"আমার কি?
কুতাই কি ঘোটচে তানিয়ে আমার বাপু মাতাবেতা
করে লাব নেই। আমি বরন কোবতে লিকি, জোকস শেয়ার করি। মামনিদের পোষ্টে জালাময়ী কমেন্ট
করি।
আমার কি”!
বাদুরিয়ার ঘটনাতে যারা ভাবছেন 'আমার কি!'
তাহলে মনে রাখুন পরবর্তী শিকার যদি আপনি হন
তখন বাকি অন্যরাও আপনার মতই বলবে 'আমার কি'। তেরোটা নিউজ চ্যানেলের ১১ ঘন্টা ধরে স্ক্রলে আপনার নাম দেখাতে থাকবে আর পরদিন সংবাদপত্রে জ্যোতিষ বিজ্ঞাপনের পরে দু লাইনের একটা
'খবর', ব্যাস। সোস্যাল মিডিয়াতেও আপনার টপিক ততক্ষণ,
যতক্ষণ নতুন টপিক না আসছে। এপাড়াতে ঐশ্বর্যের মনোপজের শুষ্ক খবরও
বন্যাধসের মত খবরের গুরুত্বকেও এক লহমাতে শুঁষে নিতে সক্ষম।
ইন্দিরার জরুরী অবস্থা দেখিনি, ইনফ্যাক্ট
আমার জন্মের আগেই ইন্দিরা গান্ধী খুন হন। চমকের বিষয়ে তিনি কোনো অংশে কম ছিলেননা। মমতা ব্যানার্জী কিছুটা সেই জুতোতেই পা গলিয়েছেন, দক্ষিনী প্লাস গবলয় প্লাস
ইন্দিরার কম্বো ককটেল। ইন্দিরা আমলে না ছিল
টিভি না ইন্টারনেট, সবেধন নীলমণি শুধু সংবাদপত্র।
তাকেও ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রণ করার পরেও পতন কিন্তু রোখা যায়নি। আজকে গোটা বিশ্বজুড়েই
প্রচার সর্বস্ব অর্ধশিক্ষিত উন্মাদ হাল্লা রাজাদের দাপট, সেটা ট্রাম্প হোক বা
মোদীজি বা মমতা ব্যানার্জী। আসলে এটা তথাকথিত শিক্ষিত সম্প্রদায়েরই অপদার্থতা। কেন্দ্রের শকথেরাপি সরকার বা রাজ্যের লুটেরাদের দলেরও পতন হবেই,
সেটা আমি বা আপনি চাই বা না চাই, তাতে কারো যায় আসেনা। এখন আমরা বাঙালী বীরপুঙ্গবরা যদি বউএর সায়ার নিচের
নিশ্চিন্ত যাপনের সুখ ত্যাগ করে, "না"
কথাটা মিনমিন করেও একযোগে বলার শক্তি রাখি, চোরচাপ্টার দলেরা নপুংসক হয়ে যাবে শীঘ্রই।
সকাল থেকে আপনি বাস্তব
দুনিয়াতে নানান রোজদিনকার কাজ সেরে ঘরে ঢুকলেন, এতক্ষণ কোথাও ধর্ম বালাই অত্যাবশ্যকীয় ছিলনা, অথচ ফেসবুকে যেই এলেন আপনি কিন্তু তীব্র ধার্মিক। কি আশ্চর্য দেখুন, জনৈক ঘোষ বাবু
হিন্দু সংহতির পোষ্টার ছাপাতে প্রেস পাড়াতে যাবার আগে রাজাবাজারের সস্তা হোটেলে বিফ ভুনা দিয়ে তিন প্লেট ভাত সাবড়ে, একটা নিরামিষ পান স্বাত্তিক মতে
তুলসি (রজনীগন্ধা থাকলে এক্সট্রা সোহাগ) সহযোগে মুসলমানের মা মাসি করতে বসলেন। অন্যদিকে মঞ্চে ওঠার আগে গ্রীনরুমে কাঁচের গ্লাসে বিশুদ্ধ হুইস্কি নিট,
গলায় ঢেলে জনৈক হকসাহেব, মাথায় ফেজ টুপি চড়িয়ে হিন্দুত্বের মা
মাসি করতে লাগবেন। এগুলো সবটা মিথ্যা, কারন আপনি এগুলো একটাও নিজে চোখে দেখেননি তাই। অথচ
এরাই যখন
