ধরে নিলাম, এতদিন বাইরে যা খেয়েছি, সব মাংসই ভাগাড়ের মরা পশুর পচা মাংস। তা সত্ত্বেও আমার একবারও শরীর খারাপ হল না,ফুড পয়জনিং হল না কেন? নিজের পরিপাক ক্ষমতা ভাল নাকি অন্য কিছু? হতেই পারে আমার পরিপাক ক্ষমতা ভাল, কিন্তু এই অন্য কিছুটা ভীষণ ভয়ানক একটা পলিটিকাল প্রোপাগান্ডার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে মিডিয়াগুলো আসিফা,উন্নাও,গীতা,পূজাকে নিয়ে মেতেছিল।জাস্টিস ফর অমুক,জাস্টিস ফর তমুক লেগেইছিল। হঠাৎ বাজারি পত্রিকায় উঠে এল ভাগাড় কাণ্ড।একলহমায় মানুষের চিন্তা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া গেল। একদিকে ধর্ষিতাদের বিচার চেয়ে যে আন্দোলনের ঝড় উঠতে চলেছিল,সেটা কিছুটা অবদমিত হল,আর অন্যদিকে এতে আরো একটা লাভ হল। গোবলয়ের হিন্দুরা কখনোই বাঙালীদের ভাল চোখে দেখে না, কারণ বাঙালীরা অধিকাংশই আমিষভোজী।
এর মাধ্যমে যদি কিছু বাঙালীকে ভেজ বানানো যায়,তাহলে দুটো লাভ। এক,ভেজেটেরিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে, এটা দেখিয়ে আমিষ খাবারের ব্যবসা বন্ধ করা যাবে। দুই,রিলায়েন্স ফ্রেসের মত পুঁজিবাদী সংস্থাকে প্রোমোট করা যাবে। তাতে মার খাবে খোলা বাজারের মাছ মাংস বিক্রেতারা।এককথায়,তাদের পেটে লাথি মেরে তাদেরকে নিজেদের আয়ত্ত্বে আনা যাবে।
আরেকটা কথা বলি,আপনাকে মাটন বলে কুকুর খাওয়ানো সম্ভব নয়।কারণ, কুকুর আর ছাগল বায়োলজিক্যাল দিক দিয়ে একে অপরের থেকে অনেক দূরের প্রাণী। ফলত,তাদের মাংসের টেক্সচার একে অপরের থেকে আলাদা হতে বাধ্য।ভালভাবে খেয়াল করলে দেখবেন,রুই আর কাতলা মাছের টেক্সচারও আলাদা।যেখানে দুটো মাছ বায়োলজিক্যাল ভাবে এত কাছে হয়েও টেক্সচার আলাদা হচ্ছে,সেখানে কুকুর আর ছাগলেরও হতে বাধ্য।
কদিন আগে ডিম খাওয়া আটকাতে প্লাস্টিক ডিমের গুজব উঠেছিল।দুএকজন পেয়েওছিলেন বলে শোনা গেছিল।কিন্তু সত্যি বলতে প্লাস্টিক ডিম তৈরী করা লস।কারণ ওটা তৈরী করতে ১০-১২টাকা মিনিমাম খরচ পড়বেই,কিন্তু বিক্রি হবে ৭টাকায়।লস করে এজাতীয় কাজ কেউ করবে না।
যা হোক,এবার আপনার সিদ্ধান্ত।যেমন খাচ্ছিলেন তেমন খাবেন নাকি পলিটিকাল প্রোপাগান্ডার কাছে নিজেকে বিকিয়ে দেবেন?
©জনৈক দীপাঞ্জয়
No comments:
Post a Comment