^^^^^^^^^^^^^^^
পরিণয়
পরী না হইলেও সকলেই পরী, যখন নাকি পরিণয় সুত্রে দুইটি প্রান আবদ্ধ হইয়া
থাকে, স্বামী নামক জীব টি, তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী টিকে প্রথম প্রথম পরী মনে
হইতে বাধ্য। কিন্তু, মধু তাহার মিষ্টতা হারাইলে বা চন্দ্রমা বারিদরাশীর
অবগুন্ঠনে অদৃশ্যমান হইলে তবেই , পরী- নয় মনে হওয়া ভাবটির সুত্রপাত হয়।
আবহমান কাল ধরিয়া। নিশীথকালীন সময়ে পরী, বাকি সময় সংসার যন্ত্রে পিষিয়া
পরী-নয় ভাবনা ই মস্তিষ্কে উপদ্রব করিয়া থাকে। এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই
আপক্ষিকতা চলিতেই থাকে। সার্থক নামা “শুভ পরিণয়”। আবার সেই নামের সার্থকতা।
আবার আজ নতুন উন্মাদনা।
পোশাকি নাম “পরিণয়” হইলেও উহাকে আমরা যাহাকে বিবাহ ডাক নামেই শুনিয়াই অভ্যাস্ত।
বিবাহ কি?
বিবাহ হইল একটি সামাজিক যজ্ঞানুষ্টান, যাহার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি আরেক
জন ব্যাক্তির সহিত আইনি পৃষ্ঠপোষকতায় একে অন্যের সকল কিছুর উপর দাবি করিতে
পারে। ইহা কে ই এক কথায় বিবাহ বলিয়া থাকি । যদিও আগে বিবাহ বলিতে একজন
পুরুষ ও আরেক জন মহিলার মধ্যের সম্পর্কে ই বোঝাতো, এখন সমলিঙ্গে বিবাহ অনেক
দেশেই স্বীকৃত। তাই সেকেলে বিবাহের নিয়মের অনেক ধ্যান ধরনা বর্তমান কালে
আমুল বদলিয়া গিয়াছে।
বিবাহ হইল একটি স্বীকৃতি, যাহা আমাদিগকের সমাজ
আমাদের প্রদান করে। বিবাহ হইল আসলে দুই টি পরিবারের মিলন। মানব সংগবদ্ধ
প্রানী, একা একা বসবাস করিতে অক্ষম।কিছু ব্যতিক্রম কে অগ্রাহ্য করিলে, মানব
যে পন্থা অবলম্বন ই না করুক না কেন, শেষ পর্্য ন্ত তাঁহাকে সামাজিক
পরিমন্ডলেই অবস্থান করিতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি বর্গ গন পুরাতন
সমাজকে প্রত্যাখ্যান করিয়া বা প্রত্যাখ্যিত হইয়া নতুন সমাজে উপনিত হয়।
কিন্তু আসলে সেই সমাজের অভ্যন্ততেই চক্কর কাটিতে থাকেন।
বিবাহ, দুটি
প্রথমিক মন, তাহার সহিত অনুষঙ্গ বেশ কিছু মননের সমষ্টি। একটি সম্পূর্ন
ভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসের উপরে নির্ভরশীল। যাহার উপর প্রতীত হইয়া
অবশিষ্ট জীবনিকালটি, মানব অতিবাহিত করিয়া থাকেন। নানা ধরনের শর্তে আড়ালে এই
প্রতিষ্ঠান টির টিকিয়া থাকা। বিবাহ একটি সঙ্কল্প, যাহা বিভিন্ন প্রকার
সামাজিক, পরিপার্শ্বিক ও দৈহিক ব্রত এর সমষ্টি। প্রাথমিক ভাবে ইহা এক
প্রকারের প্রতিশ্রুতি, যাহার সামান্য কিছু টা উচ্চারিত, আর বেশির ভাগ অংশ
