Monday, 11 June 2018

।। ছেঁড়া মন্তাজ ।।

পরকিয়া আসলে নিষিদ্ধ সুখ-
নিষিদ্ধতা বিলাস একটা শিল্পের নাম।
শিল্পকলা অনেকটাই প্রতিভাগত, বাকিটা অনুশীলন। যারা এই শিল্পের দীর্ঘপথযাত্রী তাঁরাই অগ্রদূত ও প্রেরণাদায়ক। এর অভিধানে কোনো সফলতা হয়না, সফল হলেই সেটা আর পরকিয়া থাকেনা।
শৃঙ্খলা বা নৈতিকতা নামের জীবাণু পরকিয়া শিল্পের জন্য মহামারী।
অত্যন্ত শৌখিন ও বিলাসী এই শিল্পে গোপনীয়তাই প্রাথমিক নিধি। প্রতিভাষিত হওয়া আত্মহত্যার সমাংশ।
সুসময় থাকলে পরকিয়া বা সেই দক্ষতা, নান্দনিকতার জন্ম দেয়, যা আবেগময় নিকেষ প্রবৃত্তিমার্গের জন্ম দেয় নতুন রূপে। কালের নিয়মে ঠাট অস্তাচলে গেলে ব্যাক্তি- অবশিষ্ট মানের রূপে দৃশ্যগোচর হবেন ঠিকিই, কিন্তু টিকে যাবেন। ঘটনা হচ্ছে আমাদের টিপিক্যাল ভারতীয় সমাজকে আমরা সবসময় অপরিণত বলে ব্যাখ্যা করে আমাদের মুখোশধারী দ্বিচারিতাকে তোল্লা দিই।
মজা হচ্ছে, কখন ঠাট আছে আর কখন নেই এটা বোঝা দায়, ভীষন আপেক্ষিক।
বুঝে উঠতে পারাটাই জ্ঞান, ও খেলোয়াড়চিত আচরণ।
রোমান্টিসিজম আসলে একটা মুহুর্তের নাম, যেটা বিস্তার লাভ করে আপন গতিতে পরবর্তী মুহুর্তগুলিতে। সঞ্চারিত হয় সময়ের সর্বাঙ্গব্যাপী, শরীরের খাঁজে খাঁজে প্রস্ফুরিত হয় ষড়রস দ্বারা সংক্রামিত হয়ে।
চোখে থাকে নেশা, হৃদয়ে প্রত্যয়। শরীরে জাগে শিহরণ, অভিব্যাক্তিতে পুলকসঞ্চারিত হয়।
অনুভুতি চট করে সিদ্ধান্তে আসেনা, কারন এটা মননের সাথে সম্পৃক্ত। নারীপক্ষে- মা,স্ত্রী, কন্যার জন্য আলাদা অনুভুতি, আলাদা উপিলব্ধি। বোধ ও বোধের ফলিত রূপ- ফারাকটা গড়ে দেয় মানবীয় বিকৃতি হওয়া থেকে
পরস্ত্রীর প্রতি অনুভুত অব্যক্ত প্রেম পর্যন্ত ঠিক আছে, কিন্তু মিলনেচ্ছা অবশ্যই নিষিদ্ধতা- সমাজের কাছে। তাই সমাজকে উপলব্ধি করলে এই প্রেম নিষিদ্ধ, আর প্রেমকে আস্কারা দিলে সমাজ থেকে নিষিদ্ধ।
অতএব, অনুভুতির সিদ্ধ, অসিদ্ধ, নিষদ্ধতা আছে। উপলব্ধির একক সেই পরিস্থিতির নিরিখে সঠিক বা বেঠিক।
বিদ্যার্জনে চৈতন্যোদয় হলে তবেই পাণ্ডিত্যপূর্ণ বুৎপত্তি তথা প্রজ্ঞার রুপায়ন সম্ভেদপর হয়। জ্ঞান যখন অর্জন করছি তখন ভালো আর মন্দের ফারাকটা পড়ে বুঝি শিক্ষার আপন গুণে। কিন্তু যখন প্রয়োগের সময় আসে, তখন স্বভাবসিদ্ধ মানবীয় স্বার্থপরায়ণ গুণ সকলসময় আপন অনুকুলে পরিস্থিতিকে বাইতে দিতে চায়। পুঁথিগত জ্ঞান তখন অসহায় পরিস্থিতির কাছে।
তাই গভীরে আলোচনা সকলসময় পরিস্থিতিকে কেন্দ্রকরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর পর্যালোচনা দাবি করে। নতুবা একতরফা চাপিয়ে দেওয়া সমাধান আসে, যেটা বিচারের সুষ্ঠুধারাকে খন্ডন করে।
জীবনটা গণিত শাস্ত্রের এক্তিয়ারের বাইরে কিছু নয়। প্রেমের আলাদা ভাষা আলাদা সংখ্যামান। সংখ্যার ভাজকতা অনুযায়ী মৌলিক ও যৌগিকও হয়। তাই প্রেমের পরিমিতি, জ্যামিতি, উপপাদ্য সকল সিদ্ধ প্রেমের সুত্র দ্বারাই ব্যাখ্যা বা কষে ফেলা সম্ভব। তবেই মৌলিকতা আসবে, নতুবা দুয়ে দুয়ে চার হয়ে যৌগিক হয়ে সম্পর্কটি কৌলীন্য হারাবে।
উদ্ভাবনীয় শক্তি ক্ষমতাধর, তাবলে ঐতিহ্যগত বুনিয়াদকে সমূলে উৎপাটন সম্ভব নয়।
অতএব নিষিদ্ধতা যতক্ষণ নিষিদ্ধতারুপে গ্রহণযোগ্য থাকবে, সর্বোৎকৃষ্ট সুখের মাত্রা সেই কালীনই সর্বোচ্চ হবে সেটা বলাই বাহুল্য। এটাই ফলিত সত্য।
অন্যথাতে কেবলই রোজনামচার অভ্যাস।

No comments:

Post a Comment