বলবে অমুকে স্থানে গোমাংস বিক্রি করছে তমুকে বা ওই গ্রামে মসজিদে কিছু লোক হামলা করেছে, অমনি রে রে করে
লেগে পরবেন সত্যতা যাচাই না করেই। আপনি সত্যিই বিপ্লবী।
আর কবি! তুমি প্রেমের
কবিতা আঁকো, তোমার কোনো দায় নেই, শুধু তোমাজ জন্য আমরা দায় বায়।
বাস্তবের মাটিতে আপনি একজন
নিপাট ভদ্দরলোক। ফেসবুক বা টুইটারে আপনি বাঘমারা পালোয়ান, আসলেতে
আপনি অমেরুদণ্ডী ক্লীবলিঙ্গ। আপনার মনুষত্বের ধ্বজভঙ্গ হয়েছে, যেটা ফেসবুকে এলে
খানিক চিরিক মারে বাকিটা শীঘ্রপতন। যদি মানুষ হন, তাহলে
যেভাবে পারেন প্রতিবাদ করুন। ফেসবুকে আছেন তো? পোষ্ট লিখুন , কমেন্ট করুন, প্রতি
পদে বুঝিয়ে দিন আপনি হুলিগানদের দলে নেই।
কি বলছেন! কেও শুনবেনা? কেও পড়বেনা? ভিড় বাসে যখন বাতকর্ম করেছিলেন কে
দেখেছিল? বা অপত্য সুখে যখন ভরা বাজারে সন্তানের কপালে চুমু এঁকেছিলেন কাকে
দেখাবার জন্য? দুটোই তো স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে করেছিলেন। এবারেরটাও নাহয় তেমনটাই করুন।
কেউ কেউ সোশ্যালমিডিয়াকে দোষ দিচ্ছে, তাদের বলি যখন সোস্যালমিডিয়া ছিলনা তখন কি এই
ধরনের হানাহানি হয়নি! আসলে পেটোয়া মিডিয়া যখন যার খায় তার মানমত খবর সম্প্রচার
করে। সোস্যালমিডিয়া যেমন দ্রুত গুজব ছড়ায় তেমনই তেতো সত্যিটাও প্রকাশ্যে আনে
পরমুহুর্তেই। কই একটা রক্ত চেয়ে কোনো পোষ্টে স্বঘোষিত সমাজরক্ষকদের আতসকাঁচ দিয়ে
খুঁজে পাওয়া যায়না।
ভার্চুয়াল বলে আদতে
কিছু হয়না, বস্তু পৃথিবীতে বসেই আমরা হাওয়াতে ফানুশ ওড়াচ্ছি, আদপে ব্লক করা যায়না কাওকেই, ওটা উটপাখির মত বালিতে মাথা গুজে নেওয়ার নামান্তর। আমাদের দেশে
গননন্ত্র নেই এটা প্রজাতন্ত্র, তাই রাজা আর প্রজার বিস্তর প্রভেদ। এদেশে
পাই টু পাই মুল্য চোকাতে হয় নিজেকেই।
মূল সমস্যাটা হচ্ছে
দেশের যুবসমাজে, কর্মসংস্থান না থাকাতে বেকারের সংখ্যা হু হু করে রোজ বৃদ্ধিপাচ্ছে। যারা পুঁথিগত ভাবে অশিক্ষিত, আর যাই হোক তারা অন্তত
বেকার নয়, মোট বয়েও রুজিরোজগার করছে। এদের কাছে জিওর ফ্রির নেট বড় জোর পানু আর নতুন গান ডাউনলোড করতে লাগে। ফেবু টুইট্যার
এদের দুনিয়া নয়। সমস্যা তাদের নিয়ে, যাদের পেটে
ভিক্ষার ঝুলিতে থাকা কাঁড়া চালের মত একটা ধারাপাত আর আর্ধেক পর্ণপরিচয় আছে,
থুরি ওটা বর্ণপরিচয় হবে। এরা কাঠ বেকার, নিজের বাপ-মা ও
এদের উপরে ভরষা করে বাড়ির সবজির বাজারে পাঠায়না, অন্যে এদের কি কাজ দেবে? বাইরে
গিয়ে বাতলামো বা মাতলামো করলে নিশ্চিত ক্যালানি, আবার
