Sunday, 10 September 2017

।। ইচ্ছা ।।

ইচ্ছের শেষ নেই।
শরীর থাকাটা বোধকরি সবচেয়ে বড় বাঁধা ইচ্ছার। শরীরের কত শত নিষেধ - আর মন; সে তো বাঁধনহারা। শরীরকে মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে মনই আসলে সব খোরাক মেটায়।
শরীরের ভক্তিবোধ আছে? পাপবোধ? ক্রোধ, লোভ, লালসা, প্রবৃত্তি কিচ্ছু নেই শুধু আছে ক্ষুধা আর কামের ইন্দ্রিয়গত প্রয়োগ। আর তাতেই অসুখের লক্ষণ ফুটে বেরর হয়। নতুবা মনে মনে কতইনা ইচ্ছা জাগে, কে তার পাপ পুণ্যের হিসাব রাখে! লেখাজোখাই বা কোথায়! মন থেকে মনান্তরে চট করে চলে গেলেই হল, আর চিহ্নটি কিছু রইলনা। শরীর ধরা পরে যায়, মনের তৃষ্ণা মেটাতে মেটাতে সে ক্রমে শিথিল হয়, ও বার্ধক্য গ্রাস করে, মন তখনও সতেজ। খ্যাতি, কুখ্যাতি ছড়িয়ে কুড়িয়ে বংশধর ও বংশবদ দের স্বার্থ সুরক্ষিত করার আমৃত্যু প্র‍্যয়াস।
ইচ্ছার বশবর্তী আমরা, সাধারন মানুষ।
ষড় রিপুর বাস মনে কিন্তু পঞ্চইন্দ্রিয়কে এই মন শস্ত্রভৃৎ এর ন্যায় ছুটিয়ে নিয়ে বেড়ায়। সাধু? তিনি নির্মোহ? মোটেই নয়, তিনিও মহামুক্তির মোহে আচ্ছন্ন, ত্যাগের মোহে তাঁর ইন্দ্রিয় অবলুপ্তির পথে। মহানির্বাণের নেশা তার সমস্ত ইচ্ছা জুড়ে। মোক্ষের লোভ থেকে মুক্তি নেই।
ইচ্ছার বশবর্তী সাধুসকলও।
নাস্তিক, অনেকটা পড়াশোনা না করলে হওয়া যায়না। বিশ্বজনীন মতবাদকে নাৎস করা স্বপ্ল বুদ্ধির কর্ম নয়। নিজেকে গোষ্ঠীর ভাবাদর্শের চেয়েও অধিকতর বিচক্ষণ প্রমানের ইচ্ছা আচ্ছন্ন করে অন্যান্য দৃষ্টিপট বদ্ধ করে দেয়। যুক্তি যখন বিশ্লেষণ করার করার ক্ষমতা হারায় নিষিক্ত ডিম্বানুরর অপত্যের লিঙ্গ কে নির্ধারণ করে! তখন প্রকৃতির দারস্থ হয়। ইচ্ছার মৃত্যু ঘটেনা, পটপরিবর্তন ঘটে দ্রুত।
ইচ্ছার অধীনে নাস্তিককুলও।
ধার্মিক, ও ধর্মান্ধ। এখানেও ইচ্ছাশক্তিই প্রভু। তবে প্রেক্ষিতটা আলাদা। নিজের যাবতীত ইচ্ছে অন্যের নিয়ন্ত্রণে। সবই তাঁর ইচ্ছা।
ইচ্ছার নাগপাশে ধর্ম বিশ্বাসী দল।
বেহায়ারও হায়া আছে। শালীনতার সংজ্ঞা বদলে যায় ইচ্ছার সাথে সাথে, নিজস্ত্রী পরস্ত্রী ভিন্ন দর্শন। ইচ্ছে দুটোতেই প্রায় একই, স্বিকার করি বা না করি।
আমার ভীষন ইচ্ছে হয়, মরে যেতে। আর মৃত মানুষের ইচ্ছার রঙ নিজে উপলব্ধি করা।
ভাবনা আমাদের পৃথক করলেও ইচ্ছাগত ভাবে আমরা এক পংক্তিতে বাঁধা, যেমন মৃত্যুতে।
প্রথমটাতে বিকল্প থাকলেও দ্বিতীয়টা অজানা। ইচ্ছের মৃত্যু বা ইচ্ছেমৃত্যু হলেও মৃত্যুর ইচ্ছে কি হয় কারো?

No comments:

Post a Comment