টিই অনুচ্চারিত। সকল সময় ইহা নানা প্রকারের বাধ্যবাধকতা যুক্ত, এবং অতি
অল্প ক্ষেত্রেই মুক্ত, আর সেই বিবাহ আধুনিক ভাবে আদর্শ।
বিবাহ সাধারনত দুই প্রকার, প্রথম পূর্বপ্রেম ঘটিত বিবাহ। দ্বিতীয় বন্দেজ বিবাহ।
বিবাহের মূল মন্ত্র কিন্তু সেই শপথ। এক সাথে চলার শপথ। সেটা যদি কেহ,
প্রাথমিক ভাবে আপনি আপনিই সিদ্ধান্ত নিইয়া থাকেন কেবল মাত্র সংগী বা বলিয়া
অবিহিত করা যায়। দ্বিতীয় টি হইল, যেক্ষেত্রে বাকি পরিবার পরিজন আত্মীয়
বন্ধু সকলের সাথে পরিমিলিত হইয়া একটি বিবাহ যোগ্য পরিস্থিতির উদ্ভব করা,
যেখানে সমষ্টির মতামত কে ই চুরান্ত রুপে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাহাকেই বন্দেজ
বিবাহ বলে।
বিবাহ মানেই পরার্থপ্রিয়তা। প্রেমেও অনেকটা তাই।
কিন্তু বিবাহে সম্পূর্ন রপেই তাই। আপনি আপনার অংশভাকের সুখে কতটা সুখী হইতে
পারিতেছেন বা তার দুঃখে সম দূঃখী হইতে পারিতেছেন কি না, তাহার উপরেই উক্ত
বিবাহের সাফল্য নির্ভরশীল। এই সম্পর্কের ভিতর কৌতুক পূর্ন মিথোস্ক্রিয়ার
পরিমান টা যত টা বেশী , যেই বিবাহের অভ্যন্তরে ভালবাসার নিগূঢরতার পরিমান
ঠিক সমানুপাতিক ভাবেই বেশী। বিবাহ সম্পর্কে “শ্রদ্ধা-স্বীকৃতি” মাত্রার
অবনতির সাথে মানে অহং বোধের বৃদ্ধির সাথে প্রেমের সম্পর্ক ঠিক বর্গের
ব্যাস্তানুপাতিক।
প্রেমের নানান বিশ্লেষণ, তাহার আকাশসম ব্যাপ্তি।
সেক্ষনে প্রেম বিভিন্ন রুপে ধরা দিতেই পারে। কতক গুলো অতিসাধারন বাক্যবন্ধ,
যেগুলি সমগ্র পৃথিবী জুরিয়া প্রেমোন্মত্তো মন কে শুনিবার জন্য ব্যাকুল
করিয়া রাখে। সেগুলি হইল, “আমি তোমাকে ভালবাসি” বা “আমি তোমাকে চরম ভাবে
চাইছি” বা “আমি তোমাকে চুম্বন করিতে চাই” ইত্যাদি ইত্যাদি... । কিন্তু এই
সকল শব্দগুলির বহুল ব্যাবহার শুধুমাত্র বিবাহ পূর্ববর্তী সময় কালীনেই
সীমাবদ্ধ। বিবাহ পরবর্তীকালীন সময়ে এই সকল শব্দবন্ধ গুলো খানিক টা হইলেও
মেকি শোনায়। কারন বিবাহ মানেই তো এই সকল কিছু তোমারি ক্রোড়ে সমাপিত। তাই
নতুন করিয়া আর কি ই বা বলিব, এই ভাবনার উদয় হয়। এক্ষেত্রে অন্য কাহাকে
কামনা করাও যেহেতু পাপ হিসাবে গন্য হইয়া থাকে।
সিদ্ধ ও অসিদ্ধ নিয়ে
নানা মত রহিয়াছে, বাবা আদম যদি প্রথম পুরুষ এবং ইভ তার অঙ্গ থেকে সৃষ্ট
হইয়া থাকেন, তাহলে মৈথুন কেন অসিদ্ধ হইবে। উহা ও তো নিজ শরীরের অংশের সহিত ই
যৌনাচার। অর্থাৎ আমাদের জন্মের আদি পর্ব টিই অসিদ্ধ প্রথা দিয়ে শুরু
হইয়াছিল। ইহার পরেও... আদম এবং ইভের কন্য-পুত্র গন নিজেদের মধ্যে যৌনাচার