ভদ্রসমাজের আলচনাও এদের এন্টেনাতে নোসিগন্যাল। এদিকে মুহুর্মুহ বিজ্ঞাপনের হাতছানি ও নেশার প্রয়োজনে দু পয়সার জন্য এরা মরিয়া। হাতে অগাধ সময়, যারজন্য সমস্ত মৌলিবাদী ও
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এই বেকার যুবাদের দলই সফট টার্গেট। ভাল
আর মন্দের ফারাক বোঝার জ্ঞান এদের নেই, তাই অধিকাংসই অজান্তে এদের ফাঁদে পা দেয়।
এদের কারো নাম জামাল কারো নাম তারক। অথচ জামালের বাড়ির দুধটা সমীর ঘোষই দিয়ে যায়,
আবার তারকের বাড়ির সস্তা সব্জিটা মনসুরের জমির। এক্ষেত্রে কারোর জাত যায়না। যেমন
মিয়া খলিফা বা সানি লিয়নের ভিডিও ক্লিপিংসের জাত নেই।
এখনও দাঁড়িয়ে মুতলে যাদের ১ ফুট দূরে ফেলার
দম নেই, সোস্যাল মিডিয়াতে সব একেকজন জন সিন এর মত ফুটখানেক লম্বা লিঙ্গওয়ালা পুরুষ
ভেবে জ্বালাময়ী সব পোষ্ট বা মন্তব্য করে। সৌভিক না কি
যেন নাম, কাল নামটা সামাদ হতে পারে, পরশু অরুন বরুন,
বাবর, শুকুর যে কোনো নাম হতে পারে। তালিকাটা রোজ লম্বা হচ্ছে। এদের পরিচয় এরা বেকার, হ্যাঁ ছাত্র হলেও তারা ছাত্র হিসাবেও তলানি শ্রেণীর।
এরা সকলেই আভা টেলর, দিলো হার্পার, সিডনি কোল বা স্তোয়ার একনিষ্ঠ ভক্ত। ভক্তি রসে না হলেও খেয়ালি
চুলকানি রসের প্রকোপে, বিকৃত ধর্মস্থানের বা ধর্মগুরুদের ছবিগুলোও
মোফোস থেকে পানু ডাউনলোড করার ছলে ফেবুতে শেয়ার বা আপলোড করে দিয়েছে। রেন্ডিয়া, ফাকিস্থান
বা কাংলাদেশীও ট্রলগুলোও এরাই বিপণন করে সযত্নে। ভাবুন আমরা বাড়িতে বউ এর ক্যালানি পীড়িত মানুষ, কিম্বা বউ পিটিয়ে বিল্পবী। নিজের ইজের নিজে রক্ষা করতে পারিনা প্রায় সকল
ক্ষেত্রে, আমরা
সমাজকে রক্ষা করতে পারিনা, আমরা
ধর্মকে কিভাবে রক্ষা করব? আর যে ধর্মকে কয়েকজন মানুষকে রক্ষা করতে হয় সেটা অদৌ
ধর্ম?
সোস্যালমিডিয়াতে সবচেয়ে বেশি পোষ্ট ও কমেন্ট
করেন তরুণ প্রজন্মের গবেষক ও শিক্ষকেরা। তারপর অন্যান্য চাকুরিজীবিরা, বাকি পেশাদারেরা এদের অনেক
পরে। যারা আক্ষরিক অর্থে গতর খাটিয়ে তাদের সময় হয়না এই
সব আতিসায্যের। অথচ কিছু শিক্ষক ও উচ্চশিক্ষিত (!) মানুষজনই লাইক আর কমেন্টের লোভে
বিদ্বেষ বিষকে ক্যান্সারের মত ছরিয়ে দিয়ে মজা লোটেন। যাবতীয় অপপ্রচারের উস্কানিমূলক ট্রল বা ভিডিও গুলও এদের তৈরি। অধিকাংশই
সংগঠিত মৌলবাদী সংগঠনের অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে বাকিটা নিজ দুরভিসন্ধিতে। আর সেগুলোকে
অবশিষ্ট অকর্মা শেয়ারবাজদের দল শেয়ারবাজারের সূচক বাড়বে মনে করে যা পাই সবের সাথে
এগুলোও নির্বিচারে শেয়ার করে চলে। এই সকল শিক্ষক
তথা শিক্ষিত(!) অ-মানুষদের থেকেই সবার আগে নিজেদের বাঁচাতে হবে, কারন এরা আসলে মাতুল বীর্যজাত জারজ।
