Sunday, 31 March 2019

।। স্থবির কুমন ।।


Kabir Suman তথা স্থবির কুমন নামের একটা অদ্ভুত মানব সদৃশ্য কীট দিব্যি বেঁচে বর্তে আছে। তবে মুখ দিয়ে যখন বলে ও কলম দিয়ে যা লেখে সবটাই নর্দমার পাঁক। ভীমরতি কাকে বলে এই নিকৃষ্ট ইতরটাকে দেখলেই বোঝা যায়। স্বার্থের জন্য করেনি এমন কাজ জীবনে নেই। CPM নাম উচ্চারণ করলেই মালটার অর্গাজম শুরু হয় এই ভাম বয়েসেও। চারিত্রিক গড়নে শুয়োর প্রজাতিকেও জোর কম্পিটিশনে ফেলে দিয়েছে, কে বেশি পাশবিক।
এই বিকৃতমস্তিষ্ক "মাল" গুলো এখনও মুখ দিয়ে হেগে চলে। এর মুখটা দেখলেই অযাত্রা, সারাক্ষণ ধান্দাবাজি, আর কিভাবে কামাবে তার জন্য ছটপটানি। ক্ষমতার লোভ দেখালে যে কারো পোঁদ চেঁটে দেবে। ছিপিএম ছিপিএম জুজু দেখিয়ে নিজের জীবনে ক্ষমতা অর্থ সবই তো বাগিয়েছেন। এখন কি চোখে ঠুলি? নাকি ৭৫-২৫ এর ভাগা পাবার শখ?
ভাগাড়ের শকুন হয়ে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে। ঘৃণ্য মালটাকে সামাজিক ভাবে বয়কট করুন, জীবানুতে কিলবিল করছে। কখনও সুযোগ পেলে মুখে কালি মাখিয়ে আমার চপ্পলের একটা থাপ্পর মারতাম। হ্যাঁ, একটিই চপ্পলের চাঁটি, ওটাই যথেষ্ট, কারন বোধ এই বয়সে আর জাগবেনা। অন্তত দুষিত অন্তরে একটু ভাল কিছু থাকত মৃত্যুর আগে। তবে আপনারা সহজে মরবেননা, প্রচুর রোগ শোক এখনও বাকি। তার আগে হয়ত বিজেপিতে যাওয়াটা বাকি।
লড়াই যদি কিছু করে থাকে সেটা তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ব্যানার্জী, সেটা ঠিক বা ভুল, আমার নীতির পরিপন্থী হোক বা অনুপন্থী, মার যদি কোথাও খেয়ে থাকেন সেটা নিচু তলার কর্মীরা আর মমতা ব্যানার্জী নিজে। আপনারা শুধু মধু খেয়েছেন, মূর্তিমান শয়তান।
গ্রাম বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কি একটা জ্ঞান দিয়েছে সদ্য। বহু বাপের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে জন্ম না হলে এমন কথা পোঁদ দিয়েও বলতে পারেনা কেউ। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক দেয় এই ফেজ টুপি পরা ভেকধারী মুসলমান কিছু জানে? এ নাকি জনপ্রতিনিধি হয়েছিল- মমতা ব্যানার্জীর কন্যা শ্রী, সাইকেলশ্রী বালাশ্রী ইত্যাদি কি প্রাইভেট স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য গাম্বাট?
কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা যে চাকরিতে দুর্নীতি করে ঢুকেছে ওটাও কি CPM এর কারনে? কানের গোঁড়ায় ঠাস ঠাস করে পরেনি সম্ভবত বহুদিন। ওটার অভাব পরেছে। বাঞ্চোৎ শ্রেনির প্রতিনিধিদের সর্দার।
বলছি অনেক দিন ধরে তো চুঁষলেন, আর কি পাওয়া বাকি? বিষ তো খাবেননা, শুধু দাও দাও আর দাও। তবে আমরা ভাগ্যবান, আমরা হারামি দেখিনি আপনাকে দেখেছি।
ছ্যাঃ

Friday, 29 March 2019

।। অনশনঃ মাদ্রাসা কমিশন ।।




উপরের ছবিটা অনশনে বসা মাদ্রাসা কমিশনের পরিক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রীদের।
যথারীতি এনাদের চাকরিও উন্নয়নে আত্মসাৎ করেছে। স্বভাবতই এনারা পথে বসেছেন।
তৃণমূল দল যদি আপনি করেন তাহিলে চুরির রাষ্ট্রীয় অধিকার আপনার রয়েছে। বাড়ি গাড়ি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ফরেন ট্রিপ সহ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সব পাবেন। কালীঘাটে ভাগা পৌছে দিলে। এটাই একমাত্র পেশা এই বাংলাতে, বিশ্ববাংলা স্বিকৃত। বাংলার যাবতীয় কুচো থেকে বড় চীর ডাকাতগুলোকে এখানে এক ছাতার তলাতে পেয়ে যাবেন, যাদের পাবেননা তারা প্রাক্তন তৃণমূল মুকুলের আস্তানাতে পাবেন।
নতুন করে বসা মাদ্রাসা কমিশনের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য সাধারন মানুষ খুব বেশি উদ্বেলিত হবেনা বলেই আমার বিশ্বাস।
কারন-
এরা কারা?
এরা তারা যারা এর আগে ও এর পরে কখনও কারো জন্য প্রতিবাদ করেছে বা করবে কিনা কেউ জানেনা। এসেছে শুধু মাত্র নিজের চাকরি টুকু হাসিল করতে। চাকরি পেয়ে গেলেই আজকের শিক্ষক পেশার সাথে যুক্ত যে চাকুরীজিবি গুলো রয়েছেন এরাও তাদেরই দলভুক্ত হয়ে যাবে।

এরা ফেসবুক করবে, কবিতা লিখবে, ভ্রমণের ছবি দেবে, পরিবার পরিজন নিয়ে এতটাই ব্যাস্ত হয়ে পরবে যে আর কেউ এদের মত অনাচারের শিকার হল কিনা জানার ফুরসৎই পাবেনা। এরা মানুষ থেকে উইপোকা বা মৌমাছি হয়ে যাবে।
তাই আমি বা আপনি যারা রোজ দিন আনি দিন খাই কেন যাব?
এই প্রশ্নের পরও আমরা যাব, কারন আমরা যদি পাশে না যায় তাহলে ওদের সাথে আমাদের ফারাকটুকু থাকবেনা। নতুবা কবীর সুমনের মত শুয়োরের বাচ্চাদের মত বলতে হবে- শিক্ষক পেশা রাষ্ট্রের কাছে বোঝা।
আমরা ভাগ্যবান আমরা অধিকাংশ জনই আজকের দিনে শিক্ষক নই, কবীর সুমনও। আমরা অনেকেই যারা শিক্ষক নই তথা বিবেক বেঁচে আছে তারা নিজের লাভের কথা না ভেবে অন্যের সাহায্যে হাত বাড়াই।
কারন আমরাও বিপদে অন্যের বা সহ নাগরিকের সহযোগিতা আশা করি। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি নিজেই এমন অনেক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার জন্যই বেঁচে বর্তে আছি।
এদের হয়ে কিছু বলা বা করার জন্য মন চাইনা। সামান্য ফোঁপা প্রতিশ্রুতিতে এরা ভুলে যাবে। ঠিক যখন সমবেত আবেগ ও ক্ষোভ- জিঘাংসা হয়ে শাসকের স্বৈরাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরব পরব, ঠিক তখনই রাষ্ট্র ভুক্ত সারমেয়র সামনে হাড়ের টুকরো ফেলে দিলে - পড়ুন ৩-৪ জন সেট হয়ে গিয়ে বাকিদের সহ সহযোগী সহনাগরিকের যাবতীয় সকল কিছু তাচ্ছিল্য করে কেন্নোর মত গুটিয়ে যায়।
মুখ্যমন্ত্রী চাঁদ সওদাগরের মত বাঁহাতে নৈবদ্য দিয়ে, বুকে তৃণমুলের ব্যাচ লাগিয়ে এসে, অনশনকারীদের তীব্র উপেক্ষা করে সাংবাদিক সম্মেলন ক্যামেরাতে ছবি তুলে চলে গেলে ওটাই পরম পাওয়া।, অন্য রাজনৈতিক দল গেলেই নিষিদ্ধ কিছু এসে গেছে ভাব করবে।
আপনারা একা ওনাকে আনতে পারেননি বন্ধুরা, সমাজের বৃহত্তর একটা অংশ নিয়মিত ওনার মাতৃময়ী সততার মুর্তিতে ঘৃণার কালিমা লেপন করছিল নিয়মিত। আপনারা ভাবলেন আপনারাই দেব- পথ, রথ, মুর্তী সবাই তাই ভাবল। অন্তর্জামী কি ভাবল সেই খবর রাখলেননা-
২৯ দিনের রণক্লান্ত সৈনিকেরা আবার টিউশনির পুরাতন অভ্যাসে ফিরে যাবেন, অনশনের গল্প মুখে মুখে ফিরবে। কিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ হয়েছিল।
শুধু যেটা বলবেনা- এই মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই যাবতীয় শুণ্যপদ হাপিস হয়েছে। নতুন করে আপডেট হয়না ওনারই কল্যানে। ওনার অনুপ্রেরণাতেই দলবদলু পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী চাকুরিতে জয়েন করে। প্রতি বছর ১০ হাজার জনের চাকরির নামে কয়েক হাজার কোটির ব্যাবসাও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই হয় বা হচ্ছে। আর এই বেতনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থে- ক্লাবে ক্লাবে ফুর্তির জন্য অনুদান যায়। উৎসবের নামে বিলিবন্টন হয় যাতে ক্যাডাররা পুষ্ট থাকে, যারা ভোটের জন্য খাটবে।
সবটাই জানি আমরা, তারপরেও আমরা ওনার আগমনের কারনে আপ্লুত হয়ে ধেইধেই করে নেচে সব ভুলে যায়।
এ হল ভাবের ঘরে চুরি।
আমরা বরং ভোট রঙ্গ আর IPL এ তেই মজে থাকি। 
নিজের লড়াই নিজেই করুন সুধী।

