Sunday, 17 May 2015

ডিজিটাল বিন্দাস



উন্মাদীয় রবিবাসর
*******************


শীত গ্রীষ্ম বা বরষা, হালতু হোক বা গোবরডাঙা, সকাল ছটার আগে গা ধোয়াটা এক চিরকালীন অভ্যাস নমিতা বৌদির।

বৃন্দাবনদা সাধারনত সাড়ে সাতটার আগে বিছানা ছারেন না। আবগারি দপ্তরের বড়বাবু। ডানহাতে বাঁ হাত সব মিলিয়েমিশিয়ে দারুন রোজগার। তবে ঘুমটা খুবই বেশি। উনার কথায়ঃ –
~আরে বাওয়া আবগারি দপ্তোর বলে কতা, নেশার জিনিস তো, ঘোর তো লাগবেই।
অকাট্য যুক্তি, তাবলে এতো ঘুম!!
বৃন্দাবন দাশগুপ্ত, উদারমনষ্ক সামাজিক প্রানী উনি। সমাজের প্রায় প্রত্যেক কাজে উনি নিজের কন্ট্রিবিউশন রাখেন, মানে যে গুলো ওনার কাছ পর্যন্ত এসে পৌঁছায় আর কি। তা সে কালী পুজোর আরঙ হোক বা কারো মেয়ের বিয়ে, ২১ টাকা বরাদ্দ আছেই, তবে ওর বেশী যদিও কাওকে দেন নি আজ পর্যন্ত। উনি প্রায় সকল ধর্মেই বিশ্বাস করেন। ভুডু মন্ত্রবিশ্বাস থেকে ফকির বাবার তেলপড়া বা তারাপীঠের সিদ্ধ বশীকরণ মাদুলি, সবেতেই ওনার অবাধ বিচরন। তবে উনি নিজেকে নিও-সেকুলারিজমের এক জন অগ্রগন্য দূত ভাবতেই পছন্দ করেন।
উনি এক গ্লাস গোমূত্রে এক ছিপি “যমযমের জল” মিশিয়ে অনায়াসে খেয়ে ফেলেন, দার্জিলিং গিয়ে ক্যাভেন্টারে বসে হট চকোলেটের সাথে পর্ক রোল যেমন খেয়েছেন, তেমনই স্বস্তার বিফ বিরিয়ানি তো ওনার সপ্তাহান্তের সান্ধ্যকালীন খোরাক। কিন্তু উনি নিজেকে তেমন প্রকাশ করতে পারেন না, মিশুকে বলে তেমন খ্যাতিও নেই। নিজেকে এক সময় উত্তম কুমার মনে করতেন, তবে এখন সে যুগ গেছে।
সেকুলারিজমের বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট নিয়েই তার তার দিনাতিপাত হয়। ছেলের নাম রেখেছেন আব্দুল দাশগুপ্ত, মেয়ের নাম জয়শ্রী মূর্মু। নার্সারি স্কুলে পড়া ছেলের তেমন সমস্যা না হলেও ষোড়শী কন্যার নাম নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। চারধাম যাত্রা শেষ করেছেন সে কবেই, এর ফাঁকে আজমীঢ় টাও সেরে ফেলেছেন। স্বয়ংসেবক সদস্য তাও প্রায় বছর দশেক, আর নিমন্ত্রন না করলেও জমিয়তে উলেমার মিটিং মন দিয়ে শোনেন। বছরে এক আধটা রোজাও করেন। রবিবার নিয়ম করে চার্চে যান আবার সোমবার সরনার চর্চাও করেন। তবে রাজনীতি উনি সহ্য করতে পারেন না। ডান বাম বা রাম, সবেতেই আপত্তি। বরং উনি পুরাতন রাজত্ব প্রথাতে বিশ্বাসী। উনার মতে রাজনীতিতে সাধারন মানুষের মাথা ঘামানোর ফলে নাকি মানুষের বুদ্ধির বেশিরভাগটাই ওই কাজে ব্যাবহৃত হচ্ছে। মানুষ অনেক বেশী স্বার্থপর হয়ে গেছে।
ওনার ইচ্ছা ছেলেকেও নিজের মত লিবারাল বানাবেন। শেখার জন্য আর আগ্রহ মেটেবার জন্য ধর্মপালন করুক সে, অন্ধ বিশ্বাসের পাঁকে যেন সে জড়িয়ে না যায়, এই তার ইচ্ছা। সমকামিতার উপর উনার পূর্ন সমর্থন থাকলেও, ছেলের ব্যাপারে যথেষ্ট রক্ষণশীল, অন্তত এই নির্দিষ্ট ব্যাপারটাতে, নিজেও কখনো ওই পদ্ধতি করেননি। পাড়াপড়শি বা আত্মীয়স্বজন রীতিমত অতিষ্ট হলেও, বৃন্দাবনদা কিন্তু নিজ সিদ্ধান্তে অবিচল। এবং অত্যান্ত স্যাটেস্ফায়েড। আজ পর্যন্ত উনি সোশ্যাল মিডিয়ার জালে বন্দি হননি, ওনার মতে সেটা আধুনিক হলেও ওতে নাকি কর্মক্ষমতা ও ভাবার ক্ষমতা হ্রাস পায়, তাই আজও উনি অবসর যাপনে লেখা লেখির ফাঁকে দাবা খেলতেই বেশী পছন্দ করেন। হাজার হোক সেকুলার বলে কথা।
যদিও অনেকেই জানেনা, তবুও ওনার একটা ডাকনাম আছে, সেটা বৃন্দাবনদা নিজেই নিজেকে দিয়েছেন, নিজের নামটা একটু ছোট করে নিয়ে বিনদাশ করে নিয়েছেন। এ নাম নিয়ে তার গর্বের শেষ নেই।

