Sunday, 28 June 2015

অনুসারী- ১


একটা অসার জল্পন, অবশ্যই উন্মাদীয়
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^

অনুসারী
প্রথম পর্ব 

দরজার ফাঁকে অগোছালো হয়ে
পরেছিলো, অত্যান্ত অগোছালো ভাবে...
মহুয়া দি, বারকয়েক বলেছিল
অনু- ওটা গুছিয়ে রাখিস নি কেন!!

ওই লাল শাড়িটা।

কোন জবাব দিতে পারিনি,
আমি,
আম নিজেই যে অগোছালো হয়ে আছি,
মহুয়াদিটা ও না... সব প্রশ্নের কি
উত্তর হয়? না দিতে আছে?
ও যদি জানতো নিশ্চই শুধাতো না,
কেন পড়ে আছে...

ওই লাল শড়িটা।

এই তো সেদিন,
যেদিন সুর্যের সাথে কালো মেঘেরা
লুকোচুরি খেলছিল,
খুব গুমোট ছিলো আবহাওয়াটা,
আর মনটাও, খুব ঘেমেছিলাম সেদিন,
সে সবই তো ওই শাড়িটাতেই জমা আছে...
কালো সানগ্লাসে চোখ ঢেকে
আর পরনে...

ওই লাল শড়িটা।


ক্রমশ...
উন্মাদ হার্মাদ
৮ই আষাঢ়, ১৪২২

"ই" তি বৃত্ত


*****উন্মাদীয় রবিবাসর*****


#ইতিবৃত্ত

ইন্তেহা… হো গ্যায়ি। ইন্তেজার কি… 


অন্নপ্রাশনের সময়ই হবে, কেও একজন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসারগ প্রনীত বর্ণপরিচয় আমাকে উপহার স্বরূপ দিয়েছিলেন, তো সেখান থেকেই আমার প্রেমের শুরু।
“ই” কে…


কারন ‘অ’ বা ‘আ’ কে এক অক্ষরে টুক করে উচ্চারন করা যায়, কিন্তু হস-সই দিয়ে ‘ই’ এর উচ্চারন করতে হয়। স্বরবর্নের এ এক মহান জ্বালা। কোনো কারন ছারাই। পরে ঈ, উ,ঊ, ও লি ও এসেছিল। কিন্তু ওই লাভ এট ফার্ষ্ট লুক। ‘ই’ আমার ঠিক তাই। 


সেই থেকেই প্রেয়সীর উপরে যেমন নজর থাকে, আমার ও ‘ই’ এর উপর তেমন ই নজর থাকতো। অনেক সময় যমজ সমস্যার মত , জ্ঞানের অন্ধকারে ঈ কে ই ভেবে আপন করতে গিয়ে দেখি নিচে একটা অতিরিক্ত অঙ্গ, আমাকে ঠিক অকুস্থল জাইগা মতই খোচাচ্ছে, ঝটপট ছেরে দিয়ে কোন মতে প্রানে বাঁচা, এবং সেটা বারে বারে।


যখন জন্মালাম, দেশের দায়িত্বে ‘ই’ন্দিরা গান্ধী। স্ট্রং লেডি। মানে ই এর রাজত্বেই তো জন্ম। আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠতে লাগলাম। ক্রমে সেই বর্নপরিচয় টা হাতে পেলাম, যদিও ওটাকে দিন দুয়েকের মধ্যেই উদরস্ত করেছিলাম, আক্ষরিক অর্থেই। গোটা পাঁচেক বর্ণপরিচয় শহীদ হয়ে অবশেষে অ আ টপকে ই এ পৌছালাম। এর পর ভয় পাওয়া ইঁদুর ছানা কেও দেখলাম। রান্না ঘরে, বাবার দোকানে আক্ষরিক ইঁদুর ও দেখলাম। শিখলাম ‘ই’য়ার মানে নাকি কান হয়। ‘ই’উ মানে তুমি রা ‘ই’য়োর মানে তোমার, ‘ই’য়লো মানে হলুদ... ‘ই’ত্যাদি ‘ই’ত্যাদি... 


এছারাও, বেশকিছু শব্দ যেগুলো জাতে ইংরাজি, আসলে কিন্তু ভারতীর রেশন কার্ড পেয়ে গেছে। মানে যাকে বলে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান আর কি। যেমন, ইন, ইন্টারন্যাশ্যানাল, ইন্টারপোল, ইনেকটিভ, ইমপ্লান্ট, ইমপর্টেন্ট, ইমপোজ, ইমিডিয়েট, ইনকমপ্লিট, ইনোসেন্স, ইনসিস্ট, ইরেকসন, ইনক্রেডিবেল, ইনডিড, ইনডেক্স, ইনসাইড, ইনপুট, ইনফ্যান্ট, ইনফিনিটি, ইমিগ্রেসন, ইকুইটি, ইন্সট্যান্ট, ইন্টারেষ্ট, সহ এমন শত সহস্র শব্দবন্ধের সাথে পরিচিত হলাম। 


পড়া শোনা জোর কদমে শুরুহলো, ‘ইংরাজি ভাষায় নাকি কথা বলতে শিখতে হবে, কারন দেশে ওটাই প্রধান অফিসিয়াল মাধ্যম। এটা ইংরেজরদের বহুদিন দেশ শাষন করার ফল, যদিও তখন স্বাধীনতা-পরাধীনতার মানে নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। মজা হল ‘ই’ না থাকলে “অফসয়াল” হয়ে যেত। হল না, আর হবেও না। ওই ইংরাজীর চক্করেই জানলাম যে আমাদের দেশের ভালো নাম ও একটা আছে ‘ই’ন্ডিয়া। পরে জেনেছিলাম ওটাই দেশের আসল আই ডি, ক্রিকেটের মাঠে। বাকি গুলো, মানে ভারত বা হিন্দুস্থান ইত্যাদি গুলোও দেশের ই নাম, কিন্তু আমারই মত ফেক আইডি। পরিচিত মন্ডলের বাইরে ফেক আইডি। এখন ;ই; এর মহিমা না থাকলে ন্ডিয়া ক্রকেট খেলতো, সেটা বলাই বাহুল্য। যদিও আমি ‘ই’কিরমিকির চামচিকি... এই সবই খেলতাম।


আরেকটু বড় হতেই তৎকালীন এক যন্ত্রনাময় ‘ই’... ইস্কুল। জীবনের এক নতুন অধ্যয় শুরু হলো। এখানে আ-কারের সাথে সাথে ‘ই; কারের ও দুর্দান্ত ভাবে পরিচয় ঘটলো। মন আর মিনির মাঝে ফারাক করতে শিখলাম। ইস্কুলের সময় দীর্ঘায়িত হবার সাথে সাথেই, বাংলা ‘ইং’রাজীর পাশাপাশি আরেক মূর্তিমান বিভীষিকা ‘ই’তিহাস হাজির হলো। যদিও এটা আমার বা আমার সমগোত্রীয়দের জন্যই প্রযোজ্য। যদিও তাঁর অনেক আগেই শাকের আঁটির মত ‘গন-ইত’ (গনিত) জীবনের রস অনেকটা তেতো হয়েই গেছে। যদি ‘ই’ না থাকতো গনিত টাই তো গনৎ হয়ে গেলো। তবুও ‘ই’ প্রেম অটুট রইলো। ততদিনে ভূগোলের পাঠ আসতে শুরু করেছে, ‘ই’উরোপের নাম ও শুনে ফেলেছি। আর বৃহত্তর অর্থে সাহেবদের দেশ ‘ইং’ল্যান্ডের। এদিকে পাড়ায় মহল্লায় তখন একটাই ধ্বনি ‘ই’নক্লাব জিন্দাবাদ। 


তখন টিভির এতো রমরমা যুগ ছিলো না, মানে এখনকার মত। বিকালে মাঠে খেলতে যেতাম, ছুটির দিনে সার্কাস মেলা ‘ই’ত্যাদি ‘ই’ত্যাদি...... তাঁর মধ্যে জাদুখেলার টান ছিল অমোঘ, এখানেও ‘ই’ এর মাহাত্ব। মানে ইন্দ্রজাল। যাতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকতাম পুরো বাল্যকাল ও কৈশরের মধ্যভাগাবধি। জানলাম ‘ই’ন্দ্র দেবের কথা, ঐরাবত যার বাহন, এবং বজ্রচালনা করে থাকেন, বাল্যকালে এইসকলই পূরাণ তথা রুপকথার রাজ্যে পাড়ি লাগাতাম, ওই ইন্দ্রধনুষে ভর দিয়ে, মানে যাকে আমরা রামধনু হিসাবে জানি।


কল্পনারা তো আর বাঁধ মানে না, বেশ জাকিয়ে তাঁরা রাজ্যপাট করে আমার মনের রাজত্বে। সেখানে ‘ই’চ্ছা শক্তির বারবার সংঘাত চলতো, ওই কল্পনাদের সাথে। আলপটকা মন্তব্যও হয়তো করে ফেলতাম, যার জন্য ইঁচড়ে পাকা উপাধীও লাভ করেছিলাম, খুব অল্প পরিশ্রমেই। দু চার জন ব্যাতিক্রম বাদের প্রায় সকলেই বোধহয় আমার মতই বড় হয়ে উঠেছেন, এই কল্পনা-ইচ্ছা-রামধনুদের ইট সাজিয়ে সাজিয়ে। 