ঘরে ঘরের ব্যাপার। 
তিনি এলেই মিটে যাবে।
আমরা বলার কে?

তবে-
বাম সহ বিরোধীরা (বিজেপি বাদে) যদি এটাকে প্রচার করতে পারে ঠিকমত- মুসলমান ভোটে ধস শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বামেরা ব্যাস্ত APB কি বলল সেই নিয়ে, যেন ওরাই সুপ্রিম কোর্টের বঙ্গ বেঞ্চ। টাইমলাইন জুড়ে ওদেরই সমীক্ষা খন্ডন। বিরোধিতাও গঠনমূলক ও নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজনীয়তা বোধহয় এনাদের নেই।

সবটাই সময়ের উপরে ছাড়া থাক।
আপনি যদি চোর হন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আপনার জন্য সর্বতোভাবে সাথে আছেন। ধর্ণাতেও বসবেন। কিন্তু যদি আপনি মেধার অধিকারের জন্য লড়েন? আপনার জন্য থাকবে গণপিটুনি।
উনি...
চোরেদের জন্য
চোরেদের তরে
চোরেদের দ্বারা নির্বাচিত

হোয়াইট কলার চোর।

Wednesday, 27 March 2019

।। তোলপারিয়ে উঠল উন্মাদ ।।


চেয়ার মোছা কবিঃ- অনশনেতে মরছে ওরা
তবু পিসি দেন না সাড়া! জাগুন শিগ্‌গির জাগুন্‌।
ফ্রেঞ্চ কুমড়োঃ- বিরোধী দলগুলো যে
চুপ রয়েছে, কই সে বাজে--
বুদ্ধি GB- বিরোধী বাজবে পরে, এখন রাজ্যে লাগল আগুন।
পিসিঃ- অনশনে গেলে পরে
হাজার কোটি আসবে ঘরে?
স্থবির কুমনঃ- সোশ্যালমিডিয়া উঠল জ্বলে, ঊর্ধ্বশ্বাসে ভাগুন।
পিসিঃ- বড্ড জ্বালায় ঘেউ ঘেউ রব
জনগণঃ- জ্বলবে আগুন চুরি গেছে JOB
ফুটপাথে ঐ ‘PM স্বপ্ন’ কবর দিতে লাগুন।

Tuesday, 26 March 2019

।। ভাল্লাগল তাই ।।

ইচ্ছে তো হয় তোমাকে নিয়ে পাড়ি জমায় সেই তেপান্তরের নির্জনে। যেখানে শুধু তুমি আর আমি, থাকব গোটা সীমানা জুড়ে। নীল সমুদ্র আমাদের হাতিছানি দিয়ে ডাকবে, যেখানে নিষিদ্ধরা নিষিদ্ধ। কেউ জবাব চাইবেনা ভালমন্দর, আলাদা করে সুখ দুঃখ থাকবেনা। অনুভবের স্বর্গীয় সুধা পান করে শুধু চেয়ে থাকব তোমার এই সরলতা মাখা স্নিগ্ধতায়। তোমার অতল চাহনির মায়াতে প্রেম গরল পান করে অমরক্ষয় হব। মারাকাটারি সৌন্দর্য নাই বা রইল, যা আছে সেটাকে গোটাটা শুষে নিতে পারলে তার চেয়ে বড় শান্তি আর কিসে! কবিতার খাতায় তোমারই বর্ণনা লেখা হবে প্রতিটি ছত্রে। তুমি লজ্জা পেলে সূর্য মেঘের আড়ালে মুখ লুকিয়ে হাসবে, তোমার আনমনা বিহ্বলিত ভাব আকাশে মেঘের সঞ্চার ঘটাবে। বৃষ্টি হবে, তাতে আমরা দুজনে ভিজব একান্তে। প্রকৃতি লিখবে নতুন প্রেম গাথা। যাবে সেই হারিয়ে যাবার দেশে?

