*****উন্মাদীয় রবিবাসর*****
(উন্মাদীয় বানানবিধি অনুসারে)
এটা একটা স্কুল পালানো আমোদগেড়ে- অর্ধশিক্ষিতের শিক্ষক দিবস উদযাপন। সক্কাল সক্কাল স্নানটান করে, গলায় পাওডার ও বগলে ডিও মেখে ভাবতে বসে যায়, কার গলায় ঠিক মালাটা চড়াবো? কারন যার জন্মদিন উপলক্ষে, এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, তাঁর নামটা উচ্চারনেও তো জিভ জড়িয়ে যায়। আর ঠিক কি কি ভাবে উদযাপন টা করবো! শিক্ষার ব্যাপ্তি ও গভীরতা যাহেতু মোটেই নেই , তাই ভাবনারা মাঝপথেই অনাথ হয়ে যায়। তবুও কিছু তো একটা করতে হবে তাই আর কি, তবে কেও ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না, এটাও অনুরোধ.........
সকালে একটা পোষ্ট দেখলাম, জনৈক ব্যাক্তির করা সেটি...
“স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল। 'যেমন খুশি সাজো' ইভেন্ট। বিভিন্ন জন নানারকম সেজেছে। হঠাৎ একজন ছাত্র সামনে বসে থাকা শিক্ষকদের ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে, চেয়ার টেবিল উলটে ফেলে দিল। সুললিত খিস্তি সহকারে শিক্ষকদের পরিবারের এমনকি স্বর্গত সদস্যদের প্রতি সমভাষায় তর্পন করে চলেছে। সকলে মিলে তাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। তখন ছাত্রটি চিৎকার করে উঠলো ' আমি সরকারি দল সেজেছি, আমি রাজ্যপাটে থাকা দলের প্রতিনিধি সেজেছি'”।
তবুও, আপনি কিন্তু কিচ্ছু দেখেন নি মাষ্টার মশাই...
এটা একটা দারুন প্রবাদ, যদিও আমদের কিছু অগ্রজ শিক্ষকেরাই এটাকে বাস্তবায়িত করেছি। বর্তমান প্রজন্মের বৃহদাংশ সেই পতাকাটাকে বয়ে নিয়ে চলেছেন স্বগর্বে।
শিক্ষক দিবস, এটাকে কি উদযাপন করা যায়? না কি শিক্ষক জাতির উদ্দেশ্যে অবশিষ্ট জাতির বাৎসরিক তর্পন। আচ্ছা শুধু মাত্র একটা বিশেষ দিনে শিক্ষকদের পেন বা বই উপহার দিয়ে আর তাঁদের সম্বন্ধে দু-চারটে বাছা বাছা শব্দবন্ধ প্রয়োগ করেই কি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পূর্নতা পায়! বোধয়হয় আমরা দায় মুক্ত হতে যায়, আমরা প্রত্যেকেই তো স্বাধীনচেতা, তাই এটাকে সাধ্যমত ঋণশোধের একটা নির্লজ্জ প্রয়াস হিসাবেও দেখা যেতেই পারে। নাহলে আজকাল প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা। কিছুকাল আগেও জনমানসে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হতো, এখন এমন অবস্থা যে রোজকার এই ক্রমবৃদ্ধিমান এই ঘটনাপরম্পরা শিক্ষকেরাও মেনে নিয়েছেন, বা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন, দৈনন্দিন প্রাতঃকর্মের মত।
