অবশেষে প্রত্যাশা মতই মহামান্য আদালত অশ্বডিম্ব প্রসব করেছেন। পরিশ্রান্ত উন্নয়নও এতো দিন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে পা ব্যাথা ঝেড়ে ঠারো হয়ে দাঁড়ানোর
জন্য প্রস্তুত। কোর্টের কাছে থাপ্পর খাওয়া, মমতা সরকারের কাছে একটা
দৈনন্দিন কাজ, তাই এতে আর লজ্জা নেই।
অনেকেই বলছে পিসিমনি মুসলমানদের রমজানের পর নাকি ভোট করাবেন, কিন্তু আমার বিশ্বাস তার আগেই ভোট করাতে বাধ্য পিসি। তবে এই মেকি
মুসলমান প্রীতিটা বেশ পুরাতন এবং সেটা চাকুরীর শতাংশ বিচার করলে আপনি নিজেই বুঝে
যাবেন। যদিও সে আবার অন্য প্রসঙ্গ, তথ্য
ঘাটতে জানলে জ্যোতিষি হতে হয়না। কিন্তু এই গদগদভাব একটা অজুহাত বৈ আর কিছু নয়।
বাঙালী মুসলমান সম্প্রদায়ের ৮০% মানুষই রোজাই রাখেনা এই বাংলাতে। তাই রমজান মাস হোক বা শাবান তাতে কার কি এসে যায়! কারন যদি
একটা হয় সেটা হল,
এরাই মারামারি করবে ভোটের সময়।
রমজান মাসের নামে যদি এরা পরস্পর খুনোখুনি না করে, তাহলে পিসির দলের থুড়ি উন্নয়নের
সমূহ বিপদ। তাই রমজানে না সম্ভবত।
বিরোধী বলতে সংবাদমাধ্যমে এখন শুধুই বিজেপি, আর তাদের সাথে হয় তৃণমূলের একটা গোপন রফা হয়েছে নতুবা যতটা সংগঠনের গুলগল্প শোনায় সবটাই দিলু ঘোষের মগজের মতই; ফাঁপা।
নতুবা কেষ্ট যত বড়ই পালোয়ান হোক, ৪২ এ বিয়াল্লিশ কখনো সম্ভব নয়!
বাকি বামেদের অবস্থা? একটা কথা তো অস্বিকার করলে স্বয়ং মার্ক্সের ব্যাথিত আত্মা আমার কান মুলে দেবে যে- ১০ বছর
আগেও বামেদের পঞ্চায়েত স্তরের একটা বিপুল অংশের
বাম নেতৃত্বের মধ্যে সামন্ত্রতান্ত্রিক বা জমিদারি মানসিকতা চলে এসেছিল।
যেন সরকার বা দল উপলক্ষ্য মাত্র, আসলে সকল কিছুর হোতা এই চুনো নেতারা, ফলাফল আজকের
পরিস্থিতি।
বর্তমানে “ব্যানার্জী ইনিশিয়েটিভ প্রাইভেট লিমিটেড” (পোষাকী
নাম তৃণমূল
কংগ্রেস) নামক
সেই বামেদের একাংশের সামন্ত শাষক প্রথাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে শিল্পের পর্যায়ে চলে গেছে।
আজকেও দেখুন সেই দিনের সেই সর্বহারার নেতারাই উন্নয়নের মঞ্চ আলোকিত করে ‘দাঁড়িয়ে
আছেন’, এনারাই নাকি প্রকৃত বামপন্থী। আজ পর্যন্ত
তৃনমূল দলটিতে বিভিন্ন পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে বহুবার, কিন্তু পুরাতন