Sunday, 24 March 2019

।। অনশন- হবু শিক্ষকঃ লজ্জা ।।


আজ রোববার। ২৫শে মার্চ ২০১৯।
কোলকাতা বনাম হায়দেরাবাদ এর কোটিপতি লিগের ক্রিকেট ম্যাচের বাৎসরিক আয়োজনের শুরু, কলকাতাতেই সেই ম্যাচ চলছে। ম্যাচটা দুপুরে শুরু হয়েছে, ক্রিকেটমোদী জনগণ তাই ওই এলাকাতে শহরের গোধূলিবেলার মলিন রূপটা দেখতে পাবেননা। সুউচ্চ বাতিস্তম্ভ থেকে আলোকের ঝর্ণাধারা সবুজ মাঠকে আলোকিত করে তুলেছে, হর্ষধ্বনিতে মুখরিত হবে কল্লোলিনী তিলোত্তমা।
আপনি কি ময়দানে গোধূলি দেখতে চান? তাহলে চলে আসুন, ইডেনে যাবার আগে যে আইল্যান্ডটাতে একটা সবুজ ঘাসের হাত থেকে ফোয়ারার সুদৃশ্য জল ঝরছে, যার পোষাকি নাম ‘নেতাজি আইল্যান্ড ইকো গার্ডেন’; ওইখানে দক্ষিণ মুখো দাঁড়িয়ে রাজভবনের দিকে পিঠ করলে বাঁহাতে একটু তেরছা ভাবে যে রাস্তাটা সোজা গিয়ে চৌরঙ্গী রোডে মিশছে ওই রাস্তাটার নাম মেয়ো রোড। রাষ্ট্রীয় মর্যাদাতে বঞ্চনার টেষ্ট ম্যাচ চলছে এখানে; উইকেট পড়ল বলে। মেয়ো রোড ধরে কিছুটা হেঁটে আসুন ইডেনকে পিছনে রেখে, দেখবেন আপনার রাস্তাটা যেখানে আরেকটা রাস্তা কাটছে ওই খানে এসে সামান্য বাঁয়ে তাকান। একটু কষ্ট করতে হবে, কারন কোলকাতা পুলিস আগে এই স্থানটিতে বাস দাঁড়াতে দিতনা মোটেই, প্রেসক্লাবে নিত্য মান্যিগন্যি ব্যাক্তিদের আনাগোনা। ঠিক এই মুহুর্তে সেই পুলিশিই সারিসারি বাস দিয়ে শাসকের দুর্নীতি ও কলঙ্ক ডাকার ব্যার্থ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরেকটা রাস্তা যেটা মেয়ো রোডকে কাটল, তার নাম ডাফরিন রোড। এখানেই সাইনবোর্ড পেয়ে যাবেন অভিজাত কোলকাতা প্রেশ ক্লাবের। সামনেটা অবশ্য মাটি খুঁড়ে রেখেছে, কারন অজানা। হয়তবা শাসকের প্রতীকী কবর খোঁড়া হল, বা অন্য কিছু। যাই হোক কোলকাতার অন্য অনেক রাস্তার নাম বদলালেও এই মেয়ো বা ডাফরিন নামক ঔপনিবেশিক যুগের নাম গুলোকে আজও প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে বর্তমান দশকের ‘গণতান্ত্রিক’ পদ্ধতিতে নির্বাচিত একটি ফ্যাসিস্ট সরকার। সেই একই রকমের মেজাজ, অত্যাচার ও বাকি সকল আনুসাঙ্গিক। বৃটিশ রাজে রাণীমা সুদূর ইংল্যান্ড থেকে অত্যাচার পরিচালিত করতেন; ইনিও লন্ডন করতে চেয়েছিলেন, আপাতত নবান্ন নামক লাটভবনের ত্রয়োদশ তলা থেকে সুষ্ঠু অত্যাচার পরিচালিত করেন। ইংরেজ লুন্ঠন করেছিল বনিকের ছদ্মবেশে শাসকের মসনদ দখল করে, ইনিও তাই। সততা বিক্রি করে, তৎকালীন উন্নাসিক ও অযোগ্য বাম নেতৃত্বের দুর্বলতার সুযোগে ধাপ্পা দিয়ে বাংলার শাসন ক্ষমতাতে একটা নীতিহীন লুঠেরার দল নিয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছেন।
একদা ওনার প্রিয় শব্দ ৪০০। তখন একরের গল্প ছিল, এখন ৪০০ জন যোগ্য কর্মপ্রার্থী। অনশনের বীভৎসতা ওনারই সরকারের তুঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।
যেটা বলছিলাম, ওই প্রেসক্লাবের ছায়া সুনিবিড় গলিপথটার মুখে দাঁড়িয়ে শুধু ঘাড়টা বাঁদিকে একটু ঘোরান, ব্যাস। গোধূলির যাবতীয় মলিনতা দেখতে পাবেন থরে থরে সাজানো কিছু মানুষ্যতর জাতীয় মুখে। উন্নয়ন শুয়ে আছে ফুটপাথে। হয় এরা মানুষ, নতুবা আমরা মানুষ; কারন এরা মানুষ হলে আমরা আবার মানুষ হবার যোগ্যতা হারায়। নিতান্ত ছাপোষা দেখতে, আটপৌরে কিছু যুবক যুবতী ফ্যাকাসে মুখে কিসের যেন প্রতীক্ষায় অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন ফুটপাতে অসহায় হয়ে, বসন্তের রূঢ় প্রকৃতি আর একটা ইতর শাসকের দম্ভের সাথে অসম লড়াই লড়ে চলেছে।
আজ ২৫ তম দিন।
আসলে ছেলেমেয়েগুলো বড় বোকা, তারা কোথাও লেখেনি “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতে...” বাক্যবন্ধটি। লিখলে না জেনেও তিনু সমর্থকেরা অগ্নিকণ্যা জিন্দাবাদ বলে স্লোগান তুলতো। মাননীয়া এখন স্থাবক পরিবৃত্তা, কালিঘাটের বসত বাড়ি থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দুরত্বে প্রায় চারশো SSC পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হবু শিক্ষক তাদের ন্যায্য চাকুরী না পেয়ে, দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে করতে মরিয়া হয়ে আমরণ অনশনে শুয়ে আছে। হ্যাঁ শুয়ে আছে, কারন বসে থাকার মত শক্তি আর নেই তাদের। ২৫ তম দিন!! নাহ, তারা মাননীয়ার মত চকোলেট, স্যন্ডুইচ খেয়ে ধর্ণা দিচ্ছেনা, দেশী বিদেশী মিডিয়ার বুমও নেই। সামান্য মাথার উপরে ছাউনি টাঙাবার অধিকার টুকুও নেই। তবে এরা ধনী, এদের প্রাণশক্তি আছে; দুরাচারী শাসকের চোখে চোখ অহিংস আন্দোলন করার জন্য যোগ্যতা রয়েছে।
এদের ডিগ্রী কোনো ভৌতিক ইষ্ট জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির নয়, আমাদেরই রাষ্ট্রের কোনোনা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও চাকুরীর চরম পরিক্ষাতেও উত্তীর্ণ। তাহলে এরা চাকুরী পেলনা কেন? কারন এদের চাকুরি বিক্রি হয়ে গেছে অযোগ্যদের কাছে মোটা অর্থের বিনিময়ে। এদের কাছে ঘুষ দেবার মত অর্থ নেই বা থাকলেও দেবেনা। যে ঘুষের পোষাকি নাম এ রাজ্যে ‘উন্নয়ন’, উন্নয়ন থাকলে যোগ্যতার পরিক্ষাও দিতে লাগেনা, কোচবিহারের তৃনমূল প্রার্থী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী শ্রীমান পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকেই দেখুন। ৭৫-২৫ এর অনুপাত মেনে স্থানীয় নেতার মাধ্যমে ঘুষের টাকা পৌঁছে দিন সততার বাড়িতে, আপনার চাকরি হয়ে যাবে। ওই টাকাতে ৭ তলা প্রাসাদে চলন্ত সিড়ি বসবে, বিদেশ থেকে কিলো কিলো সোনা এনে গহনা গড়া হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি যখন বাহ্যিক লোক ঠকানো টালির চাল আর হাওয়াই চটি দেখে শ্রদ্ধাতে মুর্চ্ছো যাবেন, ততক্ষণে ওনার চ্যালাচামুন্ডারা আপনার পকেট কেটে সাফ করে দেবে। রাস্তাজুড়ে লড়ি থেকে সিভিক আর্মি দিয়ে তোলা তুলতে ব্যাস্ত পুলিস, তাদের সময় কোথায়?
অসভ্যেরা অসভ্যতামি করবে এটাই দস্তুর। এ যাত্রাতে রাজ্যের শাসক ‘বর্বরতায়’ ফেল করেনি শেষ সাত বছরের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী। কিন্তু আমাদের বিরোধী দলগুলো? শক্তিশালী গণতন্ত্র গঠনে বিরোধী শক্তিশালী না হলে ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেয়। বলছিতো ঠিকিই, কিন্তু মানছে বা করছেটা কে? সত্যিকথা বলতে পার্টি অফিস আর কয়েকজন জীবন্ত জীবাশ্ব নেতা ছাড়া ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কোলকাতার ২০০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে নেই। বিজেপি নামক দলটি ওই দাঙ্গা, মন্দির-মসজিদ, লুঠতরাজ, হুমকি, অশ্রাব্য বার্তালাপ, গরু-শুয়োর আর টিপিক্যাল ধান্দাবাজ প্রজাতি ইত্যাদি গুলোর সাথেই যায়। সভ্য ভদ্র সমাজে আজও বিজেপি-RSS পরজীবি জীবানু রূপেই পরিগণিত হয়, ও আগামীতেও হবে।