নমিতা বৌদির অবিশ্যি অন্তহীন অভিযোগ।
~বুড়ো মিনশে, আপিস থেকে আসা ইস্তোক টিবিটার পিচোনে, আর তাপ্পোর খেয়েদেয়েই মরন ঘুম। বলি ঘরে কি আমি নেই? যার ঘরে এমন তাজা টগবগে যুবতি বউ, সে ঘুমায় কি করে? আমি ভাবি এই মিনসেই কি সে? যে সোহাগ করে নাগোরদোলায় আমার আদর করেছিলো, নাহলে আমি বিয়ে করতুম এই উলাউঠো ভাম টাকে। আজ এতোদিন হয়ে গেলো, একদিনও কি নিজে থেকে সোহাগ করতে নেই! কি ই বা আমার বয়স।
এখন তাহলে নিন্দুকে প্রশ্ন তুলবে জয়শ্রী-আব্দুল তাহলে কোত্থেকে এলো! বৃন্দাবনদার সোহাগ না থাকলে ওটা কার সোহাগের ফসল? সে যাই হোক উপাই কি দেশে কম।
নমিতা বৌদি তখন মাধ্যমিক পরিক্ষা দিয়ে মেজোমাসির বাড়ি উলুবেড়ে বেড়াতে গেছিলো। তখন অবিশ্যি নমিতা সান্যালই ছিলো, নমিতা বৌদি হননি। সেখানেই বৃন্দাবনদার দিদি, বৌদিকে দেখে নিজের ভাইয়ের জন্য পছন্দ করেন। বয়সটা একটু বেশিই ছিল নমিতা বৌদির তুলনায়। বৃন্দাবনদার সাঁইত্রিশ আর বৌদির তখন ষোলো। এর পর দু চারদিন কুটুম্বিতে ব্যাস। চার হাত এক হয়ে গেল। এখন বৌদি ৩১ আর দাদা ৫২। তবে বৃন্দাবনদা দা একটু কেয়ারলেসই বটে। চুল সব পেকে গেছে। ছিপছিপে বেতের মত ঋজু শরীরে একঝাকা ওই চুলের বস্তা দেখতে কিন্তু বেশ লাগে।
আর পাঁচটা বাঙালী সংসারের গৃহবধুর যা হাল, নমিতা বৌদিও তার ব্যতিক্রম নন। মাত্র ৩১শে ই ৪৮ এর ধক। চুলে প্যারাসুট নারকেল তেল, শীতে মুখে মাখার ক্রিম (যা হোক একটা হলেই হয়), আর সর্বহরা বোরোলিনই ভরসা। সুতরাং সরষের তেলে জারিত নধর শরীরটা গোসাপের মত খসখসে না হলেও কম কিছু নয়। তার উপরে নখের কোনগুলোতেও বাসনমাজা সাবান, রান্নার মসলা, আর ডিটারজেন্টের পার্মানেন্ট কালচে নিশান গিন্নি হবার সকল নিদর্শন জাহির করছে।
এমনিতে বাড়িতে বৌদি নাইটিই পড়েন, তাতে দশচাকা গাড়ির হাওয়া ভর্তী টিউবের মত থলথলে চর্বির ব্লাডার কে সাময়িক ভাবে আড়াল তো করাই যায়। শাড়ির সাধ্যি কি, ওই চর্বির শোরুমকে নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখে। তবে ওনার ওড়না সামলানোর দায় নেই, অনিয়ন্ত্রিত চর্বির মন্ত্রবলে শ্রীফল প্রায় নাভিকুন্তক স্পর্শ করেই যেত , যদি না মধ্যপ্রদেশ এতটা সঞ্চয়শীল হতো। তবুও বৌদির ফিগার নিয়ে একটা চাপা গর্ব আছে। নিন্দুকেরা হিংসে করে বোলে, বাপের বাড়ি গিয়েও, উনি কলের জলেই স্নান করেন, সাধের পুকুরের পাড়টিও মাড়ান না। এই ওবেসিটির জন্য ডাক্তারও দেখিয়েছেন, থাইরয়েডের সমস্যা। এই ভাবেই দিন কেটে যায়। তবে বৌদির একটা মহৎ গুন আছে, উনি বৃন্দাবনদাকে শত গালমন্দ করুক, ভুলেও বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের মত জটিল সন্দেহের আওতায় মোটেও ফেলেন না।