কমিটিকে কোথাও কখনো বরখাস্ত করা হয়নি। আসলে তৃনমূল তো রাজনৈতিক দলই নয়, কোম্পানি।
তাই প্রতিটি জেলাতে ডিস্ট্রিবিউটর আছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে ডিলার হয়েছে। ডিলারদের
এজেন্ট রয়েছে আর এজেন্টদের রয়েছে শোরুম বা দোকান। সেখানে আছে দিদির ভাইয়ের দল,
যারা রাস্তাতে লাঠি বাঁশ অস্ত্র উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেই নাম ‘উন্নয়ন’। শিল্প তাড়িয়ে
চপ শিল্পের আসমানি পোলাও বানিয়ে খাওয়ানোর স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করার দরুন যারা
পরিবর্তনের নৌকাতে সাওয়ার হয়েছিল, তাদের জন্য এটা একটা নিবিড় কর্মসংস্থানের পথ।
সেটা পাড়ার কুচো চিংড়ি থেকে বুদ্ধিজীবী নামের রাঘব বোয়াল, সবাই করে খাও গোষ্ঠী।
পঞ্চায়েত দখল সেই কর্মসংস্থানের প্রথম ও একমাত্র ধাপ গ্রাম্য লেভেলে।
একটা ছোট্ট সমীক্ষা করছিলাম- তাতে
বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হুগলী, বীরভূম ও নদীয়া মিলিয়ে প্রায় ৫২ টা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের গত পাঁচ বছরে 'উন্নয়ন' এর পরিসংখ্যান দেখলে চোখ কপালে উঠে বৈকি। প্রায় ৮০% এরও বেশি সদস্যের
আলিশান পাকা
দালান বাড়ি হয়েছে, অধিকাংশেরই দোতলা।
তৃনমূল দল করার আগে এরা হয় বেকার ছিল , বা শ্রমিক শ্রেনীর মানুষ ছিল। আজ এদের
প্রায় ৬০% এর
গাড়ি হয়েছে, অধিকাংশই
ট্রাক্টর ও মারুতি
ওমিনি; মারুতিতে
নিজে চড়াও হয় আবার ভাড়া খাটানোও হয়। ৯০% সদস্যের মাঠে জমি হয়েছে, বাজারে ব্যাবসার ঘর হয়েছে; অবশ্য এদের আত্মীয় স্বজনের চাকরি হয়নি। সেগুলো হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদ সদস্যদের আত্মীয়স্বজন জ্ঞাতিগোষ্ঠীদের মধ্যে।
দুর্নীতির এত বড় সুষম বিন্যাস ইতিহাসে কমই আছে। একটা ভাল অংশের সাংবাদিকদের পরিবারের মানুষদের চাকরি হয়েছে।
এটা প্রায় অনেকেই জানেনা, কিন্তু প্রত্যেকটি সংবাদপত্রের জন্যই প্রযোজ্য, এমনকি আঞ্চলিকও।
বিশেষকরে মহকুমা ও জেলাস্তরে যে সাংবাদিকেরা পরিচিত মুখ তাদের। আপনি RTI করে জেনে নিতেই পারেন।
পর্ব দুই
পঞ্চায়েতি রাজে ‘সাধারন ও প্রান্তিক’ মানুষের হাতে গণতন্ত্র তুলে দেবার লক্ষ্যে গ্রামোন্নয়নের
খাতে বরাদ্দকৃত প্রায় যাবতীয় সকল টাকাই আজ পঞ্চায়েত মাধ্যমে খরচা হয়, তাই পঞ্চায়েতের সদস্য হওয়ার সুযোগ মানেই পাঁচবছরের জন্য একটা লোভনীয় রোজগারের সুযোগ। এই
