মধ্যপ্রাচ্য- যায়োনিষ্ট ও বিশ্ব রাজনীতি
----------
প্রথম পর্ব- সড়াৎ করে সিরিয়া
**********
যাদের কাছে মনে হবে এটা "অযৌক্তিক পোষ্ট", অনুগ্রহ করে যুক্তি ও তথ্য দিয়ে প্রমান করবেন। নাহলে পড়বেননা। কমেন্টও করবেননা "পিলিজ"
আজকাল সিরিয়া নিয়ে কিছু বুদ্ধিজীবীদের নাকি রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। তা কাকারা মেসোরা এন্ড মাসিরা- কোন ভায়াগ্রা আপনাদের এমন কামাতুর ইয়ে- ব্যাথাতুর করে তুললো? আসলে আপনারা হাগেন, আর কোঁথ দেয় অন্যে।
কেউ বলে দিল বিপ্লব কর বাওয়া, ব্যাস-বিল্পব করিতে লেগে গেলেন নাওয়া খাওয়া ভুলে। ন্যাজ তুলে দেখলেননা - এঁড়ে না বকন।
আমেরিকা বাপের উচ্ছিষ্ট বীর্যে জন্মানো আইসিস যখন পিছু হটছে তখন তাদের নাকি মানবতা বাদ জেগে উঠেছে। সাথে তাদের বংশবদ মিডিয়া সমানে তার প্রচার করে যাচ্ছে। প্রতিটা বড় মিডিয়া হাউজ জায়োনিষ্টদের কোম্পানী, যারা আমেরিক ও আইসিসের বাপ। চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আমি মিথ্যা প্রমান করুন। আজ যখন হিজবুল্লা, কুর্দি মিলিশিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে আসাদ মিলিটারি লড়ছে- ঠিক তখনই দিমাগকি বাত্তি জ্বলে গেছে।
১ কোটি মানুষ দেশ ছাড়া, ২০ লক্ষ মানুষ পশুর চেয়েও অধম জীবনযাপন করছে।
জাবহাত আল নুসরা - আই এস এর বাগদাদী ও আল-কায়দা স্বিকার করেছে তারা হচ্ছে এক। তাহলে তাদের উপরে বোমা ফেললে আমেরিকার গাত্রদাহের কারন কি? তাদের নিকেশ নিয়ে দরকার, সেটা আমেরিকা করুক বা সিরিয়া রাষ্ট্র বা রাশিয়া।
যারা আজ এই বাচ্চাদের ছবি নিয়ে মরাকান্না কাঁদছেন তারা কি জানেন - GRAD খায় না গায়ে মাখে? হারকাত হাজম কার জারজ সন্তান? যাদের কাছে আমেরিকা সেনাবাহিনীর জন্য তৈরি TOW ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে, মানে তারা ব্যবহার করছে। ঘুরপথে আসলে এগুলো আমেরিকার জারজ, আর তাদের উপরে সিরিয়া আর রাশিয়া বোমা ফেলতেই কেন্নোর মত যায়োনিষ্ট মানবদরদি মুখোশধারী গুলোকে নামিয়ে দিয়েছে বাজার গরম করতে।
আর এখানেই ফেঁসে গেছে ট্রাম্প প্রশাসন বা CIA। না সরাসরি রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ মারাতে মারছে না পারছে ফিল্ডে তাদের মোকাবিলা করতে। আবার অস্ত্রসস্ত্রসহ ধরা পরাতে অস্বিকারও করতে পারছেনা। অতএব এবারে মরাকান্না শুরু করে দাও।
আর আমরা নপুংসক এর বাচ্চা নপুংসক দল- "বাপ বলেছে ড্যাসেরভাই, আনন্দের আর সীমা নাই" করে নেচে যাচ্ছি।
কোথায় ছিল এত মানবতা?
২০০১ থেকে তো গোটা মধ্যপ্রাচ্য জলন্ত আগ্নেয়গিরি। খনিজ তেল সম্পদের দখল নিতে যখন যাকে খুশি তাকে মারছে, আমেরিকা-ইজরায়েল ও তাদের সমর্থিত দেশ গুলো। কোথায় ছিল মানবাধিকার? ইরাকের শহরগুলো, দামাস্কাস, আলেপ্পো থেকে গাজা, ইয়েমেন, ওয়েষ্ট ব্যাঙ্কে কি শিশু বাচ্চা বুড়ো ধাড়ি বাস করতনা? তখন এতো নাকের জল চোখের জল কোথায় ছিল? যে আজকে সকলের অশ্রুরতি জেগে উঠল?
কিছু ফোটোসপড ফটো ও কিছু স্টুডিওতে তোলা ছবি ও কিছু পুরাতন ছবি - যেগুলো আমেরিকা ইজ্রায়েলের শিকার- সেই ছবি দিয়ে "হস্তমৈথুন" করে
বিপ্লবের বীর্য স্খলন করা হচ্ছে, মানবতার- বিল্পবের।
মোদ্দা কথা হচ্ছে- আমেরিকার ISIS প্রোজেক্ট গাধার পশ্চাদদেশে ঢুকে গেছে। এবারে চালাও প্রপাগান্ডা।
আজ রাশিয়া মুখোস খুলে দিয়েছে। তাই ইরাকের ও গাজার ছবিগুলো দেখিয়ে বা ডক্টরেড ছবি দিয়ে মরা কান্না কাঁদছে।
আজ সৌদি কেন সুরক্ষিত? পেট্রো ডলারের জন্য? যারা এই ডলার অর্থনীতি মানেনি তাদের উপরেই হামলা। গোটা পোষ্ট নিয়ে আসব এই নিয়ে ধারাবাহিক।
যদি খুব ভুল না হই, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডলার অর্থনীতি তলিয়ে যাবে, যায়োনিষ্ট ও ইলুমিনাতিদের ওয়ান ওয়ার্ল্ড ওর্ডার প্রতিষ্ঠিত করতে। ইসরায়েল একক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ শুধু সময়ের অপেক্ষা। আপনি আমি বোকা পাঁঠা- প্রতিবাদটাও শিখিয়ে দেওয়া অনুসরন করছি।
এই যব বাল-ছাল যুদ্ধ ফুদ্ধ সব তারই পরিকল্পনা। বউ উচ্চস্বরে ডাকলে যাদের পুরুষাঙ্গ গুটিয়ে কিডিনিতে চলে আসে, তারা সিরিয়া নিয়ে পরেছে; পারেন মাইরি।
হয় সত্য জানুন বা মিথ্যা মানুন, ফ্যান্টাসি করুন আমোদের বস্তু নিয়ে। যেমন - শ্রীদেবী নিয়ে থাকুন, বা নীরব মোদী। ফুল্টু এন্টারটেনমেন্ট, সাথে সুসু-স্বামী দাউদের "বাল" আমদানি করে ফেলেছে। ওইসব নিয়ে থাকুন। যেমনটা ছিলেন সেই ইন্দ্রানী বরা বা কামদুনি নিয়ে। কিন্বা মিয়া খলিফা দেখে নিন- রগরগে ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে গেলেই বিপ্লব শান্ত হয়ে যাবে।
ভালবাসা, ঘৃনা, লজ্জা এগুলোতো মানুষের নিজস্ব অনুভুতি। এগুলোকে হুজুগের দামে কেন বিক্রি করছেন?
