Sunday, 20 May 2018

।। হক কথা ১১ ।।


একটা সময় ছিল এই বাংলাতে-
MLA, জেলাপরিষদ সদস্য,


পঞ্চায়েত প্রধান মানেই তারা অধিকাংশ জন পেশাগত ভাবে শিক্ষক। দলমত নির্বিশেষে।

আজকের শিক্ষকেরা ফেসবুক, হোয়াটসেপ গ্রুপের এডমিন। শখের কবি, বিশুদ্ধ ভার্চুয়াল বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষক - তা সে বিষয়ই হোক।

আজকের সমাজের সবচেয়ে ক্লীব, ভীরু, কাপুরুষ ও নির্লজ্জ স্বার্থপর প্রজাতিটা হল বঙ্গীয় সরকারি কর্মচারীরা। এরা না ফোঁস করে না ফাঁস, কিন্তু পৃথক ভাবে কথা বলুন, মুখে মারিতং জগৎ প্রতিজনেই। আর শিক্ষকেরা এই প্রজাতির পতাকাবাহী।

আগামী প্রজন্ম চরিত্রগত ভাবে নপুংসক হয়ে বড় হচ্ছে এনাদের তত্বাবধানে। যার জন্য সামান্য আর্থিক সঙ্গতি থাকলে সাধারনত কেউ সরকারি স্কুলে নিজ বাচ্চাকে পাঠাননা।
সামান্য, রাজকুমার বাবুর মৃত্যু সংক্রান্ত আন্দোলন দেখে ভেবেছিলাম এনাদের বিবেক বোধহয় জাগল, ওমা যেই কাউন্টিং থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল, অমনি IPL আর সোস্যালমিডিয়াতে জ্ঞানদা ফার্মেসি খুলে বসলেন।

এই বাংলার সবচেয়ে বড় সদস্যপদ বিশিষ্ট সকল ফেসবুক গ্রুপ গুলোই শিক্ষক গ্রুপ। এক আধটা বাদ দিলে সবকটাই প্রায় উদাসীন। একটা বড় শিক্ষক গ্রুপ আজও 'কবিপক্ষ' পালন করছে নির্লজ্জ ভাবে। তাদের প্রতিবাদ হাততালি আর কবিতাতে সীমাবদ্ধ। এনাদের ঘরের সব সমস্যা বোধহয় তালি মেরে আর কবিতা লিখে গান গেয়ে সমাধান করেন। মানে নুন্যতম বোধবুদ্ধি টুকু হারিয়ে ফেলেছেন, যে কি করা উচিৎ!

সাবাস, মাস্টার মশাই- 

আপনারা ধন্য। কিন্তু কাল আপনিও বিপদে পড়লে বাকিরাও আন্দোলন করবে নিজে বাঁচার জন্য, আর লাগাতার "পোতিবাদ" হবে ফেসবুকে হোয়াটসএপে- গান গেয়ে, তালি মেরে, কবিতা লিখে। আপনাদের দেখেই তো ভবিষ্যৎ শিখছে।


দুজন শিক্ষক লকআপে পচছে এই গরমে? জানেন লকআপ কি? আমি ছিলাম বেশ কয়েকবার, ১০ ফুট বাই ১০ ফুট জানালা বিহীন ঘরে অন্তত ২০-৩০ জন। তার মাঝেই এক কোনে একটা পায়খানা প্যান বসানো। ভিতরে কোনো সিলিং ফ্যান নেই, যদি কেউ তাতে ঝুলে পড়ে বা ঝুলিয়ে দেয়। একেকটা ঘন্টা একেকটা দিন মনে হয়। জীবন্ত নরক দর্শন।

ওখানে শিক্ষকেরা আছেন ছিঁচকে চোর, ধর্ষক, সব বাকি অনেক অপরাধীর সাথে। কেন আছে আপনি শুধাবেননা সরকারকে? দয়ার দানে পাওয়া চাকরি!! যে এতো ভয়? কাল আপনাদের উই পোকাতে খেয়ে নেবে জীবন্ত, এতটাই নির্জীব আপনারা।

ভাগ্যিস আপনি নেই ওই লকআপে।

সত্যিই কি আপনি নেই স্যার? দেখুননা একটিবার মুখটা আয়নাতে, লজ্জা না পেলে সত্যিই আপনি আধুনিক প্রজন্মের শিক্ষক। পেলে এখনও অবশিষ্ট বিবেক রয়েছে আপনার। আওয়াজটা তুলুন, শুরুটা করুন একাই। দেখুন অনেকের স্বরে স্বর মিলে যাবেই, ক্ষোভের আগুন সকলের বুকেই আছে, একত্রিত হোন। নাহলে রাষ্ট্র আরো নিপীড়ন করবে।

চলুন এই অবস্থাতে আমিও প্রতিবাদে ফেটে পড়ে "তালি" দিলাম। 

সুধীজনের ভাষাতে- "নোয়েল পোপেসোন" বাওয়া। আমি তুমি বেনিয়া বুঝবো না।
নিজেকে বড় সৌভাগ্যবান মনে হয় একেকসময়, আর সেটা আপনাদের দয়াতে। সরকারি চাকরি না পাওয়ার আক্ষেপ কোনোদিনিই ছিলনা। আজ মনে হয় বেঁচে গেছি বড় সর্বনাশের হাত থেকে। বৃহন্নলা সেজে বাঁচা আর হয়ে বাঁচার ফারাকটা বুঝতে শিখেছি। আর যে পেশা তেই থাকিনা কেন- অন্তত পশ্চিমবঙ্গের "ম্যাস্টার" নই।


No comments:

Post a Comment