সত্যটাই তৃণমুল বিগত সাত বছরে প্রতিষ্ঠা করেছে। তৃণমূল দলটা করার এক ও
অদ্বিতীয় সুবিধা হল- এদের সুপ্রিমো থেকে সমর্থক পর্যন্ত প্রত্যেকেই জানে আমরা চোর, লুঠেরা
ও মডিফায়েড ঠগি।
ন্যাংটার তাই
বাটপারের
ভয় থাকেনা, বরঞ্চ চুরি না করতে পারলে এদের বিবেক দংশন হয়।
অন্তত দৃশ্যত হিসাবে বিগত পাঁচ বছরের জানামাতে, তৃণমূলী পঞ্চায়েত সদস্যেরা
জনপ্রতি কমবেশি
২০-২৫ লক্ষ টাকা করে
হারামের মাল
কামিয়েছে। গোপনীয় ভাবে নগদ বা সোনাতে কিছু গচ্ছিত থাকলে সেটা অতিরিক্ত।
নাহলে গাড়ি বাড়ি জমি দোকান ব্যাবসা হয়না।
তার মানে খুব সহজ ভাবে মাসে ফেলেছড়িয়ে ৪০- ৫০ হাজার আরামসে কামাই করাই যায়। এটা কাকদ্বীপ থেকে বারাসাত হয়ে কান্দি হোক বা ডাবগ্রাম হয়ে আলিপুরদুয়ার- চিত্রটা প্রায় সর্বত্রই একই রকম। মিনিমাম ম্যাক্সিমাম থিওরি মেনে দারুন সাম্য অন্তত লুঠের বখরাতে,
কি চমৎকার বিকল্প অর্থনীতি। তাইতো
৫৫০০০ পঞ্চায়ের সদস্যের সবকটাই জেতা চাই।
হরেক রকম ভাতা, ১০০ দিনের কাজ, বাড়ি তৈরি, ড্রেন,
রাস্তা, নানান ধরনের শ্রী সহ যাবিতীয় "উন্নয়নের" একটা বখরা প্রথমে সবচেয়ে কুচো নেতার পকেটে যায় ভায়া
সুপারভাইজার নামক চোষকের কাছ থেকে। এবারে সেখান থেকে নির্দিষ্ট ও নিয়মিত হারে একটা পার্সেন্টেজ পিরামিডের উপরে উঠতে থাকে। মাঝে থানা আছে, তারা যতটা ভাগ পেল পেল, না পেলেও লুঠেরাদের সুরক্ষা
দেওয়ার পুরষ্কার হিসাবে ঢালাও তোলা তোলার সুযোগ পেয়ে যান।
পুরো গোবর আর গুবরেপোকার মিথোজীবিয় সম্পর্ক।
এটাই তৃণমুলীয় কর্মসংস্থান, ও প্রকৃত উন্নয়নের
চেহারা। যার জন্যই সবটাই জিততে হবে। খয়রাশোল
অঞ্চলের অবৈধ কয়লার টাকা, অজয়- দামোদর- ময়ুরাক্ষীর অবৈধ বালির দালালি, রামপুরহাট
এরিয়ার পাথরের অবৈধ খাদানের বখরা- ৪২ শে ৪২ না হলে কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব সততা
প্রতীকের পক্ষে?
তাহলে এতো হট্টোগোল কেন? বিরোধীদের
আটকাতে? মোটেই
না, যতটা না বিরোধীদের রোখার জন্য তার চেয়েও বেশি দলীয় বিক্ষুব্ধদের রোখার জন্য। তৃনমূলের বিদায়ী সদস্য যারা টিকিট পায়নি এবারে, তারা বিক্ষুব্ধ এই জন্য যে- "আমরা প্রতিষ্ঠিত ও পরীক্ষিত চোর", তাহলে অন্যে কেন সুযোগ পাবে?