করেই এই এত্তো পরিমানে বংশবিস্তার ঘটাইয়াছেন। যাহা সম্পুর্নভাবে আজকের যে
কোন ধর্মমতের নজরে একটা ট্যাবু। এ তো আব্রাহামীয় ধর্ম। আমাদের সনাতন ধর্মেও
বিবাহের সংজ্ঞা অত্যান্ত জটিল, যৌনাচারের ও কোন সীমাবদ্ধতা নেই। সরস্বতী
কন্যা হয়েও স্বয়ং ব্রম্ভা তাহার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হন। আবার মাতা মাতা
কুন্তিও সূর্যের সহিত অবৈধ্য সম্পর্কে পড়িয়া বীর কর্ণ কে জন্ম দান করেন।
যেখানে শুধু মাত্র রাবন কতৃক অপহৃতা হইয়াও সতিত্বের অগ্নিপরিক্ষার সম্মুখীন
হইতে হয়। যস্মীন কালে যদাচার বলিলেই সম্ভবত ভালো শোনায়।
আসলে
যাবতীয় নিয়মাচার শুধু মাত্র মানবের জন্য, পশুপক্ষী দের মধ্যে বিবাহ
নাই।তাহার সেই সামাজিক দায় মুক্ত। আর আমাদের যে সকল ধর্মগ্রন্থ তাহার
মধ্যেও বিবাহের সুস্পষ্ট ধারনা নাই।
সুতরাং, কোন উপায়ে একটি
বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যিকার উষ্ণতা বজায় থাকিতে পারে?
সেটা হইল আবেগ। এখন কি ভাবে সেই আবেগ টা রপ্ত করিব, প্রশ্ন সেটাই।বিবাহে
প্রেমের রুপান্তর ঘটিয়া থাকে, গভীর প্রেম এক সময় মায়া-
স্নেহাদ্রতা-মমতা-গুনপ্রীতি- প্রেমত্ততা-সমবেদনা-মোহন মায়া ইত্যাদিতে
পর্যবাসিত হয়।
বিবাহ যে উপায়েই সম্পাদিত হউক না কেন যৌনতা কে কেও
কখনই অস্বিকার করিতে পারিবে না। যৌনতা শারীরিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি,
ভবিষ্য প্রজন্মের সৃষ্টি করিয়া থাকে। বিবাহ প্রতিষ্ঠানের লৌকিক ক্রিয়াদির
প্রতিটি ছত্রে ছত্রে সন্তান উৎপাদনের তরে বিভিন্ন কলাকৌশল রপ্ত করানোর সাথে
সাথে , মনের গহিনেও প্রবেশ করানো হইয়া থাকে, যে সন্তান তোমাদের উৎপাদন
করিতেই হইবে। এবং অনেক ক্ষেত্রেই অতি দ্রুত। বিবাহের পরবর্তী সময় কালে
স্বামীগৃহের দ্বারদেশে পৌঁছাইলেই “দুধ নাহাও, পুত ফলো” বা বাংলায় “সুখী
সন্তান বতী হও মা” ইত্যাদি গোত্রীয় শব্দ বাণে, প্রথম থেকেই নির্দিষ্ট করিয়া
দেওয়া হয় যে, বিবাহকে তোমরা আর যে দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করিয়া থাকো না
কেন, আমাদের কাছে সর্বপ্রথম তুমি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উৎপাদন যন্ত্র,
বিস্তারে পুরুষ সন্তান , তাহাত পর আর বাকি যাহা কিছু। তাহা যদি না ই হইবে,
অনেক নিজ পুত্র বা কন্যার প্রেম ঘটিত বিবাহ তৎক্ষণাৎ মানিইয়া না লইলেও,
একটি বা দুইটি সন্তানাদি হইলেইই, পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিতে সময়