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত এরাই স্লিপার এজেন্টের কাজ করে চলেছে, আর সমাজের সেই বেকার
অর্ধ শিক্ষিত অংশকে হিংস্র করে তুলে হানাহানিতে ঘৃতাহুতি দিচ্ছে। এদের রঙিন
মুখোশের আড়ালের কদর্যরূপটা অবলোকন করা অত্যন্ত দুরূহ কিন্তু অসম্ভব নয়। সবার
আগে এদের বয়কট করুন।
তাই 'না' বলতে শিখুন।
ঠাকুরের মুর্তির
মাটি কি হিন্দুর জমিরই হয়? কবরের ছাওনির বাঁশও কি
মুসলমানের ঝাড়ের? মন্দিরে মসজিদে যে ধুপকাঠি জ্বলে
সেগুলোর বানানেওয়ালারা কি সকলে স্ব স্ব জাতের? মাজারে বা
মন্দিরের ফুলফুলো কি সব নিজ নিজ ধর্মের গাছের? কোন গাছের কি ধর্ম? ধুতি নামাবলী কি
জোলারা বোনেনা? বোরখা বা কাফনের সুতো মুসলমানেরই
তৈরি? হাসপাতালের বেডে শুয়ে কোনোদিন ডাক্তারের জাত
শুধিয়েছেন? ছেলের স্কুলে কোন হিন্দু প্রথম হচ্ছে বলে আপনি হিন্দুবীর
কখনও কি নিজের ছেলেকে বলেছেন - " না বাবা তোমার ফার্স্ট হয়ে লাভ নেই, তোমার
হিন্দু ভাই ফার্স্ট হচ্ছে তো"। আপনি তো
মুসলমান, আর ইসলামে কোনো সাবকাষ্ট নেই বলেই জানি।
তাহলে চাকরিতে সুবিধে পেতে OBC সার্টিফিকেটের জন্য যখন আবেদন করলেন তখন আপনার জাতিসত্বাতে কি কন্ডোম লাগিয়ে রেখেছিলন?
আপনার কি আছে একা লড়ার দম এই সংগঠিত
মৌলবাদের বিরুদ্ধে? RSS হোক বা সিমি বা আধুনা জামাতপুষ্ট
একটা অংশ,
এরা ISIS বা তালিবানি দের ভারতীয় এডিশন, যাদের
রাষ্ট্র পুষে রেখেছে জামাই আদরে। নাহলে আপনি যদি
প্রশ্ন করেন গঙ্গা প্রকল্পের টাকা কোথায়? বা এতো কৃষি বাজার করে কি বা কার লাভ
হয়েছে! নায্যমূল্যের দাম কতটুকু চাষী নিজে পাচ্ছে! নোট বাতিলের সুবিধা কি হল!
ক্লাব উন্নয়নের টাকা বিলি চার বছরে পড়ল, কটা যুব এথলিট আবিষ্কার হয়েছে! আসলে এই
সরকারগুলো ঢক্কানিনাদের মধ্যদিয়ে অধিষ্ঠান লাভ করেছিল, পলেস্তারা খসতেই কুৎসিত
কাঠামো গিলে খেতে আসছে বোকা জনগনকে। সেই আদি অনন্ত থেকেই এদের কোনো নীতি নেই,
দাঙ্গা বা সামাজিক বিভেদ সৃষ্টির মাঝেই এদের
অস্তিত্ব, যেমন গলা পচা স্থান ছাড়া ছত্রাক জন্মেনা তেমনই ঘৃণা আর হিংসা বিনে এরা ক্ষমতা পায়না, এদের সংবিধান গোয়েবলসীয় তত্ব। আমরা
পাঁঠা জনগন, আমাদের সম্বল শুধু গাণ্ডেপিণ্ডে গেলার
জন্য
চামড়ার গলা আর
হাগার জন্য নধর পাছা; যেগুলো বলি ও মারার জন
সদাই উন্মুক্ত। ওরা ঠান্ডা মাথার ক্রিমিনাল, আমাদের পাছা মেরে
নিজেদের আখের গোছায়, আমরা মারিয়ে মৈথুন সুখ ভোগ করি। দুপক্ষের মিউচুয়াল বোঝাপড়া , দু পক্ষই খুশি।
আমরা কবে 'না' বলতে শেখার মত সাবালক হব?