তখন নলকূপের চল এই গ্রামবাংলার দিকে ততটা ছিলনা, পুকুর দিঘী বা নদীর জলই ভরষা।তবে কিছু কিছু স্থানে ইঁদারা বা কুয়ো দেখা যেতো। যেগুলো নিয়েও প্রচুর সাহিত্য আছে। সেই সব শান বাধানো ইঁদারার পাড়ে বসে কাঠফাটা জৈষ্ঠের রোদে, নিবিষ্ট মনে কাঁচা আম, সামান্য নুন লঙ্কা সহযোগে, চেটে ও চুষে সহ আর কত ভাবে, রেখে রেখে খাওয়ার প্রণালি যে ছিল, মানে যাতে দ্রুত শেষ না হয়ে যায় ওই যখের ধনটি, তার আর ‘ই’য়াত্তা নে‘ই’। এর থেকে ভালো সময় জীবনে কি আর কখনো এসেছে! না ওতটা মনযোগ দিয়ে আর কতগুলো কাজ করেছি! খুব হিংসে হয় সেদিনের আমিকে। 


ই না থাকলে তো জীবনে মিষ্টতা বলে কোন বস্তুই থাকতো না। গুড় বলুন বা চিনি, ইক্ষু ছারা সেটার উৎস কি! হ্যাঁ আপনি বলতেই পারেন আঁখ, বা আজকাল সিন্থেটিক চিনি কি বাজারে নেই? নিশ্চই আছে, আমি আমি ই এর প্রেমিক, তাই আমি তো ইক্ষু ই বলবো। ছোট বেলায় মায়ের হাতের ইক্ষুপেটা, মানে লাঠিপেটার বদলে আর কি, আমাদের দুই ভাইবোন কেই ইক্ষুর ঠ্যাঙান হজম করতে হয়েছিল, যদিও সেটা মোটেই মিষ্ট স্বাদের ছিলনা। কতদিনিই এমন হয়েছে, ইক্ষুর ছাল ছারাতে গিয়ে ঠোঁট ও জিভের ছাল ছারিয়ে ফেলেছি তারও লেখাজোখা নেই। তবে সেটা বেশ উপভোগ্যই ছিল।
ইগল নিয়ে মতভেদ থাকবে, ওটা ই না ঈ, আমি ই বিলাসী, তাই কটু গঞ্জনাতে প্রেমের ঘাটতি হতে দিই কি করে! এই বিলাসের কথাতে রসনা লকলক করে উঠে, তার জন্য ঘটি বাঙাল ভেদাভেদ খুব কম।
ইলিশ..................


নামটা উচ্চারনের সাথেসাথেই মুখ লালাঝোলে ভর্তি, চারপাসে সর্সে বাঁটার একটা ঝাঁঝালো সুগন্ধে গরে উঠে আশপাশ, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের মতই। ইলিস ‘ই’ ছারা অন্য কিছু দিয়ে শুরু হচ্ছে, এটা তো দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না। ধরুন কষ্ট কল্পনা করেও নিলেন, তবে সেটা আর ওই রসনাতৃপ্তি দেবে বলে মনে হয় না। সেটা নরম বালিস হতে পারে, ময়দাতে জলিস হতে পারে, বা মগজে পালিস... মালিস ও হতেপারে, ইলিশ হবেনা ভায়া। এটাই ই এর মহিমা। এতো শুধু ইলিশ। আর কবিরা! বা প্রেমিক-প্রেমিকারা! ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিই তো তাদের মনজানলাতে দখিনা বাতাস বয়ে আনে। সবই ই এর কৃপা...
ই এর কৃপা জানেন না?? ভগা দা মানে আমাদের ইশ্বর(ঈ ও মতান্বরে) ... তিনি সর্বাসের্বা হয়েও ই এর মোহ ত্যাগ করতে পারেন নি, আমি আপনি তো কোন ছার। 


তবে বলতেই পারেন আমি গরীব, ইলিশ সুখ আমাদের দেখতে নেই, না দেখুন ক্ষতি নেই, ইচে আছে তো। আপনি বাঙালী তো? তাহলেই ই এর উত্তেজনা আপনার জীবনে ঠিকিই আছে। ফুটবল। হয় আপনি মোহনবাগানের সমর্থক বা অন্য দলের... তাহলে কি সেই দল!! বলুন বলুন!! ইস্টবেঙ্গল......... মাইরি কেটে বলুন তো ই না থাকলে ইষ্টবেঙ্গল কোথায় পেতেন! পেতেন ৪-০ এর সুখ! আর মোহনবাগানীরা কাকে হারিয়ে এতো উল্লাস করতো, বা কার কাছে হেরে এতো মুষড়ে পড়তো!! ভাবুন কোথায় খরচ করতো বাঙালী তার এই আবেগ! নিরামিষ হয়ে যেত জীবন ই না থাকলে।


বসন্ত এসে গেছে, মানে সবে যৌবনের নীল দরজা দক্ষিনাকাশের দিগন্তে ভাষা ভাষা দেখা দিয়েছে, বুঝলাম ‘ই’জ্জত নামের একটা বস্তু ও ধরাধামে আছে। পরে পরে বুঝেছি ওইটা আসলে দুর্মূল্যই। বহু কিছুই ওটার জন্য ত্যাগ করা যায়। যৌবনের দোরে পা রাখতেই ‘ই’ঙ্গিত বিদ্যারা কেমন যেন স্বাবলীল হয়ে গেলো, বহু কিছুই ওই মাধ্যমে সম্পন্ন হতো, তখন ও দেশে ফোন আসেনি কি না, তাই... ইমোটির কাজ গুলো নিজের ইন্দ্রিয় দিয়েই আকারে ইঙ্গিতে করতে হতো। ‘ই’মোটির কথায় আবার ‘ই’মোশন চলে আসে। এখন বাংলিশের যুগে অনুভুতিগুলো সব ইমোশন আকারেই তো প্রকাশ পায়। ইতঃপূর্বে অনুভুতিরা এখন রাগ ঝাল দুঃখ আনন্দ বেদনা খুশী সবই এখন ইমোটির জাঁতাকলে, আর টুক করে বোঝানোও যায়।


এর পর উচ্চমাধ্যমিক তো কোনক্রমে পাশ করলাম, বাড়িথেকে ‘ই’ঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ও চাপ দুইই রইলো। যদিও সেই মেধা বা ভালোলাগা কোনকালেই ছিলাম না, তাই টুক করে অল্পদিনের মধ্যেই কেমন যেন ‘ই’তর সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। মানে বাকি সকলের ব্যাবহারের ধরন দেখে। আমার ‘ই’ঞ্জিনের ক্যাপাসিটি না দেখেই লোড চাপানোর প্রচেষ্টা সমুলেই উৎপাটটিত হল সে যাত্রায়। সেই থেকেই জীবন নিয়ে কিছুটা ‘ই’তঃস্তত বোধের মধ্যে ছিলাম। নিজের সিদ্ধানে অবিচল থেকে নিজের কাছে নিজের ‘ই’জ্জত রক্ষা হলেও, বাপ মায়ের ইচ্ছানুরুপ না গিয়ে তাঁদের ইজ্জত কথাঞ্জলী দিলাম। 


ইত্যাবসরে ইউনিভার্সিটি নামক নতুন ই এর জগতে প্রবেশ করলাম। অচিরেই দুটো হালকা ফুরুফুরে ইচ্ছেডানার উদ্গম হলো। রোজনামচাতে ‘ই’স্ত্রি করা পোষাকের ঘনঘটা বৃদ্ধিপেল। প্রেমান্দ্রিয় সজাগ হতে বেশি দেরি হল না। ললনা দেখলেই ‘ই’দের চাঁদের মত, এটাই বোধহয় আমার জন্য সৃষ্টি বলে ঝাপাতাম, যথারীতি ফেলিওর হয়ে তার চরিত্রের নানা অ-গুন গুলো বিশ্লেষনের মাধ্যমে মনকে শান্তনা দিয়ে, পরবর্তীর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতাম। অনেক সময় ‘ই’জের ফাটিয়েও ‘ই’জারা দিতে হয়েছে, প্রেমসঙ্কুল ওই দিন গুলোতে। এর জন্য বন্ধু মহলে কম ‘ই’য়ার্কি হয় নি। কিন্তু সেগুলো আমি কখনই ‘ই’য়াদ রাখিনি। আমি সেই পুর্ন ‘ই’ন্দুর অপেক্ষার কালাতিপাত করতে লাগলাম। 


‘ই’নাম যদিও তেমন কিছু পাইনি, তবে ওই যে বলে না... ব্যার্থতা মানুষকে শিক্ষাদান করে। আমার ওই প্রভুত ব্যার্থতা তথা শিক্ষার চোটে প্রায় সেমি বুদ্ধিজীবিতে পরিনত হয়ে গেলাম। যাই হোক ভবঘুরে জীবনে আদপে পিছিয়েই পড়েছিলাম, কিন্তু একটা বিয়য়ে উন্নাসিক ছিলাম, যে বাকিদের মত ‘ই’দুর দৌড়ে আমি সামিল হইনি। এছারা নিজেকে সান্তনা দেবার শর্টকার্ট আর হয় না বোধহয়। সে এক আশ্চর্য ‘ই’ন্দ্রাগার পরিস্থিতি। 