লাগে না। যদিও সমকামী দম্পতী দের ক্ষেত্রে এই সকল তথ্যই অসিদ্ধ।
বিবাহ বহুপ্রকারের হইয়া থাকে। প্রেম সম্পর্কীয় ও বন্দেজ বিবাহের কথা
পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি। ইহা ছারাও নানাবিধ বিচিত্র বিচিত্র বিবাহ সম্পর্ক
লক্ষ করা যায়। আধুনা সমগ্র পৃথিবীতে সমলিঙ্গে বিবাহ ব্যাপক হারে সম্প্রসারন
করিয়াছে, যাহার অনেক ক্ষেত্রেই যৌনতার কোন স্থান নেই, পুরো টাই মানসিক।
এখন তো আবার নিজের সাথেই অনেকে বিবাহ করিতেছেন, হস্তমৈথুন কে স্বীকৃতি
দেবার লক্ষে। দক্ষিন আমেরিকাস্থিত আমাজনীয় তিরবর্তী দেশ সকল সহ, ভারতবর্ষের
অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু বা কেরালা তে খুল্লতাত সম্পর্কীয় ব্যাক্তিবর্গের
সহির বিবাহ বন্ধন সিদ্ধ। যেমন আরব্য রজনীর দেশ গুলিতে মাতৃতান্ত্রিক
পরিকাঠামোর ভিতর সম্পূর্ন সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে, একটি মাত্র রাত্রের
জন্য একটি সুসজ্জিত তাবুর অভ্যান্তরে দৈনন্দিন বিবাহ। প্রাচীন সনাতন
মতানুসারে গান্ধ্যর্ব মতে বিবাহ ও সুপ্রসিদ্ধ। আর বাল্য বিবাহ তো আজকের
যুগেও ভারতীয় সমাজে একটি বিশালাকার ব্যাধি।
বিফলে মুল্য ফিরত, ইহা
মানবের একটি বিশেষ বিজ্ঞাপনি চরিত্র, সেই ক্ষন থেকেই সম্ভবত পরিক্ষামূলক
বিবাহের উৎপত্তি। যদি তাহারা এক বৎসর কাল সম্পর্ক টি টিকে টিকাইয়া রাখিয়ে
পারেন, তখন ধুমধাম আয়োজনের সহিত বিবাহ সম্পন্ন হইয়া থাকে। স্বার্থসিদ্ধির
জন্য উভয় পক্ষই বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য রাজি হইয়া যান, শুধু মাত্র কোন
বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য, ইহাকে চুক্তিবিবাহ বলা হইয়া থাকে।
বহু
সমাজের একের অধিক বিবাহ কে অবৈধ বিবাহ রুপে দেখানো হইয়া থাকে। অনেক
ক্ষেত্রে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মৃত্যু হইলে বা ছারিয়া চলিয়া যাইলে ,
পূনর্বিবাহ করার রেওয়াজ সকল সমাজেই বিদ্যমান। ভগীনি বিনিময় বিবাহ, সংগবদ্ধ
বিবাহ, ভাগিদারি বিবাহ, অবিভাবকের ঋণ শোধের জন্য শোধক বিবাহ, স্ত্রীকে পন্য
হিসাবে ব্যাবহার করিয়া, তাহার স্ত্রী ধনের বিনিময়ে বন্ধকি বিবাহ, তিব্বতের
বহুভতৃকত্ব বিবাহ, চিন দেশিয় রিতী অনুযায়ী মরনোত্তর বিবাহ, আত্মার
সন্তুষ্টির তরে, বেশ কিছু নর আর নারী মিলিয়া সমবেত বিবাহ, যেখানে
প্রত্যেকেই প্রত্যেকের স্বামী-স্ত্রী। ইসলামিক নিতি অনসারে তালাকের জন্য
বিবাহ, মিথ্যা বিবাহ, ভৌতিক বিবাহ, শুধু মাত্র যৌন সম্পর্কের জন্য বিবাহ...
