Saturday, 27 December 2014

মহালিঙ্গম তৈল

দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি জাপানী তেল কি বাবা কামদেব ভারতের বাজারে আনবেন?
যদি আনেন কি তার নাম হতে পারে? আপনারা কি সাজেষ্ট করবেন? ইন্ডিয়াল ওয়েল! হবে না, লাল তেল! হবে না, ভারত - হিন্দুস্থান...... নো চান্স স্যার। সব অলরেডি বুকড।
আমার সাজেসন : "পতন-জলী মহালিঙ্গম তেল"

বিজ্ঞাপনে দেখানো হোক পুঁই এর দরজা জানালার ফ্রেম। মানে পুঁই শাকের গাছে এই তেলের প্রভাবে প্রভাবে উহা শাল কাঠের মত মজবুত হয়ে গেছে।
এবং এর সাথে নির্দিষ্ট ধনুষ্টঙ্কার আসন শাষন করলে, পুঁইএর মিচুরির মত থোকা থোকা পুরুষ্ট *ন্ডকোষ জন্মাবে। যাহা স্বাস্থবান সেবকের জন্ম দেবে। এমনকি বাজারেএ পাতিলেবুর উপর দুফোঁটা ফেললেই সাথে সাথে উহা বাতাবি লেবুর আকার ধারন করিবে। বা পৌরসভার জল লাইনের পাইপের মুখে দিলেই.... বিদ্যুত বেগে হদহদ করে ধারা প্রবাহিত হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি.....
যদিও বাবার নিজশ্ব কক্ষে বাবার প্রসাদ খেয়ে ২-৩ ঘন্টার কোর্স করলে তিনি নিজেকে গর্ভবতী রুপে আত্মপ্রকাশ করাতে পারবেন। ইহা পুরুষদের জন্য নহে। কা-পুরুষ, মহাপুরুষ ও মহিলারাই প্রযোজ্য। (লেসবো ব্যাতিরেকে, ওনার জন্য আধে-মা আছেন)
বি:দ্র:- ইহা কেবলিমাত্র 'গো' ও 'শাখামৃগ' সন্তানদের জন্যই প্রযোজ্য।

Sunday, 14 December 2014

খোরাক



উন্মাদীয় রবিবাসর


~:খোরাক:~
~~~~~~~~~


একটা দিন মোটে পরে পাওয়া ছুটি, তাতে রবিরার হলেও কিন্তু শান্তি নেই, সকালের ঘুম ভাঙতেই চাই না । সকাল সকাল বাজারে না গেলে মাছ পাওয়া যাবে না, টাটকা সবজি পাওয়া যায় না, দুধ, পৌরসভার ট্রাক্টারের শোধন করা জল... আরো কত কি। সব থেকে বড় কথা, বেলা হয়ে গেলে, চেনা জানা লোক গুলো কে পাওয়া যায় না, যে জমিয়ে একটু আড্ডা মেরে আগামী সপ্তাহের জন্য পাড়াতুতো “খোরাক” সংগ্রহ করা যাবে।



অগত্যা গিন্নির তারস্বরে চিৎকারে, শুকনো আদার মত অবশিষ্ট প্রানে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠার আগে ঘুম থেকে উঠাই শ্রেয়। এখানে পুরূষের বয়স ভেদে, চীৎকার এর খোরাক যোগানকারি ব্যাক্তির পরিবর্তন ঘটে। শিশু বয়সে ভোর বেলা মায়ের চিৎকার, উঠ স্কুল কখন যাবি! যুবক বয়সে মায়ের সাথে বাবাও যুক্ত হন। কলেজ লাইফ বা তার পরবর্তী কিন্তু বিবাহ পূর্ব্ববর্তী সময় কালে মায়েরা কোন এক অজানা কারনে শান্ত হয়ে যান, আর বাবা রা দ্বিগুন তৎপরতার সাথে চিৎকার শোনানোর কাজটুকু নিপুন ভাবে অধিগ্রহন করেন। 