দুচোখ বুজলেই ‘ই’ন্দ্রগোপের সন্ধান, চোখ খুললেই ফরসা। সকলসময় এক ধরনের ‘ই’লিউসন, ঘিরে থাকতো। অনেকেই বললেন ‘ই’ন্দ্রমনি ধারন করলে নাকি, জীবনে উন্নতি অবশ্যম্ভাবী। জ্যোতিষি ভবিষ্যৎবানী করলেন, যে আমার ভি আচ্ছেদিন আয়েগা, উনি দেখতেও পাচ্ছেন, কারন ওটা ‘ই’নামেলের মত চকচক করছিল নাকি। শুধু কিছু জড়িবুটি আর মন্ত্রতন্ত্রের ‘ই’ন্ধন প্রয়োজন। কিন্তু আমি বললুম , আমার ট্রেন কোন এক ‘ই’ষ্টিশনে বেশিক্ষন দাড়াতেই পারেনা। ঠাকুর বললেন, সেই লাগাম ই লাগাবো রে পাগলা। বেশ চিন্তায় পরে ডবল শিওর হবার জন্য এক ‘ই’মাম সাহেবের কাছে গেলাম। উনিও প্রায় একই দাওয়াই দিলেন, শুধু বাড়তি বললেন- বেটা ‘ইমানদার হয়ে খোদার ‘ই’বাদৎ কর সব ঠিক হয়ে যাবে। 


মেসেই থাকি, কোলকাতায় ‘ই’য়ার দোস্তদের সাথে মিলেমিশে, ‘ই’জের বাদে প্রায় সকল দ্রব্যই একে অপরের ‘ই’স্তেমাল করি। দিন সারা এফএম রেডিও আর বাকি সময়ে কলব্রিজ বা টয়েন্টি নাইন, বা বিবি পাসানো, যদিও ‘ই’স্কাবনের বিবির প্রতি টান ষোলআনাই ছিল। ‘ই’য়ে দোস্তি হাম নেহি তোরেঙ্গে, এটাই তখনকার মূল মন্ত্র। মেসের প্রথমিক বা ‘ই’নিশিয়াল দিনগুলো পূর্বের মতই ‘ই’ল্লতপনা করে কাটছিল। আসলে বয়সটাই বেড়েছিল, আদপে ‘ই’মম্যাচিওর ই ছিলাম। ‘ই’মব্যালান্স লাইফস্টাইল হলে যা হয় আর কি। ‘ই’মিটেট করার মত সামনে কেউ তেমন ছিলো ও না। জীবনটাই একটা ‘ই’মমেটিরিয়ালে পরিনত হয়েগেছিলো, ‘ই’নফ্যাকচুয়েসনের কারখানা। তবে ‘ই’ম্পিরিয়াল ব্লু বা তার স্বজাতীয়রা মাঝে মাঝে কিছুমুহুর্তের জন্য জীবন রঙিন করে তুলতো। 


ফ্যামিলির সাথে ‘ই’লাস্টিসিটি টা ই কেমন যেন নষ্ট হয়ে গেছিলো। তখনও গ্রামের বাড়িতে ‘ই’লেকট্রিক আসেনি। সন্ধ্যায় ‘ই’মনকল্যান রাগ, ভোরে ভৈরবী। সন্ধ্যা নামলেই পৈতৃক ‘ই’মারত হানাবাড়ির মত ‘ই’ন্দ্রালোকে থমথম করে। আধবুড়ো বাপ-মা ছারা আর কেও থাকতো না যে। বাড়ি থেকে কেও খোঁজও নিত না, ‘ই’য়াদ ছিলো কিনা তাই বা কে বলতে পারে! তবে সেই নজরুলগীতির ‘ই’রানীর বালিকার খোঁজ কিন্তু অব্যাহত ছিল, ‘ই’শক এর মায়াজালে কোন ইশানী বা ইশিকা ধরা দেয় তারই অনন্ত প্রতীক্ষায়। ‘ই’তিমধ্যে জঙ্গীব্যাবসা ফুলেফেপে উঠেছে, সন্ত্রাসী, ‘ই’সলাম, ‘ই’হুদী, খ্রিষ্টান হিন্দুত্বের চরম ধ্বজা পৎপৎ করে উড়ে চলেছে, নিচে উলুখাগড়ার দল পিষে মরছে। ‘ই’রাক থেকে ‘ই’উএসএ হরেক ই দের দাপাদাপি শুরু হলো। মুক্তমনা হয়ে বলিতে গেলেই ‘ই’বলিসের খাতায় নাম উঠে যাওয়ার ভয়। সাহষ না থাক, ‘ই’ডিওলজি তো ছিলো। তাই এ সব দেখে সকলসময় ই মনটা ‘ই’ষদুষ্ণ থাকতো, আর ভারাক্রান্তও, সোশ্যাল ‘ই’লনেস যাকে বলে আর কি। 


মান্ধের জোরে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করে, পড়াশোনার পাঠ সেই যাত্রায় শেষ হল, এবার রুজীর ধান্দা... করতেই হতো। অগতির গতি সেই ব্যাওসা... এখানে জানলাম হ্যাপ্পি নিউ ‘ই’য়ার এর আগের দিনই শুধু ‘ই’য়ার এণ্ডিং হয় না, মাঝপথে বা ৩১শে মার্চ ও ওটা হয়। নগদ আমদানির সাথে সাথেই জীবনের মোড় ঘুরে গেলো, আগামির জন্য এই প্রথম একটা ‘ই’স্তিহার বানালাম। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার। সেই প্রথম প্রতি ‘ই’ঞ্চির মাপ নেওয়া শুরু করলাম। প্রেমে ব্যার্থতার পুরাতন ‘ই’য়াদে কিছু রিনরিনে ব্যাথাটা জারি রেখেছিল। 


নতুন ‘ই’ষ্টমন্ত্রে দীক্ষিত হলাম। ইহলোকে শুধু সেই স্বপ্নচারিনীর খোঁজ জারি থাকলো। কালক্রমে ভুল হলো, সেখান থেকে মামলা, পুলিস, ‘ই’ন্সপেক্টরের আনাগোনা বাড়লো জীবনে। কিছুকাল পরেই ‘ই’প্সিত কন্যের খোঁজ পেলাম, সুদুর কল-‘ই’ঙ্গে, ‘ই’গলু বানাবার সাধ পেয়ে বসলো। শুরুহলো মেলামেশা, অনেকেই ‘ই’র্ষান্বিত হলো। তবে ‘ই’তনি খুশী আজ তক মজে নেহি মিলা গোছের ভাব, পার্টনারের গোবিন্দার মত পোঁটা মুছে। ইহজগতের বাকি সকলকিছুকেই ‘ই’গনোর করা শুরু হলো।
এর পর সেই সামাজিক বিপ্লবের ছোঁয়া আমাদের দেশেও এলো, মানে ছিলোই সেটা, আরো সহজলভ্য হলো। দৈনন্দিন জীবনে ‘ই’ন্টারনেটের আগমন ঘটলো কিছুকালের মধ্যেই জীবন সম্পূর্ন অন্যখাতে বইতে শুরু হলো। 


এটা শুধু মাত্র আমার লা’ই’ফের ঘটনা নয়, সামান্য পরিবর্তন ঘটিয়ে নিলেই দেখাযাবে প্রায় সকলেরই একই রকম। তাছারা সকলেই এখন ই এই বুঁদ... সেটা ই-টেন্ডার থেকে ই-লার্নিং, ই-গভর্নেন্স থেকে মাট-ই উৎসব, সে ইডি হোক বা ইবোলা, ইয়াকুব মেমন থেকে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, ইসলামিক স্টেট ইরাক থেকে ইন্দ্রানী বরা। গোটা জীবনটাই ই ময় হয়ে গেছে। এখন সব কিছুকেই ছাপিয়ে গেছে ইন্টারনেট...
এই আপাতত ই নামা।


~ইতি
ইন্মাদ হার্মাদ 



Tuesday, 23 June 2015

একটা বর্ষাকালীন ছ্যাঁচোর...



স্বারম্ভিতা


সেদিন, যখন আকাশ ভেঙ্গে বর্ষারা এসেছিলো
তুমি তো তোমার সমস্ত আগল উন্মুক্ত করে;
একা একাই ভিজেছিলে, উন্মাদিনীর মত...
অনাবৃত বেহায়ার মত, শিক্ত তনুপট ভরে।

আজি, পরিমন্ডলে অসিত নীরদ, ঘনঘরঘটা
কুজ্ঝটিকা পরিপূর্ন, দূর সীমান্তে দুযতির রেখা,
অঁজিষ্ণু আজি বড় অসহায়, লজ্জাতে মুখ ঢেকে,
এর দায় কি তুমি নেবে না আজ!! নিয়তির লেখা?