শিক্ষার সাথে দানের সম্পর্ক অঙ্গাগীভাবে জড়িত। বিদ্বানরা বলে থাকেন, শিক্ষা এমন একটা সম্পদ যা দান করলে, উক্ত সম্পদের ক্রমবৃদ্ধি ঘটে, অর্থাৎ শিক্ষাদানের সাথে যুক্ত ব্যাক্তি ধনী হয়ে উঠেন, অন্তত জ্ঞানগত ভাবে। কিছু কাল পুর্বেও, প্রণামী হিসাবে যা জুটতো, তাতে করে শিক্ষকদের উনোনে কোনমতে জল গরম হত। সাহিত্যের পন্ডিত মশাইদের লক্ষ্য করুন, দেখবেন প্রায় সকলেরই এক একজন মহান পন্ডিত রুপে বর্নিত ও সাথে সাথে দরিদ্র ও বটে। কেও কেও হতদরিদ্র। মানে সমাজচিত্র টা এমন , যেন শিক্ষকের দরিদ্র হওয়াটা শিক্ষাপেশার অন্যতম চারিত্রিক ও সামাজিক গুন। নাহলে আপনি শিক্ষক নন। আর এইটাই আমাদের মনে বদ্ধমূলে প্রেথিত, যে শিক্ষককে ধনী হইতে নাই।
পণ্ডিত নেহেরু বলেছিলেন, ‘আগামী দিনের ভারত কেমন হবে, তা নির্ধারিত হবে শ্রেণীকক্ষসমূহে।’ কথাটা কালজয়ী, কারন এটা আজও সত্য।
শিক্ষার্থীদের কাছে বিদ্যালয় আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে, এটাই নীতিতিত্ব। শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় প্রাণের স্পন্দন জাগবে না। যদিও শিখিয়ে পড়িয়ে একটা রবীন্দ্রনাথ তো দূরঅস্ত একটা সচেতন রবীন্দ্ররচনার বোদ্ধা বা তাঁর দর্শনের আলোকে আলোকিতো করা যেতেই পারে। শিক্ষাকে ফুর্তিময়, আনন্দঘন, করে তুলতে পারলে শিক্ষার্থীরা নিজের জীবনের জন্য শিক্ষাতে উদ্ভূত হবে নিজে থেকেই, তাঁর জন্য শিক্ষকদের উদ্যোগ নিতে হবে।
পেশাদারিত্বের মোড়কে স্নেহশীল পিতার মত শিক্ষার্থীদের মনের কাছাকাছি পৌছে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে। নীতিহীন শিক্ষা আর অশিক্ষার মধ্যে ফারাক সামান্যই, দুটোই সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। নিজেদের ভুল নিজেরা না শোধরালে অন্যের ক্ষমতাও নেই পরিবর্তন আনা। আমাদেরে বেশিরভাগ শিক্ষকেরাই মিথ্যে হলফ খাচ্ছেন আর প্রাইভাট টিউশনের নামে, মোটা বেতনের বিনিময়ে লক্ষীলাভ করছেন। তবুও দষ শুধু ছায়া প্রকাশনীর। মেঝেতে টাইলস বসছে, ঘরে এসি বা চারচাকা গাড়ি। এখনো আমরা মানে শিক্ষকেরা যে বেতনই পাই না কেন , তাতে করে এই দুর্মুল্যের বাজারে সংসার চালিয়ে ওই বাহুল্য করা যায় না, যদি না শিক্ষক পরিচয় টা আমরা বেচতে পারি। ক জন আছেন এমন? যারা বিনামুল্যে শিক্ষাদান ব্যাবস্থার সাথে যুক্ত। মানে নিজেকে দাতা হিসাবে তুলে ধরতে!