যারা দূর্ভাগা তাদের প্রেমিকারা ও অনেক সময় চেঁচামেচির সু অভ্যাস টা প্রেমিক জীবনেও বজায় রাখিয়ে দেন। এক্ষেত্রে একটি জীবনিকালে বাবার এই ভুমিকায় অবতীর্ন হওয়া টা অনেকটা ডেপুটেসনে শিক্ষন নিয়োগের মত। জানেন অল্প দিনের কিন্তু বুঝতে চান না।



এর পর বিবাহ। প্রথম সন্তান অথবা সর্বাধিক ৩ বৎসর, যেটি আগে ঘটবে, সেটির উপর নির্ভর করে স্ত্রীর সর্বেসর্বা হবার শুভরাম্ভটি। যদিও সেই মহেন্দ্রক্ষনের প্রতীক্ষায় খুব বেশী দিন অপেক্ষা করতে হয় না, কারন বিবাহের পর, আকস্মাৎ বাবারা কেমন যেন নেতানো পাঁপড় হয়ে যান, কোন কথা ই আর সামনা সামনি বলেন না, সবটাই মা এর মাধম্যে। এদিকে মায়েরাও একটি, বছর ৫-৭ (কমবেশী) শীতঘুম দিয়ে , নব উদ্যমে বৌমার সহিত সহ- শাষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। নিজেদের মধ্যে ওয়াটার-লু সহ।



বৃদ্ধ বয়সেও এই আজীবন চিৎকার শোনার অভ্যাসের রেওয়াজ টা অক্ষুন্ন থাকে, গিন্নি বেঁচে থাকলে তো কথাই নেই, তিনি একাই যথেষ্ট, যদি কোন কারনে তিনি অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে হয় বৌমা বা নিদেনপক্ষে বাড়ির পুরাতন চাকর কে দিয়েই সেই পুরাতন সু অভ্যাস বজায় রাখানো হয়।



এমতাবস্থায়, বাঙালী পুরুষের মনোরঞ্জনের উপায় কি?? ঘরে?? নৈব নৈব চ। যেটুকু মন-চোখ ও মুখের মানে ভাষার আগল খুলে একটু খেয়াল খুশির আমোদ, একটু তাস, বা দাবা খেলা বা ক্যারাম বা নিদেন পক্ষে লুডো, তারই ফাঁকে একটু ফুকুফুকু বা ঢুকুঢুকু। সবটাই তো আড্ডা খানায়। এই তো জীবন... যাক না যেদিকে যেতে চাই প্রান। আর হ্যাঁ এই প্রানের টানেই ক্লাস নাইনের, বছর ষোলোর পটলার সাথে, মধ্যচল্লিসের LIC এর দাদাল পরেশ দা, আর অবসর প্রাপ্ত কেরাণী হরিপদ বাবু, জমিদার বাড়ির বখে যাওয়া বড় খোকা নগেন মানে নগেন্দ্রনারায়ণ সিংহ রায়ের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কলব্রিজ খেলে যেতে পারেন, একটা বিড়ি চারজনে শেয়ারিং করতে করতে। হাজার অমিল হোক, ইনারা জড় ও নন, পর ও নন, এনার আসলে আপনজন।



এখন প্রত্যেকের সাথে থাকে নিজস্ব জগতের যন্ত্রনা। যেমনঃ পর্যানুক্রমে...



