**************
রক্ষিতা
It's all about the sex robot “Roxxxy”
যৌনতা চিরন্তন, প্রানী জগতে সৃষ্টির একান্ত উৎস। এই যৌনতাই, যুগে যুগে আদি
রস সৃষ্টি করিয়া আসিয়াছে। মনু, বাৎস্যায়ন থেকে কালিদাস হয়ে বঙ্কিমচন্দ্র,
কালে কালে যৌনতা সাহিত্যে বর্নিত হইয়াছে। কারন, ইহা নিজস্ব, একান্ত
ব্যক্তিগত, এবং চুরান্ত গোপনীয়তাতে ভরপুর।
বয়ঃসন্ধির কাল হইতেই
জীবকুলে যৌনতার বিকাশ ঘটিয়া থাকে। মানবে তাহা বাবা আদমের জামানা হইতেই
বহমান। যৌনতার সাথে মত্ততা অঙ্গাগীভাবে জরিত। মনুবংশীয়দের বিভিন্ন
পৌরাণিক কাহিনি থেকে পৃথিবীর সুদীর্ঘ ইতিহাসে দৃষ্টিপাত করিলে দেখা যাইবে
যে, এই যৌনতার কারনেই বহু রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধের জন্ম হইয়াছে। বহু হানাহানির
নাভিস্থলই হইল যৌনতা। জীব জগতেও যৌনতার জন্য খুনখুনি নিত্তনৈমত্তিক
ব্যাপার। সেই খুনের বিচার আদালতে হয় না বলিয়া আমাদের কাছে হয়তো তাহার
ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়নি।
জানোয়ার কীটপতঙ্গ বা অমানবিক(!) নাকি যাহারা,
তাহাদের অবশ্য লজ্জিত হইবার দায় নাই, তাহারা প্রকাশ্য যৌনতা তে বিশ্বাসী।
কারন তাহাদের পুর্বরাগ শুধু মাত্র সঙ্গী নির্ধারনের জন্য, এবং তাহারা
বহুগামী। এবং এই যৌনতা সম্বৎসর কাল ধরিয়া বিরাজমান থাকে না, নির্দিষ্ট
ঋতুতে কামোদ্দীপনার আগমন ঘটিয়া থাকে। প্রেমাস্পদ কামাতুর শরীরের উপর এই
যৌনতা সীমাবদ্ধ, মাদকাসক্ত মাধুরীমা হৃদয়ের উপস্থিতি খুবই নগন্য, যাহা বীর্যের স্খলনেই পরিসমাপ্তি ঘটে।
মানব যৌনতার শুরুও, ওই পাশবিক ধারাতেই
শুরু হইয়া ছিল বলেই বিশ্বাস, কিন্তু একটি স্থানে আসিয়াই যৌনতার অন্য প্রতিরুপ আমরা লক্ষ
করিয়া থাকি। কারন টি সম্পূর্ন মানবীয়। মানবের ভাবনার পরিসর যৌনতাটা
কেও অনেক বৃহৎ মঞ্চ রূপে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। মানবের যৌনতা শুধু মাত্র
বিশেষ ঋতু ভিত্তিক নয়। কামোত্তেজনার ভাব জাগ্রত হইবার জন্য শুধু মাত্র মননে
বা ভাবনায় অনুরাগের অঙ্কুরণ হইলেই, সঙ্গী বা সঙ্গীনির সহিত আদিম রিপুর ক্রীড়া তে
লিপ্ত হইতে পারে। কখনো কখনো মানব সত্তা নিয়ন্ত্রন হারাইয়া যায়, পাশবিক
স্বত্তারা সেই স্থান অতিদ্রুত পরিব্যাপ্ত করিয়া নেয়। যৌন পীড়ন বা ধর্ষন
নামক সামাজিক ব্যাধিটি সেই ক্ষনেই জন্ম নেয়। সমাজবদ্ধ জীবের সন্নিকটে ইহা
