Tuesday, 25 November 2014

সময়চর্চা ~ ২

সময় চর্চা 

দ্বিতীয় খন্ড


হ্যাঁ, ডাক আমার ও এসেছিল, প্রকৃতির ডাকের কথা আমরা জানি, কারো কারোর জন্য, এ তার থেকেও মারাত্বক। আধুনিক আফিম যদি ফেসবুক হয়, তবে এ খেলা নিশ্চয় পুরাতন রেশের খেলা কেও হার মানাবে।

কামান বুলাওয়া আয়া হ্যায়।


সারাদিন মনের আনাছে কানাচে সেই ভোট বাদ্যি, রেজাল্টের অপেক্ষা। সত্যি বলছি, স্কুলের সময় ও এত্তো টা উত্তেজনা অনুভব করিনি, বা সেই সময় এই অনুভুতিটা এত প্রবল ছিল না। বুথ ফেরত সমিক্ষা ১ দিন দেখে, পরদিন সন্ধে ওই "খাড়া বরী থোর ", ক্লাব আর বেচারা ক্যারামবোর্ডের উপরে স্ট্রাইকার দিয়ে, সময়কে শাষনে রাখার চেষ্টা।



কিন্তু বিপ্লব?!



তার ও একটা মৃদু আশা, ইদের চাঁদের মত দেখা দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান দা, বাড়িতে মা বা বউ, কাউকে সামলাতে না পেরে, তিনি বিপ্লবের পথে, আমাদের শহরে অস্থায়ি আস্তানার খোঁজে। প্রথম কয়েকদিন হোটেলে ঈ কাটিয়েছে। ঘড় পাইনি। আসলে আমরা মানে বাঙ্গালিরা, প্রায় সকলেই কমিউনিস্ট তো, (মমতা ব্যানার্জী ও নিজেকে কমিউনিষ্ট বলেন) তাই মেনে ও চলি বাস্তব জীবনে, ইশ্বরের অস্তিত্ব মানি না, কিন্তু হাতে লাল সুতো বা মাদুলি ধারন করি। খানিকটা সেই রকম ভাবেই কোন ভাল(!) পাড়ায় রহমান দা যথারিতি ঘর পেলেন না।



এখানে ভালো পাড়া মানে, বাঙ্গালী পাড়া, কলিকাতায় তার মানে হিন্দু পাড়া, মুসলমান পল্লি গুলোতে হিন্দি ভাষার চল, রহমান গিন্নি বা তার ছানাপোনা দের চুরান্ত সমস্যা। তারা তো বাঙ্গালি। তাতে কি, জাতে তো মচুমান। ঘর ভাড়া- নেহি মিলা। অগত্যা, আমাদের দরবারে।



এখানেই ওই বিপ্লবের শুরু।



ঘোষ দা নাকি ঘোর কমিউনিস্ট, একবার নাকি স্বর্গীয় জ্যোতি বসুর সাথে চা ও না কি খেয়েছিলেন বলে, ঘোষজা মহিলা মহলে গল্প করেছিলান। এহেন ঘোষজাও, যিনি ঘোষ বাবুর মত ধর্ম মানেন না, মনে প্রানে পতির পূণ্যেই সতির পূণ্য, এই আপ্ত বাক্যটিই মানেন। উনি প্রকাশ্যেই না করলেন, বল্লেন ধর্ম না মানলে কি, সমাজ বলে তো কিছু একটা আছে, কাল বাদ পরশু বড় খোকার সমন্ধ আসবে, নতুন কুটুমকে মুখ দেখাবো কি করে, তারা তো আমার মত এতটা " আধুনিক " না ও হতে পারে।



সুতরাং, সমস্যা প্রায় সব পাড়ায় এক, কিন্তু মাত্র দেড় দিনেই তার সমাধান ও হয়ে গেল। সান্যাল দের বাড়ি, বুড়ো বুড়ি থাকে, ছেলে বিদেশ না কোথায়, তাদের ও একটা হিল্লে হল, সর্বক্ষনের কিছু সাথি পাওয়া গেল। কথাটা আধুনিকমনস্ক ঘোষ বৌদি কে বলতে, " উনাদের বয়স হয়েছে, ওতটা সামাজিক নন, কে থাকলো কে গেল, তাতে কি এসে যায় "।