বাকি রইল বামফ্রন্ট। ফ্রন্টের কথায় বলি, এ বঙ্গে CPM ছাড়া বাকি শরিকেরা প্রায় সকলেই ছেলে বৌ বা নিজে প্রতক্ষ্য ‘উন্নয়নে’ সামিল হয়েছে লোভে বা ভয়ে। চটির ফিতেতে নতুন করে সংসার বেঁধেছেন ওনারা। বাকি রইল সিপিএম; কেন্দ্রীয় বা রাজ্য নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত স্তরে এনারা CPM সেজে বিজেপিতে বা তৃনমূল নেতাদের আশ্রয়েই আছেন অধিকাংশ। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই বর্তমানে মেয়াদ উত্তীর্ণ জীবনদায়ী ঔষুধ। খেলেও মৃত্যু না খেলেও ফল একই, বরং খেলে মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়। আমরা যারা শুধুই বাম সমর্থক, বাম আদর্শকে বিশ্বাস করি বা ভালোবাসি তারা রয়ে গেছি আকুলপাথারে। বর্তমান নেতৃত্ব মনে ভাবে জনগণ বোধহয় এনাদের চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্ষমতাতে বসিয়ে দেবে। ৭ বছর অতিক্রান্ত, দীর্ঘদিন ক্ষমতার অলিন্দে বাস করায় আজও বিরোধী রাজনীতির সহজপাঠ টুকু শিখে উঠতে পারেনি। তাই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা বা বলা ভাল মমতার ভুলের প্রতীক্ষা করছে প্রভু জগন্নাথ সেজে। শয়ে শয়ে ছটফটানো ইস্যু গুলো হাতের আঙুল গলে চলে যায়, কর্মী সমর্থকেরা চোরের দলের লুঠেরাদের হাতে ও রাষ্ট্রযন্ত্রের পিষনে পিষতে থাকে। নেতারা বিপ্লবের ভোর খুঁজতে ব্যাস্ত পার্টি প্লেনামে বা কংগ্রেসে।
বিরোধী হিসাবে মমতা ব্যানার্জী আদর্শ হওয়া উচিৎ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে। যেকোনো আন্দোলনকে নিজের অনুকুলে ভিড়িয়ে ‘আমার’ বলে রীতিমত হাইজ্যাক করে পাবলিকের কাছে খবরে থাকতেন। এদিকে অনশনের ২৪ তম দিনে আমাদের বামফ্রণ্ট চেয়ারম্যানের মনে পড়ল ‘ওখানে তো একবার যাওয়া দরকার’। ধিক এই রাজনীতিতে। মহিলা সমিতির নামে পার্টির শয়েশয়ে হোলটাইমারদের কাজটাই বা কি? তারাও কি ওই মেয়েগুলোর সাথে রিলে করে বসতে পারতনা?
কটা দিন আগেই জাতীয় পতাকা নিয়ে কিছু স্বঘোষিত দেশপ্রেমী রাস্তায় রাস্তায় দেশদ্রোহী খুঁজে নিয়ে বেদম হুমকি বা মারধর করছিল। আজ তাদেরই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আপনারা যারা তৃনমূল সমর্থক তারাও কি এতটুকু খোঁজ নিয়েছে? আপনাদের ছেলেপুলেদের চাকরীর দরকার নেই? ভুলে যাবেননা শকুনের কোন বাছবিচার থাকেনা।
ত্রিশ ফুট বাই দশ/বারো ফুটের একটা ফুটপাত, সেখানে পশুখামারের মত গাদাগাদি করে কিছু ভদ্রঘরের শিক্ষিত সন্তান না খেয়ে অধিকার রক্ষার জন্য অহিংস লড়াই চালাচ্ছে। এদের অন্যায় এরা চপশিল্পকে অগ্রাহ্য করে পড়াশোনা চালিয়ে শিক্ষক হবার স্বপ্ন দেখেছিল। তাই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মশার কামড়কে ছোঃ বলে হেলায় উড়িয়ে নির্ধ্বিধায় বসে থাকতে শিখেছে। ফুসফুসে ও মূত্রাশয়ে সংক্রমণ, নিন্ম রক্তচাপ, পিত্তবমন, স্নায়ু শৈথিল্য সহ নানান ধরনের অজানা রোগ বাসা বাঁধছে ওদের শরীরে। সরকারী হাসপাতালে গেলে থুড়িবুড়ি করে স্যালাইন দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে, চিকিৎসা নৈব নৈব চ। রাজ্যজুড়ে প্রার্থী তালকাতে কত নামের আগে ডাঃ শব্দটি লেখা। মুখ্যমন্ত্রীর সাধের কন্যাশ্রী, রুপশ্রী প্রকল্পের গালভরা প্রচারের সাথে নারী শক্তির উপরে জোর দিয়ে শতাব্দী, অর্পিতা ঘোষ, মুনমুন সেন থেকে মিমি বা ধর্ষকের প্রেয়সী ও প্রশ্রয়দাত্রী নুসরত যখন স্নো পাউডার মেখে লোক ঠাকাতে ব্যাস্ত, তখন অনাহার, অপুষ্টি ও শহুরে বাতাসের জীবানু পোকামাকড়ের কামড় মেয়েগুলোর শ্রী’তে চর্মরোগ সৃষ্টি করেছে। এরা প্রতীকী, আসলে গণতন্ত্রের কাঠামোতে ঘুণ ধরে গেছে।
বেকারত্বের হরেক জ্বালা; সাথে আত্মসম্মান বোধ থাকলে তো পোয়া বারো। স্বাভাবিকভাবেই ভাঁড়ারে টান পড়লেও পাবলিক ফান্ডিং এর নাম শুনলেই যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখগুলোতেও ফুটে উঠছে প্রত্যয়- “আমাদের টাকার দরকার নেই, পাশে থাকুন। সাহস যোগান দয়াকরে”। তার পরেও মানবিক খাতিরে টিম অকপট সামান্য কিছু ORS সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রায় জোরকরে যখন দিয়ে এলো, আবেগে ওদের চোখে জল। তীব্র অভাব ওই একখন্ড ভূমি যেন আফ্রিকার সোমালিয়া। পানীয় জলের হাহাকার, প্রাত্যহিক বাহ্যকর্মের জন্যও ‘ব্যাওসা’ চলছে নিত্য। ড্রেনের দুর্গন্ধে গা গুলিয়ে উঠলেও সইতে হচ্ছে, দরকার কিছু ব্লিচং পাওডারের; কিন্তু দিচ্ছেটা কে। যাননা এক কেজি ব্লিচিং নিয়ে ওই অনশন ফুটপাতে।
অদূরেই সাপ্তাহিক পুলিশি মাসোহারার বিনিময়ে গড়ে ওঠা গুমটিগুলোর ছায়াতে খোঁচা খোঁচা দাড়ির কঙ্কালসার অনসন কারী ছেলেগুলো জুলজুল চোখে ধুঁকছে। স্বপ্নগুলো একটু একটু করে হয়ত নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, অনেকেরই আর পরীক্ষাতে বসার জন্য বয়স নেই। হয়ত জেদের বসে লাশ হয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের শকুনের প্রখর নজরে পাহারারত।
বিক্ষিপ্তভাবে অনেকেই আসছেন, আসবেও। কোটিপতি ক্রিকেট লীগের খেলাতে হাজার লোকের জমায়েত হয়েছে ফুর্তির জন্য, হাওয়াতে উড়ছে কোটি কোটি টাকা, অতঃপর উল্লাসের শব্দব্রম্ভও ঢাকা দিতে পারবেনা নৃশংস নীরবতার অনশন উদযাপনকে। গর্ভবতী মায়েরই কেবল গর্ভপাত হয়নি, বন্ধ্যা রাষ্ট্রও তৃনমূল নামক একটি অশিষ্ট দলের সাথে অবৈধ সঙ্গমে গণতন্ত্রের গর্ভপাত করিয়েছে।
এরা হেরে গেলে আপনিও আপনার সন্তানের জন্য হয় ২০-৩০ লক্ষ জোগার রাখুন নতুবা চপশিল্পে তার ভবিষ্যৎ লগ্নি হয়ে যাবে আপনা থেকেই। চাকরি অবশ্য দুটো থাকবে, প্রথমত দলদাস হয়ে চাটুকারবৃত্তি ; দ্বিতীয়টা সিভিক আর্মির মত মমতা ব্যানার্জী সৃষ্ট সরকারী চাকুরী। দৈনিক ২০০ টাকা রোজে।
বড় লজ্জা হয় বর্তমানে যারা পেশাগত ভাবে ইস্কুলে পড়ান। এদের সকলকে আমি শিক্ষক বলতে নারাজ, শিক্ষক হতে প্রয়োজন শিক্ষা, আর শিক্ষা আনে চেতনা। শিক্ষক পদে চাকুরীজীবি অধিকাংশই মানুষরূপী জীবজন্তু সম্প্রদায়ের; চেতনাই তো নেই, শিক্ষা পেয়েছে কোথায়? শিক্ষা বিনে শিক্ষকই কেমনে? ভালকে ভাল আর খারাপকে খারাপ যে বা যারা বলতে পারেনা তারা আর যাই হোক শিক্ষিত নন। মাসিক বেতনের সুরক্ষা এদের বিবেকের ঘরে মোটা স্বার্থপরতার আস্তরণ ফেলে দিয়েছে, যা প্রায় অভেদ্য। চোখে বেহায়াপনার ঠুলি লাগিয়ে প্রায় প্রত্যেকেই বসন্ত উৎসবে মত্ত, এদেরই প্রায় প্রত্যেকের সন্তান বেসরকারি স্কুলে পড়ে। যারা বড় হয়ে ডাক্তার, প্রফেসর, বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে হয়ত, যদি না হয়? এমনই অনশনের জন্য প্রস্তুত থাকুন আপনারা। সেদিনও আপনি একা হয়ে যাবেন আজ যদি আপনি না যান। একই কথা বলব পুলিস সম্প্রদায়ের জন্য। আপনাদেরও DA নেই, আর যা পে-স্কেল, তাতে তুমুল পরিমাণে ঘুষের টাকা না জমাতে পারলে আপনার ছেলেকেও রেলের হকারি বা চপ সেন্টার খুলতে হবে।