কখনও সমুদ্রগড়, দেগঙ্গা, কখনও কালিয়াচক, কখনও ধুলাগড়, কখনও চন্দ্রকোনা রোড তো এবারে
বাদুরিয়া বা বসিরহাট। বরকতির ঘরে কি আগুন জ্বলেছে? দীলিপ
ঘোষ বা তপন ঘোষ কি পালিয়ে বেড়াচ্ছে? ইদ্রিশ আলী বা হাজি নুরুল কি কোর্টে চক্কর
কাটছে? না কাটছে না। এরা সকলে বহাত তবিয়তে আছে। নেতা, নেতা থেকে কাউন্সিলর,সেখান থেমে MLA MP হয়ে মন্ত্রী হওয়ার ধাপ
গুলো টপকে এরা ক্ষমতা ও সম্পদের চুড়োতে। ভাবুন একটা জাতীয় রাজনৈতিক দল কতটা শয়তান হতে পারে আর রাজ্যের ক্ষমতাশীল দলের নেত্রী সেই শয়তানির পালে হাওয়া লাগাচ্ছেন। উপায় নেই তার গোটা দলের সর্বাঙ্গ যে দূর্নীতির পাঁকে ডুবে।
রাজ্য ও তার প্রশাসন আসল ঘটনা পাস কাটিয়ে
নিয়ে যাচ্ছে তেনার মান অপমানের প্রশ্নে। সত্যিটা কে বলবে? এই শুভেন্দুই প্রকাশ্য মঞ্চে শিরা ফুলিয়ে বলেছিল আনন্দ দেখবেননা। সত্যিই এরা একজনও বিন্দুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য? চ্যানেলের কথায় মনে এলল, অর্ণব গোঁসাই
নিজেই একটা খুলে ফেলেছে ঘৃনা আর বিদ্বেষ বেচে, আর সেগুলো আমরাই খেয়েছি। তাহলে এই
বিদ্বেষ পন্যটাকে অন্য ব্যাবসায়ী লোকেরা কেন
ব্যাবহার করবেনা? আপনার রক্ত ঝরুক বা ধনেপ্রাণে শেষ হন, ওদের
ঝুলি ভরে উঠছে, ওটা ওদের রাষ্ট্র স্বীকৃত ব্যাবসা। আজ একটা গোঁসাই,
কাল দশটা গোঁসাই সাথে পাঁচটা ওয়াইসির আঙুল ফুলে কলাগাছ হবে, ওরা লড়িয়ে দেবে। কেলাকেলি
ফাটাফাটি করার জন্য আমাদের মত আমোদগেঁড়ের দলেরা তো
আছিই।
এর পরের এপিসোডের জন্য বাবা হামিদেব
আছেনই, চোখে স্বদেশাঞ্জলীর এমন
লেপ লাগিয়ে দেবে যে, আচ্ছেদিন আর উন্নয়নের জোয়ার ছারা কিচ্ছুটি
দেখবেননা।
আজকে রাষ্ট্রে ধর্মের দোহায় দিয়ে খুনখারাপি
কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা একটা কেন্দ্রিয়ভাবে সুনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি
ধারাবাহিক কৌশল। যে খুন হল সে এবং তার পরিবার
তো উচ্ছন্নে গেলোই, যারা মারল
থানা-পুলিশ-কোর্ট-জেলের চক্করে তারা নিজেরা ও তাদের পরিবার গুলোও শেষ। ভারতের সংবিধান কি ধর্ম দেখে আজ পর্যন্ত কাওকে রেহায় দিয়েছে?
তাহলে কার লাভ হয় এই দাঙ্গা হাঙ্গামাতে? বরবাদি ছাড়া অন্ধ
ধর্ম বিশ্বাস থেকে কি সুফল পেল সেই ধর্মযোদ্ধার দল
ও তাদের পরিবারগুলো?
আমাদের কি উন্নতি হয়েছে? বরং গোপোনাঙ্গের দাদ হাজা আরো ছরিয়েছে
চুলকানির প্রকোপে। কিছু বুদ্ধিজীবী, ফেসবুকের স্বঘোষিত লেখক, কবি, ছবিওয়ালা, আমলা,
ফলোয়ারের গামলা, ঝিঙ্কু মামনি, সামাজিক রক্ষাকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রিয় পেজের
মালিক, গ্রুপের এডমিন এমন সব বৃহন্নলার মত পোজ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি যে দেখে বোঝে কার
সাধ্যি ইনি কোনদিকে! এরা এমন ভয়ানক যে,
যেকোন সময় পালটি খেয়ে বিয়েতে শ্রাদ্ধের মন্ত্র পড়তে শুরু করে দেবে।
আপনারা যারা ধর্ম নিয়ে বিপ্লব করলেন, অদুর ভবিষ্যতে শহীদ হবেন, সর্বসান্ত
হতে দৃঢ়সঙ্কল্প, তাদের শুধাচ্ছি, একটা নাম কারো মনে
আছে হে বুদ্ধিমান জ্ঞানী বন্ধুরা, যিনি গত গতবছরে আপনার পূর্বসুরী ছিলেন?? তাহলে কিসের জন্য এই রগরগে তাপ উত্তাপ?