কল্পলোকের অধিবাসীনি তুমি, অনুভুতির অস্থিপিঞ্জর
ব্যাক্ততাতেই কি প্রেমসম্পাত? নির্ঝরের আবেগ...
নিস্বনতার স্বরসঙ্ঘাতে আমি অসন্ধিত-উৎপাটিত-বিভক্ত
কতটা আমাকে সহ্য করিতে পারো? সরায়ে অস্মিতার মেঘ।

23/06/2015

Sunday, 21 June 2015

পরিনয়


উন্মাদীয় রবিবাসর
^^^^^^^^^^^^^^^


পরিণয়


পরী না হইলেও সকলেই পরী, যখন নাকি পরিণয় সুত্রে দুইটি প্রান আবদ্ধ হইয়া থাকে, স্বামী নামক জীব টি, তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী টিকে প্রথম প্রথম পরী মনে হইতে বাধ্য। কিন্তু, মধু তাহার মিষ্টতা হারাইলে বা চন্দ্রমা বারিদরাশীর অবগুন্ঠনে অদৃশ্যমান হইলে তবেই , পরী- নয় মনে হওয়া ভাবটির সুত্রপাত হয়। আবহমান কাল ধরিয়া। নিশীথকালীন সময়ে পরী, বাকি সময় সংসার যন্ত্রে পিষিয়া পরী-নয় ভাবনা ই মস্তিষ্কে উপদ্রব করিয়া থাকে। এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই আপক্ষিকতা চলিতেই থাকে। সার্থক নামা “শুভ পরিণয়”। আবার সেই নামের সার্থকতা। আবার আজ নতুন উন্মাদনা।


পোশাকি নাম “পরিণয়” হইলেও উহাকে আমরা যাহাকে বিবাহ ডাক নামেই শুনিয়াই অভ্যাস্ত।

বিবাহ কি?


বিবাহ হইল একটি সামাজিক যজ্ঞানুষ্টান, যাহার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি আরেক জন ব্যাক্তির সহিত আইনি পৃষ্ঠপোষকতায় একে অন্যের সকল কিছুর উপর দাবি করিতে পারে। ইহা কে ই এক কথায় বিবাহ বলিয়া থাকি । যদিও আগে বিবাহ বলিতে একজন পুরুষ ও আরেক জন মহিলার মধ্যের সম্পর্কে ই বোঝাতো, এখন সমলিঙ্গে বিবাহ অনেক দেশেই স্বীকৃত। তাই সেকেলে বিবাহের নিয়মের অনেক ধ্যান ধরনা বর্তমান কালে আমুল বদলিয়া গিয়াছে।



বিবাহ হইল একটি স্বীকৃতি, যাহা আমাদিগকের সমাজ আমাদের প্রদান করে। বিবাহ হইল আসলে দুই টি পরিবারের মিলন। মানব সংগবদ্ধ প্রানী, একা একা বসবাস করিতে অক্ষম।কিছু ব্যতিক্রম কে অগ্রাহ্য করিলে, মানব যে পন্থা অবলম্বন ই না করুক না কেন, শেষ পর্্য ন্ত তাঁহাকে সামাজিক পরিমন্ডলেই অবস্থান করিতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি বর্গ গন পুরাতন সমাজকে প্রত্যাখ্যান করিয়া বা প্রত্যাখ্যিত হইয়া নতুন সমাজে উপনিত হয়। কিন্তু আসলে সেই সমাজের অভ্যন্ততেই চক্কর কাটিতে থাকেন।



বিবাহ, দুটি প্রথমিক মন, তাহার সহিত অনুষঙ্গ বেশ কিছু মননের সমষ্টি। একটি সম্পূর্ন ভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসের উপরে নির্ভরশীল। যাহার উপর প্রতীত হইয়া অবশিষ্ট জীবনিকালটি, মানব অতিবাহিত করিয়া থাকেন। নানা ধরনের শর্তে আড়ালে এই প্রতিষ্ঠান টির টিকিয়া থাকা। বিবাহ একটি সঙ্কল্প, যাহা বিভিন্ন প্রকার সামাজিক, পরিপার্শ্বিক ও দৈহিক ব্রত এর সমষ্টি। প্রাথমিক ভাবে ইহা এক প্রকারের প্রতিশ্রুতি, যাহার সামান্য কিছু টা উচ্চারিত, আর বেশির ভাগ অংশ টিই অনুচ্চারিত। সকল সময় ইহা নানা প্রকারের বাধ্যবাধকতা যুক্ত, এবং অতি অল্প ক্ষেত্রেই মুক্ত, আর সেই বিবাহ আধুনিক ভাবে আদর্শ।



বিবাহ সাধারনত দুই প্রকার, প্রথম পূর্বপ্রেম ঘটিত বিবাহ। দ্বিতীয় বন্দেজ বিবাহ।



বিবাহের মূল মন্ত্র কিন্তু সেই শপথ। এক সাথে চলার শপথ। সেটা যদি কেহ, প্রাথমিক ভাবে আপনি আপনিই সিদ্ধান্ত নিইয়া থাকেন কেবল মাত্র সংগী বা বলিয়া অবিহিত করা যায়। দ্বিতীয় টি হইল, যেক্ষেত্রে বাকি পরিবার পরিজন আত্মীয় বন্ধু সকলের সাথে পরিমিলিত হইয়া একটি বিবাহ যোগ্য পরিস্থিতির উদ্ভব করা, যেখানে সমষ্টির মতামত কে ই চুরান্ত রুপে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাহাকেই বন্দেজ বিবাহ বলে।



বিবাহ মানেই পরার্থপ্রিয়তা। প্রেমেও অনেকটা তাই। কিন্তু বিবাহে সম্পূর্ন রপেই তাই। আপনি আপনার অংশভাকের সুখে কতটা সুখী হইতে পারিতেছেন বা তার দুঃখে সম দূঃখী হইতে পারিতেছেন কি না, তাহার উপরেই উক্ত বিবাহের সাফল্য নির্ভরশীল। এই সম্পর্কের ভিতর কৌতুক পূর্ন মিথোস্ক্রিয়ার পরিমান টা যত টা বেশী , যেই বিবাহের অভ্যন্তরে ভালবাসার নিগূঢরতার পরিমান ঠিক সমানুপাতিক ভাবেই বেশী। বিবাহ সম্পর্কে “শ্রদ্ধা-স্বীকৃতি” মাত্রার অবনতির সাথে মানে অহং বোধের বৃদ্ধির সাথে প্রেমের সম্পর্ক ঠিক বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক।



প্রেমের নানান বিশ্লেষণ, তাহার আকাশসম ব্যাপ্তি। সেক্ষনে প্রেম বিভিন্ন রুপে ধরা দিতেই পারে। কতক গুলো অতিসাধারন বাক্যবন্ধ, যেগুলি সমগ্র পৃথিবী জুরিয়া প্রেমোন্মত্তো মন কে শুনিবার জন্য ব্যাকুল করিয়া রাখে। সেগুলি হইল, “আমি তোমাকে ভালবাসি” বা “আমি তোমাকে চরম ভাবে চাইছি” বা “আমি তোমাকে চুম্বন করিতে চাই” ইত্যাদি ইত্যাদি... । কিন্তু এই সকল শব্দগুলির বহুল ব্যাবহার শুধুমাত্র বিবাহ পূর্ববর্তী সময় কালীনেই সীমাবদ্ধ। বিবাহ পরবর্তীকালীন সময়ে এই সকল শব্দবন্ধ গুলো খানিক টা হইলেও মেকি শোনায়। কারন বিবাহ মানেই তো এই সকল কিছু তোমারি ক্রোড়ে সমাপিত। তাই নতুন করিয়া আর কি ই বা বলিব, এই ভাবনার উদয় হয়। এক্ষেত্রে অন্য কাহাকে কামনা করাও যেহেতু পাপ হিসাবে গন্য হইয়া থাকে।



সিদ্ধ ও অসিদ্ধ নিয়ে নানা মত রহিয়াছে, বাবা আদম যদি প্রথম পুরুষ এবং ইভ তার অঙ্গ থেকে সৃষ্ট হইয়া থাকেন, তাহলে মৈথুন কেন অসিদ্ধ হইবে। উহা ও তো নিজ শরীরের অংশের সহিত ই যৌনাচার। অর্থাৎ আমাদের জন্মের আদি পর্ব টিই অসিদ্ধ প্রথা দিয়ে শুরু হইয়াছিল। ইহার পরেও... আদম এবং ইভের কন্য-পুত্র গন নিজেদের মধ্যে যৌনাচার করেই এই এত্তো পরিমানে বংশবিস্তার ঘটাইয়াছেন। যাহা সম্পুর্নভাবে আজকের যে কোন ধর্মমতের নজরে একটা ট্যাবু। এ তো আব্রাহামীয় ধর্ম। আমাদের সনাতন ধর্মেও বিবাহের সংজ্ঞা অত্যান্ত জটিল, যৌনাচারের ও কোন সীমাবদ্ধতা নেই। সরস্বতী কন্যা হয়েও স্বয়ং ব্রম্ভা তাহার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হন। আবার মাতা মাতা কুন্তিও সূর্যের সহিত অবৈধ্য সম্পর্কে পড়িয়া বীর কর্ণ কে জন্ম দান করেন। যেখানে শুধু মাত্র রাবন কতৃক অপহৃতা হইয়াও সতিত্বের অগ্নিপরিক্ষার সম্মুখীন হইতে হয়। যস্মীন কালে যদাচার বলিলেই সম্ভবত ভালো শোনায়।



আসলে যাবতীয় নিয়মাচার শুধু মাত্র মানবের জন্য, পশুপক্ষী দের মধ্যে বিবাহ নাই।তাহার সেই সামাজিক দায় মুক্ত। আর আমাদের যে সকল ধর্মগ্রন্থ তাহার মধ্যেও বিবাহের সুস্পষ্ট ধারনা নাই।



সুতরাং, কোন উপায়ে একটি বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যিকার উষ্ণতা বজায় থাকিতে পারে? সেটা হইল আবেগ। এখন কি ভাবে সেই আবেগ টা রপ্ত করিব, প্রশ্ন সেটাই।বিবাহে প্রেমের রুপান্তর ঘটিয়া থাকে, গভীর প্রেম এক সময় মায়া- স্নেহাদ্রতা-মমতা-গুনপ্রীতি- প্রেমত্ততা-সমবেদনা-মোহন মায়া ইত্যাদিতে পর্যবাসিত হয়।