তবে সবচেয়ে করুণা হয় সাংবাদিকতা পেশা যাদের তাদের জন্য। সংবাদ পত্র বা চ্যানেলের কেউ না কেউ মালিক থাকে, যাদের থাকে রাজনৈতিক পরিচয়। কাগজের সাংবাদিক বা চ্যানেলের এঙ্করকে ব্যাবসা দিতে হয় মালিকের সংবাদ ‘কোম্পানির’ জন্য। তাই যেখানে পয়সা, তাদের চাহিদা মত করেই খবর পরিবেশনা করা হয়। বাকি রইল কিছু ফ্রি ল্যান্সার সাংবাদিক, তাদের যা মেধা তাতে মুদি দোকানে কর্মচারিটি হওয়ারও অযোগ্য অতএব সাংবাদিক হয়ে যাও। স্বাভাবিক ভাবেই অনশনের ২০ দিন পর্যন্ত গণশক্তি কোনো মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে অনশনের খবর ছিলনা। প্রেসক্লাবের উঠোনেই কিন্তু এই অনশন চলছে, গুণে গুণে ২০ হাত দূরে তারা মঞ্চ বেঁধে বসন্ত উৎসব চালাচ্ছে।
আমরা, হ্যাঁ, আমরা ‘অকপট’ দলগত ভাবে, ফেসবুকে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে পোষ্ট হওয়া ‘অনশন’ খবর গুলোকে জঙ্গি আন্দোলনের জন্য তীব্রভাবে প্রচার চালায় অনশনের ১৭ তম দিন থেকে। আজ ফেসবুক ভরে গেছে অনশনের পোষ্টে, মেইনস্ট্রিম মিডিয়াও দেখাতে বাধ্য হচ্ছে। তাবড় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব থেকে সামাজিক বরেণ্য মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই, কিন্তু আমরা আমাদের উদ্দেশ্যে সফল; বন্ধু জয় ব্যানার্জী সহ সুব্রত মণ্ডল, তন্ময় হক, সৌরভ মাঝি, প্রদীপ শাসমল, তমাল বোসের মত যারা এই লড়াই এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাদের সাধুবাদ জানানোর ভাষা নেই। ওনাদের পাশে যান, কাছে যান, আপনাকে ভীষণ প্রয়োজন ওদের। অনেক অনেক সাহায্য প্রয়োজন তাদের, যা পৌছাচ্ছে তা বিস্তীর্ণ মরুভূমে একফোটা জল সম, আরো অনেক প্রয়োজন। আপনারা এগিয়ে আসুন সভ্য সমাজ।
স্বঘষিত কবিদের গোপনাঙ্গে ফুসকুড়ি উঠলে সেই ব্যাথাতে দুই পক্ষকালীন বেদনার কাব্য উৎসব চলে। যদিও উৎসবে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর একচেটিয়া পেটেন্ট, জঞ্জালসম কবিতা লিখনেও যেকোনো ফেবু সেলেব কবিকে গুণে গুণে ১০ গোল দেবেন। ফেসবুকের প্রায় প্রত্যেক কবিই আজ ভয়ঙ্করভাবে নিশ্চুপ, ব্যানানা ফ্লেভারের এক্সট্রা ডটেড কাব্যে নিজের সেলফি সহ কবিতার আস্তাকুড় জুড়ে থিকথিক করছে তাদের টাইমলাইন; শুধু এই ছেলেমেয়েগুলোর জন্য অবাক করা নিশ্চুপতা।
পশুপ্রেমীরা দোলে কুত্তাকে রঙ মাখানোর বিপক্ষে ইয়াব্বড় ধমকিওয়ালা পোষ্ট করেছে, কিন্তু অনশনে? মোটেই না। এরপর গালে রঙ মেখে প্রো-পিক বানিয়ে লাইক গুণে কমেন্টে ‘নেকুপুসু’ একঘেয়ে ঘেয়ো শব্দবন্ধ পড়ে পড়ে অর্গাজমের ফিলিং নিতে ব্যাস্ত। সমাজকর্মীদেরও দেখা পাওয়া যাচ্ছেনা, তারা বোধহয় কালীঘাটের ইশারার প্রতীক্ষাতে। তার সাথে রয়েছে ভোট রঙ্গ। প্রার্থীরা বেকারত্ব ঘোচাতে পাশে আছেন দলমত নির্বিশেষে। শুধু অনশনমঞ্চের ছেলেমেয়েগুলোই বিষয়টা জানতে পারলনা, তাদের বাড়িতে অবশ্যই হবু জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেবেন। সত্যিই আজ উন্নয়ন ফুটপাতে জীবন যৌবন বাজি রাখে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এটা দেখিয়ে কি কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কার আসবে মমতার ঝুলিতে?
অপদার্থ শিক্ষামন্ত্রী, মাৎস্যন্যায়ের যুগ বলে কটা বছর ক্ষমতা ভোগ করে নিল। কাঠপিঁপড়ের ঝাঁকে এনাকে বসিয়ে দিলে সংলাপবাজি ভুলে পথে আসবেন এনারা। মমতা দক্ষিণ কোলকাতার স্তাবক ছাড়া কাওকে ক্ষমতা দেননি। সবকটা পদই আ-পদ। নিতান্ত অসভ্য এনারা, নুন্যতম লজ্জা শরমের বালাই টুকু নেই। ক্ষমতা আর অহংকারের দম্ভে এরা সপ্তমে চড়ে বসে। সামনেই ভোট, এবারে ভুল করলে গোটা রাজ্যজুড়ে ফুটপাত কম পড়বে অনশনে বসার জন্য।
রামায়নে রামচন্দ্র বনবাসে গেলে, ভাই ভরত দাদাবৌদিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জেদে যখন ঘাসের উপরে শুয়ে অনশনের প্রতিজ্ঞা করে বসলেন তখন দাদা রামচন্দ্র বুঝিয়েছিলেন- অনশন ব্রাহ্মণের কাজ ক্ষত্রিয়ের কর্ম লড়াই করা। ব্রাহ্মণের ধার কেউ পরিশোধ না করলে তারা গৃহস্থের দোরের সামনে অন্নবস্ত্র পরিত্যাগ করে শুয়ে থাকত। ব্রহ্ম হত্যার পাপ থেকে বাঁচতে গৃহস্থ যতশীঘ্র সম্ভব ধার পরিশোধ করত। মমতা ব্যানার্জী আপনি তো ব্রাহ্মণ কন্যা, ও নারী; একটু তো লজ্জা করুন। খান তিনেক প্রজন্মকে বেকারত্বের অভিশাপ দান করেছেন, এরাই আপনাকে ক্ষমতাতে এনেছিল। আজ রাষ্ট্রীয় পেশীশক্তি দমন করছেন।
তবে ক্ষত্রিয়ের হাতে কি কিছুই নেই? আছে আছে, রাজা কৌশিক বশিষ্ঠের আশ্রম আক্রমণ করে হেরে গোহারা হয়ে ব্রহ্মতেজের জন্য শিবের উদ্দেশ্যে অনশনে বসে রাজর্ষী বিশ্বামিত্র হয়ে ছিলেন। মুনিঋষিদের যে ধ্যান, সে তো অনশনেরই নামান্তর। মহিষাসুর সহ তাবড় দৈত্যকুলপতিরাও অনশনের অস্ত্রে দেবতার বর লাভ করেছিলেন। শুধুই কি সনাতন ধর্মে অনশন সিদ্ধ? মোটেই না , ইহুদিদের মোজেসও সিনাই পর্বতে দীর্ঘদিন অনশন করে তবেই অগ্নিগোলক রুপী ঈশ্বরের দেখা পেয়েছিলেন। ইসলামে মুহাম্মদ (সাঃ) হেরাগুহাতে অনশন করেছিলে আল্লাহর নৈকট্যলাভের জন্য। খ্রীষ্ট ও বৌদ্ধ ধর্মেও অনশনের গুরুত্ব অসীম। হোগেলপন্থী যুব মার্কসও নানা সময়ে অনশনের আশ্রয় নিয়েছিলে। তাই অনশন এক অতি প্রাচীন অস্ত্র।
প্রাক খ্রীষ্ট যুগে প্রাচীন আয়ারল্যান্ডে প্রথমবার অনশনকে হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়। এটা ‘সিলাকান’ নামে পরিচিত ছিল সেই কালে। ১৯২৩ সালে এক ঘটনার পরিপেক্ষিতে প্রায় ৮০০০ মানুষ অনশন করেন। বিংশ শতকে বিভিন্ন ব্রিটিশ কারাগারে বন্দিদের মধ্যে অনশন আন্দোলন ভীষণ জনপ্রিয় ছিল, যাদের মধ্যে মেরিল ডানলপ নামে এক বন্দিকে মুক্তিও দেয় তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। কারন তারা চায়নি ডানলপ শহীদ হোক। ১৮৬১ সালে প্রথমবারের জন্য ভারতে অনশনের লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়।
অনশনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, দেশীয় রাজনীতিতে স্বাধীনতার আগে যতীন দাস, গান্ধীজী, ভগত সিং ও স্বাধীনতার পরে পট্টী শ্রীরামালু থেকে ইরম শর্মিলা চানু হয়ে আজকের এই ছাত্রছাত্রীরা। কাকে খুঁজছিলেন? উনি চকোলেট আর স্যান্ডুইচ খেয়ে ধাষ্টামো মেরেছিলেন, ওটা অনশন ছিলনা- ছিল নাটক। যেমন আন্না হাজারে, আরেক বড় অনশন শিল্পী। অনেকেই জানেনা নরেন্দ্র মোদীও অনশন করেছে ৭২ ঘন্টা, এসি ঘরে বসে। আর সেটা ছিল ‘সম্প্রীতি ও সদ্ভাবনা’ শীর্ষক। হ্যাঁ ঠিকিই পড়ছেন। আরেক অভিনেত্রী তথা জননেত্রী জয়ললিতাও কাবেরী নদীর ইস্যু নিয়ে অনশন করেছিলেন।
ইডেন উদ্যানেও অন্ধকার নেমেছে, ক্ষণিকের উত্তেজনা সমাপ্ত হলে, অনেকগুলো টাকা খরচা করে ফুর্তি করে ফেরা জনগণ একবার হলেও দেখে যেতে পারেন, কিভাবে রাষ্ট্র মানুষকে পশুর মত করে তুলতে পারে। আজকাল কত রকমের ট্যুরিজম হয়, এটা নাহয় অনশন ট্যুরিজম বা ‘উন্নয়ন’ ট্যুরিজম এর নামে এদের কাছে একবার ঘুরে গেলেন। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, হতাশ হয়ে ফিরবেননা। বিবেককে জবাব দিয়ে পারবেননা দায়িত্ব নিয়ে বলছি। যেভাবেই হোক এদের পাশে ও সাথে থাকুন। এরা বড় অসহায়।
উন্মাদ হার্মাদ
২৪/০৩/২০১৯