বৌদি আজ ইচ্ছা করেই আর দাদা কে ঘুম থেকে উঠালো না। ফলাফল যা হবার তাই, আফিস যাওয়া ফক্কা হয়ে গেল। তাতে যে বৌদির কিছু লাভ হবে না হয়, ওই – শুধু একটু মনের ঝালটা মেটানো হলো। সাড়ে নটা নাগাদ দাদার ঘুম ভাঙতেই তড়াক করে হুড়মুড়িয়ে বিছানা থেকে নেমে দেখেন যা সর্বনাশ হবার হয়ে গেছে। খানিক তন্ত্রাচ্ছন্ন হয়ে মনমরা ভাবে বসে থেকে প্রাতঃকালীন জরুরী কর্মসম্পাদন করে, রেডি হয়ে বাজারের ফলে নিয়ে বাজার পান চললেন। যদিও গতকাল রোববারই বাজার করেছেন, তবুও। সময় টা তো কাটাতে হবে নাকি!!
বাজার থেকে ফিরে এসে খানিক মিত্তিরদের রোয়াকে গিয়ে বসলেন। সোমবারের দিন, তাই কেউই নেই। তাছারা আজ কালকার বখাটে ছোঁড়া গুলোও তো সারাদিন মোবাইল নিয়ে খুটখাট করতেই থাকে, রকের আড্ডা আর কোথায়? উদাস মনেই কি যেন কি ভাবতে ভাবতে বৃন্দাবন দা জুলপিতে তা দিচ্ছিলো। হঠাত দেখে সামনে দিয়ে ন্যাপলাটা যাচ্ছে।
ন্যাপলা সরখেল, এক সময় স্বঘোষিত ত্রাস ছিল এলাকার মেয়েদের। ওর বিচ্ছিরি তোতলা সিটি থেকে, ক্লাস সেভেনের টুম্পা থেকে খগেনের মা আরতি মাসি অবধি বাদ যেত না। বেশ কয়েকবার পাবলিকের হাতে কাঠক্যালানি খেয়ে ওই কাজ থেকে সম্প্রতি অবসর নিয়েছে। ও এখন খোঁড়া নীলুর চ্যালা হয়ে পকেটমারির ট্রেনিং নিচ্ছে।
বৃন্দাবনদার ডাক দেখে ন্যাপলা উদ্ধশ্বাসে পালাবে, এমন সময় বৃন্দাবনদাই চেচিয়ে বলে উঠলেন, আরে আর রে পাগলা আয়, একটু সুখের দুখের গপ্পো করি। আয় আয়, নে একটা বিড়ি নে। একাই তো আমি বসে আছি। ন্যাপলা কি রকম যেন একটা ভরসা পেল। আস্তে আস্তে গুটিসুটি মেরে বৃন্দাবনদার পাশে গিয়ে চুপটি করে বসে পড়লো। বৃন্দাবনদাও প্রতিশ্রুতি মত একটা বিড়ি দিয়ে , হালহকিকৎ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করতে যাবে, ঠিক এমন সময় এক বিচিত্র গগনভেদী আওয়াজে থতমত খেয়ে হিচকি শুরু হয়ে গেল বৃন্দাবনদার। যেন কানের ককলিয়াতে একটা ড্রিল মেসিন লাগিয়ে ছেঁদা করছে। যাই হোক প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটার পর আসল ব্যাপারটা উদ্ধারর করা গেলো। ওটা ছিলো ন্যাপলার মোবাইল ফোনের নোটিফিকেশনের আওয়াজ।