বিবাহ যে উপায়েই সম্পাদিত হউক না কেন যৌনতা কে কেও কখনই অস্বিকার করিতে পারিবে না। যৌনতা শারীরিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি, ভবিষ্য প্রজন্মের সৃষ্টি করিয়া থাকে। বিবাহ প্রতিষ্ঠানের লৌকিক ক্রিয়াদির প্রতিটি ছত্রে ছত্রে সন্তান উৎপাদনের তরে বিভিন্ন কলাকৌশল রপ্ত করানোর সাথে সাথে , মনের গহিনেও প্রবেশ করানো হইয়া থাকে, যে সন্তান তোমাদের উৎপাদন করিতেই হইবে। এবং অনেক ক্ষেত্রেই অতি দ্রুত। বিবাহের পরবর্তী সময় কালে স্বামীগৃহের দ্বারদেশে পৌঁছাইলেই “দুধ নাহাও, পুত ফলো” বা বাংলায় “সুখী সন্তান বতী হও মা” ইত্যাদি গোত্রীয় শব্দ বাণে, প্রথম থেকেই নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হয় যে, বিবাহকে তোমরা আর যে দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করিয়া থাকো না কেন, আমাদের কাছে সর্বপ্রথম তুমি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উৎপাদন যন্ত্র, বিস্তারে পুরুষ সন্তান , তাহাত পর আর বাকি যাহা কিছু। তাহা যদি না ই হইবে, অনেক নিজ পুত্র বা কন্যার প্রেম ঘটিত বিবাহ তৎক্ষণাৎ মানিইয়া না লইলেও, একটি বা দুইটি সন্তানাদি হইলেইই, পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিতে সময় লাগে না। যদিও সমকামী দম্পতী দের ক্ষেত্রে এই সকল তথ্যই অসিদ্ধ।



বিবাহ বহুপ্রকারের হইয়া থাকে। প্রেম সম্পর্কীয় ও বন্দেজ বিবাহের কথা পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি। ইহা ছারাও নানাবিধ বিচিত্র বিচিত্র বিবাহ সম্পর্ক লক্ষ করা যায়। আধুনা সমগ্র পৃথিবীতে সমলিঙ্গে বিবাহ ব্যাপক হারে সম্প্রসারন করিয়াছে, যাহার অনেক ক্ষেত্রেই যৌনতার কোন স্থান নেই, পুরো টাই মানসিক। এখন তো আবার নিজের সাথেই অনেকে বিবাহ করিতেছেন, হস্তমৈথুন কে স্বীকৃতি দেবার লক্ষে। দক্ষিন আমেরিকাস্থিত আমাজনীয় তিরবর্তী দেশ সকল সহ, ভারতবর্ষের অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু বা কেরালা তে খুল্লতাত সম্পর্কীয় ব্যাক্তিবর্গের সহির বিবাহ বন্ধন সিদ্ধ। যেমন আরব্য রজনীর দেশ গুলিতে মাতৃতান্ত্রিক পরিকাঠামোর ভিতর সম্পূর্ন সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে, একটি মাত্র রাত্রের জন্য একটি সুসজ্জিত তাবুর অভ্যান্তরে দৈনন্দিন বিবাহ। প্রাচীন সনাতন মতানুসারে গান্ধ্যর্ব মতে বিবাহ ও সুপ্রসিদ্ধ। আর বাল্য বিবাহ তো আজকের যুগেও ভারতীয় সমাজে একটি বিশালাকার ব্যাধি।



বিফলে মুল্য ফিরত, ইহা মানবের একটি বিশেষ বিজ্ঞাপনি চরিত্র, সেই ক্ষন থেকেই সম্ভবত পরিক্ষামূলক বিবাহের উৎপত্তি। যদি তাহারা এক বৎসর কাল সম্পর্ক টি টিকে টিকাইয়া রাখিয়ে পারেন, তখন ধুমধাম আয়োজনের সহিত বিবাহ সম্পন্ন হইয়া থাকে। স্বার্থসিদ্ধির জন্য উভয় পক্ষই বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য রাজি হইয়া যান, শুধু মাত্র কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য, ইহাকে চুক্তিবিবাহ বলা হইয়া থাকে।



বহু সমাজের একের অধিক বিবাহ কে অবৈধ বিবাহ রুপে দেখানো হইয়া থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মৃত্যু হইলে বা ছারিয়া চলিয়া যাইলে , পূনর্বিবাহ করার রেওয়াজ সকল সমাজেই বিদ্যমান। ভগীনি বিনিময় বিবাহ, সংগবদ্ধ বিবাহ, ভাগিদারি বিবাহ, অবিভাবকের ঋণ শোধের জন্য শোধক বিবাহ, স্ত্রীকে পন্য হিসাবে ব্যাবহার করিয়া, তাহার স্ত্রী ধনের বিনিময়ে বন্ধকি বিবাহ, তিব্বতের বহুভতৃকত্ব বিবাহ, চিন দেশিয় রিতী অনুযায়ী মরনোত্তর বিবাহ, আত্মার সন্তুষ্টির তরে, বেশ কিছু নর আর নারী মিলিয়া সমবেত বিবাহ, যেখানে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের স্বামী-স্ত্রী। ইসলামিক নিতি অনসারে তালাকের জন্য বিবাহ, মিথ্যা বিবাহ, ভৌতিক বিবাহ, শুধু মাত্র যৌন সম্পর্কের জন্য বিবাহ... ইত্যাদি নানা ধরনের বিবাহ কলা বিদ্যমান।



এখন যৌনতা। জীবের যৌনতা আছে। মানব ও তার ব্যাতিক্রম নহে। কিন্তু মানবের যৌনতা পরিশীলিত ও মার্জিত। স্থান কাল পাত্র ইত্যাদি ভিন্ন ভিন বিষয়ের উপর চরম ভাবে নির্ভরশীল। এক্ষেত্রেও কিছু ব্যাতিক্তম অবশ্যই আছে। তবে তাহা নিতান্তই বিকৃত মস্তিষ্ক প্রসূত। একটি সুখী দাম্পত্যের জন্য তৃপ্তিকর যৌনজীবন একান্ত প্রয়োজনীয়, কিন্তু , ঊহাই একমাত্র নহে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষনানুসারে মাত্র ৪০ % দম্পতী বৈবাহিক যৌনজীবনে সুখী। তাহলে বাকি ৬০% কি অসুখী। তাহা ঠিক নহে। তাহারা নিজের নিজের মত করিয়াই সুখী। যৌনতা হয়তবা শরীর দিয়ে উপভোগ করিলে উহা পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় কিন্তু আমাদের মস্তিষ্কতেই। অনুত্তম নিদান টি নিঃসরন করিয়া থাকে মস্তিষ্কই। তাহারা মনসিক যৌনতা লইয়াই সুখী সুখী ভব করিয়া কাটাইয়া দেন।



আজিকার যুগের সহিত তাল মেলাইয়া, যে সমাজে দম্পতী দিবসের দীর্ঘভাগ সময় ই কর্মক্ষেত্রে অতিবাহিত করিয়া থাকেন, তাহাদের সেই পরিশ্রান্ত শরীরে যৌন যাহিদা তলানিতে উপস্থিত হয়। ইহার পর সপ্তাহান্তে বা মাসান্তে যে সকল এক বা দুই টি অবকাশ যাপনের সুযোগ উপস্থিত হয়, তখন নিজেকে নিয়েই এতটা ব্যাস্ত হইয়া পরে যে, যৌন যাহিদা বলিয়া কিছু যে একটি আছে সেটাই ভুলিতে ভুলিতে বাৎসরিক অনুষ্ঠানে পরিনিত হয়। এক্ষনে মহিলা সদস্যা টি বাহিরের কোন কর্মক্ষেত্র না যাইয়া, নিজ গৃহ কর্মেও জুড়িয়া থাকিতেই পারেন, কারন তাহার পীড়ন তথা কর্ষন কোন অংশে প্রতিজনিক বৃত্তকতলার থেকে হ্রশ্বতর নহে। যৌন আকাঙ্ক্ষা, মনশ্চক্ষুতে যাহা অবলোকোন করিয়া থাকি, যাহা আমরা দীর্ঘকাল ধরিয়া অন্তঃকরনে অবচেতনে লালন করিয়া আসিয়াছি, বিবাহ কালীন অন্বর্থ চরাচরে, তাহার সহিত কিঞ্চিৎ পরিমান ই অনুরূপরতা পরিলক্ষিত হয়, যাহারা আরত্ত লভিয়াছেন, তাহারা সন্দেহতীত ভাবেই ভাগ্যবান।