বর্তমানে সমাজ বদলেছে, নানান আন্দোলন ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষকরা সমাজের মধ্যবিত্ত সমাজের সর্ব্ববৃহৎ প্রতিনিধি। বিশ্বায়নের বাজার কর্তাদের অন্যতম লক্ষ্য শিক্ষক সমাজ। কারন তাঁদের কে শিক্ষার্থীসমাজ অনুসরণ এর সাথে সাথে অনেক অবিভাবকগন অনুকরনও করেন। মহার্ঘভাতা সহ কেন্দ্রস্তরের সাথে রাজ্যস্তরের বেতন কাঠামোর ও অসামঞ্জস্য থাকতে পারে, তবুও অতীতের আরশিতে মুখ দেখলে, বর্তমান শিক্ষকেরাই নিজেদের ভাগ্যবান দেখবেন। ইহা বিতর্কিত ও প্রমানিত সত্য।
শিক্ষকতা বর্তমানে একটা পেশাও বটে। কারন ক্ষুধা বলে অধ্যয়টা জীবন নামক পুস্তকের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ অধ্যায়। সেখানে শিক্ষকেরা ব্রাত্য থাকেন কেমনে! শিক্ষকেরাও মানুষ, আমার বা আপনার ঘরেরই ছেলে বা ভাই। বণিককুল, রাজনীতিক বা সমাজবিরোধী সহ আমার মত উন্মাদদের মত চাহিদার উন্মত্ততা না থাকলেও, যেটা থাকে সেটাও একজন সামাজিক জীব হিসাবে সমপরিমানের এবং কম কিছুনা। তাঁদের জীবনেও নিত্যচাহিদা, লোভ, লালসা, কাম, ক্রোধ, ক্লান্তি, ইত্যাদি সহ সবকিছুই আছে, যা শিক্ষা ছারা অন্যপেশার মানুষজনদের ভিতরেও বিদ্যমান। সর্বপরি বিজ্ঞাপনের নির্লজ্জ ও দুর্দমনীয় হাতছানিকে উপেক্ষা করা, অতিবড় সন্তেরও যেখানে অসাধ্য, সেখানে বেচারা শিক্ষককুল আর কি করে। গা বাঁচানো যে অসম্ভব। তাছারা শিক্ষকের পরিবারের বাকি সদস্যগণ, তাদেরও চাহিদা বিশ্বায়নের সুত্র মেনেই, কিন্তু প্রত্যেকে উপার্যনাক্ষম নন। তাই শিক্ষকদের, উপায়ান্তর ভাবে শিক্ষাকে পন্য হিসাবে বাজারজাত না করা ছারা বিকল্প পন্থা কি আছে?
বেচারা শিক্ষক...
একজন মুদি দোকানি, বা কাপড়ের ফিরিওয়ালা বা চিকিৎসক, তাদের টা ও পেশা, কিন্তু সেখানে অনুকরন বা অনুসরণ খুবই নগন্য পরিমানে, কিন্তু শিক্ষা পেসার সাথে যুক্ত মানুষজন! সদা সর্বদা শিক্ষার্থী আর তাদের অবিভাবক সহ রাষ্ট্র যন্ত্রের আণুবীক্ষণিক নজরের আওতায়। জীবনিসুত্রের নুন্যতম তাৎক্ষনিক প্রতিবর্ত ক্রিয়াগুলোও অদৃশ্য সেন্সরের হাতে বাঁধা। বাকি পৃথিবী যেগুলো কে আমোদ হিসাবে মান্যতা দিয়েছে, উতশৃঙ্খল না হলেও, প্রকাশ্যে সেগুলোর বহু কিছুতেই, শিক্ষকদের কিন্ত উদযাপনে মানা। পেশাগত কারনেই অনেক ছোট ছোট সামাজিক বা ব্যাক্তিগত চাওয়াপাওয়া কে বলি কাষ্ঠে চড়াতে হয় বা আপস করে নিতে হয়। প্রথম প্রথম বাধ্য হলেও পরবর্তীতে অভ্যস্ত হয়ে যান।
এখন সাফল্য নির্ভর করছে আপনি কি, তাঁর উপর। যদি শিক্ষাজিবী হন তাহলে শুধুমাত্র শিক্ষা কে পন্য হিসাবে বাজারজাত করে পেশা তথা রুজি রক্ষা র তাগিদ, এতে করে সর্বচ্চ বুদ্ধিজীবির খেতাবটা পেতে পারেন। আর বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকলে ঠাটবাটে রাজপুত্তুর কেও হার মানানোর ক্ষমতা রাখবেন। মুশকিল দ্বিতীয় পন্থীদের নিয়ে , যিনারা শিক্ষাবিদ। এনাদের চাকুরি থেকে অবসরের পর পেনসনের টাকা ঠিক আটকাবেই আটকাবে। আসলে বিদ্যাটাকে ইনারা দানের বস্তু হিসাবেই দেখেছেন, আর বেতন কে সাম্মানিক হিসাবে। যারা জীবনে একটাবারও প্রমোদ ভ্রমনে যেতে পারেননি, কষ্টে সৃষ্টে কোনমতে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তবে এনাদের নিয়ে শিক্ষার্থীমহলে একটা গর্ব করার মত ব্যাপার থাকে। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে টুক করে মিলে যায়, এক আধটা, কান পর্যন্ত এঁটো করা হাসি সহ পেন্নাম।