“কি যে বলি, শালা মাস্টার গুলোও হয়েছে আজকাল, আরে দু বছর আগেই যদি আমাকে নাইনে পাশ করিয়ে দিতিস , কার এমন ক্ষতি টা হতো শুনি? বলি সরকার থেকে কি মানা ছিল? পর পর ইচ্ছা করে আমাকে ফেল করালো, জানো। আরে আমায় ফেল করিয়ে তদের কি লাভ হলো?? মন্টু মাস্টারের মেয়ে, ওই সে বাসন্তী, যাকে তোমরা ফ্যাসন বাসন্তী বলো গো, ওর সাথে ইন্টু-মিন্টু টা ধরে ফেলাতেই যত্ত কেলো, বাড়িতে জানলো, ইস্কুলে জানলো। বাপটাও যেমন আমার, যেন কাল সাপ, আমার বেলাতেই যেন সব টাকাপয়সা ফুরিয়ে যায়, বলি, একটু তো শুধু বিড়িই খায়, পেলে পাব্বনে একটু মাল, আর তোমাদের সৎসঙ্গে না এসে আমি একা একা কোনোদিন বাবা খেয়েছি? তোমরাই বলো। 



মা টা ও টুকি মানে বোনটা বড় হতেই, আমাকে নিয়ে যেন ভাবা ছেরে দিয়েছে, তবে রাত বিরোতে দরজা টা এখনো উনিই খুলে দেন। একদিন এমন দিন আসবে , যে দেখবে এই প্রহ্লাদ চন্দ্র সেন কে সবাই স্যালুট করবে। অমন চোখ কপালে তোলার কি আছে! আমার ই তো ভালো নাম, লোকে ভালো বেসে পটলা বলে ডাকে আর কি। আমি ব্যাবসাই করবো। চাকরি বাকরি কেউ করে?? ছ্যাঃ... বিয়েটাও তো করতে হবে না কি!! তাছারা ওই হতচ্ছারা মাস্টার গুলোর জন্য কি ডিগ্রি পাবো?? যে চাকরির এপ্লিকেশন করবো!! ছ্যাঃ ছ্যাঃ...



সত্যি বলছি কি জীবনে ঘেন্না ধরে গেল।



ভাবলাম চিটফান্ড বন্ধ হলে, আমাদের একটু সুরাহা হবে, কিন্তু কোথায় কি, সেই... যে কলু সে কলুই। সব ভোগাস, এঁড়ে বাবার সপ্ত জন্তুর, ‘ওই খান কার’ লোম দিয়ে তৈরি, অব্যার্থ মাদুলিও ফেল মেরে গেলো। মাঝ খান থেকে কয়েক হাজার টাকাই পন্ড গেল। আমার ব্যাড লাক টাই খারাপ মনে হয়। ওদিকে ছেলের ৪ টে টিউসুনি, মেয়ের আবার দুকাঠি বাড়া, নাচের ইস্কুল গানের মাস্টার, ফ্যাসাদের কি আর শেষ আগে, মাসে ৩-৪ টে নিমন্ত্রণ লেগেই আছে বাঁ_, তার উপরে গিন্নি, ফরমাইসের শেষ আছে? বাবা মায়ের ওষুধ কি কম টাকার কিনতে হয়? খুকির বিয়ের গয়নার জোগার টাও তো এখন থেকেই করতে হবে, ভাবছি একটা নতুন ব্যাবসা করবো। 



হাত খরচাতেও একটু রাশ টানতেই হবে মনে হচ্ছে। আজ কাল আর একটু বিদেশী টেষ্ট করবো, তার ও আর উপায় নাই। গিন্নির নতুন ঘোড়ারোগ, বেড়াতে যেতে হবে। না হলে নাকি পাড়ায় আর মান থাকছে না। ঘোষজা ছেলে স্বামী নিয়ে গত বছর পূরি গিয়ে বাবার পায়ে প্রেসাদ দিয়ে এসেছেন, এবার আমাদের কমপক্ষে দিঘাও যেতে হবে, না হলেই গৃহযুদ্ধ। আবার নতুন খরচা, টাকা কি আর গাছে ফলে? LIC বড় বাবুদের টানা টার্গেট পূরনের চাপে চাপে জর্জরিত, সারা দিন লোকের সাথে বকবকানি, ঘরে এসে নানান অভাব অভিযোগ। জ্বলে গেলো দাদা, সব জ্বলে গেলো। এই তোমাদের এখানেই একটু যা শান্তি। বাকি টা তো সেই খাড়া-বড়ি-থোর।