আমার মাথা ঘুরে যাইনি, কিন্তু দাঁতের ফাঁকে মাংসের টুকরোর মত, মনের কোনে একটা খচকা জুড়ে গেল।



আধুনিকমনস্কতার নতুন স্বংগা পাওয়ার ঠেলায়।


.........চলবে

Saturday, 15 November 2014

চন্দ্রাহতের মন্ত্রনা

বুদ্ধিজীবি চেনার ঘরোয়া উপায়



আপনি নিশ্চই একজন আম পাবলিক। সকালে বাচ্চার জন্য দুধ আনা থেকে, অফিস ফিরতির সময় সস্তায় সব্জি খরিদের ধান্দায় থাকা মা-মাটি-মানুষ। সর্দির পোঁটা প্যান্টেই পোঁছেন। শ্বশুর বাড়িতে শালীর কাছে মর্যাদা নেই, মিষ্টির প্যাকেট ছারা উৎকোচে কিচ্ছু পান নি। সিগারেটের প্যাকেটে একআধটা সিগারেট ছারা বাকিটা বিড়ি দিয়ে ঠাসা থাকে। রঙ্গীন জাঙ্গিয়া পরেন। আর আজও বউকে লুকিয়ে নীল ছবি দেখেন।

তাহলে আমারই স্বগোত্রীয়। কিলিয়ে পাকানো ইঁচড় সদৃশ আম। তাহলে আপনার দুরদৃষ্টি নেই, বিশ্বাস না হলে মনে করুন, কতবারই তো মনিকা বৌদির দিকে এক্স-রে দৃষ্টি দিয়ে দেখেছেন, অবিন্যস্ত শ্রীফলের বিভাজিকা ছারা আর কি ই বা দেখেছেন। তাহলে বুদ্ধিজীবি কভাবে চিনবেন!! না হতাশ হবেন না। সামান্য কিছু টোটকা, দেখুন এপ্লাই করতে পারেনন কি না......

প্রথমে গ্যাদারিং থেকে, হনু ও জ্ঞানী টাইপের ব্যাক্তি গুলোকে শর্টলিষ্ট করুন। বেশি না জনা দশেক।তার জন্য সেধো পিরিত জমানোর চেষ্টা করুন। তবে সাবধানে, ওই দলে সত্যিকারের বুদ্ধিজীবি থেকে থাকলে, আপনি নিজেকে ঋতুবতী হিসাবে আবিষ্কার করে ফেলতে পারেন। সে যাই হোক....

এর পর তাদের আপনার বাড়িতে নিমন্ত্রন করুন। এবং চা জলখাবারের সাথে বিগবসের রাধে মা ও বুর্জ খলিফার প্রসঙ্গ উত্থাপন করুন। সরি ওটা মিয়া খলিফা, যদিও বুর্জ বলা চলে, তবে ওটা উনি লেহন ও ধারন করেন। এতে হনু ও জ্ঞানীরা চরম খুশি হবেন। কারন ওনারা ফ্রি খাবার ও মৌন যৌনতা চরম এনজয় করেন। আপনি সমাজসেবী হিসাবে আখ্যায়িত হবেন।

এবার আপনার পালা। একে একে ওই জ্ঞানীহনু ব্যাক্তিদের কাছে যান, এক বা একাধিক কম্পাউন্ডার এর সহযোগিতায় উনাদের দুই পায়ের সঙ্গম স্থলে সম্মুখ প্রান্তে, সজোরে আঘাত করুন। অবশ্যই সকল ইন্দ্রিয় দু কাঠি এক্সট্রা সজাগ রেখে। এবার নিরিক্ষনের পালা, নোট করুন।

যিনি আঘাত খেয়ে, উররে স্লা... বোক্কা*দা, হাদা হাদা.... ওটা হাদা হবে। বলে আপনাকে মাঘের বর্ষার মত খিস্তিবানে বিশ্রি ভাবে জবজবে করে ভিজিয়ে দেবেন,.....

নাহ উনি আমসত্ব পাবলিক। মানে অনেক আম মানুষের অভিজ্ঞতাতে পুষ্ট। বুদ্ধিজীবি নন। অনেকটা উকিল আর মোক্তারের ফারাকের মত। কারন ওনার অন্ডকোষ আছে।আর ওখানে লাগলে ব্যাথা লাগে, ওনার ও লেগেছে। উনি কখনই বুদ্ধিজীবি নন।

এবার যদি কেও ওই আঘাত খেয়ে মুখটা ফ্রিজেরাখা ন্যাতানো পিৎজার মত করে জ্যোতি বসু টাইপের হাঁসি দিয়ে বলবেন...