কেন সিরিয়াতেই যুদ্ধ? এর উত্তর পরের পর্বে খুঁজব।
প্রথম পর্বের লিঙ্ক -
দ্বিতীয়
পর্বঃ নোয়ার নৌকা
********
এটা ধর্মের
গল্প বা গল্পের ধর্ম- যেভাবে নেবেন।
আজকের
পর্বটা একটু অন্যভাবে শুরু করা যাক।
আচ্ছা
বলুনতো পৃথিবীতে সবচেয়ে মৌলবাদী ধর্ম কোনটি? না দেখতে পেলেও চোখ বুজে আন্দাজ করতেই
পারি যে- ৬০% মানুষ ভেবেই নিয়েছেন নামটি; আর সেটার নাম “ইসলাম”। বাকি ৩০% এর মত
মানুষ ভাবছেন আজকের এই আধুনা গোঁড়া হিন্দুত্ববাদ তথা RSS ই হল সবচেয়ে উন্মত্ত গোঁড়া। বাকিরা
ভাবছেন এ উন্মাদ আবার কোন মাতলামো শুরু করল! আজকের সিরিয়াতে বোমার সাথে পাঁচ হাজার
বছর আগের নোয়ার কি যোগসূত্র!! আজ্ঞে হ্যাঁ, চোখ কপালে তুলে লাভ নেই। বিষয়টাই এমনই
বেখাপ্পা, যে জন্য এই ঝাঁপতাল ছাড়া এর মূলে পৌছানো সম্ভব নয়। কিন্তু মজার ব্যাপার
হল এই পাঠকদের ওই ৯০% জনের ধারনাই ডাহা ভুল। বাকিরা নিশ্চই এ সত্য সম্বন্ধে
অবহিত। এখন প্রশ্ন কেন এই ৯০% মিথ্যা? তাহলে ধর্মান্ধ জাতি আসলে কারা? তাহলে মন
দিয়ে বাকিটা পড়ুন।
আগে জানা
দরকার ধর্মটা ঠিক আসলে কি? আমার উপলন্ধি মতে-“যে অনন্য পদ্ধতি বা জীবনধারা অবলম্বন
করে মানুষ তার আত্মার ক্রমউন্নতি সাধন করে এবং রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অর্জন
করে তাইই ধর্ম; যা একটি নিয়মিত অনুশীলিত পন্থা ও সে সকল নির্দিষ্ট ভাবে লিপিবদ্ধ
আছে সুনির্দিষ্ট গ্রন্থাবলীতে”। চলুন এবারে দেখে নিই পৃথিবীতে ধর্ম মূলত কয়
প্রকার। ধর্ম কি আদতে ধর্ম দুই প্রকার, একেশ্বরবাদী আর বহুত্ববাদী। যারা নাস্তিক,
তাঁরা আসলে বিভ্রান্ত; আর এটা আমার একান্ত মত। কারন আধুনা নাস্তিকতাবাদের বড় অনুসারীরা
যাকে মানেন সেই মহামতি মার্কস নিজেই ইহুদী ধর্মের ছিলেন আর এঙ্গেলস ছিলেন
বুর্জোয়াদের প্রতিনিধি। বস্তুত আমরা প্রত্যেকেই একটা ধর্মীয় পরিসরে জন্ম গ্রহণ
করি, পরে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয় বা নাস্তিক হয়ে যায়।
এই বহুত্ববাদী
ধর্ম ব্যাবস্থাতেও একজন সুপ্রিম ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে, কিন্তু তার পাশাপাশি আরো
ছোট বড় সুপার পাওয়ার সহ নানা দপ্তরের জন্য নির্দিষ্ট দেবদেবী রয়েছে। প্রাচীন গ্রিক
সভ্যতা, মেসোপটেমিয়া সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা, সুমের সভ্যতা, পারস্য সভ্যতা থেকে
ইসলাম পূর্ববর্তী আরবীয়ান সভ্যতা সহ আমাদের ভারত উপমহাদেশীয় ধর্ম ব্যবস্থা
মোটামুটি এই বহুত্ববাদী ধর্ম পন্থাতেই বিশ্বাসী। যাদেরকে প্রাচীন ‘প্যাগান’ পন্থী
বললে মোটেই অত্যুক্তি হয়না। এখানে গৌতম বুদ্ধকেও সনাতনীরা তাঁদের অন্যতম দেবতা
মানেন, যতই তা বৌদ্ধরা অস্বীকার করুক। পক্ষান্তরে বৌদ্ধরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী,
যেমন শিখেরা। এনারা আমাদের আলোচনার বিষয় নয় তাই এইগুলোর বিশদে গেলামনা।

ব্যাক টু
পাঁচ হাজার সাল পিছনে, ধর্ম বিশ্বাসকে সওয়ার হয়ে একটু উকি মারা যাক। যখন সেই নোয়ার
নৌকা ও বিশ্বব্যাপি ভয়াল বন্যার অভিশাপ এসেছিল ‘ঈশ্বরের’ তরফ থেকে। আপনি বলবেন এ
সব গল্প, হতেই পারে গল্প। কিন্তু সমগ্র বিশ্বের ৩২% খ্রিষ্টান, ২৪% মুসলিম, ২%
খাজার ইহুদী ইত্যাদি তথা বিভিন্ন আব্রাহামীয় ধর্ম বিশ্বাসী মানুষজন ৬০% এরও বেশি।
সুতরাং গণতন্ত্রের দাবি মেনে আপনাকে সংখ্যাগরিষ্ঠদের কথা শুনতে হবে। মানুন বা না মানুন
সেটা তো নিজ নিজ বিশ্বাস ও অধিকার, কিন্তু এগুলো বা এই ইতিহাস না জানলে আজকের এই
পরিস্থিতিকে কখনই বুঝতে পারবেননা। দয়া করে এর মধ্যে বিজ্ঞান খোঁজার বৃথা চেষ্টা
করবেননা।
নোয়া নামে
যাকে ইউরোপিয়ানরা ডাকে, বা ইসলামিক দুনিয়াতে যিনি নুহ (আঃ) নবী নামে পরিচিত। তিনি
হচ্ছেন আদি মানব পুরুষ আদম বা অ্যাডাম এর বংশের নবম পুরুষ। তো এই নোয়ার বাসস্থান
ছিল বর্তমান ইরাকের মুসুল নামক অঞ্চলটির আশেপাশে, তাঁর চারটি পুত্র ছিল। ওই
অঞ্চলটি ছিল মুলত মুর্তিপুজারীদের পীঠস্থান, তারা ‘ওয়াদ’ নামক মুর্তি পূজা করত।
কোনো কারনে ঈশ্বর কুপিত হলে সেই ঈশ্বরের নির্দেশে যখন বন্যা এলো, তখন তিনজন পুত্র
ছাড়া তাঁদের পিতার কথা চতুর্থ জন মানেনি। অতঃপর যেমনটা জানা যায়, যে তাঁর তিন
সন্তান বেঁচে ছিল। আর সেই তিন ধারার বংশধরই হল আজকের এই বর্তমান পৃথিবী।
তাঁদের
একজনের নাম সেম বা সাম। যাদের দ্বারা বর্তমানের পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া মহাদেশের মানব
বংশ। এনাদের প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসকেই সেমেটিক ধর্ম বলা হয়ে থাকে। যেটা আজকের দিনের
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি ভীষণ পরিচিত শব্দবন্ধ, তাই এটা জানা অতীব প্রয়োজনীয়।
অন্য
পুত্রের নাম ছিল হাম বা হেম বা হাব। আফ্রিকার কালো মানুষের বা রেড ইন্ডিয়ানদের আদি
পিতা এই হাম সাহেব।
অন্য
পুত্রটির নাম ছিল জাপ বা জাপেত। যিনি ককেশীয় ও তিব্বতীদের আদি পিতা। এখন এই ককেশীয়
কারা? ককেশীয় হল ইউরোপিয়ান বা সমগ্র সাদা চামড়ার মানুষ আর তিব্বতী মানেই হলুদ
চামড়ার নাক চ্যাপ্টা মানুষেরা।
নৃতত্ত্ব
বিদ্যা যাই বলুক, পৃথিবীর অধিকাংশ ধর্ম বিশ্বাসীদের মতে এইটাই একমাত্র সত্য, মানে
খ্রীষ্টান, মুসলমান ও ইহুদীদের। মজার বিষয় হল এই নোয়া কে খ্রীষ্টানরা ভাবে তিনি
খ্রিষ্টান ছিলেন, ইহুদিরা ভাবে ইহুদি আর মুসলমানেরা ভাবে মুসলমান।
এবারে সটান
চলে আসুন দুই হাজার বছর এগিয়ে, মানে খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০০ সালে।
ক্রমশ...