সত্যি বলছি কি জীবনে ঘেন্না ধরে গেল।



কদিন থেকেই বড় খোকা কে বলছি, ওর ও আর সময় হচ্ছে না, শেষের দুটো তো আমাকে এখন আর গ্রাহ্যি করে না। চোখের পাওয়ার টা বেড়েছে মনে হচ্ছে। শালা ইস্কাবনের বিবি কে, মোল্লা পাড়ার জরিনা বিবির মত দেখছি। একটু শখ করে যে, আলাদা তোদের সাথে একদিন রাত্র খাসির মাংসের মোচ্ছোব খাবো, দাঁত গুলোর জন্যে সে উপায় ও নেই, শুধু ঝোল খেয়ে আর চেটেই মজা, অবিশ্যি পেনসানের টাকাটা তো ওষুধ খেতেই চলে যায় বুড়োবুড়ির। জমানো টাকা যা আছে, অদিনের জন্য ওটুকু আর হাতছারা করতে সাহষ হয় না। তীর্থ করতে যাওয়ার শখ এখন কে মেটায় দেখি।



 রমলার শ্বশুর মানে বড় জামাই এর বাবা একটা সৎসঙ্গ দলের সাথে কাশী বৃন্দাবন ঘুড়ে এলো, উনি বিপত্নীক ওনার যা সম্ভব , আমাকে তো আর সেটা সাজে না। কমলা বলেছে, যে বাবা ভরষা রাখো আমার উপর, তোমার তিন ছেলে যদি তোমায় তির্থে নাও পাঠায়, তোমার ছোট মেয়ে জামায় পাঠাবেই, এখন এটাই ভরষা। সামনেই অমাবস্যা, গাঁটের ব্যাথাটা আবার বাড়বে। পেসার আর সুগার ঠিক রাখতে গিয়ে লুঙিই ঠিক রাখতে পারি না। আচ্ছা দেখ তো, আমার চামরায় কালো কালো ছোপ পরছে কি রকম। নাহ কলপ করা টা এবার ছেরেই দেবো ভাবছি। এখন এই সারাদিন সময় কাটানো টাই বড় মুসকিল। বাড়ি গেলেই সেই গিন্নি-বৌমাদের কিটকিট, নিউজ চ্যানেল ই বা আর কতক্ষন দেখবো? ভাবছি একটা ছোট খাটো ব্যাবসা ই করবো ভাবছি, তাতে কিছু আমদানি ও হবে, সাথে সময় টা ও কাটবে। শান্তি নেই ভাই শান্তি নেই। এই তোদের সাথেই যা একটু শান্তি পাই...



সত্যি বলছি কি জীবনে ঘেন্না ধরে গেল।



নাহ, এই জন্যই তো দেশ থেকে রাজা জমিদার রা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আরে বাওয়া যুগের হাওয়া কে মনতে হবে না?? ব্যাটা যত গো-মুখ্যের দল। বলি ওই ২০ বিঘে জমির উপর পেল্লাই বাড়ি টা রেখে হবে টা কি?? তার উপরে হাজার ট্যাক্সের বায়ানাক্কা। এই পানিহাটির গঙ্গাপাড়ে এমন একটা জাইগা ভালো প্রোমোটার কে দিলে, এমনিতেই ২-৪ টে ফ্লাট ফ্রিতে পাওয়া যাবে, তার উপরে নগদ টাকার পাহাড়। কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। আরে বাব্বা সেই হাফ প্যান্ট পড়া অবস্থা থেকে রাজনীতি করছি, আমি বুঝি না?? 