এটা সতী সেজে থেকে পলিটিক্যালি কারেক্ট
উত্তর দেবার সময় নয়। পরিষ্কার পক্ষ নিতে হবে সমাজের স্বার্থে, রাজ্যের স্বার্থে,
দেশের স্বার্থে আমার আপনার পরিবার পরিজনের স্বার্থে। হয় মানুষের দলে নতুবা ধর্মীয়
উন্মাদের দলে। আপনি ধার্মিক! কোন ধর্মে আপনি
দিক্ষিত? যেখানে সহনশীলতার কথা নেই, যদি সত্যিই না থাকে তাহলে ধর্মের গোঁড়া থেকে
ধর্মকে মূল্যায়ন করুন। যে ধর্ম অন্যকে সম্মান করতে শেখায়না
তাকে কন্ডোমে ভরে কমোডে ফ্লাশ করে দিন। যারা গো সন্তান বা যাদের দাড়ির ডগাতে ধর্ম
দোল খায় তাদের পরিষ্কার ভাষায় বলে দিন- আমি তোমার দলভুক্ত নই- আমি মানুষ।
যে ধর্মই হিংসার আঁচে হাওয়া দিকনা কেন, "মানুষ" এর দল রুখে দেবে।
এখনই সজাগ হোন, নাহলে আর সুযোগ পাবেননা। গরু, শুয়োর, পীর, মৌলানা, ফতোয়াবাজ মোল্লা, রাম, বাম, ভাম, ছাগু, চাপাতি, মক্কা, অযোধ্যা, মোদী
মমতা, দীলিপ, সেলিম, ইদ্রিশ আলী,..... একদিন রোজগার না থাকলে এরা কেও খাওয়াবেনা
আপনার পরিবারকে।
আপনি আজ মরলে কাল দুদিন। সপ্তাহ ঘোরার আগেই পরিজনেরা দোরে দোরে ভিখ করে বেরাবে। মৃত্যু পরবর্তী অধ্যয়ের অদেখা সুখের লোভে, জীবিত কালটাকে জাহান্নাম বা নরক বানিয়ে ফেলবেননা দয়া করে। আপনি
নাহয় বৈকুন্ঠধামে ইন্দ্রদেবের পারিষদ হয়ে অপ্সরীদের নাচ
দেখবেন সুরাপাত্র সহ বা জান্নাতে ৭২ টি হুর নিয়ে লুডো খেলবেন বিনা রকেট ক্যাপসুলে।
এদিকে আপনার বিধবা বৌ বা কুমারী মেয়েকে
জাপানী তেল দিয়ে প্রতিদিন সাতবেলা নরক দর্শন করাবে যোনীপথ বেয়ে। আনন্দের বিষয় হল
যোনীর জাত হয়না, ওখানে হিন্দু, মুসলমান, আদিবাসী, সাদা,
কালো চোর, সাধু, আস্তিক, নাস্তিক সকল লিঙ্গের অবাধ প্রবেশ। ওখানে একটাই ধর্ম, সেটার নাম টাকা। তাহলে কোন ধর্মের জন্য এতো লড়াই বিপ্লবী বন্ধু?
আপনি নিশ্চই স্বর্গ সুখ পাচ্ছেন এগুলো পড়ে? অবশ্যই পাবেন, কারন আপনি ধার্মিক লোক বটে।
ধার্মিক পরিচয়কে ঘরের
সর্বোচ্চ পবিত্র আসনে তুলে রেখে, একবার সাহস করে বলুন আমি "মানুষ"
দেখবেন শান্তি খুঁজতে
ধর্মযাত্রা করতে হবেনা, নিজের পাড়া, নিজের মহল্লা, নিজের দেশেই সর্বপরি নিজের অন্তরের মধ্যেই ইশ্বর-আল্লাহ-রামকে খুঁজে পাবেন।
সদা সতর্ক থাকুন,
অজান্তেই হয়ত আপনি বা আমি পরবর্তী ভিক্টিম।
@উন্মাদ হার্মাদ