Saturday, 23 March 2019

।। মোদী ম্যাজিকঃ ফিনিস ।।

২ই মার্চ ২০১৯ থেকে ১৬ই মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত বিজেপি প্রায় তিন কোটি টাকা "ফেসবুক-হোয়াটসএপ-ইন্সটাগ্রাম" একাউন্টে বিজ্ঞাপন বাবদ খরচা করেছে। যেখানে পেইড নিউজ দিয়ে প্রচার করানো হচ্ছে - মোদী বিপুল ক্ষমতায় ফিরৎ আসছে। হরেক রকমের ভেল্কিবাজি, এক লাইনের ক্যাচি স্লোগান সহ IT cell ব্রিগেড সবই আছে এই হিসাবের বাইরে।
সুতরাং যাবতীয় মোদী ম্যাজিক যা দেখছেন আশেপাশে, সবটাই টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন, জবরদস্তি করে টাইমলাইনে এনে দেখানো হচ্ছে। জনভিত্তির সারবত্তা থাকলে এগুলো লাগতনা। কোনো ফেসবুক আইডি মোদী বা বিজেপির হয়ে প্রচার করছে মানেই জানবেন সেটা বিজ্ঞাপন। টাকার বিনিময়েই সেটা করছে।
মন্দির ওহি হয়নি।
বিকাশ কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
জঙ্গি আক্রমণ বেড়েছে।
ওদেরই মতে হিন্দু খতরেমে হ্যায়।
বেকারত্ব বেড়েছে।
কৃষক আরো গরীব হয়েছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পথে বসেছে।
আম্বানী আদানি ধনী হয়েছে।

কত লেখা যায় বা সম্ভব? 
অতএব বহুরুপীরা ঠিকে মুনিষ রেখেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।

যদিও পাবলিক জানে এগুলোও এক ধরেন জুমলা।
অন্যদলগুলোও বিজ্ঞাপন দিয়েছে, নবীন পট্টনায়কের BJD দ্বিতীয় স্থানে অন্য বাকিরা বিজেপির তুলনাতে শতাংশের হিসাবে নগণ্য প্রায়।
অল্ট নিউজের একটা লিঙ্ক রইল, বিষদে জেনে নিতেই পারেন।

।। SSC সঙ্কট ।।



ও হীরক রানী, আপনি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে জামানাতে বাস করছেননা। যে জনগণ আপনাকে নবান্নের ১৩ তলাতে চড়িয়েছিল, তারাই চাবকে আপনাকে ফুটপাতে এনে নামাবে। বিশ্ব ইতিহাসে স্বৈরাচারী শাসকের পরিণতি দেখে পয় পান,বড় নির্মম ।
অনশনের নাটক করে আপনি জনগনকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতা দখল করে মহারাণী সেজে বসে আছেন, সিঙ্গুরের চাষীরা জমি ফিরত পায়নি। লুকিয়ে চকলেট আর স্যান্ডুইচ খেয়ে ধাষ্টামো মারা অনশন নামের যাত্রা পালা শেষে আপনি নবান্নের ১৩ তলায়, আপনার ভাইপো প্রায় রাজা মহারাজার মত বাড়ি, ঘর, সম্পত্তি চালচলন। আপনি আর আপনার সাঙ্গোপাঙ্গ চোর বাটপারগুলো লাভবান হয়েছেন।
আজ আপনার দেখানো পথেই আমাদের বেকার ভাই বোনেরা রাস্তার ফুটপাতে অর্ধমৃত।
এই ছেলে গুলো কর্মের দাবীতে আজ ২৪ দিন ধরে অনশনে। ওরা ক্ষমতার জন্য লড়ছেনা, কিন্তু এই লড়াই আপনার দম্ভের খুটিকে কাঁপিয়ে আপনার পতন ঘটাবে। প্রস্তুত থাকুন।
ইতিহাসের কালো অধ্যয়ে যাবার আগে ভাল কিছু করে যান। অভিশপ্ত আপনার জীবন। ছিঃ