" কৃপয়া প্রতিক্সা কি জিয়ে, আপ পঙতিমে হ্যায়" এর পর ৩০-৪০ সেকেন্ড পর, পুরো ঘর টা মনমোহক খুশবুতে ভরে উঠবে, খানিক পর আপনি ওই আঘাত ক্ষেত্রের অকুস্থল থেকে একটা তাজা ওমলেট আবিষ্কার করবেন।

এখনো ধরতে পারলেন না তো!!! হে হে হে... উনিই বুদ্ধিজীবি। ওনাদের আন্ডাকোষ থাকে। ঐশ্বরিক দান।বিজ্ঞানের নিয়মে আঘাতের ফলে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছিল। আর উত্তাপে আন্ডা ভাজা হয়ে গেছে। যদিও হিংসুটেরা বলবেন ওটা বয়েল আন্ডা হলো না কেন! ইত্যাদি ইত্যাদি। কান দেবেন না। যাক আপনি এবার বীর দর্পে এগিয়ে বাংলার অন্যতম প্রতীক হিসাবে গনিত হবেন।

এখন ভাগ্য সুপ্রশন্ন থাকলে তবেই এই দৃশ্য অবলোকন করতে সমর্থ হবেন। নতুবা খিস্তিই খাবেন।

বিধিসম্মত সতর্কীকরণ: বাচ্চা বা বিরোধীদলের লোকেরা এটার প্রচেষ্টা করবেন না। বঙ্গশ্রী তো মিলবেই না উপরন্তু কুণালধাম অনিবার্য। আর শাষক দলের হলে, নিদেনপক্ষে ইশকুল পরিচালন কমিটির সেক্রেটারি পদ বাঁধা। সাজা হলেও বড়জোর মদনধাম। আর যারা গবেষনামূলক ভাবে এটা করবেন, তাঁরা যেন অবশ্যই প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয়ের হন।

###উন্মাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। গুজবে কান দেবেন না। কারন এটা শাষকদলের এথিক্সের মতন, বাস্তবে যাহার উপস্থিতি নেই। শুধুই অভিজ্ঞানমূলক, ফলিতবিদ্যায় প্রমানিত নয়।

১৫-১১-২০১৪

Saturday, 8 November 2014

তিস্তা পাড়ের প্রেম


তিস্তা পাড়ের প্রেম



শ্রেয়সী, কত দিন তোকে এই নামে ডাকিনি আমি, 
যদিও তুই ওই ডাকে দিসনি কভু সারা, 
হয়তবা তুই জানিসই না, এমনতর নামের হদিশ;
কিম্বা চিনিসিই না আমায়, যে তোর প্রেমে পাগলপারা।

সেই কবে ভোরের আলোয় দেখেছিনু তোরে,
এলিয়ে বেনী স্নানের ঘোরে, 
তিস্তানদীর পাড়।
চুইয়ে পরা রুপের ছটায় একটু একটু করে,
সেধিয়ে গেলাম অযাযিতই, তোর মনরেই দোরে,
শ্রেয়সী! তুই কিন্তু আমার।

তুই ফুলের সাথে খেলেছিলি, গেয়ে পাখির সাথে গান,
প্রজাপতির রঙিন ডানায় ভাবনা গুলো এঁকে,
লাজে রাঙা উদিত রবি, দেখে ভোরের বেলার স্নান;
সেদিন হতেই শ্রেয়সী নাম দিলেম আমি রেখে।

অনেক খুঁজেও আরেকটি বার পেলাম না তোর দেখা,
আয় দেখে যা, তোকে ছারা কতটা আমি একা।
নিটোল শরীর, ভরা যৌবন, মায়াভরা চোখ টানা
নিঝুম পাহাড়? নিঝুম বনে? কি তোর ঠিকানা!
নিঝুম মনের প্রেম-উন্মাদ দেবেই সেথায় হানা।
শ্রেয়সী, আমার করিসনে আজ মানা। 

উন্মাদ হার্মাদ
08/11/2014