একটি ঘৃন্য সামাজিক ব্যাধি হিসাবেই পরিগনিত হইয়া থাকে, এই যৌন নিপীড়ন।
কিন্তু এই পীড়ন ব্যাতিক্রম। মানবের মধ্যে যৌনতা প্রেম , ভালবাসা , পছন্দ,
প্রণয়, অনুরাগ, লিপ্সা, স্নেহ, প্রীতি ইত্যাদি নানা ধরনের শর্তের উপর
নির্ভরশীল। শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদাই মুখ্য নয়। মানসিক চাহিদা টা এ
ক্ষেত্রে মুখ্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানব গোষ্ঠির নিকট। এই একটি কারন স্বরূপই,
বিভিন্ন মানবীয় অনুভুতি বা চেতনা, অন্যান্য জীব দিগের সহিত মানব কে আলাদা
করিয়াছে।
হৃদ মাঝারের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অনুভূতি যেমন, গভীর
অনুভূতি, গোপন অনুভুতি, প্রকাশিত অনুভূতি, অপ্রকাশিত প্রকাশ, আঘাতপ্রাপ্ত
অনুভূতি, মিশ্র অনুভূতি, কঠিন অনুভূতি, সরল অনুভূতি, সত্য অনুভূতি, মিথ্যা
জেনেও আপন করে নেওয়া অনুভুত বোধ ইত্যাদি নানা ধরনের অনুভুতির সমাহারে সমৃদ্ধ মানবের
যৌনতা।
পাশবিব যৌনতার ন্যায়, মানব ও শুধু মাত্র শারিরিক
ক্ষুন্নিবৃত্তির তাড়নাতে অনেকেই পতিতালয়ে গমন করিয়া থকেন সত্য। সত্যিই কি ইহাতে
কি বারবনিতারা যৌনজীবনকে পরিপূর্ণ সুখময়, আনন্দময়, তৃপ্তিকর ও তাৎপর্যময় করে তুলতে
সক্ষম! এমন ও বহু ঘটনার বিবরন আমরা পেয়ে থাকি, যে পতিতালয়ের কোনো গনিকা কে
লইলা কোন ভদ্র(!) সন্তান পলায়ন করিয়াছে, ইহা কি শুধু যৌনতার জন্য? না কি
যৌনতা কে ছাপাইয়া মননের অনুভুতি গুলো অধিক কর্মন্য হইবার জন্য ই এই ঘটনার
দৃষ্টতা। দর্শনে কি যৌনতা নেই!! বিষ্ফোরিত চক্ষুতে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি
ধর্ষন অনুষ্ঠিত হইয়া চলিতেছে। তাই মানবীয় যৌনতা শুধু মাত্র শারীরিক সীমাতে
আবদ্ধ নহে। বরং অনেক বেশী মানসিক।
আজিকে বহুলচর্চিত খবর,
আমেরিকাস্থিত নিউ জার্সির কোন এক এ.ভি.এন নামক কোম্পানি প্রাপ্তবয়স্কদের
বিনোদন উত্পন্ন দ্রব্যাদির আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে “রক্সি” নামক এক যন্ত্র
মানবীর উদ্ভাবন ও উপস্থাপন করিয়াছেন। যিনি যৌনতার লীলাখেলায় পারদর্শী। যথেষ্ট
চমকপ্রদ। ইহাতে বিস্ময় কম কিন্তু প্রশ্ন অনেক। যৌনতা কি শুধুই বিনোদন??
তাহলে তো প্রেম নামক প্রতিষ্ঠানটির অস্বিত্ব যে সঙ্কটাপন্ন। আদপেই কি তাই?
আমরা কি আমাদের আশেপাশে এই রকম অজস্র রক্ত মাংসের রক্সি কে দেখিতে পাই না!