কাউন্সিলারের আপন মামাতো ভাই, জগাই দা পর্যন্ত মাঝ রাতে আমার কাছে পরামর্শ নেন, যে নগেন এটা কি করবো বল তো?? আর আমার ফ্যামিলির এই হা-ভাতে কটা কে শুধু বোঝাতে পারলাম না। লজ্জা লজ্জা, আমার নয় এদের, গোটা দেশের। কাল যখন এই নগেন যখন MLA হবে বা নিদেনপক্ষে কাউন্সিলর বা এক্কেবারে ছোট্ট করেও পার্টির কোন পোষ্টে যাবো, সেদিন এরা বুঝবে ,কেন যে আমরা হিরে চিনতে পারিনি! মামলার খরচ জোগাতে গিয়েই তো জমি বিক্রির টাকা গুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে, এবার একটা কিছু না করলেই নয়। ভাবছি একটা ব্যাবসা ই করবো। 



মহান রাজনীতি বিদরা কি আর চাকরি করে বাছা?? ব্যাবসা ব্যাবসা। সব্বাই ব্যাবসা করে। তবে আমি যেদিন ব্যাবসা করবো, সকলের চোখ ধাধিয়ে যাবে। এখন তো বাড়ি গেলেই অশান্তি, আমায় বলে নাকি বুড়ো ভাম, ছোঃ... সবে তো চল্লিশ। মেয়েরা দেখে তো অনেকেই আমাকে কলেজের ছেলে বলে ভুল করে। আমি বিয়েই করবো না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, দেখো এদের। ইনারা কেও বিয়ে করেছেন? বা পুরাতন ইতিহাস?? ক জন বিয়ে করেছিলেন?? এই ঝঞ্ঝাটের জন্যই বাড়ি যেতেই মন চায় না। তোমাদের এই সাথ টুকু ছারা কোঠাও দুদন্ড শান্তি নেই। তোমরাই আমার আপনজন।



সত্যি বলছি কি জীবনে ঘেন্না ধরে গেল।



এর পর পরে থাকে একসাথে সমবেত ভাবে খুশী হবার পালা, কারন আসলি মাজা সাব কে সাথ আতা হ্যায়। শুধু মাত্র IPL ই সব্বাই কে এক স্থানে বসায় না, নির্ভেজাল পরনিন্দা-পরচর্চা আর পাড়াতুতো খোরাক পাড়ার বাঘ আর গরুকেও এক বারকোসে হালুয়া খাওয়ায়। তাহলে চলো আজ কুছ তুফানি করতে হ্যায়। সকলেই ভাবে মেরা নাম্বার কাব আয়েগা বাওয়া। যে যেমন পারে, এ্যামেচার শিল্পী সেজে পারফর্ম করতে শুরু করে দেয়। যেমনঃ-



“বংসীধরের বড় মেয়ে, আরতিটা তো যথেষ্ট সুন্দুরী, তাহলে এই মধ্য তিরিশে ও কেন বিয়ে করছে না? কোথাও কোন গোপন একাউন্ট নেই তো? পলান মিত্রের হাফের টান বলে ফি হপ্তায় যে গড়িয়া যেতেন, ওটা আসলে অর্শ জাতীয় কিছু ছিল। আরে এই বাষট্টি বছর বয়েসে হাপানি তেল না জাপানি তেল, কি যে উনি কেনেন কে জানে!! ব্যাঙ্কের নতুন ম্যানেজার বুলবুল মন্ডল বাবু কোন জেতের লোক? হিঁদু না মোচোরমান, রামরতনের ছোট ছেলে কোলকাতায় অদৌ কি চাকরি করে! না রেলে হকারি করে? আব্বাস মিঞা যতই জ্যান্ত মুরগি ঝুলিয়ে বাড়ি যান না কেন, গরুর মাংস নিশ্চই খান। 