লিঙ্ক-
-------------------
তৃতীয় পর্বঃ
কেন এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা?
********
আচ্ছা আজকাল সিরিয়া যুদ্ধ সংবাদ শিরোনামে। কিন্তু সিরিয়াতেই
কেন যুদ্ধ?
প্রশ্নঃ- ওই দেশ কি কোনো দেশকে অনৈতিক ভাবে হামলা
চালিয়েছিল?
উত্তর- না
প্রশ্নঃ- সিরিয়া কি পরমানু অস্ত্র বানাচ্ছিল, আমেরিকা বা
ন্যাটো বাপেদের না জানিয়ে?
উত্তর- না
প্রশ্নঃ- সিরিয়াতে কি প্রচুর তেল সঞ্চিত আছে?
উতর- না। বিশ্বের প্রয়োজনের মাত্র ০.৫% তেল আছে।
শুধু মাত্র অস্ত্র ব্যাবসায়ীদের আর ইজরায়েলের স্বার্থে
বাঁধানো এই যুদ্ধ। কেন? তাহলে পড়ুন।
বস্তুত পরশি অনেক দেশের থেকে সিরিয়ার অর্থনীতি বেশ মজবুত
ছিল, তারা গম ও তুলা উৎপাদন করত রেকর্ড পরিমাণে। কিন্তু মুশকিল হল তাদের কোনো ধার
ছিলনা বিশ্বব্যাঙ্ক বা IMF এর কাছে।
সুতরাং এই নব্য সাইলকদের কাছে ধার না থাকলে তারা বাগে পাবে কিভাবে? সুতরাং লাগাও
গৃহযুদ্ধ। http://www.worldbank.org/en/country/syria/overview আমিরিকার প্রকাশ্য বিবৃতি আছে মদত সংক্রান্ত
ওই দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আল-নুসরার প্রতি। এরা আবার আল-কায়েদার সিরিয়ান
ফ্রঞ্চাইসি। আল-কায়েদাও যে আমেরিকারই ব্রেন চাইল্ড সেটা এখানে প্রমানিত। আফগান ও
ইরাক যুদ্ধের ‘জঙ্গিদের’ পুনর্বাসন হচ্ছে এই সিরিয়ান যুদ্ধ।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন, শুধুমাত্র দেশটির ক্ষমতা দখল করতে এই
গৃহযুদ্ধ বাঁধানো হয়েছে, যার একটা সুন্দর নাম দিয়ে শুরু হয়েছিল অবশ্য –
‘সিয়া-সুন্নি’ বিদ্রোহ। এটাও যখন প্রায় ফেল করে যাচ্ছিল, তখনই IS কে আমদানি করে আবার নতুন যুদ্ধের রসদ
আমদানি করা হয়েছে।

কার স্বার্থে এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের রচনা? পাঁচ লক্ষ মানুষের
মৃত্য, ২০ লক্ষ মানুষ জখম, ৫০ লক্ষ মানুষ গৃহত্যাগী। কার স্বার্থে এই গোটা
রামায়ণের রচনা? মজা হল গোটা এই ঘটনাটার পেছনে কোনো লিখিত কিছু প্রমান নেই কার কি
অপরাধ, কেন সকলে সকলকে মারছে। কিছু কাল্পনিক দোষারোপের উপরে চলছে ভয়াবহ এই যুদ্ধ,
জুলাই ২০১১ সালের দাররা নামক শহর থেকে এই নাটকের শুরু https://en.wikipedia.org/wiki/Timeline_of_the_Syrian_Civil_War_(May%E2%80%93August_2011) । আফগান যুদ্ধ ও ইরাক যুদ্ধ প্রায় শেষের মুখে যখন ছিল, তখন
মার্কিন অস্ত্র ব্যাবসায়ীরা কুর্দিদের সাপোর্ট করে দেয় আমেরিকার দালাল সৌদি সৌদ
রাজ পরিবারের দ্বারা। https://en.wikipedia.org/wiki/Saudi_Arabian_involvement_in_the_Syrian_Civil_War যারা জর্ডনের দ্বারা গোটা ফান্ডিং করে যাচ্ছে আজও।
মানে মুসলমান আর মুসলমানে লড়িয়ে দাও, ফায়দা লোটো শকুনে। আমেরিকা আর সৌদি
রাজপরিবারের মিথোজীবীয় সম্পর্কের কথাও নির্দিষ্ট সময়ে উল্লেখ করব। আপনি ভাবছেন
আমার কি! আমি তো ভারতীয়, আপনারও আছে দাদাভাই, আসব কোন এক পর্বে সেই কাহিনী নিয়ে।
২০১৩ সালে রাসায়ানিক অস্ত্র ব্যাবহার করেছে এই অভিযোগে
সরাসরি এই যুদ্ধে নাক গলিয়ে দেয় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা CIA। এমনকি খোদ তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা
পর্যন্ত ২০১৪ সালে নিজে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের ডাক দেয়। আশ্চর্যের গল্প
শুনুন, এই সিরিয়াতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে তার আবিষ্কার আমেরিকাই করেছিল,
কি আশ্চর্য সমাপতন তাই না!! https://en.wikipedia.org/wiki/Use_of_chemical_weapons_in_the_Syrian_Civil_War। ৯/১১ এর
আমেরিকাতে হামলার জন্য যারা দায়ী সেই আল কায়দার ফ্রঞ্চাইসিকে রীতিমত প্রশিক্ষণ ও সমানে
অস্ত্র সরবরাহ করতে থাকে ও করতে আছে। https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Nusra_Front নিশ্চই পড়ে নিয়েছেন সব লিঙ্ক গুলো! জাগো গ্রাহক জাগো।
এতে করে আমেরিকা কি পেয়েছে?
আসলে আমেরিকা কিছু পায়নি, পেয়েছে যায়োনিষ্ট অস্ত্র
ব্যাবসায়িরা। সুবিশাল মুনাফা। আর ইজরায়েল তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে যাচ্ছে-
“গ্রেটার ইজরায়েল”।
চলুন তাহলে আবার ধর্মে ফেরা যাক।
ক্রমশ...