যাহারা মদ্যপ স্বামী/শয্যা সঙ্গীর বা মত্ত পুরুষ সঙ্গীটির সাথে রতিক্রিয়া, একটি মিনিট
পনেরোর বিনোদন ব্যতীত আর কিছু না। যাহারা বিভিন্ন কার্যালয়ে, দপ্তরে, এমন কি
পততালয়েও চরম অনিচ্ছা স্বত্তেও মহিলারা অনিচ্ছার ঘৃন্য যৌনাচারে লিপ্ত হইতেছেন। কেউ ক্ষুধার
তারনায়, কেউ আবার নিরুপায় উপার্জনের জন্য , কারন তাহার রোজগার দ্বারাই হয়তো অনেকর ক্ষুন্নিবৃতির নির্বাহন হয়।
অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের ক্ষেত্রেও ইহা সমভাবে প্রযোজ্য।
অনেক দম্পতিই রহিয়াছে যাহাদিকের নিকট যৌনতা ও এক প্রকার দৈনন্দিন
কার্যসম্পাদন ব্যাতিরেকে অন্য কিছু নহে। তাহাতে ভজনা, সেবা, অনুবর্তন,
অনুবর্তিতা, সেবন, পরিচর্যা , উদারতা, কৃপা, দয়া, দয়াশীলতা, অত্যান্ত
সুচারু ভাবে উপস্থিত রহে । অনুপস্থিত শুধু, স্বামী বা স্ত্রী এর সুক্ষ সুক্ষ অনুভুতি গুলো আপন
করিবার ক্ষমতা। তাহাদের মনন অন্য কোন সক্ষম অনুভুতির কাছে বাঁধা পরিয়াছে,
হয়তো সেখানে শরীর নামক বস্তটি ই উপস্থিত নেই। সবটাই মনন। এই সমস্ত যুগল
হয়তো দম্পতী রুপেই সমগ্র জীবন অতিবাহন করিয়া থাকেন, কখনই মিথুন হইতে পারেন
না। তাহলে ইনারাও কি রক্সি নহে!!
মস্তিষ্কে অবস্থিত যৌনাধারেই
মানবের কামদ্দিপনার উৎপত্তি। সেটা দর্শনের মাধম্যে শুরু হইলেও, অনুভুতির
মাধম্যে ই পরিপূর্ন সুখ তৃপ্তি ও আনন্দ লভিত হয়। যৌনতা তো আসলে একটা
নির্দিষ্ট সময় বিশিষ্ট নির্ঘন্ট।
মানসিক ভাবে পরিপক্ক ও সমকক্ষ দুইটি হৃদয়ের মিশেল না ঘটিলে আসলে তো সকলেই আমরা রক্সি হইয়া পড়িব। যেমন
অনুসন্ধিৎসু দোদুল্যমান মন প্রকৃত অপ্রার্থিব সুখকর যৌনতা প্রসব করিতে
পারে না। তেমনই কেবল মাত্র মদমত্তময় যৌনতাও মনজগত কে আসমানী চাঁদোয়াতে
নিয়ে যাইতে অক্ষম। ইহা সাময়িক উত্তেজনার কারন হইতেই পারে, কিন্তু
দীর্ঘমেয়াদি চরমানন্দের প্রকাশ কখনই নয়।
রক্সি আসলে কিছু ধর্ষকাম
ব্যাবসায়ি মানসিকতার নির্লজ্জ ফসল। সামাজিকভাবে পদস্থ, আর্থিকবভাবে
শক্তিশালী কিছু সুশীল(!) ব্যাক্তিবর্গের ক্রিড়া সরঞ্জাম এই রক্সি।
আমাদের তৃতীয় বিশ্বের প্রতিটি কোনে প্রত্যহ হাজার হাজার রক্সি জন্ম নিয়ে চলেছে। যন্ত্রচালিত যৌনাধার নয় রক্তচলিত যৌনাধার।
(উন্মাদীয় বানানবিধী সহ প্রাপ্তমনষ্ক দের জন্য)
No comments:
Post a Comment