অন্য দলটি ভাবছে- আমরাও সারা বছর ফুলছাপ ঝান্ডা
ধরেছিলাম কিছু পাব বলে। ওরা তো গত পাঁচ বছরে যথেষ্ট মাল কামিয়েছে, এবার আমরা কেন সুযোগ পাবোনা? আমরাও তৃণমূল, লুঠ করার সম অধিকার আছে
দলীয় সংবিধানে। সুতরাং, সেটা প্রমান করে দেখাতে চাই, বরং
পূর্বসুরীদের চেয়েও বেশি ‘উন্নয়ন’ করে দেখিয়ে দিতে চাই।
আর এখানেই বিবাদ, ভিনরাজ্য থেকে মাসলম্যান ও অস্ত্রসস্ত্রসহ গোটা লগ্নিটাই আসলে আগামী পাঁচ বছরে লুঠ করার অধিকার কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তার সরকারি শংসাপত্র পেতে।
এই শংসাপত্র লাভের জন্য, যদি না খুব ভুল হই, ৫৫০০০ সিটের জন্য অন্তত ৫% খুন তো গণতন্ত্র মোতাবেকই হবে। আর
তেতো সত্যিটা হল, এই খুন হওয়া শহিদেরা(!) ৯৫%ই মুসলমান, হাঁড়ি, বাগদি, আদিবাসী ও হিন্দু
সদগোপ চাষা (মণ্ডল, ঘোষ, পাল, সরকার, চৌধুরী,
কোলে প্রমুখ পদবীর মানুষ) সম্প্রদায়ের মানুষ।
মানে অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষের রক্তে
গণতান্ত্রিক
হোলি খেলা হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষ্যে। এরপর
আইন আইনের পথেই চলবে, সেজন্য এটা মমতা প্রশাসন রোখার
নুন্যতম প্রচেষ্টা
করবেন্না, বলা ভাল রোখার ক্ষমতাও নেই। বাজারী
সংবাদে কটা প্রকাশ পাবে সেটার উপরে ভরষা করবেননা
ভুলেও, সেখানে
আসল তথ্য পাবেননা। অধিকাংশ মহকুমা অফিসের সাংবাদিকের আত্মীয়রাই এই সরকারের আমলে চাকরি করছে অনৈতিক
উপায়ে। তাই সত্য গোপন করতেই হবে।
এখন এই ২-৩ হাজার লোভী মানুষের মৃত্যুর পর বাংলা,
“সর্ব ধর্ম বর্ণের একমাত্র মসিহা- মমতা ব্যানার্জী”কে কিভাবে মুল্যায়ন
করে সেটা অবশ্যই দেখার।
বিজেপি দাঙ্গাবাজ ও মুসলমান বিরোধী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত গোটা ভারতে, তাই উন্নয়নেরও একটা দাঙ্গা প্রয়োজন ছিল
মুসলমানদের ত্রাতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার, অতএব আসানসোলে সরকার পোষিত মিনি
দাঙ্গা হয়েছে। বিজেপি এখানে কৃতিত্ব নিতে পারেনি বলে
তারা আবার চেষ্টাতে আছে,
নতুন করে দাঙ্গা লাগিয়ে সেটার একক কৃতিত্ব হাসিল করতে। তাই আসানসোলের সবকটা পালক মুখ্যমন্ত্রীর মুকুটেই সংযোজীত হয়েছে।
পর্ব- তিন
পঞ্চায়েতে দাঙ্গার দরকার নেই আপাতত, কারন অঘোষিতভাবে প্রতিটি বুথ লেভেলেই মোটামুটিভাবে কুরুক্ষেত্র প্রাস্তুত। ২০১৯ পূর্ববর্তী সময়ে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝে একটা বড় দাঙ্গা বাঁধবে তৃণমূল বিজেপি দুই দলের
ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, এটা আমরা আম বঙ্গবাসী হিসাবে আশা রাখতেই পারি।
এই মারধর রক্তগঙ্গা বইয়ে যে জিতবে, তারই রক্ত মুছিয়ে "আসল তৃণমূল" বলে বুকে টেনে নেবে
স্থানীয়, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব।
গোটা রাজ্যের এলাকা জুড়ে ছোট ছোট রাজা তৈরি হয়ে গেছে, যাদের নিয়ন্ত্রণ রাজ্য
নেতৃত্বের হাতেই নেই, সেখানে মমতা ব্যানার্জী তো দর্শক মাত্র।
তাই প্রস্তুত থাকুন একটি লাইভ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধক্ষেত্ররূপ স্বচক্ষে দেখার জন্য। যার পোষাকী নাম পঞ্চায়েত।
বিরোধীদের একটা অংশও যে এই ভীষন লুঠতরাজ এর বখরা পেতে চাইছেনা তা নয়, কিন্তু সুযোগ নেই। যেখানে পঞ্চায়েত বিরোধীদের দখলে- সেখানে BDO অফিস থেকে কলকাঠি নেড়ে পঞ্চায়েতকে খোজা বানিয়ে রেখে দিচ্ছে ‘পিসি
সরকার’। এর পর আছে মিথ্যা মামলা। সেটা ষাঠোর্ধ মহিলাকে শ্লিলতাহানীর অভিযোগ হোক বা বাগানের আম চুরি বা গোয়ালের বালতি গায়েবের মত মারাত্বক কেস দিয়ে জেলে ভরে দেওয়া। প্রতিপক্ষ পয়সাওয়ালা হলে গাঁজা, গরু, মহিলা পাচারের মত বা জাল নোটের কারবারি ইত্যাদি এলিট শ্রেনীর মামলাও জুটে যেতে পারে।
প্রমান হবার ভাই হ্নেই দ্রুত, কারন ভারতীয় বিচার ব্যাবস্থাতে ফাষ্ট ট্রাক মানেও ৫
বছর, আর সাধানন ট্রাম মানে একটা গোটা জীবদ্দশা।
ভোট মিটে যায়, মামলা মেটেনা। কোর্ট বাড়ি করতে করতে ধনেপ্রাণে শেষ হয়। তাই
কার হিম্মত আছে ‘উন্নয়নের’ বিপক্ষে মনোনয়ন দাখিল করা!
