Tuesday, 5 January 2016

টাটকা অনুভুতি




টাটকা অনুভুতি
****************

অভিযোজন




আজ দুপুরে আমার কোলকাতা অফিসে বিল্ডিং এর নিচের তলায় এর দুজন ছেলেকে ওই অফিস বাড়ির বাকিরা, মানে দারোয়ান বা ওই জাতীয় কর্মচারিরা গনধোলাই দিয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে পাঠিয়ে দিয়েছে। শুনেই তরিঘরি ছুটলাম। চারিদিকে যা জঙ্গিযোগ যা কিছু হতেই পারে। কমপক্ষে চোর। যদিও তারা আমার অফিসের কর্মচারি নয়, মনটা ধুকপুক করছিল। গিয়ে যা দেখলাম, চক্ষু চড়কগাছ।

ছেলে দুটো উড়িষ্যার কোন একটা স্থান থেকে কাজ করতে এসেছে। বয়স বছর ২৫শের মধ্যেই। হতদরিদ্র পরিবারের। মুলত পিয়নের কাজ করা বিধান । কিন্তু সকাল সন্ধ্যের ঝাড়ুদার থেকে রাতের নাইট গার্ড ওরাই। পায়খানা বাথরুম পরিষ্কার করার কাজটিও ওদের মত ছেলেগুলোই করে। দুটো এক্সট্রা পয়সা আমদানি হয় তাদের। বছরে ২-১ বার বাড়ি যায়।

আজ রবিবার, সব ছুটি। ওরাও নিজেদের মত নিজেদের রুমে ছুটি উপভোগ করছিল। ঘটনাচক্রে ওরা গে। হঠাৎ ওই বিল্ডিং এর অন্যা এক দু জন কর্মচারী তাদের তাসের আড্ডায় নিমন্ত্রণ দিতে এসে, অপ্রস্তুত অবস্থায় দেখেফেলে।

পরবর্তী ঠিকানা SSKM.

যৌনতা কি জন্মের সময়ে নির্ধারণ করা হয় বা যায়?
প্রকৃতিই তো আমাদের নারী বা পুরুষ বা সমকামি বানায়।
আস্তিকরা বলবেন ঈশ্বর। তাহলে তো সমস্যাই শেষ।

তাহলে যারা জন্মগত লেসবিয়ান বা গে, তাদের সাথে সমাজ এতো দূর্ব্যবহার করে কেন? সমাজ কে ছেরে দিন, আমরা ব্যাক্তিগত ভাবে কি সমকামিদের সুনজরে দেখি? দেখি না। আমরা বরং ভাবি, কি ভাবে তাদের মিলন হয়? সঙ্গম সুখ কিভাবে তাঁরা উপভোগ করে? প্রশ্নের শেষ নেই। অথচ প্রত্যেক স্ট্রেট যৌনতা যুক্ত নারী বা পুরুষ মৈথুন করেননি, এমন সতী কেউ নেই। তা সে স্বিকার করুক বা না করুক। তাহলে তখন কিভাবে সুখ লাভ করেন? কেউ কি কখন ও ভেবেছেন, যারা পৃথিবীর বিভিন্ন সেনাবাহিনির বীর জওয়ান, তাদের চাকুরি জীবনের তথা যৌবনের ওই বিস্তীর্ণ অংশে কি ভাবে যৌন ক্ষুধা মেটান?

যদি সমকামিতাকে ত্রুটিই ধরে নিই, তাহলে জন্মগত ত্রুটি কে কেন সারাজীবন একজন সুস্থ মানুষ সারাজীবন ক্যান্সারের মত নিজেকে অসুস্থ মনে করে অপরাধীর মত বেঁচে থাকবে?

যৌন অভিযোজন সাথে করে নিয়েই তো আমরা জন্মলাভ করি। যৌনতা তো স্বাভাবিক জৈবিক ক্রিয়া। বিজ্ঞানী, ধর্মীয় নেতা, জন প্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় তাদের মেধার ভিত্ততে। যৌনতাকে কি বেছে নেওয়া যায়? আমরা যারা স্ট্রেট তাঁরা কি কখনো সমকামে নুন্যতম আগ্রহ দেখিয়েছি? বরং আমার ব্যাক্তিগত মতে ব্যাপারটা বেশ ঘৃনাই লাগে। এখন ভাবুন কেও যদি আমাদের সমকামে জোর জবরদস্তি করে, অবস্তা টা কি দাঁড়াবে।

অপরিবর্তনীয় জৈব কারণের দ্বারা নির্ধারিত হয় কে সমকামী, .কে নারী কে পুরুষ। সেই মত সমাকে নারী ও পুরুষের স্থান। নারীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা থাকলে সমকামিদের জন্য কেন নয়? জিন বা হরমোন কে কে অস্বিকার করতে পারে? আর কেও পুরুষ জিনের অধিকারী থাকলে কেনই বা সেই ঔদ্ধত্য বাকিদের উপরে প্রকাশ করবে?

অধিকাংশ পুরুষ জাতিই শুক্র প্রদান করা ছারা সন্তান পালনে কোন প্রত্যক্ষ ভুমিকা থাকেনা। পক্ষান্তরে অনেক পুরুষই সন্তানের পিতা হতেন না, যদি না যৌনতার সাথে শুক্রের ব্যাপারটা জড়িত থাকত। আজকে নারীবাদিরা আওয়াজ তুলছেন, তাঁরা সন্তান উৎপাদনের মেসিন নন। সঠিক কথা। তাহলে শুধু বংশ রক্ষার দোহায় দিয়ে সমকামিদের উপরে রাষ্ট্র বা সমাজ বা পরিবার কেন তাদের মত ও শারীরিক চাহিদার বিপরিত তথা এক অত্যাচার চাপিয়ে দেবে?

সমকামী মানুষদের নিয়ে, বৈষম্য সুরক্ষা দিতে, এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বাধ্যবাধকতাকে দূরে রেখে শুধু মাত্র মানবিকতার নজরে বিষয় টা কে কি ভাবা যায় না?


ছবিঃ ইন্টারনেট 

No comments:

Post a Comment