন্তু হাতে লাল সুতো বা মাদুলি ধারন করি।
খানিকটা সেই রকম ভাবেই কোন ভাল(!) পাড়ায় রহমান দা যথারিতি ঘর পেলেন না।
এখানে ভালো পাড়া মানে, বাঙ্গালী পাড়া, কলিকাতায় তার মানে হিন্দু পাড়া,
মুসলমান পল্লি গুলোতে হিন্দি ভাষার চল, রহমান গিন্নি বা তার ছানাপোনা দের
চুরান্ত সমস্যা। তারা তো বাঙ্গালি। তাতে কি, জাতে তো মচুমান। ঘর ভাড়া-
নেহি মিলা। অগত্যা, আমাদের দরবারে।
এখানেই ওই বিপ্লবের শুরু।
ঘোষ দা নাকি ঘোর কমিউনিস্ট, একবার নাকি স্বর্গীয় জ্যোতি বসুর সাথে চা ও
না কি খেয়েছিলেন বলে, ঘোষজা মহিলা মহলে গল্প করেছিলান। এহেন ঘোষজাও, যিনি
ঘোষ বাবুর মত ধর্ম মানেন না, মনে প্রানে পতির পূণ্যেই সতির পূণ্য, এই আপ্ত
বাক্যটিই মানেন। উনি প্রকাশ্যেই না করলেন, বল্লেন ধর্ম না মানলে কি, সমাজ
বলে তো কিছু একটা আছে, কাল বাদ পরশু বড় খোকার সমন্ধ আসবে, নতুন কুটুমকে মুখ
দেখাবো কি করে, তারা তো আমার মত এতটা " আধুনিক " না ও হতে পারে।
সুতরাং, সমস্যা প্রায় সব পাড়ায় এক, কিন্তু মাত্র দেড় দিনেই তার সমাধান ও
হয়ে গেল। সান্যাল দের বাড়ি, বুড়ো বুড়ি থাকে, ছেলে বিদেশ না কোথায়, তাদের ও
একটা হিল্লে হল, সর্বক্ষনের কিছু সাথি পাওয়া গেল। কথাটা আধুনিকমনস্ক ঘোষ
বৌদি কে বলতে, " উনাদের বয়স হয়েছে, ওতটা সামাজিক নন, কে থাকলো কে গেল,
তাতে কি এসে যায় "।
আমার মাথা ঘুরে যাইনি, কিন্তু দাঁতের ফাঁকে মাংসের টুকরোর মত, মনের কোনে একটা খচকা জুড়ে গেল।
আধুনিকমনস্কতার নতুন স্বংগা পাওয়ার ঠেলায়।
.........চলবে