এবারে এই যারা জিতল, এদের উপরে ভার থাকবে লোকসভা ও বিধানসভাতে সেই একই কায়দাতে ভোট করানোর, যেভাবে তারা নিজেরা জিতে এসেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য প্রতিপক্ষ বিরোধী তাই খুন জখমের জন্য অতিরিক্ত শতর্কতা নিতে হয়না, পুলিশই যথেষ্ট সহযোগিতা করে।
এই হচ্ছে চুম্বকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক চালচিত্র।
আজকাল সংবাদ জুড়ে শুধুই ধর্ষন। আসলে পুলিশ জানে এরা
প্রত্যেকেই ক্ষমতাশীল দলের, তাই প্রাথমিক ভাবে কিছুই পদক্ষেপ নেয়না যতক্ষণ না বিষয়টা যাচ্ছেতাই
ভাবে কানাকানি
হয়ে যাচ্ছে।
দেশজুড়ে ঘটে চলা
প্রতিটি
ধর্ষকের
রাজনৈতিক
পরিচয় আছে, যতই প্রকাশ্যে আসার পর বড় নেতারা হাত ধুয়ে ফেলুকনা কেন।
এবং এটা মূলত ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারেরাই এই কাজ করে থাকছে, গোটা ভারত জুড়ে। পুলিস
ঠুটো জগন্নাথ।
ষাঠোর্ধ ভারতীয় গণতন্ত্রের যে গেঁটে বাত হয়েছে, সে কথা বলাই
বাহুল্য। তা না হল আজকে এই গণতন্ত্রের শরীরে বিজেপির মত কীট বা তৃণমূল নামের আড়ালে
চোরেরা একটা গোটা রাজনৈতিক দল খুলতে পারেনা। মেকি দেশপ্রেমের শিলাজিৎ খাইয়ে এই লাশ
খুব বেশিদিন টানা যাবেনা। আশু সৎ দিশা প্রয়োজন। গণতন্ত্রের নামে লুম্পেনদের রাজত্ব
চতুর্দিকে। ধর্মীয় অন্ধত্ব রাজনৈতিক গোবরে মিথেন গ্যাস তৈরি করেছে, যাতে সামান্য
আগুনের ফুলকি লাগলেই বিস্ফোরণ অবশ্যম্ভাবী।
বিচার ব্যাবস্থাতে খোদ সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি আজ ইমপিচমেন্টের
মুখে, রাজ্যের মুখ্য আদালতে দুইমাস তালা। রায় ঘোষনার পরেই বিচারপতি পদত্যাগ করছে,
সেটা কৃষসার হরিণ কেসই হোক বা মক্কা মসজিদ কান্ড, সিবিয়াই এর বিচারপতির রহস্য
মৃত্যু- বাকি আর না বলাই ভাল। দাক্ষিনাত্য বেশী কর দেয় বলে তারা ৪টে রাজ্য মিলে
পৃথক ‘দ্রাবিড়ভূম’ দেশের দাবি তুলেছে। গোবলয়ে ‘হরিজনিস্থান’, পুরাতন খালিস্থান
ইত্যাদি ইত্যাদি তো আছেই। ফেডারাল স্ট্রাকচারের গণতন্ত্রে এ কখনই সুখের কারন হতে
পারেনা।
দেশের প্রধানমন্ত্রী কখনো সাংবাদিক সম্মেলন করার মত সাহস
সঞ্চয় করতে পারলেননা ৫৬ ইঞ্চির ছাতি সহ, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীরা ক্রমাগত