বৃন্দাবনদা আর রিস্ক নিতে পারলেন না। বললেনঃ-
~ন্যাপলা, ভাই তোর ম্যাসেজের যদি এই আওয়াজ হয়, বাইচান্স ফোন এলে তো আমি অক্কা পাবো। একেই হাই প্রেশারের রুগী, তার উপরে সুগার।
ন্যাপলা অভয় দিয়ে বললো, ওর ফোনে কোন ফোন আসেনা, ওটা শুধু ফেসবুক করার জন্য। বৃন্দাবনদা যদিও অতশত বোঝেনা, তবুও সময়তো কাটাতে হবে তাই অগত্য বুঝতে লাগলো। নাহলে তো বাড়ি গিয়ে সেই স্থলহস্তি নমিতা বালার খপ্পরে পড়তে হবে। তার চেয়ে বরং ন্যাপলাই ভালো।
~ তা ন্যাপলা, আমায় একটু ফেসবুক শেখা না ভাইটু।

~সেকি, আপনি অপিসার মানুষ, এই সব বোঝেন না। মাইরি একটা লোক বটে আপনি।
বৃন্দাবনদা বুঝে পেলেননা, অফিসারের সাথে ফেসবুকের সম্পর্ক টা ঠিক কি। ওটা তো অফিসে কোথাও কাজে লাগে না। সেটা ন্যাপলাকে বলতেই, ন্যাপলার চটজলদি উত্তর...
~দেসের পোধানমোনতির লাগচে, আর আপনার লাগবে না? এই দেকুন, আমিও পোধানমোনতিরির সাতে আচি। ফেসবুকের মালিক আমাদের পোধানমোনতিরিকে খুব চাটচে। সব তিরঙ্গা করে নিয়েচি আমাদের ছোবি গুলো।