চতুর্থ
পর্বঃ আব্রাহাম থেকে ইজরায়েল
*************
আমার কোনো উদ্দেশ্য নেই কোন ধর্মকে ছোট দেখানো বা কাওকে
মহান দেখানো, আমার সেই এক্তিয়ার, ক্ষমতা ও অধিকারও নেই। তবে এই সব ঘটনা
না জানলে আপনি আজকের রোগটাই জানতে পারবেননা, এটা চ্যালেঞ্জ রইল। ধর্ম বিশ্বাস নিজের ব্যাক্তিগত উপলব্ধি মাত্র, নাস্তিকতাও। প্রতিটা
জাতির প্রেক্ষিত আলাদা তাই বিশ্বাস আলাদা হবে- এতে আর আশ্চর্যের কি! শুধু
পড়ে যান যদি প্রয়োজনীয় মনে করেন। নিশ্চই আমি একটা ধারণা দিতে সক্ষম হব গোটা বিষয়ে।
এখন হয়ত অনেক কিছুই আঁতলামো বা মাতলামো মনে হবে, কিন্তু পরে
পরে যত পর্ব যাবে- মিলিয়ে নেবেন, কি কি বলেছিলাম, এটা আমার অনেক দিনের গবেষনার ফল।
কোনোটাই আমার কষ্টকল্পনা নয়, প্রতিটারই তথ্য আর যুক্তি রয়েছে নিজের নিজের মত করে,
যেগুলো দেব সময় ও প্রয়োজন মত। অনেক বন্ধুই বলছেন হিন্দু-ইজম নিয়ে বলুন কিছু, কিন্তু
বিশ্বাস করুন- আমার শিরোনামের কলুষিতার সাথে “হিন্দু-ইজম” সম্পূর্ণ মুক্ত বা
বিন্দুমাত্র যুক্ত নেই। হিন্দু ইজমও আছে আব্রাহামীয় ধর্মের একটা পর্যায়ে, কিন্তু
সেটা তাঁদের ভবিষ্যৎ গণনা মাত্র। আমার এই প্রবন্ধের শেষ কোনো পরবে পাবেন সেই
বিশ্বাসের সম্বন্ধে। সত্য মিথ্যা আমরা কেউ জানিনা, আমি সেটাই বলছি যেটা আব্রাহামীয়
ধর্মগুলোর প্রচলিত বিশ্বাস গুলোকে ভিত্তি করে, বাকিটা সময় বলবে।
চলুন আবার ধর্মে ফিরিঃ-
নূহের (আঃ)
বা নোয়ার বংশের একাদশতম পুরুষ হিসাবে ওনার পুত্র সাম এর গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন
আব্রাহাম ওরফে এব্রাম ওরফে ইব্রাহিম (আঃ) নামক এক মহামানব। ইনিই
হচ্ছে আব্রাহামীয় একেশ্বরবাদী ধর্মের পিতা। তৎকালীন ব্যাবিলনীয় শ্যালডেন রাজবংশয়ীয়
বা মতান্তরে নমরুদের রাজত্বকালে এই আব্রাহাম বা ইব্রাহিম (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন
বর্তমান ইরাকের ফুরাত তথা ইউফ্রেটিস নদীর অববাহিকা অঞ্চলের ‘উর’ নাম স্থানে।
জীবনের একটা পর্যায়ে ইনি ‘তাঁর ঈশ্বরের’ আদেশে নিজের অনুগামী ও পরিবার বর্গ নিয়ে তৎকালীন
‘কেনান’ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। এই কেনান অঞ্চলই হচ্ছে বর্তমানে ফিলিস্তিন বা
প্যালেস্টাইন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেন প্যালেস্টাইন বর্তমান পৃথিবীর মূল
ক্যাচালের স্থান ওই তিন আব্রাহামীয় ধর্মগুলির কাছে।
আব্রাহাম ও
তাঁর স্ত্রী সারা নিঃসন্তান দম্পতি ছিলেন। সেই সময়ে কোনো উদ্দেশ্যে মিশর দেশের
আশেপাশ দিয়ে যাবার সময় ওই দেশের তৎকালীন সম্রাট আব্রাহামের অতীব সুন্দরী স্ত্রী
সারার সাথে শ্লীলতাহানি করার প্রচেষ্টা করলে বেশ কিছু অলৌকিক কান্ডকলাপ ঘটে
আব্রাহামের ‘ঈশ্বরের’ তরফ থেকে। দয়া করে এখানে বিজ্ঞান খুঁজবেননা, সেক্ষেত্রে এ পোষ্টের
এই অংশ আপনার জন্য নয়। কিন্তু পরবর্তী পর্ব গুলো আপনার ক্ষমতা নেই বোঝার, এই
ধর্মীয় ইতিহাস বা গল্প না জানলে। যাই হোক, পরবর্তী নানান কান্ডকারখানার পর সেই
সম্রাটের পক্ষ থেকে একটি দাসী উপহার পান ‘বিবি সারা’ তথা আব্রাহাম।
নিঃসন্তান
সারা তাঁর স্বামীর বংশরক্ষার স্বপ্নে, উপহার স্বরূপ প্রাপ্ত ওই দাসী হ্যাজার বা
হাজেরা (আঃ) এর সাথে আব্রাহামের বিবাহ দিয়ে দেন। অচিরেই তাঁদের একটি পুত্রসন্তান
হয় যার নাম এ্যাসমেল বা ইসমাইল (আঃ)। এর পরবর্তী বছরগুলোতে বৃদ্ধা সারার গর্ভেও
সন্তান জন্ম লাভ করে আব্রাহামের ঔরষে। তাঁরা যথাক্রমে আইজ্যাক, জিমরাণ, জোকশান,
মেদান প্রমুখ। এনাদের মধ্যে আইজ্যাক বা ইশাহক (আঃ) হলেন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তথা
গুরুত্বপূর্ণ আমাদের আলোচনার বিষয়ের নিরিখে।
আমাদের
সংসারের যেমন নিয়ম, ‘ঈশ্বরের দূতেদের’ সংসারেও তার ব্যাতিক্রম কিছু ছিলনা। অচিরেই
হ্যাজার আর সারার মধ্যে দুই সতীনের সমস্যা দেখা দিল, এবং সেই ‘ঈশ্বরের’ নির্দেশে
শিশুপুত্র ইসমাইল (আঃ) সহ তাঁর মা হ্যাজার বা হাজেরা (আঃ) কে- খা খা মরুভূমির
মাঝখানে দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে ছেড়ে দিয়ে আসেন। এই ইসমাইল (আঃ) কেই ঈশ্বরের
উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম (আঃ) কোরবানি করেছিলেন, যার ধারা মোতাবেক আজও ইসলাম ধর্মে
অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। পরবর্তীতে মরুভূমির ওই অঞ্চলেই জমজম নামক কূপ আবিষ্কৃত হয়,
আর ওই দুই পাহাড়ের নাম সাফা আর মারওয়া। এই মরু অঞ্চলটি বর্তমানে সৌদি আরবের মক্কা
শহর নামে পরিচিত। আজও সমস্ত ইসলাম ধর্মালম্বীরা তাঁদের পবিত্র হজ্জ্ব পালনের
উদ্দেশ্যে এই মক্কাতে গমন করেন।
আব্রাহামের অন্য
পুত্রটি তথা আইজ্যাক বা ইশাহক (আঃ) তিনিও ঈশ্বরের দূত রূপে আব্রাহামীয় তিন ধর্মের
নিকটেই স্বীকৃত। এনার স্ত্রী রেবেকা ওরফে রাফক্বার গর্ভে দুই সন্তান, ছিল একজনের