ইত্যাদি নানা ধরনের বিবাহ কলা বিদ্যমান।
এখন যৌনতা। জীবের
যৌনতা আছে। মানব ও তার ব্যাতিক্রম নহে। কিন্তু মানবের যৌনতা পরিশীলিত ও
মার্জিত। স্থান কাল পাত্র ইত্যাদি ভিন্ন ভিন বিষয়ের উপর চরম ভাবে
নির্ভরশীল। এক্ষেত্রেও কিছু ব্যাতিক্তম অবশ্যই আছে। তবে তাহা নিতান্তই
বিকৃত মস্তিষ্ক প্রসূত। একটি সুখী দাম্পত্যের জন্য তৃপ্তিকর যৌনজীবন একান্ত
প্রয়োজনীয়, কিন্তু , ঊহাই একমাত্র নহে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষনানুসারে
মাত্র ৪০ % দম্পতী বৈবাহিক যৌনজীবনে সুখী। তাহলে বাকি ৬০% কি অসুখী। তাহা
ঠিক নহে। তাহারা নিজের নিজের মত করিয়াই সুখী। যৌনতা হয়তবা শরীর দিয়ে উপভোগ
করিলে উহা পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় কিন্তু আমাদের মস্তিষ্কতেই। অনুত্তম নিদান টি
নিঃসরন করিয়া থাকে মস্তিষ্কই। তাহারা মনসিক যৌনতা লইয়াই সুখী সুখী ভব
করিয়া কাটাইয়া দেন।
আজিকার যুগের সহিত তাল মেলাইয়া, যে সমাজে দম্পতী
দিবসের দীর্ঘভাগ সময় ই কর্মক্ষেত্রে অতিবাহিত করিয়া থাকেন, তাহাদের সেই
পরিশ্রান্ত শরীরে যৌন যাহিদা তলানিতে উপস্থিত হয়। ইহার পর সপ্তাহান্তে বা
মাসান্তে যে সকল এক বা দুই টি অবকাশ যাপনের সুযোগ উপস্থিত হয়, তখন নিজেকে
নিয়েই এতটা ব্যাস্ত হইয়া পরে যে, যৌন যাহিদা বলিয়া কিছু যে একটি আছে সেটাই
ভুলিতে ভুলিতে বাৎসরিক অনুষ্ঠানে পরিনিত হয়। এক্ষনে মহিলা সদস্যা টি
বাহিরের কোন কর্মক্ষেত্র না যাইয়া, নিজ গৃহ কর্মেও জুড়িয়া থাকিতেই পারেন,
কারন তাহার পীড়ন তথা কর্ষন কোন অংশে প্রতিজনিক বৃত্তকতলার থেকে হ্রশ্বতর
নহে। যৌন আকাঙ্ক্ষা, মনশ্চক্ষুতে যাহা অবলোকোন করিয়া থাকি, যাহা আমরা
দীর্ঘকাল ধরিয়া অন্তঃকরনে অবচেতনে লালন করিয়া আসিয়াছি, বিবাহ কালীন অন্বর্থ
চরাচরে, তাহার সহিত কিঞ্চিৎ পরিমান ই অনুরূপরতা পরিলক্ষিত হয়, যাহারা
আরত্ত লভিয়াছেন, তাহারা সন্দেহতীত ভাবেই ভাগ্যবান।
প্রণয় কালীন যৌন
চাহিদাও ব্যাক্তি বিশেষে সঙ্কটময় হইয়া উঠে। গড়পরতা পূরুষের উত্তেজনা, নারী
দের থেকে অনেক বেশী ও দ্রুত ক্রিয়াশীল। শারীরিক ভাবে এক জন নারীর অনেক
বেশী সময় প্রয়োজন হয় এক জন পুরুষের তুলনায় যৌনতার আমেজ কে উপলব্ধ করিতে।
স্ত্রী যৌন চাহিদা, পুরুষের তুলনায় অনেক বেশী, অনুভুতির উপর নির্ভিরশীল। আর
এই সকল ক্ষেত্র হইতেই বৈবাহিক ধর্ষন ন্যায় উদ্ধত হয়। বিবাহে যে প্রাথমক
শর্ত , ‘পরার্থপরতা” যখন নিজেকে ক্ষুদ্র গন্ডির মাঝে নিজেকে আবদ্ধ করিয়া
নিজ স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি বান হইলেই এই সকল পরিস্থিতির উদ্ভূত হইয়া থাকে।
দুইজনের আবেগপ্রবনতার মধ্যে ভারসাম্য রাখাটা বিবাহের অন্যতম শর্ত, যাহা এই
ধর্ষনের ন্যায় সকল প্রকার অবাঞ্ছিত কান্ডকে দূরে সরাইয়া রাখিতে।
