Tuesday, 11 July 2017

।। মিডিয়ার হেডলাইন ।।

বাদুরিয়া অতীত, আর মাত্র দু তিন দিন। ব্যাস, পাবলিক ভুলে গেল বলে। যেমন ইন্দ্রানী বরা বা ব্যাপম দূর্নীতি আজ 'অতীত'। রবার্ট ভদ্রা বা খনি দুর্নীতির ফাইলে পুরু ধুলোর আস্তরন। নারদা সারদা নিয়ে চু কিত কিত চলছে, দমের খেলা তো। যে দম ধরে রাখতে পারবে জয় তার। মিডিয়া ব্যাস্ত কে হাসপাতালে গেল তা নিয়ে। একঘেয়ে দার্জিলিংকে সরিয়ে বাদুরিয়া একটু স্বাদ বদল করল বটে। কিন্তু এ খাবার বেশি খেলে অম্বল হয়। তবে মনমরা হওয়ার কারণ নেই-
অনন্তনাগ পেয়ে গেছে মিডিয়া।
মৃত্যুর থেকে বড় দু:খ আর অভিশাপ দ্বিতীয়টি হয়না। ৬-৭ জন মানুশ বিনা অপরাধে প্রান দিল। তারা কোন জাত, কি করছিল, কি পেশা এগুলো কখনই মুখ্য হতে পারেনা। সিভিলিয়ান দের মৃত্য কেন হবে? যদিও অরণ্যে রোদন, তবুও রাষ্ট্রকে জবাব দিতে হবে। কাশ্মীরের স্বাধীনতা কি নিরীহ মানুষ মেরে আসবে? আসলে খুনী মানুষরূপী হিংস্র শ্বাপদগুলর একটা ধর্মীয় খোলস চাই। নাহলে এমন 'মহান' কর্মের সাথে নিজেকে নিয়োজিত করা যায়না, সেটা লস্কর হোক বা আধুনা গোরক্ষক দল। মৌলবাদ ক্যান্সার, যাকে রাষ্ট্রের একটা অংশর চরিত্র কার্সিনোজেনের মত, তাই মৌলবাদ মরেও মরছেনা।
এরই সাথে বেশ কিছু 'সেকুলার' ফেবুজীবিদেরও স্ট্যাটাস করার সুযোগ খুলে দিল। তাদের রাজনৈতিক বাপেরা যতই কোলাকুলি খোলাখুলি করুকনা কেন, ফেবুর দেওয়াল জুড়ে দেশপ্রেমিক দের তীব্র আস্ফালন দেখে ভিন গ্রহের কোনো এলিয়েন ভাবতেই পারে এরা প্রত্যেকেই লাল রক্তের। তারা ঠিকিই ভাববে, তবে ওটা মানুষের রক্ত নয় কেঁচোর লাল রক্ত। এতোদিন তাদের সামনে গোরক্ষকদের হয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলার সুযোগ ছিলনা, কারন তাদের 'খোঁজা বিকাশ পুরুষ' মুখে ছিপি এঁটে ছিল। এতো হত্যায় তারা মুখ খোলেনি অথবা তাদের বিবেক বুদ্ধিতে এক্সট্রা ডটেড কন্ডোম লাগানো ছিল, যা কিনা অনেক বেশিক্ষণ উত্তেজনা দেয়। আজ বুক ফেটে যাচ্ছে! যন্তরমন্তর ঘরে মগজধোলাই করে পবিত্র গোবর ভরে দেবার কারনে বুক আজ একমুখী। এরা শেয়ালের হুক্কাহুয়ার সাথে তাল মিলিয়ে হাঁক ছারে। কে জানে কেন ছারে তবে অভ্যেস একটা কারন বটে।
বাদুরিয়া যতনা বেশি সাম্প্রদায়িক তার চেয়েও শত গুন বেশি উন্নয়নের জোয়ারে আগত পাঁকে পাঁকালমাছ ধরতে গিয়ে গন্ধ ছরিয়েছে, এটা আজ প্রমানিত। মাঝ খান থেকে কিছু বেকার আবাল ছেলেছোকড়ার ভবিষ্যতে আলকাতরা। লোকে প্রকাশ্যে জানল পিসিরও নাকি সম্মান আর অপমানবোধ আছে, যদিও পাবলিক ইভেন্টটা খায়নি। ফটোশপ পার্টি এটাকে মাতৃমুক্তিপন করে একটা সর্বভারতীয় দাঙ্গার রূপ দিতে চেষ্টা করল বটে, কিন্তু কপালে নেইকো ঘি- ঠক ঠকালে হবে কি!! পাবলিক দাঙ্গা খেলনা।
অতএব আবার পাবলিক GST নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। বাকি লক্ষ লক্ষ বাসি প্রশ্ন ডিপ ফ্রিজে বন্দি, তবে তাজা। জ্যান্ত টাটকা রক্তাক্ত ঈশ্যু না পেলে পাবলিক ফ্রিজের ডিপারে হাত বাড়াবে, অতএব.........