নাম এশু ওরফে ইশা অন্য জনের নাম জেকব ওরফে ইয়াকুব (আঃ)। তাঁর পিতার মৃত্যুর পর
তিনি ‘বীর-লাহাউ-রয়’ নামক স্থানে এসে বসবাস করতে থাকেন। যা বর্তমানে লোহিত সাগরের
সুয়েজ প্রনালীর তীরবর্তী কোনো অঞ্চলে।
এই জেকব বা
ইয়াকুব (আঃ) ও ছিলেন ঈশ্বর প্রেরিত দূত তথা প্রফেট বা নবী। এনার মোট চার স্ত্রী
ছিল, যাদের মোট পুত্র সংখ্যা ছিল ১২ জন। স্ত্রীদের মধ্যে ‘র্যাচেল ওরফে রাহিল’ ও ‘লিয়া
ওরফে লাইয়া’ দুইজনে সহোদরা ছিলেন। এই জেকব তথা ইয়াকুবের (আঃ) পদবী বা অপর নাম ছিল
ইজরায়েল। যার শব্দগত বাংলা মানে হয় ‘ঈশ্বরের দাস’। এই
জেকব বা ইয়াকুবের (আঃ) বংশধরেরাই হলেই ইয়াহুদি বা ইহুদি বা ইজরালাইট বা ইজরায়েলি। সুতরাং
কারা ইহুদি এটা নিশ্চই পরিষ্কার এতক্ষনে। প্রসঙ্গত এখনও খ্রীষ্টান ও ইসলাম শাখার
উদ্ভবই ঘটেনি। অন্য ধর্ম বলতে এই সেমেটিক ধর্মবিশ্বাসের সাথে ছিল মুর্তিপূজারি
প্যাগানেরা। যাদের উত্তরসূরি আমাদের আজকের ভারতের সনাতন সমাজ।
ইজরায়েলের
দুই পুত্রের নাম ছিল জোসেফ ওরফে ইয়াসুফ (আঃ) ও বেন ইয়ামিন ওরফে বেঞ্জামিন।
পরবর্তীতে
আর অনেক নবী বা প্রফেট বা ঈশ্বরের দূত হয়ে সেমেটিক জাতি ওরফে ইহুদি জাতীর মধ্যে জন্ম
লাভ করেন। যাদের মধ্যে ডেভিড ওরফে দাউদ (আঃ) ও সালমন ওরফে সোলেমান
(আঃ) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এনারা সম্পর্কে পিতা পুত্র, এবং প্রফেট বা নবী বা
ঈশ্বরের দূত হওয়ার সাথে সাথে পৃথিবীর শাষনভারও চালিয়েছিলেন সাফল্যের সাথে। সোজ
কথায় রাজা ছিলেন। ইহুদিরা এই সালমনের শাষনকালের পর ঈশ্বরের রোষানলে পতিত হলে
মিশরের শাষকের দ্বারা গোটা জাতি লাঞ্চিত কৃতদাসে পরিণত হয়। অর্থাৎ প্রথমবারের জন্য
ইহুদিরা তাঁদের “ইশ্বর কর্তৃক নির্ধারিত ভুমি” থেকে বিতারিত হয়। মনে করা হয়
খ্রীষ্টপূর্ব ৫৮৬ সালে সম্রাট নেবুচাডনেজার দ্বারা ইহুদের প্রথম মন্দির
ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ও ইহুদিরা জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত হয়।
এক্সোডস হল
ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ, যেমন মুসলমানদের কোরান বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেদ।
লিঙ্কে পড়ুন
ইজরায়েলিদের দাবি (1)(2)-
এই প্রমিস
ল্যান্ডের কেলোতেই আজ ইজরায়েল নামক টিউমারের পত্তনের একমাত্র কারন ও ফিলিস্তিনের
তথা পৌরাণিক ‘কেনান’ এর ক্রমশ অবলুপ্তি। link-(3)
তাহলে
পৃথিবীতে সবচেয়ে গোঁড়া ও উগ্রবাদী ধর্ম এই মুহুর্তে কোনটি? উত্তর আমাকে দিতে
হবেনা, আপনারাই পেয়ে যাবেন বা গেছেন। ভাবুন আজকের এই নতুন শতাব্দিতে ইহুদিরা ইউরোপ
আমেরিকাতে কি কোনো বাজে পরিস্তিতিতে পড়েছে? অথচ আপনি জন্মসুত্রে বা বিবাহ সুত্রে
ইহুদি হলেই ইজরায়েলের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। আর ধনী ইহুদিরা দলে দলে ইউরোপ আমেরিকা
ছেড়ে ইজরায়েলে পাড়ি জমাচ্ছেন আজও।
পড়ুন লিঙ্ক-
(4)
মানে সেই
ধর্মীয় প্রমিস ল্যান্ডকে একমাত্র গন্তব্য মেনে, ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত যে কেউ
ইজরায়েলে এলেই তাকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। এর চেয়ে বড় ধর্মীয় অন্ধত্ব বা
ধর্মীয় অগ্রাসন আর কিই বা হতে পারে? কেননা ‘বেলফোর ঘোষণা’র আগে ইহুদীদের জন্য
আগ্রিকার উগান্ডা বা ইউরোপের কোনো ফাঁকা অঞ্চলকে বেছে নিতে বলা হয়েছিল ইহুদিদের
জন্য পৃথক রাষ্ট্রের জন্য, কিন্তু তারা শুধুমাত্র তৎকালীন ব্রিটিশ অধিকৃত ফিলিস্থিনকেই
বেছে নেয়, যার কারন একমাত্র ধর্মীয়।
গুলিয়ে গেছে
নাকি? তাহলে আবার পড়ুন গোঁড়া থেকে, আমাকে পাগল- মাতাল- বদ্ধ উন্মাদ বললে আমার কিছু
আসে যায়না। কারন সত্য বর্ননা করার চেষ্টা করছি বর্তমান পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করার
জন্য। বলাটা আমার কাজ মনে করি, আর সত্য জানাটা আপনার দায়- যদি না
অজ্ঞতাকে আপনার অধিকার ও অলঙ্কার বলে ভেবে থাকেন।
এই যাবৎ
যাদের নাম নিলাম তাঁদের সকলকেই- খ্রীষ্টানরা ভাবে খ্রিষ্টান ছিলেন, ইহুদিরা ভাবে
ইহুদি আর মুসলমানেরা ভাবে মুসলমান ছিলেন।
ক্রমশ...
পঞ্চম
পর্বঃ- মরু(ন) রহস্য
********
এটা পড়তে
গিয়ে মনে হতে পারে, আমরা তো ভারতীয়; আর এই সকল আব্রাহামীয় ধর্ম- সিরিয়া- ইজরায়েল-
আমেরিকা ইত্যাদি নিয়ে জেনে ‘আমার’ কাজ কি! আমাদের দেশজ বা রাজ্যগত বা মহল্লাগত
সমস্যা কি কম! তাহলে আপনাকে বলি শুনুন, আপনি সকালে উঠে কি খাবেন আর রাত্রে কখন
ঘুমাবেন সবটাই এই বিদেশী প্রভুদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, পরোক্ষে বা প্রত্যক্ষে।
কিভাবে? তাহলে পড়তে থাকুন। পড়ার কোনো বিকল্প ছিলনা, নেই, থাকবেওনা।
ধরুন আপনার
ব্যাঙ্কে ১০০ টাকা মজুদ আছে, আর কোনো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনলেন সেটার মূল্য
বিশ্ববাজারের নিরিখে বর্তমানে ৯ টাকা মাত্র। কিভাবে?