মদু বাঙালের নাতনি কাজলি, কেমন তরতরিয়ে বড় হয়ে গেল বল দেখি। ভবেশ কে দেখেছো? বেটার আঙুল ফুলে কলাগাছ,নিশ্চই বেটার দুনম্বরি ধান্দা আছে। শুনেছো প্রনবেশ নাকি চাকরি পেয়েছে, মাস্টারি, ব্যাটা টুকে পাশ করেও আজ কাল লোকে মাস্টার পোপেসার হচ্ছে। সেটাই বা বলি কেন, দুলে পাড়ার সুশলে মাণ্ডির মেজ ছেলে, সে নাকি আবগাড়ি দপ্তরে চাকরি পেয়েছে, কোটা... কোটা... সব কোটা বাজি আর রাজনীতি। 



দেশের যে কি হবে, যারা ধরবে সব ব্যাটারাই তো চোর, সাথে আছে নেতারা। নাহ, সারাজীবন সততা করে আর কিচ্ছু হলোনা। কষ্ট তো হয় অবিনাষ দার জন্য, অমন চাঁদপানা মুখের মেয়ে, কিন্তু দেখো, যেন লগার আধখানা, বলি অতো লম্বা মেয়ের ছেলে পাবে কোথায়!! মিনু বৌদিকে খেয়াল করেছো? মেয়ে টাকে নিয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসার সময় খেয়াল করে দেখো, পাছাদুটো যেন কোলা ব্যাঙের তরাক তরাক করে লাফায় (সাথে অট্টহাস্য)। এ পটলা, দুটো কীর্তনের ক্লিপিং দে না, আর কি ই বা আছে জীবনে ...... ইত্যাদি ইত্যাদি”।



এই হল বাঙালী পুরুষ জীবনের মোটামুটি আড্ডা। যুগে যুগে এর বিবর্তন হয়েছে। বটতলা থেকে, চন্ডীমন্ডপ, হয়ে বৈঠক খানায় খানিক বিশ্রাম নিয়ে, পাড়ার রক আর ‘আমরা ক জন’ ক্লাব কে ছুঁয়ে আজ অন্তর্জালে বন্দি হয়েছে। যেহেতু অন্তর্জাল, তাই সীমা ও অনেকটাই বেড়েছে। নানুড় থেকে নন্দীগ্রাম লাটাগুড়ি থেকে হিঙ্গলগঞ্জ, সর্বত্রই এই পটলা-পরেশ দা, হরিপদ বাবুদের সাথে নগেন্দ্র বাবুদের নিত্য ওঠাবসা। এখানেও সেই মডিফায়েড রক কালচার। কিছু ব্যাতিক্রম বাদে।



সক্কলেই তো আসলে আমরা নিজেদের টা বলা হয়ে গেলেই, বাঁচার জন্য খোরাক খুঁজতে থাকি। একটা চোর্ব্য চোষ্য লেহ্য পেয় করে উদরস্থ করার মত খোরাক চাই। আর তার ব্যাবস্থা ও আছে , যুদ্ধবাজ আমেরিকা থেকে নটি আমেরিকা, ভানু সিংহের পদাবলী থেকে সানি লিওনির নামাবলী, সব রেডিমেড ব্যাবস্থা প্রস্তুত। আবার ঘন্টায় ৫০০ টাকা ইনকামের হাতছানির পাশাপাশি ঘন্টায় ৫ লাখ ঊড়ানোর হদিস, সব রেডি। 



শুধু খুঁজে নিলেই কেল্লাফতে। আগে টেবিলে বসে খেলা হত এখন মাউসে বসে জুয়া। সস্তায় এবং সর্টকাটে আখের গুছানো থেকে পরীক্ষা পাসের সহজ উপায়। নিখাদ চুটকুলা ঢামালি হয়ে কথার মায়াজাল। এখানে বোঝা মুশকিল কে মেয়ে আর কে ছেলে। রাবনের পুত্র ইন্দ্রজিত , যিনি মেঘের আড়ালে থেকে যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন, এই যুগে জন্মালে যিনি নির্ঘাত ফেল মেরে যেতেন , বর্তমান ফেবু বাবুবিবি দের কেত্তন দেখে।