Tuesday, 19 March 2019

।। বউদির ছড়া ।।


ও বৌদি, বৌদি মনি
দুষ্টু এয়ারপোর্ট
বামাল সমেত পরলে ধরা
এবার চলো কোর্ট।
রাজ্য জুড়ে পিসশ্বাশুড়ি
বিছিয়ে উন্নয়ন,
'লাফানো ঠোঁটে' মরদ তোমায়
লুটেছে গরীব ধন।
এসকেলেটর, সাতটি তলা
রাণীর হালে আছো,
রাজ্য জুড়ে তোলার টাকা
ধিচিং ধিচিং নাচো।
রাস্তা রোখে সিভিক বেকার
তোমার মরদ গেলে
অনশনে গর্ভপাত হয়
জেনো সময় পেলে।
তুমিতো জানো অনশন মানে
লুকিয়ে ক্যাডবেরি
ঢপেশ্বরী সারদামাতা
সততা করেন ফেরি।
নীলসাদা রঙ রাজ্য জুড়ে
বেচেন তোমার স্বামী
জানোকি তুমি দুকেজি সোনা
ঠিক কতটা দামি?
পিসশ্বাশুরির ভাইগুলো সব
তোমার বাড়ির ভৃত্য
ফুরালে সময় টেরটি পাবে
সর্বহারার নৃত্য।
ষোলোকলা পূর্ণ হলেই
বরটি যাবে জেলে
গণধোলাইয়ে ছেঁচাও হবে
পাবলিক হাতে পেলে।
পারলে বোলো, "পিসশ্বাশুড়ি,
হও যে মানবিক,
অন্ধ তুমি, মিথ্যে জগৎ
চামচা'রা চারিদিক"।
চটি শ্বাশুড়ি ডুববে যেদিন
তোমার হবে কি!
লুঠের ধনে সওদাগরী
পান্তাভাতে ঘি...
লক্ষ বেকার রাজ্যজুড়ে
হাহাকারে উৎসবে,
বরটি তোমার দুকাঠি সরেস
ধরাকে সরা ভাবে।
কেড়ে নেবে সব, সব সম্পদ
লুট হয়েছে যারা
গুঁড়িয়ে দেবে Z plus, ত্রাণ
আসছে সর্বহারা।
উন্মাদ হার্মাদ
(জেলে পাঠাবেননা প্লিজ)

Monday, 18 March 2019

।। কামনা ।।

গ্রীবাদেশ ছুঁয়ে ওষ্ঠচিহ্ন, উতপ্ত প্রশ্বাস
আঙুলেরা বিলি কাটে চুলের খাঁজে
অনতিদূরে অনাবৃত নাভিকূপের ইশারা
নাক ডুবে আছে বক্ষবিভাজিকা মাঝে
অবিরাম বাদলধারা ঝিরিঝিরি, গোপন
প্রবাহে শিক্ত পদসন্ধিস্থল, মন প্রান,
স্ফিত বক্ষমাঝে সঞ্চিত অমৃত, কলসদ্বয়
সুতীব্র অভিঘাতে সুডৌল, সুখের স্রাবস্নান
শিথিলতা গ্রাস করে মেরুদণ্ড বেয়ে
কামনার অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত হৃদে
পরবর্তী কার্যক্রমে সাময়িক বিরতি
ক্লান্তিহীন আশ্লেষ , অতৃপ্ত লালসার খিদে।
জিহ্বার অগ্রভাগে কামোদ্দীপ্ত চুচুক
লালায় ভেজা সর্বাঙ্গে তড়পানি
বৈদ্যুতিন শিহরনে মত্ত মাতাল মুহুর্মুহু
ভগপোস্থের যুগপৎ মেল, সুখের রাজারানী।
শিথিলতা গ্রাস করে প্রেম, মেরুদণ্ড বেয়ে
কামনার অগ্নিশিখা তবু প্রজ্জ্বলিত হৃদে
পরবর্তী কার্যক্রমে সাময়িক বিরতি
বিরামহীন মেদুরতা, অতৃপ্ত কামনার খিদে।

।। অসৎ পাত্র ।।




জানতে পেলুম টুইটারেতে-
চৌকিদারে সবাই মেতে ?
নির্বাচনে প্রার্থী পেলে ?
খুঁজছে মুকুল দিলু মিলে।

"চোর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত
সারদা পিসির উন্নয়ন তুতো ;
হালকা করে বাটপারিটা
জানলে দাঙ্গা, জমবে মিঠা।
বিদ্যে বুদ্ধি ? প্রয়োজনই নেই-
ভরষা কেবল গো-শাবকেই "!

পাঁচটি বছর চুরাশি দেশে
ভোট আসতে থাম্‌ল শেষে ।
বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়-
দশলাখী সুট্যে সেলফি খিঁচায় ।
মানুষ ত নয় দল জুড়ে তার-
বাঁদর, বেবুন, গরুর খোঁয়াড় ;

ভক্তরা সব তৈরি ছেলে,
নোটবাতিল খায় রাফাল ঢেলে।
পাত্র ষাঁড়টি খিস্তি বাজায়
রিপাবলিকে অর্ণবকে পায়।
জেটলিটা তো কেবল ভোগে
পাকিস্থান আর নেহেরু রোগে ।
কিন্তু তারা উচ্চ ঘর 
চৌকিদারের বংশধর !

নীরব, অনিল, আদানি, বিজয়, 
চৌকিদারের কি যেন হয়।-
যাহোক্‌, এবার EVM পেলে!
চৌকিদারকে পাঠাও জেলে।
উন্মাদ হার্মাদ
(জেলে পাঠাবেননা প্লিজ)

Wednesday, 13 March 2019

।। উন্নয়ন ।।


ইলেকট্রিক অফিস যাবার জন্য বাইক চালাচ্ছিলাম, ঘর থেকে খানিক দূর যেতেই, যথারীতি গেরিলা ট্রেনিং প্রাপ্ত পিসির সিভিক আর্মি পথ রুখে দাঁড়ালো। এরাই গোটা পশ্চিমবঙ্গের রাস্তা জুড়ে তোলা আদায় করে ছোটবড় নির্বিশেষে।
মাথায় হেলমেট নেই আমার, কথা বলার আগেই গাড়ি থেকে চাবিটা খুলে পকেটে চালান করে নিল এক সিভিক সোয়াট সদস্য। চেনা ছেলেগুলো সাধারনত আমাদের মত মার্কামারা 'মাল' গুলোকে না দেখা করে ছেড়ে দেয়, এ নিশ্চিতভাবে নতুন আমদানি, ওপাড় বাংলাতে জন্ম নব্য ভারতীয়। ভোটের কথা মাথায় রেখে এরা ভারতীয় নাগরিক ও সিভিক সম্মাননা প্রাপ্তি। রেশন কার্ড, প্যান কার্ড আধার কার্ড সব সব আছে এদের আপনার থাক বা না থাক।
আমার মাথায় আসলি সেনা টুপি, সেনা সুভ্যেনিয়ার সপ থেকে ক্রেডিট কার্ডে কেনা। বললাম আমি দেশপ্রেমিক, তাই সেনা ক্যাপ পরেছি। সেনা হেলমেড বাজারে পাইনি - পেলে ওটাই পরতাম।
নতুন দেশের সদ্য নাগরিকের হৃদয়েও কি গভীর ও তাজা তাজা দেশপ্রেম দেখে আমার দেশপ্রেমিক মন কেঁদে উঠার আগেই, কেমন যেন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মিনিট দেড়েকের মধ্যে বাইকের চাবি ফেরত দিয়ে পালিয়ে বাঁচল।
বুঝলাম, এ দেশে ধর্ম আর ঘুষের পর 'সেনা'ই সুষম খাদ্য। যেখানে যাবতীয় যুক্তি, আইন সবই বিলীয়মান।