একটা নোটে
কি লেখা থাকে কখনো পরেছেন? I promise to pay the bearer the sum of …. (নোটের মূল্য মান)। তাছারা আমরাই এই মুহুর্তে সবচেয়ে ভাল জানি যে টাকার
মূল্য টাকাতে থাকেনা, সেটা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একটা বন্ড মাত্র। রাষ্ট্র যার
গ্যারান্টি দেয়। আর রাষ্ট্র গ্যারান্টি না দিলে রাতারাতি ৫০০-১০০০ টাকার নোট কাগজে
পরিণত হয়।
ভারতে আজকের
দিনে বাজারে নোটের পরিমাণ হচ্ছে ১৯.১৭ লক্ষ কোটি টাকা, লিঙ্কে ২০১৭ এর একটা তথ্য
রয়েছে (১)। বাকিটা RBI এর Money Supply অপসনে চলে যান, বিশদে পেয়ে যাবেন
এক্সেল ফাইলে (২)। তাহছে এই বিপুল পরিমাণ নোটের সমপরিমাণ সম্পদ
নিশ্চই ভারত রাষ্ট্রের কোষাগারে সঞ্চিত আছে? না মোটেই তা নেই। ভারতের
সঞ্চিত সম্পদ সোনার পরিমাণ মাত্র ৫৫৮.১০ টন(৩)। যার
বাজার মূল্য মাত্র কমবেশি ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি মত। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বাকিটা
সঞ্চিত আছে ডলার। আর ডলার মানেই আমেরিকা। তাই আমাদের ডলার নির্ভর অর্থনীতির
সম্বন্ধে সামান্য জ্ঞান না ধরলে যেদিন আমেরিকার পতন ঘটাবে যায়োনিষ্টরা, সেদিন
আপনার “হাতে রইল পেনসিল” দশা হবে।
অতএব সাধু
সাবধান। কি বলছেন এমনটা কখনো ঘটেনি? তাহলে পড়ুন ‘নিক্সন শক’, এই লিঙ্ক- যেদিন ফ্রান্সের
চার্লস দ্যা গাউলি সরকার সব ডলার দিয়ে সোনা ফিরৎ চেয়েছিল আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট
নিক্সন সোজা বলে দিয়েছিল দিতে পারবনা, কারন তাদের কাছে অতো সোনা নেই। সেদিন বিশ্বজুড়ে ডলারের দাম হয়ে গিয়েছিল
‘শূন্য’। পরবর্তীতে এ নিয়ে বিশদে আসব কিভাবে আবার ডলার ফিরল স্বমহিমাতে।
কিন্তু কাল
যদি এমনটা আবার হয়? হয় মানে হবেই, তাও এক আধ বছরের মধ্যে। কারন আজকের তারিখে
মার্কিনদের বাজারি ধার বা national debt 118%। মানে ১০০ টাকা আয়ে শোধ করতে হবে ১১৮
টাকা। position of no return. পড়ুন লিঙ্ক (৫)- সুতরাং আপনার ৯১% নগদ টাক যাদের উপরে নির্ভর,
তাদের সম্বন্ধে জানতে আপনি বাধ্য। না জানলে আর কি! ত্রিপুরা ইলেকশন আছে তো আপনার
জন্য, নাচুন, অথবা হরেক কেচ্ছাকাহিনী। আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে পরের কোনো
এক পর্বে এক্কেবারে গোটা মহাভারত বর্ননা করব, লক্ষ্য রাখুন সেই দিকে। তার সাথে আমি
কিছু মতামত দেব, কিভাবে আমরা বাঁচতে পারি। পবশ্য আমাদের যেটা বাঁচিয়ে দেবে সেটা হল
আমাদের ধর্মবিশ্বাস আর আমাদের বাড়ির মেয়েছেলেরা। ব্যাখ্যা? ক্রমশ প্রকাশ্য।
আমাদের মহা দোষ
হচ্ছে আমরা নিজেরা নিজেদের বিষয়েই জানিনা। সংখ্যা গরিষ্ট সদস্যেরা মানে হিন্দুরা
সংস্কৃত জানিনা, মুসলমানেরা আরবি জানিনা, খ্রীষ্টানেরা ল্যাটিন জানিনা, ইহুদিরা
হিব্রু জানিনা। আপনি নাস্তিকই হোননা ক্ষতি কি! কিন্তু নিজে পড়ে বুঝুন – যে
ঠিক কতটা গাঁজা-গল্প(!) আমাদের ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে, কি আদেশ নিষেধ আছে সেটাই
জানিনা। সেটা যদি জানতাম তাহলে এই টিকিধারি পুরুত বা দাড়ি ওয়ালা মোল্লা বা পাদ্রী
বা র্যাবাইরা আমাদের মাথা চিবিয়ে খেতে পারতনা। আসুননা জানি, তারপর নাহয় তেড়ে
নিন্দা করব যা খারাপ মনে হবে। অন্ধলোকে অন্ধ অনুসরণ বা অন্ধ সমালোচনা করুক, কিন্তু
আমরা তো পড়তে জানি, তাহলে সুযোগ পেলে কেন জানবনা?