প্রণয় কালীন যৌন চাহিদাও ব্যাক্তি বিশেষে সঙ্কটময় হইয়া উঠে। গড়পরতা পূরুষের উত্তেজনা, নারী দের থেকে অনেক বেশী ও দ্রুত ক্রিয়াশীল। শারীরিক ভাবে এক জন নারীর অনেক বেশী সময় প্রয়োজন হয় এক জন পুরুষের তুলনায় যৌনতার আমেজ কে উপলব্ধ করিতে। স্ত্রী যৌন চাহিদা, পুরুষের তুলনায় অনেক বেশী, অনুভুতির উপর নির্ভিরশীল। আর এই সকল ক্ষেত্র হইতেই বৈবাহিক ধর্ষন ন্যায় উদ্ধত হয়। বিবাহে যে প্রাথমক শর্ত , ‘পরার্থপরতা” যখন নিজেকে ক্ষুদ্র গন্ডির মাঝে নিজেকে আবদ্ধ করিয়া নিজ স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি বান হইলেই এই সকল পরিস্থিতির উদ্ভূত হইয়া থাকে। দুইজনের আবেগপ্রবনতার মধ্যে ভারসাম্য রাখাটা বিবাহের অন্যতম শর্ত, যাহা এই ধর্ষনের ন্যায় সকল প্রকার অবাঞ্ছিত কান্ডকে দূরে সরাইয়া রাখিতে।



বৈবাহিক জীবনেও পেশাদারিত্ব থাকাটা একান্ত জরুরী। ক্ষমা একটি বড় অংশ অধিকার করিয়া থাকে এই সম্পর্কে। তবুও প্রলোভন সঙ্কুল দুনিয়া মধ্যি তাৎক্ষনিক শিহরনের আশায় তারা তাদের প্রেমিক বা বৈবাহিক অংশীদার থেকে পালায়ন করিয়া থাকে বিশ্বাসঘাতকের ন্যায়, আবার তাহারা একই ছাতের নিম্নে শুধুমাত্র আবার বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান টির জন্য। প্রতিটি সময় তারা মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত হইতেই থাকেন, এমন অনেক দম্পতী আছেন, তবুও তাহারা বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ আছেন, ভবিষ্যতেও থাকিবেন।। ব্যক্তিগত স্বপ্ন অনুসরণ করা এবং স্থায়ী অভিজ্ঞতা হইতে প্রাপ্ত জীবন মূল্য, তাদের মানসিক শক্তির তরলীকরণ, সৃজনশীল উপহার ইত্যাদি নানা প্রকারের ঘটনাক্রম, বিবাহ প্রতিষ্ঠানে আত্মরতিমূলক চিন্তাভাবনার খোরাক জন্ম দিয়ে থাকে , যাহার ভিতর হইতেই শঠতা, প্রবঞ্চনা, কপটাচারন প্রতারনা পেজেমি ইত্যাদির অঙ্কুরন ঘটে। যদিও এই সকল কিছুই বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।



প্রেম সদা সর্বদাই পতন শীল , কিন্তু ইহার কখনই একাকি পতন হয় না। কাওকে না কাওকে সাথে করিয়া নিয়েই পতিত হয়। এবং প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটে। কিন্তু বিবাহে ইহা একান্তই কাম্য নহে, কিছু ব্যাতিক্রমি দৃষ্টান্ত ব্যতিরেকে। কারন এক্ষেত্রে সহানুভুতিশীলতা ও পরিচর্যা নামক দুইটি বস্তুর উপস্থিতি প্রেম কে জিইয়ে রাখিয়া দেয় বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান টির অভ্যন্তরে। যদি কোনক্রমে এই দুইটির অকাল মৃত্যু ঘটে তাহা হইলে বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবি হইয়া যায়। তখন আর বিবাহ বলিয়া কিছু অবশিষ্ট থাকে না।



প্রেমের লেখচিত্র , বাচ্য বা কন্ঠনিশ্বনের সুচকের উপর পরিমাপ করা হইয়া থাকে, তখন ই ধরিয়া লইতে হইবে যে স্বম্পর্ক টি প্রায় মৃত, যেক্ষনে উভয় আর কেহই শ্রবনেচ্ছা পরিত্যাগ করিয়া, উচ্চশ্বরে বিলাপ অথবা প্রালাপ সম করিতে থাকে, সেক্ষনেই উক্ত সম্পর্কের মধ্যে জীবন্ত সকল কিছুই গোলাপের পাপড়ির ন্যায় শুকাইয়া রস বর্ন নমনীয়তা সকল কিছুই পরিত্যাগ করে।



শেষে একটা বানী দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটাইঃ-


বিয়েঃ একটি বৈধ ও ধর্মসম্মত অনুষ্ঠান যেখানে দুজন বিপরীত (সাধারণত) লিঙ্গের মানুষ পরস্পরকে জ্বালাতন করিয়া এবং পরস্পরের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করিবার শপথ লইয়া থাকে ততদিনের জন্য যতদিন না মৃত্যু আসিয়া তাহাদেরকে আলাদা করিয়া দেয়।


(প্রাপ্তমনস্কদের জন্য, উন্মাদীয় বানানবিধিতে সজ্জিত একটি সম্পূর্ন উন্মাদীয় ভাবনার ফসল)


Thursday, 18 June 2015

উন্মাদের ভাবনাগুচ্ছ ~ ১০


১০


এতোদিন ছিলো একাকীর জ্বালা
আজ জমেছে ভয়,
পারবে কি সে, ছিঁড়তে বাঁধন!
পরিজনও যে মায়াময়।

তারা’র আকাশ জটিল বড়
হরেক রকম বাঁধা,
যুক্তিরা যে করছে মানা,
জীবন যেন ধাঁধাঁ।

সুখের জন্য স্বজন কে ত্যাগ
এ যে বড়ই পাপ,
দুই পা এগোলে, চার পা পিছোয়
হৃদয়েতে অনুতাপ।

তারা’র জন্য পাখীর চাওয়া
থাক সে শুধুই সুখে,
না হোক মিলন, রিক্ত পাখীর,
পাষান জমুক বুকে।

Sunday, 14 June 2015

উন্মাদের ভাবনাগুচ্ছ ~ ৯


(৯)

বললো তারা, যাবো আমি
এক সে, বিকাল বেলায়,
কিন্তু আমায় পারবি চিনতে,
হাজার ভীরের মেলায়?

গোধূলি লগ্নে, এলো তারা
ব্যাস্ত পথের মোড়,
অবিশ্বাসে বাক্যহারা
লাগলো পাখীর ঘোর।

পাসাপাসি ওরা দুজনেই বসে
নির্বাক চোখে চেয়ে,
কিন্তু ওরা অ...নে...ক দূরে,
দুটি বোবা ছেলেমেয়ে।

তারার চোখে স্বপ্ন এঁকে
বক্ষে সুধা ভরে
সেদিনের মত, নিলো বিদায়। 
গেলো যে পাখী উড়ে।

...ক্রমশ

Wednesday, 10 June 2015

উন্মাদের ভাবনাগুচ্ছ ~ ৮


(৮)


সাহষ করে শুধাই পাখী
কে তুমি গো ছেলে!
সাঁঝের বেলা এমনি করে
আমায় চমকে দিলে!!

শূন্য থেকে, এলো আওয়াজ
“আমিই তো সেই তারা”,
যার জন্যে বৈরাগী তুই
জাগিস রাত্রি সারা।

পাখী বলে, তাই যদি হয়
আয় না তবে কাছে,
লুকিয়ে আসিস, সাবধানেতে
কেও না দেখে পাছে।

দেখবো তোকে নিজের চক্ষে
দেখবো তোকে ছুঁয়ে,
থরথর কাঁপে পাখীর হৃদয়
পরছে যে লাজ চুঁয়ে।

......ক্রমশ

Sunday, 7 June 2015

ভয়

উন্মাদীয় রবিবাসর

ভয়


যাকে কখনই চামড়ার চোখে দেখা যায় , সেই দুর্বোধ্য বস্তুর নামই  “ভয়”

“বিজয় বাবু অফিস থেকে এই কিছুক্ষন আগেই ফিরেছেন, স্ত্রী, পুত্রকে সাথে নিয়ে, স্কুলের গরমের ছুটিতে বাপের বাড়িতে গেছে। ঘরে ঢুকেই ফ্যান টা চালিয়ে দিলেন, আর তার সাথে টিভিটাও। এবার ঘরের জানালা গুলো সব খুলে দিলেন আর পর্দা টেনে দিলেন। অফিসের ব্যাগে সংরক্ষিত সাদা হুইস্কির বোতল বিজয় বাবুকে “আয়-আয়-আয়’ করে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।


বাথরুমের যাবতীয় কার্য সাধন করে, চেয়ারে বসে গা টা এলিয়ে দিয়ে টিভিটার দিকে তাকালেন, IPL এর ম্যাচ চলছিলো, তাই মিউট মোডেই ছিলো। জানালার কাঁচ আর পর্দা ভেদ করে চাদের আলো বিজয় বাবুর মুখে এসে পড়ছে। ব্যাপারটা আরো উপভোগ করার জন্য তিনি জানালাটা পুরো খুলে দিলেন। চাদের আলো আর সাথে হালকা শীতল বাতাস। এবার চানাচুর আর সোডার বোতল টা নিয়ে মৌতাত রেডি। ঘরে ডিম লাইট, টিভির আলো আর চাঁদের আলোর সংমিশ্রণে এক মায়াবী পরিস্থিতি। বসে বসে গুন গুন করে এক কলি গান ও গাইতে লাগলেন।



হটাৎ করে রান্না ঘরের দিকটায় খুট করে একটা শব্দ, চমকে তাকালেন। ভাবলেন ইদুর বোধ হয়। আবার নীরবতা খানিক পর সদরে লোহার দরজাতে একটা যান্ত্রব আর্তনাদ। বিজয় বাবু ধরফরিয়ে সদরের দিকে গেলেন দেখলেন কেউ কোত্থাও নেই। আবার ছিটকিনি লাগিয়ে যথাস্থানে এসে বসলেন। আবার নীরবতা। এবার হঠাৎ একটা রুদ্ধ বায়ু যেন প্রান পনে খোলা জানালা দিয়ে প্রানপনে পালিয়ে গেলো, সব পর্দা তছনছ।



বিজয় বাবুর শ্বাস নিতে যেন কষ্ট হচ্ছিল।তাঁর হৃদয়ে ঘোড়দৌড় শুরু হয়ে গেছে. পেশী গুলো সব শিথিল হয়ে আসছে।
সারা শরীর অবশ”.......................................