‘মধ্যযুগীয় ইসলামী ফতোয়ার’ মত করে নতুন নতুন গল্প বাজারে ছাড়ছে রামায়ন মহাভারত
নিয়ে। আসলে এ সবই সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর নিকৃষ্ট কৌশল। অনলাইন পেমেন্ট
ব্যাঙ্কগুলোকে আবার অক্সিজেন যোগানোর জন্য পুনরায় বাজারে ক্যাস ঘাটতি সৃষ্টি করা। সবচেয়ে
বড় কথা- বিরোধী মানেই উন্নয়ন বিরোধী তথা দেশদ্রোহী। একটা সম্প্রদায়কে একত্রিভূত
করার ফাঁকে অন্য অবশিষ্ট সম্প্রদায়টাও যে তলে তলে কালের নিয়মেই সংগঠিত হয়ে যাচ্ছে
সেই খবর নিশ্চিত নেই এই বিচ্ছিন্নতাবাদের কাণ্ডারীদের।
এ সবের পরেও পঞ্চায়েত নিয়ে মানুষের একটা শেষ আশার জাইগা
ছিল। সেটাও ‘উন্নয়নের’ দাপটে আজ অস্তমিত প্রায়। চতুর্দিকের এই এতো অশান্তি পরিকল্পনা মাফিক যে বানানো সেটা নয়, কিন্ত দলীয় এজেন্ডাটাই এমন যে তার পরিনতি এই রক্তলেখাতেই শেষ হয়।
মুসলমান ভোটারদের আসলে আজ আর যাবার জাইগা নেই। ধার্মিকেরা সিপিএম কে ভোট আগেও দেয়নি আজও দেবেনা। বিজেপি প্রায় ঘোষিত শত্রু, কংগ্রেস
রাজ্যে নেই। অগত্যা তৃণমূল, কিন্তু এখানে প্রতি
মুহুর্তে প্রানের সংশয়। নিজের দলের লোকেই যখন তখন খুন করে দিতে পারে। মানে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাংলাতে এই গোবলয়ের
ঘৃন্য রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। বাংলার মাটিকে পচিয়ে পাঁক বানিয়েছেন যাতে পদ্ম ফুটতে পারে।
এখন তো একটু ভদ্র মানুষজন রাজনীতির নামেই কম্পুজ্বরে ভোগেন।
সিপিএম সেই মহেঞ্জোদারো সভ্যতার কিছু নেতা দিয়ে আজও ফিদেলের কিউবা বানানোর স্বপ্নদোষে আক্রান্ত।
প্রান ত্যাগের আগে তরুনদের ক্ষমতা দেবেন না। রাজ্য কংগ্রেসকে, দিল্লি একটু একটু করে বেচে দিয়েছে মমতাকে, বৃহত্তর লোভে থুরি স্বার্থে। আর বঙ্গ বিজেপিও মুকুলের কাঁধে ভর দিয়ে নিজের তৈরি পাঁকে ফুল ফোটাতে দিলু ঘোষ আর রাহুল বাবুর সাথে ইঁদুর দৌড়ে ব্যাস্ত।
বাজারে তাই শুধুই তৃণমূল। ডারউইনের সেই নীতি মেনে- যোগ্যতমের উদবর্তন। যার যত "উন্নয়নের জোর" মানে রাস্তায় উন্নয়ন সেজে দাঁড়িয়ে থাকবে- সে ই দিনের শেষে খাঁটি তৃণমূল।
বাকিরা সবাই বিরোধী ও কুৎসাকারী।
@উন্মাদ হার্মাদ