কিন্তু ক জন দ্বিতীয় শ্রেনিভুক্ত হতে পারেন?? আমাদের অনেক শিক্ষকেরাই নগন্য ব্যক্তি স্বার্থের জন্য, ব্যাক্তিত্ব খুইয়ে প্রায় চরিত্রহীন হয়ে ক্ষমতাবানদের কাছাকাছি গা ঘেঁষা ঘ্যেষি করে বসছি। মেরুদন্ডকে বিক্রি করেদিচ্ছি। রাষ্ট্রের তৈরি চিত্রনাট্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিচালিত করার ভাবনা পোষন করে চলেছি। এই চরিত্রের কিন্তু কোন আমরা ওরা নেই, সব দশকেই এটা সত্য। শাষক বদল হয়েছে, চিত্রপটের পরিবর্তন হয়নি, বরং নির্লজ্জতার মাত্রা অনেক ক্ষেত্রেই সহ্যের সীমা ছারিয়েছে। শিক্ষিকেরা নিজেদের নিজেরা হেও করলে, বাকি সমাজের কি দায় থাকে সম্পূর্ন শ্রদ্ধা প্রদর্শনের? সমস্যা হলে, কুকর্ম করে মুষ্টিমেয় কয়েকজন, কিন্তু দুর্নামের ভাগীদার হয় গোটা শিক্ষক সমাজ।
এই লেখার শুরুটা ঠিক কোন স্থান থেকে করা উচিৎ এটা ভাবতে গিয়ে বিষয়টা ওভাবেই শুরু হয়ে গেলো। কেন শিক্ষকদের মধ্যে এমন শ্রেনি বিন্যাস ঘটলো? সেই ঘটনার দিকে দৃষ্টি পাত করলে দেখা যাবে - ‘বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে প্রথম গ্র্যাজুয়েট। কিন্তু অবাক করা মত বিষয় যে, তিনি বাংলা ভাষায় অনুত্তীর্ন হবার দরুন, কৃপা স্বরূপ কিছু নাম্বার ধরে দিয়ে তাঁকে উত্তীর্ন করানো হয়েছিল। এভাবে বাঙালি গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে তিনি প্রথম গ্র্যাজুয়েট হওয়ার গৌরব লাভ করেন। অথচ তাঁর লেখা বাংলা পড়েই কতজন উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করছেন। আমার মত উন্মাদ ও বঙ্কিমি সাহিত্য দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে এই কাকের বাসার মত প্রবন্ধ লিখতে উৎসাহিত হয়েছি।’
কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্র এর মত প্রতিভাসম্পন্ন মানুষ কেন এমন ফলাফল করলেন? কারণ, বাংলা ছিল তখন দারুণ সংস্কৃত ঘেষা। সেই সংস্কৃতের কঠিন ও দুরূহ বিষয়গুলো তাদের পক্ষে মুখস্ত করা ছিল কঠিন। মুখস্ত বিদ্যা শুধু একটি মুখস্ত জাতি উপহার দিয়েছে তা নয়, বরং কালের পর কাল জাতিকে পিছিয়ে দিচ্ছেও। আর সেই শিক্ষায় বলিয়ান আমাদের বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষকেরাও। কবিগুরুর ভাষায় ‘যে ছাত্র পকেটে করে নকল নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢোকে তাকে তোমরা বিদ্যালয় থেকে খেদিয়ে দাও, আর যে মগজের ভেতর চুরি করে নিয়ে ঢোকে তাকে তোমরা শ্রেষ্ঠ ছাত্রের সম্মান দাও, এটাই প্রকৃত শিক্ষা ব্যাবস্থা।’ শুধুই বা ছাত্র কেন, শিক্ষকেরাও তো অনেকেই এই পথেরই পথিক, বা সরক্ষনের প্রতক্ষ ফসল।