একটা অনন্তনাগ খুব দরকার ছিল মিসকল পার্টির। আপনি মানবেন না জানি, কে মাথার দিব্যি দিয়েছে যে মানতে হবে! মিলিয়ে নেবেন এবারে মৃত নিরীহ মানুষ, সেনার থেকেও মাইলেজ বেশি দেবে। ২০১৯ এর নিঁখুত প্রস্তুতি।
যে প্রশ্নগুলো মোটেই তুলিবেননা, সেগুলো হল-
১) ওই ধরনের হাই সিকিউরিটি জোনে বিনা নথিবদ্ধ করে বাস গেল কিভাবে? কে পাঠালো! কি উদ্দেশ্য? 
২) বাসের নাম্বার গুজরাটি। ভাল, বর্তমান পরিস্থিতিতে গুজরাত থেকে বাস নিয়ে যাওয়া কিভাবে সম্ভব?
৩) অন্ধকারে বাস চলাটা কি এবারে ওখানে নতুন নিয়ম? কে লাগু করল সেই নিয়ম! কবে?
৪) দেশের ইন্টেলিজেন্স কি ডান্ডিয়া খেলছে? নাকি বিকাশ পুরুষের মত "৫৬" ইঞ্চির খোঁজা!!
৫) ওখানে তো একটা নির্বাচিত সরকারও আছে। PDP আর কাদের মিলিজুলি একটক সমকামী সরকার। তারা সারাক্ষন কি স্বমৈথুনে ব্যাস্ত? নাকি ইট কুড়োতে? নাকি গুলমার্গে হানিমুন চলছে!
আরো শত শত প্রশ্ন আছে, কিন্তু দেশদ্রোহী ট্যাগ ঝুলে যাবার তুমুল সম্ভাবনা। তারও পরে পাকিস্থান পাঠিয়ে দেবার হুমকি। যদিও আমাদের খোঁজা বীরপুরুষ আজ ৫-৬ খানা চটাপট টুইট করে জানান দিয়েছেন, খোঁজা হলেও তিনি পুরুষ বটে। দুদিন পরে দেখব আমি জেলে আর দেশপ্রেমিকরা লাহোর বা ইসলামাবাদের জুলুসে।
সত্যিই তো, আমরা ১৩৫ কোটির গিজগিজে জাতি, যদি ২-৪০০ জন বেঘোরে মরে যায় রাষ্ট্রের কিইবা এসে যায়, এমনিতেই তো মরবই, দু দিন আগে আর পরে এই যা। যদি লগনচাঁদা কপাল হয় তাহলে মৃত্যুর কারন হিসাবে একটা ধর্মীয় ট্যাগ জুড়লে নামটা লোকে জানবে, তা সে আখলাক হোক বা কার্তিক ঘোষ বা কালীবুর্গী। এখানে কোন ভেদাভেদ নেই।
ভাগ্য আরো সুপ্রশন্ন থাকলে দেহ নিয়ে একটা মিছিলও হবে, বউ ট্যাক্স কেটে কিছু টাকাও পাবে। এগুলো কি ফ্রিতে! আজ্ঞে না ; এগুলোই পুঁজি, ভোট বড় বালাই। চার বছরে জনগনের হাতে বাবাজিকা ঠুল্লু। তাই আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশীয়, দাঙ্গা আর যুদ্ধের থেকে ভাল মায়া কাজল আর কিছু আছে কি!
চীন এদিকে বিনা জাপানী তেলে ড্যাস মেরে দিলেও মৌনি সাধু হয়ে আছেন বীর ফটোশপ পার্টির ক্যাডার সমেত মাথারা। আগামীকাল থেকে মুখেই পাকিস্থানকে উড়াতে লাগবে ভার্চুয়াল বীরপুঙ্গবের দল, আনুষ্ঠানিক নিন্দা প্রস্তাব হবে, ট্রাম্প বাবার দয়াদাক্ষিণ্যর দিকে চাতকের মত চেয়ে থাকবে। কাজের কাজ বা পাল্টা জবাব কিছু হবে কি? মাথা খারাপ, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলটা ২০১৮ জুন জুলাই মাসের শেষ দিকে শুরু হবে। এগুলো তার পটভুমি। উরির ঘা আজও টাটকা, এত কান্নার জন্য চোখে আর জল থাকবে তো?
আমরা কিন্তু ধর্ম আর দেশপ্রেমের বাইরে গিয়ে যেন কোনো যুক্তি খোঁজার চেষ্টা না করি।


No comments:

Post a Comment