বৈবাহিক জীবনেও পেশাদারিত্ব থাকাটা একান্ত জরুরী। ক্ষমা একটি বড় অংশ অধিকার
করিয়া থাকে এই সম্পর্কে। তবুও প্রলোভন সঙ্কুল দুনিয়া মধ্যি তাৎক্ষনিক
শিহরনের আশায় তারা তাদের প্রেমিক বা বৈবাহিক অংশীদার থেকে পালায়ন করিয়া
থাকে বিশ্বাসঘাতকের ন্যায়, আবার তাহারা একই ছাতের নিম্নে শুধুমাত্র আবার
বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান টির জন্য। প্রতিটি সময় তারা মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত
হইতেই থাকেন, এমন অনেক দম্পতী আছেন, তবুও তাহারা বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ
আছেন, ভবিষ্যতেও থাকিবেন।। ব্যক্তিগত স্বপ্ন অনুসরণ করা এবং স্থায়ী
অভিজ্ঞতা হইতে প্রাপ্ত জীবন মূল্য, তাদের মানসিক শক্তির তরলীকরণ, সৃজনশীল
উপহার ইত্যাদি নানা প্রকারের ঘটনাক্রম, বিবাহ প্রতিষ্ঠানে আত্মরতিমূলক
চিন্তাভাবনার খোরাক জন্ম দিয়ে থাকে , যাহার ভিতর হইতেই শঠতা, প্রবঞ্চনা,
কপটাচারন প্রতারনা পেজেমি ইত্যাদির অঙ্কুরন ঘটে। যদিও এই সকল কিছুই বিবাহ
নামক প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
প্রেম সদা সর্বদাই পতন
শীল , কিন্তু ইহার কখনই একাকি পতন হয় না। কাওকে না কাওকে সাথে করিয়া নিয়েই
পতিত হয়। এবং প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটে। কিন্তু বিবাহে ইহা একান্তই কাম্য
নহে, কিছু ব্যাতিক্রমি দৃষ্টান্ত ব্যতিরেকে। কারন এক্ষেত্রে সহানুভুতিশীলতা
ও পরিচর্যা নামক দুইটি বস্তুর উপস্থিতি প্রেম কে জিইয়ে রাখিয়া দেয় বিবাহ
নামক প্রতিষ্ঠান টির অভ্যন্তরে। যদি কোনক্রমে এই দুইটির অকাল মৃত্যু ঘটে
তাহা হইলে বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবি হইয়া যায়। তখন আর বিবাহ বলিয়া কিছু অবশিষ্ট
থাকে না।
প্রেমের লেখচিত্র , বাচ্য বা কন্ঠনিশ্বনের সুচকের উপর
পরিমাপ করা হইয়া থাকে, তখন ই ধরিয়া লইতে হইবে যে স্বম্পর্ক টি প্রায় মৃত,
যেক্ষনে উভয় আর কেহই শ্রবনেচ্ছা পরিত্যাগ করিয়া, উচ্চশ্বরে বিলাপ অথবা
প্রালাপ সম করিতে থাকে, সেক্ষনেই উক্ত সম্পর্কের মধ্যে জীবন্ত সকল কিছুই
গোলাপের পাপড়ির ন্যায় শুকাইয়া রস বর্ন নমনীয়তা সকল কিছুই পরিত্যাগ করে।
শেষে একটা বানী দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটাইঃ-
বিয়েঃ একটি বৈধ ও ধর্মসম্মত অনুষ্ঠান যেখানে দুজন বিপরীত (সাধারণত)
লিঙ্গের মানুষ পরস্পরকে জ্বালাতন করিয়া এবং পরস্পরের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি
করিবার শপথ লইয়া থাকে ততদিনের জন্য যতদিন না মৃত্যু আসিয়া তাহাদেরকে আলাদা
করিয়া দেয়।
(প্রাপ্তমনস্কদের জন্য, উন্মাদীয় বানানবিধিতে সজ্জিত একটি সম্পূর্ন উন্মাদীয় ভাবনার ফসল)
No comments:
Post a Comment