বৃন্দাবনদা বুঝলেন না যথারিতী।
~দে তো দেখি তোর মোবাইলটা, কি বলছিস দেখি আমি একবার।
ন্যাপলা অকপট চিত্তে তার ফোন বৃন্দাবনদার হাতে তুলে দিয়ে, সে আরেক বিপত্তি। আরেকটু হলেই হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল আর কি। বৃন্দাবনদার মনে হলো অন্তত কেজি খানিক ভারী হবে বোধহয় , মোবাইলটা টা।
এবার পড়ে বৃন্দাবনদা পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। ফেসবুক কর্তা আর আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কিছু একটা ব্যাপার, সরকারি স্তরে। এবং সৌজন্যমূলক ভাবে তারই একটা বহিঃপ্রকাশ চলছে সোশ্যাল মিড়িয়ার এই মাধ্যমে। বললেন- আমায় একটু শেখাবিরে ন্যাপলা, তোদের এই ফেসবুক। ন্যাপলা বলতে যাচ্ছিলো যে জয়শ্রী ও ইয়ে ইয়ে... কিন্তু চেপে গেলো ব্যাপারটা। হঠাৎ করে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেলো। বললো-
~আপনাকে কয়েকটা ভিটামিল ক্যাপসুল খেতে হবে, নাহলে মাথায় কাজ করবে না ব্যাপারটা। রাত্রে শোবার আগে খাবেন একটা, পরপর তিনদিন। এর পর ইন্টারনেট কানেকসন নিয়ে কম্পিউটারের সামনে বসলেই, আমাদের মত ফটাফট ফেসবুক করতে পারবেন। খানিক বসো, আমি এনে দিচ্ছি। শ খানিক টাকা দাও। বৃন্দাবনদা ও সরল বিশ্বাসে টাকাটা দিয়ে ন্যাপলার মোবাইল ঘাঁটতে লাগলো।
খানিক পরেই ন্যাপলা একটা র্যাবপারে মোড়া প্যাকেট এনে বল্লো, রোদ্রের আলোয় এটা খুলোবেন না। অন্ধকারে দেখবেন, নাহলে এটা খারাপ হয়ে যাবে। ওদিকে তখন প্রায় বেলা একটা। ন্যাপলাকে বিদায় জানিয়ে বৃন্দাবনদা বাড়ি ফিরে এলেন। দেখেন বৌদি পা ছরিয়ে বসে সিরিয়াল দেখছেন। ক্যাপসুল প্যান্টের পকেটেই রয়ে গেলো। নমিতা দেখলে যদি হাসাহাসি করে! স্নান সেরে আসতেই দেখলেন, বৌদি ভাত বেড়ে রেখেছেন। গোগ্রাসে ভাত কটা উদরস্থ করে একটা চাদর গায়ে দিয়ে খাটে শুয়ে পড়লেন। আর হ্যাঁ, এর মাঝেই দু
টো ক্যাপসুল খেয়ে নিয়েছেন। বুদ্ধি বাড়ানোর পন্থাতে আর তর সইছেনা তার। তাই রাত পর্যন্ত আর ওয়েট করে কে!
বৌদি খানিক পর রান্নাঘরের কাজ শেষ করে এসেই দেখেন খাওয়া শেষ। এঁটো বাসনটা কলপাড়ে রেখে, ঘরমোছা ন্যাতা টা নিয়ে উবু হয়ে এঁটো জাইগা টা পুছছিলেন। দাদা ওদিকে ঘুমাবেন বলেই শুয়েছিলেন। হঠাৎ কেমন যেন অস্বস্তি একটা হচ্ছে, ভাবলেন অধিক ভোজনের জন্য হয়তো হাঁসফাসানি হচ্ছে, জলখেয়ে একটু হাঁটাচলা করার জন্য উঠলেন। নিচে মেঝেতে বৌদির দিকে নজর পড়তেই, বিন্দাসদার মনে হল তিনি যেন দেবরাজ ইন্দ্র- আর নাটমঞ্চে নৃত্যপটীয়সী অপ্সরা তার কলা প্রদর্শন করছে সমগ্র দেহবল্লরি দিয়ে।
নমিতা বৌদি বেশী কিছু বোঝার আগেই দাদার টানা হ্যাচড়াতে ততক্ষনে খাটে পৌছে গেছেন, হাতে এঁটো ন্যাতা- কিন্তু সে সব দিকে খেয়ার কার!! গায়ের ঘামের গন্ধ, কেঁদো চর্বির দোকানটা নিয়েই সে কি রমনলীলা। এই অচেনা বৃন্দাবনেদার কীর্তি নমিতা বৌদির যথেষ্ট আশ্চর্য আর কৌতূহল জাগালেও, এই ইচ্ছাটাই তো এতোদিনের তার লালিত ইচ্ছা ছিলো। বেশ একটা তৃপ্তি অনুভব করতে দেখা গেল। বেশ খানিকপর সব শান্ত হল।
ছেলেমেয়ের স্কুল থেকে ফেরার সময় হয়ে এসেছে। ন্যাতানো পাঁপড়ের পূর্বাবস্থায় যথারীতি ফিরে এসেছেন বৃন্দাবনদা, শরীরটার উপর প্রচুর ধকল গেছে যদিও, ফুরফুরে মেজাজে বাগানে বসে একটা অতুলপ্রাসাদী গুনগুন করছেন। বৌদিও এই ভর বিকালে স্নান করতে গেছেন কিছুক্ষণ আছেই। ন্যাপলা এসেছিল, দাদার সাথে আড্ডা মারতে, জানালা দিয়ে উঁকি মারতেই যেটা দেখলো...
এলোমেলো বিছানার চাদর, আর তার উপর লালাঝোলা জাতীয় তরল কিছু দিয়ে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ডিজিটালাইজড নক্সা। বুঝতে আর কিছু বাকি রইলো না।

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সূত্রপাত।
(উন্মাদীয় বানানবিধী সহ)

No comments:

Post a Comment