বিজয় বাবু ভয় পেয়েছিলেন।



ভয়।



জীব মস্তিষ্ক একটি জটিল কোষীয় অঙ্গ। আমাদের ইন্দ্রিয় দ্বারা সংগ্রীহিত নানান অনুভুতি গুলো কে আমরা স্নায়ুর মাধমে মস্তিষ্কে চালান করি। এক্ষেত্রে শুধু মাত্র পঞ্চইন্দ্রিয় নয়, একটা অদৃশ্য ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ও উপস্থিত থাকে। যা আমাদের এই জটিল স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মধ্যে দিয়ে তাহার কার্য প্রনালী চালনা করে।



এখন এই ভয় হল একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, মোটেই তাৎক্ষনিক কিছু নয়। আসলে আমাদের স্মৃতির হার্ড ডিস্কে অসংখ্য TB, নানা ধরনের মেমোরি সেভ আছে। এবার মজা হলো যে কোন ঘটনা আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করে মস্তিষ্কে চালান দিতেই, মস্তিষ্ক সেটার মানানের পূর্বঅভিজ্ঞতা সেটা নিজের বা অন্যের যা ই হোক না কেন, সেটা ফ্রাকসান ওফ সেকেন্ডে সেটা খুঁজে নেয়। আর সেটার মতন করে শরীর কে নির্দেশ প্রদান করে। আর সেটা যদি ভয়ের হয়, সাথে সাথে গলা শুকিয়ে যাওয়া, চোখা লাল, পেশি শৈথিল্য, ইত্যাদি ইত্যাদি। যেটা একটা উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে হৃদয় কে সরাসরি আক্রমন করে। কিন্তু এ তো গেলো থিওরিটিক্যালি কূটকাচালি।



“ভয় পেওনা ভয় পেওনা তোমায় আমি মারবো না, সত্যি বলছি তোমার সাথে কুস্তি করে পারবো না”।



ভয়, নামটা শুনলেই যেন কেমন ভয় অনুভুত হয়।অন্তত আমার বা আমাদের মত, লোকের। অনেকেই ভয় কে ভালোবেসে সেটার পিছু পিছু ধাওয়া করে। কিন্তু ভয় কি ইচ্ছা করে পাওয়া যায়!! না চাইলেই তাঁকে তাড়ানো ও যায়??

ভয় কি ভালোবাসার সমার্থক শব্দ নয়!! আমরা যাকে বা যে জিনিস টা কে খুব ভালো বাসি , সেটা নিয়েই তো ভয় পাওয়া শুরু হয়। সেটা বস্তু-ব্যাক্তি-যশ , যা কিছু হতেই পারে।ভয় পাওয়ার মধ্যেও যে একটা অপত্য সুখ লুকিয়ে থাকে। আমরা কি সন্তানের জন্য অযথা ভয় পেয়ে সুখী হই না!!


ভয় হয়তো সরাসরি পরিবর্তন ঘটাতে পারে না, কিন্তু ভয়ের ফলাফল সুদুর প্রসারী। মানব যদি ভয় না পেত, চুরি, খুন ধর্ষন, অসম্মান এই শব্দ গুলো শব্দকোষে থাকতো না। আর মানুষ কিছু না কিছু নিয়ে ব্যাস্ত থাকেই, সেটা খেয়ালি পোলাও ও হতেই পারে। তাই ভয়ার্ত পরিবেশ অস্বাস্থকর হলে, পরিমিত ভয় কিন্তু পুষ্টিকর।



মনের মধ্যে যদি স্বর্গ হারাবার বা নরকে যাবার ভয় না থাকতো, আমরা কি অদৌ ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাতাম?? না কি জাতের নামে হানাহানি করা বজ্জাত গুলো বিশাক্ত ফনার আস্ফালন করতে পারতো? আসলে ধর্মের বীজ ও তো সেই ভয়ের গর্ভে ই প্রথিতো।



যারা নাকি অকুতো ভয়, তারাও কি আসলে ভীতু নয়!! নিজের সাহসিকতা হারানোর ভয়। পুরাতণ কোন অর্জিত কৃতিত্ব থাকলে সেটা ধরে রাখার ভয়। সামাজিক ভাবে প্রসঙ্গিক থাকার ভয়।



সব থেকে বড় সামাজিক ভয় বোধহয়, ক্ষমতা হাবাবার ভয়। যেটা এই পৃথিবীর সবথেকে সব থেকে বড় জীবন্ত সমস্যা। যেটা আমাদের রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রীরা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ক্ষমতার দম্ভে ক্ষমতার অপব্যাবহার করতে করতে শেষে যখন ক্ষমতা হারানোর ভয় চেপে বসে, তখন যেকোন মুল্যে সেই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য, জনগন কে একটা ভয়ের পরিবেশের দিকে ঠেলে দেয়।



রাষ্ট্র বলে যে শব্দবন্ধ টা তে আমরা অবলোকন করি, সেটাও তো আসলে কোটি কোটি ভয়ার্ত কোষের সমষ্টি। পুলিস, মিলিটারি, কামান , আলোচোনা, যুক্তি, চুক্তি... সমস্ত কিছুই তো সেই ভয়ের সমাহার। সত্যিই কি বন্দুকের নল ক্ষমতার উৎস?? নাকি ভয় ই হলো ক্ষমতার উৎস, যেটা যেভাবেই সৃষ্ট ভয় হোক না কেন!!



অনেক ক্ষেত্রেই ভয় দূর করার নামে মানুষকে আরো ভীত করে দেওয়া হয়। অগুন্তি উদাহরন চোখের সামনে। যেটা আমাদের ভূতপূর্ব রাজ্য নির্বাচন কমিসনার সুনীল কুমার গুপ্তা জীর “ভ্যায়” ও হতে পারে আবার নিরীহ ম্যাগি নিয়ে জনসমাজে ভয়ার্ত প্রচার। সকল কিছুই এর অন্তর্গত।



এখন দুর্বল হৃদয়ের মানুষজন অনেক সময় ভূতের ভয়ে ভীত হয়ে যান, সেটা কোন অলীক কল্পনা ও হতে পারে। যেটাকে বিদ্যা বুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করা যাই না , তাকেই আমরা ভুতেও আখ্যা দিয়ে দিই, আর ভয় পেতে ভালো বাসি। কেউ কেউ মামদো-বেম্মোদোত্তি- বা শাঁকচুন্নি দের দেখেও ফেলি। আর মনে মনে একটা ব্যাপক ভয়ের সুখ লালন পালন করি।



কারো জীবনে ভূত আবার তার ভূতকাল, ফেলে আসা জীবনের সুখ, আনন্দ পাওয়া না পাওয়া সব গুলো তাকে তারা করে বেড়ায়। সেটা ধরে রাখার ভয় ও হতে পারে, হারানোর ভয় ও হতে পারে, আক্ষেপের ভয়, পুরাতন পাপ স্খলনের জন্য যে অনুশচোনা, আর সেটা থেকেই ভয়।



এই বহমান সময়, প্রতি মুহুর্তে একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে যখন এগিয়ে চলেছি, সেই সময় ভাবনার ভয়, কি কি করতে পারলাম, কি কি করতে পারতাম, কি কি না করলেও পারতাম। কোনটা এখোনো বাকি রয়ে গেলো, সেটা কি শেষ করতে পারবো ?? সেই ভয় ই শুধু আমাদের তারা করে নিয়ে বেড়াচ্ছে না সর্বক্ষন!



ভালোবাসা তে আবার ভয় না থাকলে যেটা আবার যেন কোথায় অপূর্ন থেকে যায়। প্রণয়ের ভয় ভালোবাসার প্রাচীর কে মজবুত করে। এই ভয় একটা অপরিনত মনকে বড্ড শক্ত ও জটিল করে চলে। এই ভয় সটান জীবন কে কল্পনার আকাশ থেকে বাস্তবের মাটিতে আছরে ফেলে। এই ভয় সর্বক্ষন সেই সঙ্গী সঙ্গিনী টিকে মনে করাতে বাধ্য করে, তার প্রেমে আরো তলিয়ে যেতে কি সাহায্য করে না!!