আজকের বিদ্যালয় গুলোতে যারা কৃতী হচ্ছেন, তাদের কে জাঁকজমকপূর্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে, পুরস্কারও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যারা তুলনামূলক খারাপ ফলাফল করেছে বা পাশ করতেই পারেনি সেই বৃহৎ অংশের হিতের জন্য কতজন শিক্ষক কি কি ধরনের উদ্যোগ নেন, ওই রকম ঘটা করে?। শিক্ষার আলো থেকে অপসৃত, অকালে হারানো বা অনগ্রসর প্রচুর শিক্ষার্থীরা পরিবারের কাছে তো দায় স্বরুপ। হতাশা আর অবহেলা থেকে এরা সমাজের অন্ধকার পথে পা বাড়ায়। অথবা শিশু শ্রম, ভিক্ষাবৃত্তি বা ওই ধরনের দুষ্কর্মের সাথে জড়িয়ে পরে। সমাজের শান্তিশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটায়। অথচ এই অকালে ঝরে পড়া, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের যদি সমাজমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেতো, তাহলে নিজেদের পছন্দমত পেশা বেছে নিয়ে তারা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারতো। কিন্তু সেই শিক্ষা দেবে কে? আজ যারা শিক্ষক বলে নিজেদের দাবি করেন, তাঁরা কতটা ওয়াকিবহাল, এই সকল বিষয়ের উপর? নিজের পেশা নিয়ে কজন কতটুকু গবেষনা করেছেন, নিজেকে সহ সম্পূর্ন ব্যাবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে।
শিক্ষকরা যদি এই বিষয়ে আরো মনোযোগী হতেন , তবেই বোধ হয় প্রকৃত শিক্ষক হয়ে উঠতে পারতেন। অন্যেরা শিক্ষকদের আর তাদের পেশাকে এতো হেও করতে পারতো না।
শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষকে বিকশিত করা, তাই শিক্ষক জাতির মেরুদন্ড। আর মেরুদন্ডের নিজেই যদি ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগা রুগী হন, পুরো সমাজটাই ঝাঁঝরা হয়ে যাবে, শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানবসম্পদের জাইগায় দক্ষ অসুরে রূপান্তরিত হবে। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই এই মেরুনন্ড কথাটা কেমন যেন আত্মশ্লাঘার মত শোনায়, আয়নার সামনে দারিয়ে অনেক শিক্ষকই বলতে পারবেন না যে আমিই সেই , যাকে আদর্শ শিক্ষক বলা চলে, আসলে নিজেকেই নিজে ধাপ্পা দেওয়ার মত ঘটনা। কবিগুরু বলেছিলেন, ‘জীবন যেমন হওয়া উচিত, শিক্ষাও তেমন হওয়া উচিত।’ জীবন ও শিক্ষা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাই জীবনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম সেরকম শিক্ষা চাই। আর শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষক বিনা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। আজকের ভারত দ্রুত উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। কিন্তু অধিক জনসংখ্যার ভারে নুজ্ব। তাই শিক্ষকদেরই এগিয়ে আসতে হবে সামাজিক পরিবর্তন আনতে। আমরা যারা শিক্ষক, তাঁরা নিজেদের একটু সম্মান করার পাশাপাশি নিজেদের পেশাদার করে তুলতে পারলে সত্যিকারের শিক্ষক হিসাবে পরিচিতি পাবো বা পরিচয় দিয়েও গর্ব অনুভব করতে পারবো।
এখানেও শেষ হয়ে গেল, আসলে আমি এর বেশী আর জানিই না যে।
~ উন্মাদীয় বানানদোষে দুষ্ট
No comments:
Post a Comment