আসলে নগেন বাবুর মত, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সব্বাই ছুটে চলেছি, কিন্তু মুসকিলটা হয় হরিপদ বাবুদের। একে অবসর জীবন, হাতে তুলনামূলক অনেকটা অতিরিক্ত সময়। অনেকেই অনেক সুন্দর সুন্দর সম্পর্ক তৈ রি করে ফেলেন। তার সাথে তৈরই হয় চাহিদাও। আগেকার দিনে বটতলা বা চন্ডীমন্ডপেও হতো। কিন্তু সেখানে হাঁ- টা খুব বেশী করার সমস্যা ছিল। এটা ইন্দ্রজিতের দেশ, চোখের আড়ালেই সকল কিছু। একটু এক্সট্রা এক্সাইটমেন্টের তারনায়, খোরাক করতে গিয়ে,কখনো কখনো, পুরো গুয়েগোবরে হয়ে গিয়ে নিজেই খোরাক হয়ে যান।



গুজব। নানা কারনে সৃষ্টি হয়। যেকোন আড্ডাখানা একটা সমমনস্ক দের স্থান, সর্বকালে, সর্বদেশে। এখানে কারো কারো ব্যাক্তিগত বিষয়, সমষ্টির পাত্তা পাওয়া আর না পাওয়ার মাঝ খানে গুজব তৈরি বা সৃষ্টি হয়। যিনি সমষ্টির পাত্তা পান না, তিনি আড্ডাখানায় উপস্থিতি কময়ে দেন, আর নানান বিকৃত ভাবনায় সাজানো খোরাকের জন্ম দেন, বাকি লোক গুলো যারা আড্ডা খানায় অবশিষ্ট রয়ে গেলেন, তারাও আলাদা আলাদা ভাবে ঐ সকল পাত্তা না পাওয়া ব্যাক্তি দের সাম্বন্ধে নানান মুখরোচক জল্পনা ফেঁদে, খোরাকের সৃষ্টি করেন। যদিও সকলেই আপনজনের চাদর চড়িয়েই থাকেন।



যে হরিপদ বাবু, বংশীর মেয়ে আরতির জন্য ভেবে আকুল, সেই আরতিকে যদি কখনো কোন দিন নগেন্দ্র বাবু সাথে দেখা যায়, দূর্ঘটনাবসত, বা হয়ত ইচ্ছাকৃত , সমপাড়ার বাসিন্দা হিসাবে কোন নিতান্ত প্রয়োজনে, তাহলে এই হরিপদ বাবুই নৈতিক আরক্ষাবাহিনীর অবৈতনিক কর্মী সেজে পটলা কে এসিস্ট্যান্ট করে গুজব রটাতে শুরু করে দেবেন। আর এটাই বাস্তবে ঘটে থাকে। এখন গুজবের সুত্র টা হয়তো খুব নিরীহ ভাবে উনি শুরু করলেন, কিন্তু পটলা খোরাকের জন্য ওদের মাঝখানে পরেশ দা কে শিখন্ডি করে রেখে আরতিকে গুজব দ্বারাই গর্ভবতী করে দিয়ে আরও চুটুল খোরাকের সৃষ্টি করে দিলো। এক্সট্রা মসলা। এক্সট্রা উত্তেজনা। এক্সট্রা খোরাক।



রসালো ও মুচমুচে খাদ্য বা খোরাক সকল বয়সের সকল শ্রেনির মানুষ দের কাছে প্রিয়, আর যাদের দাঁত নেই, তাদের কাছে তো এটাই একমাত্র সোয়াদিষ্ট খাদ্য। তাতে তিনি রসিক হন বা না হন। অনেকেই নিজে কখনোই খোরাকের অংশিদারিত্ব নিতে চান না। তিনি শুধু শ্রবনে আর দর্শনে উপভোগ করতে চান, মানে নীল ছবি দেখার সুখ আর কি। সামান্য তম পোড়া গন্ধ কানে শুনলেও, বৃহন্নলা বৃত্তি সাধন করে আগে পলায়ন করবেন। এখন সেটা হাস্যকর স্থান পর্যন্ত সহনীয়। 



কিন্তু কখনো কখনো কেউ কেউ, এক্সট্রা রসালো মুচমুচে খোরাকের জন্য, এক্তিয়ার ভুলে, নৌতিকতার দোহায় দিয়ে কাওকে কাওকে যখন চাটনি বানিয়ে ফেলেন, তখন সেই খোরাক পচে গিয়ে মদে পরিণত হয়। যে পরিস্থিতি কারো কারো জীবনে নিঃসঙ্গতা বয়ে নিয়ে আসে। সেই ব্যাক্তিও অনেক সময় এর হাত থেকে নিস্তার পান না।