অনেক জ্ঞান
হল, চলুন ধর্মে ফিরি-
এটা
খ্রীষ্টপূর্ব দেড় হাজার সাল বা মতান্তরে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ সাল আগের মিশর। এখানের
শাসকদের বিভিন্ন নাম প্রমাণিত ইতিহাসের পাওয়া যায়। সামগ্রিক ভাবে যারা ফ্যারাও বা
ফেরাউন নামেই পরিচিত। অন্যান্য অনেক দেবদেবীদের পাশাপাশি এনারা নিজেদেরকেও ঈশ্বর
বলে বিশ্বাস করত ও দেশের অধিবাসীরাও তেমনটাই বিশ্বাস করত। সুতরাং তাদের জন্য সমাধি
স্বরূপ তৈরি হত সুউচ্চ পিরামিড এবং তারা “যা খুশি তাই” করার লাইসেন্স প্রাপ্ত ছিলেন।
কারন তারা ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর; তাদের ও তাদের অনুসারী ধর্ম বিশ্বাসীদের মতে।
এই সময়ে সেই
ঈশ্বরের অভিশাপের কারনে ‘প্রমিস ল্যান্ড” থেকে বিতাড়িত ইহুদিরা মিশরের সমাজের
সবচেয়ে নিন্মবর্গের কাজগুলো করত বা করানো হত। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপাদৃষ্টি আবার পতিত
হয় তাদের ক্রমাগত প্রার্থনার কারনে ( প্লিজ, বিজ্ঞান ন্যাশানাল জিওগ্রাফিকে খুঁজুন,
বা নাসার সাইটে যান)। “ফ্যারাওদের অত্যাচার থেকে ইহুদিদেরকে উদ্ধার করে আবার
প্রমিস ল্যান্ডে নিয়ে যাবেন একজন প্রফেট বা নবী বা ইশ্বর প্রেরিত দূত”, এই মর্মে
গায়েবি বার্তা পেয়ে যান ফ্যারাও নিজে ও ইহুদি বা তৎকালীন সেমেটিক ধর্মের
ধর্মগুরুরাও। ফলত নির্বিচারে অর্ডার জারি হয় শিশু হত্যার, ফ্যারাওদের তরফে। একটা
সময় সমাজে নিন্মশ্রেনীর কাজ করার জন্য মানুষদের অভাব পড়লে তারা এক বছর অন্তর অন্তর
ওই পুরুষ শিশু নিধন শুরু করল।
তো এমন একটা
পরিস্থিতিতে প্রফেট মোজেস বা নবী মুসা (আঃ) এর জন্ম। তাঁর লালন পালনও ঈশ্বরের
লীলাতে ওই ফ্যারাও এর ঘরেই। বিস্তারিত এই লিঙ্কে পড়ে নিন-(৬)
একটা সময়
হত্যার দায়ে অভিযুক্ত যুবক মোজেস দেশ ছেলে পালিয়ে যান শাস্তির ভয়ে। তখন শুধু
ফ্যারাওই অত্যাচারি ছিল তাই নয়, বরং নোয়ার দ্বিতীয় পুত্র হামের বংশধর নিগ্রোরাও
তৎকালীন এলিট শ্রেনী ছিল। তারা পরিচিত ছিল ‘ক্বিবত্বি’ নামে। এরাও পাল্লা দিয়ে
সেমেটিক বা ইহুদিদের অত্যাচার খুন ধর্ষন করত। পরবর্তীতে বেশ কিছু বছর পর
জন্মস্থানে ফিরে আসার বাসনা জাগে। সেই মোতাবেক যাত্রা শুরু করলে পথিমধ্যে ঈশ্বর বা
‘জিহোভা’ মুসার সাথে দেখা করেন ঝোপের আড়ালে একটা অগ্নি গোলকের রূপ নিয়ে। পড়ুন- (৭)
(উন্মাদীয় বানানবিধি)
@উন্মাদ হার্মাদ
ষষ্ঠ পর্বঃ-
সৌদ রাজবংশ (সন্ত্রাসের পালক পিতা)
********
পৃথিবীতে
আজকের দিনে কোথাও কি রাজবংশ আছে? আপনি বলবেন ব্রিটেনে রানী আছে তো! তাহলে বলি,
ব্রিটেন সহ বাকি সকল দেশগুলোই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। রাজা বা রানী একটা উচ্চস্তরের
সাম্মানিক পদ। কিন্তু আরব ভূখণ্ডে যান, দেখবেন ধারাচুড়া পরা ইয়া বড় বড় জোব্বা
ওয়ালা সব রাজা-যুবরাজ বা রাজপুত্রেরা রাজত্ব করছে। কিন্তু কিভাবে সম্ভব এটা?
আচ্ছা আপনি
কি জানেন পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সামরিক খাতের বাজেট কোন দেশের? অবশ্যই আমেরিকা
প্রথম ও চিন দ্বিতীয়। কিন্তু তৃতীয়? না বিস্মিত হয়ে লাভ নেই নামটা শুনে, নামটা হল
সৌদি আরব। তাদের দেশের আভ্যন্তরিন উৎপাদনের মানে GDP এর ১০% ই প্রতিরক্ষা খাতে ব্যায় হয়, যেখানে মার্কিনিদের ৩.৩%, চীনের ১.৯%,
রাশিয়ার ৫.৩% ও আমাদের দেশ ভারতের ২.৫% মাত্র। এছাড়া গোটা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র
ইমপোর্ট বা আমদানি করে সৌদ রাজবংশ শাষিত সৌদি আরব, দ্বিতীয় ভারত। আমাদের ভারতে
নাহয় পাকিস্থান কীটের সমস্যা আছে, চিনের সমস্যা আছে, আভ্যন্তরীণ বিচ্ছন্নতাবাদী
গোষ্ঠীকোন্দলেরও সমস্যা আছে; কিন্তু সৌদি আরবের কোন কাজে লাগে এই অস্ত্র? আসলে
ইসলামিক রাষ্ট্রের ছাতার আশ্রয়ে, মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতির সবচেয়ে নরম স্থানটিকে
সুকৌশলে ব্যবহার করে, এই সৌদ রাজ বংশ বিশ্বের বর্তমান এই সকল যাবতীয় কলঙ্কের মূল
নায়ক। লুণ্ঠন করছে সৌদ রাজারা আর গোটা তাদের ‘রয়াল ফ্যামিলি’, আর গোটা বিশ্ব জুড়ে
বদনামের ভাগীদার তথা মরছে গোটা মুসলমান জাতি; কারন ওই আরবেই ইসলাম ধর্মের
ধাত্রীভূমি।
মধ্যপ্রাচ্যের
যাবতীয় বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে রসদ ও অস্ত্র যুগিয়ে যায় সৌদি রাজবংশের
শয়তানগুলো; যাদের বাপ আসলে যায়োনিষ্টরা। আর এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোই সারা
বিশ্বে তাদের নেটওয়ার্ক বিছিয়ে রেখেছে, কোথাও তাদের নাম তালিবান, কোথাও বোকো
হারাম, কোথাও জামাতি তো কোথাও হিজবুল বা আল কায়দা। নেটে সার্চ মেরে দেখুন, ওসামা
বিন লাদেন থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মূল চক্রীদের বেশিরভাগই সৌদি
আরবের বাসিন্দা। সেদেশে তাদের বহুল সম্পত্তি নিয়ে বহাল তবিয়তে আছে, অথচ এতে
‘স্বঘোষিত বিশ্ববাপ’ আমেরিকার কোনো মাথাব্যাথা নেই সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘর হিসাবে
সৌদিকে ঘোষণা করার বা তাদের ধরা। কমপক্ষে তাদের উপরে কিছু অর্থনৈতিক
প্রতিবন্ধকতা লাগানো? আসলে কি জানেন, মজাটাই এখানে। এই সকল যাবতীয় সন্ত্রাসের
মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে যায়োনিষ্টদের দল, যারা আমেরিকা ও এই সৌদ রাজাদের অবৈধ বাপ। এতে
করে কি পরিষ্কার হয়না! যে সন্ত্রাসী বিষয়টা আসলে সৌদি রাজ বংশ ও ইউরোপিয়ান
যায়োনিষ্টদের রচিত যৌথ ষড়যন্ত্র!! সৌদি আরব আর ইসলাম ধর্ম অবলম্বনকারী
সম্প্রদায়কেও এক করে দেওয়া হয়েছে সুকৌশলে।
আজকের
সিরিয়া যুদ্ধেও বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিচ্ছে সৌদি, ভায়া জর্ডন। লিঙ্ক- (৬)। যারা
ভাবে ইজরায়েল সৌদি আরবের শত্রু, তারা জেনে রাখুন এটা মোটেই তেমন নয়। সম্প্রতিই সৌদি