এই ভয়ের কারনে কেউ কেউ মনের মাঝে একটা গোটা ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি পুষে রেখেছে, যার লাভা গুলো কান্নার ফোঁটার আকারে চোখ দিয়ে বিন্দু বিন্দু বয়ে চলে। কিন্তু গোপনে। কারন প্রকাশ্যে এলেই সেই আবার বদনামের ভয়।

শয্যা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে রতিক্রীড়া কালীন বেশিরভাগ জীব ই অন্ধকার পছন্দ করেন, ওই, চক্ষুলজ্জার ভয়। অনেক সময় শুধু মাত্র বাক্যালাপেই অনেক ক্ষেত্রে উষ্ণ শরীর কামনাতুর নয়ে উঠে, বহু কিছু পেতে ইচ্ছা করে, চীৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে, কিন্তু ওই আবার চক্ষুলজ্জার ভয়, তাতে তুমি যতই ভিজে যাও না কেন, বলতে পারবে না, নাহ, ওই আপন সঙ্গী বা সঙ্গীনিটিকে ও না। মন্দ ভাবাবে কিনা তার ভয়। বিবেকের কাছে জবাবদিহির ভয়। সমাজের কাছে প্রকাশ পেয়ে যাবার ভয়।


উন্মাদের অবশ্য, এত শত ভয় পাওয়ার কথাই নয়। তবুও মাঝে মাঝেই ভয় পেয়ে যাচ্ছি। তবে সেটা অল্প ক্ষনের জন্যই। কারন যতটা বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে ভয়কে জিইয়ে রাখতে হয়, ততটা আমার মাঝে নেই।আর স্মৃতি শক্তি ও প্রচন্ড দূর্বল। আসলে সব পাগল রা ই বোধহয় এরকমই।



আচ্ছা যারা আত্মঘাতী হয়, তারা কি ভীতু নই?? ভয়ের তারনায় পালাতে পালাতে এক সময় চিরকালীন
ছুটি পেতে, যাবতীয় ভয়ের থেকে মুক্তি পাবার জন্য আত্ম হনন। আবার স্বর্গের রাস্তার শর্ট কাট খুজতে বা নরকের রাস্তা টপকে ডিঙিয়ে পাড় হতে, অনেক কে মেরে অবশেষে নিজেকে হত্যা। এ ও এক ভয়ের পরিনাম।



ভয়ের তো নানা কারন। তবে মানুষ অকারনে ভয় পেয়ে মজা পেতে ভালোবাসে। আবার অকারনে ভয় পাইয়েও। সেটা গুজব ছরিয়ে আম মানুষ কে ভয় পাওয়ানো। কেউ উজ্বলতা কে ভয় পাচ্ছে তো কেউ অন্ধকারে একা থাকতে। কারো ভয় নির্জনতা আবার কারো কোলাহলে।কেউ খেতে ভয় পায় কেউ খাওয়াতে, কেউ আবার কালকে দুমুঠো জুটবে কি তা তার ভয়ে অস্থির।



সাপ কে আমরা যত না ভয় পায়, সাপ আমাদের ততোধিক ভয় পায়, আর সেটা নাহলে সে হয়ত ছোবল ই মারতো না। নিরীহ মানুষ গুলোকি তাই নয়? ভয় পেতে পেতে, এক সময় নতুন করে আর ভয় পাওয়া টা থাকে আর না। কালু দা বলে একজন আমার অতি পরিচিতো ব্যাবসায়িক সহচর কে বলতে শুনেছি, একটু মজার ছলেইঃ “ওরে পাগলা ভয় আমি আর পায় না, তুই ভয় পেয়ে কাঁদছিস! আমায় দেখ আমি আর কাঁদি না, তুই কাঁদছিস আর আমি পাথর হয়ে গেছি। আর পাথরে রস কষ কিচ্ছু নেই যে বেড়োবে”। 



সত্যিই তো পাথর যখন হয়ে যায়, তখন তো আর ভয় তাঁকে ভীত করতে পারে না, সে যা খুশী করতেই পারে।

কেও কাজে ভয় পায়, কারো কাজ না থাকলে অলস মস্তিষ্ক কিছু “অকাজ” করে ফেলার ভয়। কারো পড়তে ভয় লাগে, কারো পড়াতে। ফেল করার ভয় অনেক সময় ই, বহু উঠতি প্রতিভাকে সমাজের মুলস্রোত থেকে দূরে ছুরে ফেলে দেয়, অনেক সময় এমনও হয় যে আর ফিরে আসার সময় টুকুও পায় না, যখন নাকি তার ভয় কেটে যায়।


কেউ উষ্ণতা কে ভয় পায়, কেও শীতলতা টা কে। সেটা সম্পর্ক থেকে খাদ্যবস্তু যা কিছুই হতে পারে। কেউ শিশু দের ভয় পায় সংখ্যাধিক্যের কারনে, কেও যে সেই শিশুর জন্যই কেঁদে ফেরে আর সারাজীবন একা একা ভয়ে ভয়ে। কারো উচ্চতাতে ভয় কারন তার মন-লক্ষ-চোখ সমস্ত ধ্যান টা ই তো খাদের পানে থাকে। কেউ কেউ যখন সুস্থ থাকে সেটা অজান্তেই ভয়ের কারন হয়ে যায়, কারো আবার অসুস্থ হবার ভয়।



নিজেকে আয়নাতে দেখা বড় ভয়ের, সবসময় না হলেও সেটা কিন্তু কম ভীতী দায়ক নয়, কারন নিজের ন্যাংটো কদাকার রুপ কে ত আমরা মানতে চাই না সকল সময়, তাই ওই রুপ চোখের সামনে এলেই ভয়ে শিউরে উঠি।

বাকি অনেক অনেক কিছুই রয়ে গেলো, আসলে এই ভয় নিয়ে কিছু লিখতে বসাটাও বেশ ভয়ের, সেটা এখন টের পাচ্ছি। তবে যৌনতা নিয়ে কিছু না বললেই নয়। মানবের এটা এতোটাই গোপনীয়তাতে ভরা যে, সকল সময় ই প্রকাশ্যে আসার ভয়ে আমরা প্রত্যেকে ভীত, তাতে তিনি যদি গনিকা হন তাতেও। আর এই ভয়ে ভয়ে থাকাটা এ এক আশ্চর্য সুখ, কিছুটা ভয়াবহ ও বলা যায়।


আর সব শেষে যেটা পরে থাকে সেটা হল অবিশ্বাসের ভয়। যেটা মৃত্যু ভয়ের থেকেও যন্ত্রনা ময়, মৃত্যু তো কয়েকটা মুহুর্তের যন্ত্রনা, আর অবিশ্বাসের জ্বালার জন্য সৃষ্ট ভয়, প্রতিটা শ্বাস-প্রশ্বাসে মৃত্যুর শীতলতা অনুভব করিয়ে দেয়। সেটা স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক প্রেমিকা, পিতা পুত্র, মালিক কর্মচারী, বন্ধুতে বন্ধুতে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে, ভাইয়ে ভাইয়ে, নানা রকমের ভয়। আর এক এক সময় নিজেকেই যখন অবিশ্বাস্য লাগে, নিজের প্রতি টি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কে ভয় লাগে, তখন ভয় টা যন্ত্রনা তে পরিতন হয়, নিয়ন্ত্রন হারানোর যন্ত্রনা।



ভয় তাই জয় করা যায় না। এভারেষ্টের চুড়াতে পৌছানো গেলেও বেঁচে ফেরার ভয় টা কিন্তু চরম ভাবে থেকেই যায়। কারন আমাদের সহ্য শক্তি সীমিত কিন্তু ভয় পাওয়ার কোন সীমা নেই।আমি আরো কিছু হয়তো লিখতাম, কিন্তু পাঠক কুলের ধৈর্য থাকবে কি না সেই ভয় টা ও থেকেই যায়। উন্মাদ কে আবার সুস্থ ভেবে নেবার ভয়।

বেশ ভয়ার্ত পরিবেশের মধ্যে ভয়ে ভয়েই এই লেখা।


চলুন সবাই ভয় কে ম্যানেজ করে নিয়ে ভয়াবহ এই পরিস্থিতি গুলোকে ভূত কালে পরিনত করে দিয়ে, নতুন কালের ধরে ঝাপ দিই।



(উন্মাদীয় বানানবিধি তে দুষ্ট)
উন্মাদ হার্মাদ।

Thursday, 4 June 2015

উন্মাদের ভাবনাগুচ্ছ ~ ৭

উন্মাদের ছড়া- ছরি
(৭) 


আজ বিকালে, সুর্য্যি মামা
যখন পেল ছুটি,
প্রজাপতিরা ফুলের সাথে 
করছে লুটোপুটি।

আনমনেতে, চেয়ে পাখী
সাঁঝের আকাশ পানে,
“শুনছো পাখী”? অচেনা পুরুষ 
বললো কানে কানে।

চমকে উঠে একলা পাখী
কাঁটা দিলো তার গা’য়,
কিন্তু যে তার আসে পাসে
কেউ কোত্থাও নাই।

চাইলো পাখী শূন্য পানে
চক্ষে বিহ্বলতা,
ওই যে দু...রে, আবছা তারা
সে ই কি কইলো কথা!!

......ক্রমশ 

Monday, 1 June 2015

উন্মাদের ভাবনাগুচ্ছ~ ৬


(৬) 

হটাৎ করে আজ কি হোলো!
ব্যাথাতুর এই বুকে!
উত্তেজনায় বাকরুদ্ধ,
অজানা পিরিত সুখে।

রাখবে কোথায় আজকে পাখী
হঠাৎ পাওয়া সুখ,
সবাই কি হয় এতটাই খুশি!
যায় কি ভরে বুক?

পাই কি সবাই, প্রানের প্রিয়
বুক চেরা এই ধন!
নাকি পাখী, একাই সুখি
আকুলপাথার মন।

মানবে না যে, তার পরিজন
বুঝবে না কেও তাকে,
থাকতে হবে একা হয়েই?
হাজার পাখীর ঝাঁকে?

...ক্রমশ