Friday, 8 March 2019

।। ম এ মতুয়া ।।

একজন আমাকে বললো, "দাদা, মতুয়া সঙ্ঘের বড়মা বীণাপাণি দেবী যে মারা গেলেন সে সম্পর্কে কিছু লেখো "
যে কোনো মৃত্যুই দুঃখের। .. বীণাপাণি দেবীর আত্মা শান্তি পাক এটাই চাই। ..
কারণ ওই "শান্তি " জিনিসটিই শেষ বয়সে উনি পাচ্ছিলেন না...
দুই দিক থেকে মমতা ব্যানার্জী এবং নরেন্দ্র মোদীর যুগপৎ চাপ এই ভারতের অন্য কেউ ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করেছেন কিনা সে খবর আমার কাছে নেই।
বীণাপাণি দেবী কিন্তু ৯৯ বছর বয়সে এই দুই চাপের জাঁতায় পিষ্ট হয়েছেন। ..
না হলে আরো কিছুদিন বাঁচতেন বলে আমার অন্ততঃ মনে হয়েছে। ..
মমতা ব্যানার্জীর এমনিতে স্বভাবই হলো, বুড়ো মানুষদের উত্যক্ত করা। .. সুভাষ মুখোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, মান্না দে থেকে শুরু করে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় , অমলাশঙ্কর , সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সবাইকে মমতা ব্যানার্জী ধরে ধরে উত্যক্ত করতেন এবং এখনো করেন। .. কখনো ঠায় বসিয়ে রাখেন সভায় , কখনো সময়ে অসময়ে display করতে এখানে ওখানে নিয়ে যান , কখনো শীতের রাত্রে হাতে মাইক ধরিয়ে আদেশ করেন, "গান গাইতে হবে "... সেই কারণে বুড়ো মানুষরা মমতা ব্যানার্জীকে দেখতে পেলেই আজকাল অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আর বাড়ি থেকে বেরোতে চান না... তবুও মমতা ব্যানার্জী তাঁদের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে তাঁদের বিরক্ত করেন। .. করে করে অনেককেই মহাপ্রস্থানের পথে পাঠিয়ে দিয়েছেন। .. সুচিত্রা সেন যতদিন সজ্ঞানে ছিলেন মমতা ব্যানার্জীকে ধারে কাছে ঘেঁষতে দেন নি। .. অসুস্থতার আধা - জ্ঞান আধা - অজ্ঞানের মধ্যে মমতা ব্যানার্জী গিয়ে তাঁর ঘরেও হামলা চালিয়ে এসেছেন। .. ওঁনার তিরোধান মমতা ব্যানার্জীর উপস্থিতিতেই ত্বরান্বিত হয়েছে। .. এর আগে জ্যোতি বসুকেও মমতা ব্যানার্জী উত্যক্ত করতেন। .. এই কারণে "স্বভাব বিচক্ষণ " পল্টুদা পশ্চিমবঙ্গে এলেই আর মমতা ব্যানার্জীকে খবর দিচ্ছেন না... যেই শুনছেন মমতা বীরভূমে আসছেন, "পল্টুদা" সীমান্ত পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে যাচ্ছেন। .. মমতা ঝাড়খণ্ডে ওঁনার খোঁজে detour নিলে পল্টুদা সোজা হেলিকপ্টারে জঙ্গিপুরে। .. মমতা জঙ্গিপুরে ওঁকে ধাওয়া করলে পল্টুদা সফরসূচি কাটছাঁট করে কলকাতা হয়ে দিল্লী ফিরে যাচ্ছেন। ..
"মমতা, আমি বাঁচতে চাই "
সেই দিক দিয়ে নরেন্দ্র মোদির ট্র্যাক রেকর্ড ভালো ছিল। .. উনি বুড়ো লোক দেখলেই তাড়িয়ে দিতেন। .. বাজপেয়ী , আদভানি , মুরলি জোশি, যশবন্ত সিং , যশবন্ত সিনহা সবাইকে দূর দূর করে তাড়িয়ে ছেড়েছেন। .. ওনার সব অত্যাচার ছিল কেবল নিজের মায়ের উপরে। .. ৯০ বছর বয়সে টাকা তোলার লাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন শুধু ছবি তোলাবেন বলে। .. নরেন্দ্র মোদির অত্যাচার মূলতঃ বাচ্চাদের উপরে হয়... দেখতে পেলেই কান টানেন ধরে ধরে। ..
তা এবারের নির্বাচনটি এমনই সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে মোদীজির কাছে যে উনি আর কোনো chance নিচ্ছেন না... বীণাপাণি দেবীর কাছে পৌঁছে গেছিলেন। .. সেখানে যেতেই বীণাপাণি দেবীকে নিয়ে সে কি "বীণা" টানাটানি। .. একদিক দিয়ে মমতা ঠাকুরের নাতনি হাত টানে তো অন্যদিকে থেকে মঞ্জুল ঠাকুর পা টানে। .. শান্তনু ঠাকুর তো পারলে বীণাপাণি দেবীর চুল ধরেই টেনে দেয়। ..
এমতাবস্থায় বীণাপাণি দেবী নিজের জীবনের প্রতিই আস্থা হারাচ্ছিলেন। .. ভাগের মা গঙ্গা পায় না। ..উনি অত্যন্ত বেশি বয়সে এসে "celebrity" হয়েছিলেন। .. ৯০ টা সেলিব্রিটি হওয়ার ঠিক বয়স নয়। .. অনেক উৎপাত বাড়ে। .. ৯৯ বছর বয়সে মমতা ব্যানার্জী ও নরেন্দ্র মোদির মাঝখানে স্যান্ডউইচ হয়ে উনি বুঝলেন যে , "খাচ্ছিলো তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হয়েছিল এঁড়ে গরু কিনে " ... মাত্র ৩ লক্ষ ভোটের জন্যে ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসের দুই ষণ্ড - পাষণ্ড ওনাকে স্রেফ নাগপুরের বিদর্ভ মাঠের রোলারের মতো পিষেছে। ..
সেখান থেকে বীণাপাণি দেবীর "মুক্তি " ওঁনার নিজের জন্যেই একটি "কার্নিভ্যাল "... "বেঁচে গেছি, বেঁচে গেছি, ইয়ো...ইয়ো " ..
কিন্তু "মতুয়া মহাসংঘ"-এর কি হবে ? 
উঃ ওটিই আদতে গত হইলো। .. মমতা ব্যানার্জী এবং নরেন্দ্র মোদী যা ছুঁয়ে দেন, তাই "ভস্মলোচন"-এর ছোঁয়ায় "ভস্ম" হয়ে যায়। .. latest casualty ওই "মতুয়া মহাসঙ্ঘ "... এবারে ওখানে শুধু তৃণমূল আর বিজেপির মারামারি হবে। .. তৃণমূল বলবে, "ঘাসফুল দিয়ে হরিচাঁদ - গুরুচাঁদের পূজা হবে "... বিজেপি বলবে , "না , পদ্মফুল দিয়ে "... মমতা ব্যানার্জী আবার মাঝখান থেকে হরিচাঁদ - গুরুচাঁদকে sideline -এ পাঠিয়ে "বীণাপাণি দেবী"-র মূর্তি বসাতে চাইবেন। .. "নতুন আরাধ্য দেবী এসে গেছেন। .. শ্রী বীণাপাণি ঠাকুর "...

মমতাবালা আর মঞ্জুলকৃষ্ণের সমস্যা আসলে দুই "ম "... "মমতা" ও "মোদী "...
ওই জোড়া "ম"-এর ধাক্কায় আরো কত "মতুয়া " মরবে সে কথা চিন্তা করলেই হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে। ..
শাস্ত্রে বলেছে , "পঞ্চ ম -কারের চক্করে থেকো না। "
"মতুয়া মহাসংঘ" ওই "পঞ্চ ম"-এর চক্করে পড়ে গেছে : মমতা, মুকুল , মোদী, মমতাবালা এবং মঞ্জুল। ..
উদ্ধারের কোনো আশা পরিলক্ষিত হইতেসে না

ভায়া- সায়ক ঘোষ চৌধুরী 

Friday, 1 March 2019

।। স্যানিটাইজেশন ।।

ওয়াঘা বর্ডার থেকে সব দলের নেতাগুলোকে ২ কিলোমিটার দূরে তাড়িয়ে দিয়েছে, রেড ক্রসের ভাষাতে "স্যানিটাইজেশন"।
জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে "সেনার ব্যবহার" যদি এমনটা স্যানিটেশনের মধ্যে হত আহা.......

নেহেরু, অটল, মনমোহনের সাথে সাথে কঁ-চু-কী মোদীর জুমলার হাত থেকে দেশবাসী ও সেনা নিজে বেঁচে যেত।
সবচেয়ে বেশি হা-হুতাস করছে ভারতীয় TV মিডিয়া, অনাথ অনাথ ভাব। কারন কোন গাড়িতে অভিনন্দনজীকে আনা হবে সেটাও জানা যাবেনা, আগামী ৩-৪ সপ্তাহ নাকি অন্তরালেই থাকবে। স্ট্রোক হয়ে যাবার পরিস্থিতি প্রায়। ওদিকে পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল নাকি দেখাচ্ছে, সন্ধ্যা ৬টা ১৫ এর NDTV এর খবর। এটাও শ্লা ভারতীয় TV মিডিয়ার রক্তবমি প্রায়। কারন চুতিয়াস্তান এটাকে একটা ইভেন্টের মত করে দেখাচ্ছে।
যাই হোক, প্রতিটি চ্যানেলে চ্যানেলে প্রায় ডজন খানেক "সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ" থাকতেও এগুলো কেউ জানতনা? স্ট্রেঞ্জ...….