রাজা ইজরায়েলকে তাদের দেশের আকাশ সীমা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে ইজরায়েলকে। এটা
মোটেই প্রথম নয়, আগেও এই কোণঠাসা ইজরায়েলকে সৌদ রাজ পরিবারই তাদের হেলিপ্যাড
ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল। লিঙ্ক- (৭) নতুবা আজকের এই পরিস্থিতিই হয়ত সেই দিনই
অঙ্কুরে বিনাশ করে দেওয়া সম্ভব হত। সন্ত্রাস আর মুসলমান দুই এক করে দিয়েছে ভায়া
আফগানিস্থান- ইরাক, আর এটা সম্ভব করেছে যায়োনিষ্টদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার- তাদের
মিডিয়া।
বিশ্ব মিডিয়ার ৯৬% এর মালিকিই
ইহুদি, তথা যায়োনিষ্টদের দখলে। আমি লিষ্ট দিলাম, দেখে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার।
Bloomberg
Bloomberg BusinessWeek
The Economist
AARP
NY Times
NY Daily News
Washington Post
U.S. News & World Report
CNN
MTV
Huffington Post
The Daily Show
Buzzfeed
Viacom {MTV, BET, CMT, Nickelodeon, Comedy Central, Spike, TV Land &
VH1}
CBS
Showtime
Comcast
NBC
Time Warner Cable
ABC
Disney
Carnival Cruises (princess, holland america, costa, Cunard)
Facebook (instagram)
Google (YouTube)
Weinstein Company
Miramax
ইত্যাদি।
সুতরাং এই
মিডিয়া ও তাদের সাবসিডিয়ারি চ্যানেলগুলো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আপনার ভাবনা নিরপেক্ষ
হবে, এটা ভেবে নেওয়ার মত নিষ্পাপ আপনি হলেও আমি নই।
ধর্ম হল
মানুষের রোজকার জীবনের অন্যতম অঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে, আর সেটাকে কেন্দ্র
করেই ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সরকার চালায় ইজরায়েল আর আমাদের দেশে আধুনা ‘RSS-BJP’ জোট। কারন ধর্মের নামে মানুষকে যত সহজে পঙ্গু বানানো যায়, ইলেকট্রিক শকেও
বোধহয় সেটা সম্ভব হয়না। আপনি যে কাজই করুননা কেন, তার জন্য আপনাকে পড়িতে হয় ও
শিখতে হয়। ধর্ম এমন একটা ‘বস্তু’, যা না শিখলেও চলে, না পড়লেও চলে। মুর্খতা বা
অজ্ঞতা কখনই ধার্মিক হবার পথে বাঁধা নয়, উল্টে আপনি যদি উগ্রতা দেখাতে পারেন,
তাহলে আপনি ধর্মগুরুও হয়ে যেতে পারেন।
চলুন আবার
জাজিরাতে ফিরি-
সৌদ নামক এক
ব্যাক্তির পুত্র আব্দুল আজিজ আজকের এই সৌদ রাজবংসের প্রতিষ্ঠাতা(১)। দেশের
আগে তার নিজের বাপের নাম জুড়ে নিয়ে সৌদি আরব করে রেখেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়
থেকেই আল সৌদকে ব্রিটিশ বাহিনী সাহায্য করত, যেটা পূর্নতা লাভ করে ১৯২৫ সালে মক্কা
বিজয়ের মাধ্যমে। পরে আল সৌদের পুত্র আব্দুল আজিজ ১৯৩২ সালে রাজা হলে, ১৯৩৮ সালে
আরব ভুখন্ডে তেল আবিষ্কৃত হয় নিউইয়র্কের স্ট্যাণ্ডার্ড অয়েল কোম্পানি দ্বারা। সেই
থেকেই আমেরিকার সাথে সৌদ রাজ বংশের পরকিয়ার শুরু।
আজকের
পৃথিবীতে বিশ্ববাণিজ্যের একমাত্র স্বিকৃত মুদ্রা ব্যাবস্থা যে মার্কিন ডলার, তার পিছনেও
এই সৌদ বংশের বাদান্যতা। কারন আমেরিকা খনিজ তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তার সৌদির উপরে
মুখাপেক্ষী হয়ে থাকার প্রয়োজন নেই; কিন্তু সৌদির তেল যে ই কিন্তু তাকে আমেরিকান
ডলার দিয়েই কিনতে হবে, এটাই হল এই মিথোজীবিয়তা। এরই
নাম পেট্রোডলার। গোটা ইউরোপ, সহ পূর্ব এশিয়া, কিছুটা লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার
প্রায় সমস্ত দেশ এই মধ্যপ্রাচ্য থেকেই তেল কেনে। শুধু সৌদিই নয়, সৌদি নিয়ন্ত্রিত
গোটা OPEC বা ওদের খনিজ তেল সমৃদ্ধ দেশগুলির সংগঠন ও বাধ্য মার্কিন
ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করতে। আর এই জন্যই এতো অস্ত্রের প্রয়োজন সৌদি রাজ পরিবারের,
যাতে প্রতিবেশিরা ভয় পায়(২)। তেল ও গ্যাসে স্বয়ং সম্পূর্ন কেবল দুটো দেশ,
ভেনেজুয়েলার পর। আর তারা হল আমেরিকা ও রাশিয়া। আজকে সিরিয়াতে লড়ছে কারা? মজাটাই
এখানে। সবটাই লুটে নেবার তাল।
এখন কোনো
দেশ যদি এই ‘সৌদ-আমেরিকা-যায়োনিষ্ট’ প্ল্যানকে ফেল করে বা চোখ দেখানোর সাহস করে?
ডাহা ফেল করবে, সাদ্দাম বা গাদ্দাফির মত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবে স্বঘোষিত বিশ্ব
বিচারক আমেরিকা।
মনে আছে গত
পর্বে বলেছিলাম নিক্সন শকের কথা? সেই ১৯৭১ সালে যখন ডলারের মূল্য শুন্যতে নেমে
এলো, তখনই এই গেমটা খেলল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও তার সেক্রেটারি হেনরি
কিসিঞ্জার, সৌদি রাজা ‘বোক*দা’ ফয়জলকে বোঝাতে সক্ষম হল যে, তুমি ও তোমার বংশের
সকলকে আমি বা আমরা নিরাপত্তা দেব। তোমার দেশে কখনো কোনো বিপ্লব মাথা চারা দিয়ে
উঠতে দেবনা, বিনিময়ে তুমি আমার টাকাতে তেল বিক্রি করবে। বাকিটা লিঙ্কে পড়ে নিন-
(৩)(৪) । ব্যাস, এই শুরু আবার, মার্কিন দাদাগিরির। আর আজকের দিনে
মাত্র সৌদি রাজকুমার আউলিদ- বিন তালাল এর সম্পত্তির পরিমাণ?- হা হা হা হা-
পৃথিবীতে এমন কোন ক্ষেত্র বা কোম্পানি আছে যেখানে এনার বিনিয়োগ নেই? এই একজনই নয়,
এমন ছোট বড় অন্তত শ পাঁচেক রাজা রাজপুত্র আছে, যারা এমন বিপুল অর্থের মালিক।
মার্কিন বাপের বাদান্যতায়। মজা হল আপনি তো এদের নামই জানেননা- লিঙ্ক-(৫)। আরব ভূখণ্ডে
একটাও জঙ্গিহানা, গৃহযুদ্ধ, বা বিচ্ছিন্নতাবাদী বিক্ষোব হয়েছে? হবেনা,
যতদিন সৌদ বংশকে যায়োনিষ্টদের প্রয়োজন।
এর শুরু
অবশ্য ১৯৩৩ সালে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের সময়ে ‘দ্য গোল্ড রিজার্ভ এক্ট ১৯৩৩” এর
নামে সোনা লুটের মাধ্যমে, ও পরে ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্বমুদ্রা
ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা মার্কিন ডলারের, নেপথ্যে যায়োনিষ্টদের সংগঠন। পরের কোনো পর্বে
এই কেচ্ছা ব্যাখ্যা করব।
...ক্রমশ
(উন্মাদীয় বানানবিধি)
@উন্মাদ হার্মাদ