খোরাকের চোটে যেন কখনোই আড্ডার প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন না উঠে যায়। তাই উন্মাদীয় আবেদন, খোরাক নিশ্চই থাক, খোরাকের মত করে , কখনোই সেটা যেন খোঁয়াড়ে পরিনত হয়।


সকলে সুস্থ থাকুন।


(প্রাপ্তমনস্কদের জন্য, উন্মাদীয় বানানবিধিতে সজ্জিত একটি সম্পূর্ন উন্মাদীয় ভাবনার ফসল)
_____________________________________________________


Tuesday, 25 November 2014

সময়চর্চা ~ ২

সময় চর্চা 

দ্বিতীয় খন্ড


হ্যাঁ, ডাক আমার ও এসেছিল, প্রকৃতির ডাকের কথা আমরা জানি, কারো কারোর জন্য, এ তার থেকেও মারাত্বক। আধুনিক আফিম যদি ফেসবুক হয়, তবে এ খেলা নিশ্চয় পুরাতন রেশের খেলা কেও হার মানাবে।

কামান বুলাওয়া আয়া হ্যায়।


সারাদিন মনের আনাছে কানাচে সেই ভোট বাদ্যি, রেজাল্টের অপেক্ষা। সত্যি বলছি, স্কুলের সময় ও এত্তো টা উত্তেজনা অনুভব করিনি, বা সেই সময় এই অনুভুতিটা এত প্রবল ছিল না। বুথ ফেরত সমিক্ষা ১ দিন দেখে, পরদিন সন্ধে ওই "খাড়া বরী থোর ", ক্লাব আর বেচারা ক্যারামবোর্ডের উপরে স্ট্রাইকার দিয়ে, সময়কে শাষনে রাখার চেষ্টা।



কিন্তু বিপ্লব?!



তার ও একটা মৃদু আশা, ইদের চাঁদের মত দেখা দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান দা, বাড়িতে মা বা বউ, কাউকে সামলাতে না পেরে, তিনি বিপ্লবের পথে, আমাদের শহরে অস্থায়ি আস্তানার খোঁজে। প্রথম কয়েকদিন হোটেলে ঈ কাটিয়েছে। ঘড় পাইনি। আসলে আমরা মানে বাঙ্গালিরা, প্রায় সকলেই কমিউনিস্ট তো, (মমতা ব্যানার্জী ও নিজেকে কমিউনিষ্ট বলেন) তাই মেনে ও চলি বাস্তব জীবনে, ইশ্বরের অস্তিত্ব মানি না, কিন্তু হাতে লাল সুতো বা মাদুলি ধারন করি। খানিকটা সেই রকম ভাবেই কোন ভাল(!) পাড়ায় রহমান দা যথারিতি ঘর পেলেন না।



এখানে ভালো পাড়া মানে, বাঙ্গালী পাড়া, কলিকাতায় তার মানে হিন্দু পাড়া, মুসলমান পল্লি গুলোতে হিন্দি ভাষার চল, রহমান গিন্নি বা তার ছানাপোনা দের চুরান্ত সমস্যা। তারা তো বাঙ্গালি। তাতে কি, জাতে তো মচুমান। ঘর ভাড়া- নেহি মিলা। অগত্যা, আমাদের দরবারে।



এখানেই ওই বিপ্লবের শুরু।



ঘোষ দা নাকি ঘোর কমিউনিস্ট, একবার নাকি স্বর্গীয় জ্যোতি বসুর সাথে চা ও না কি খেয়েছিলেন বলে, ঘোষজা মহিলা মহলে গল্প করেছিলান। এহেন ঘোষজাও, যিনি ঘোষ বাবুর মত ধর্ম মানেন না, মনে প্রানে পতির পূণ্যেই সতির পূণ্য, এই আপ্ত বাক্যটিই মানেন। উনি প্রকাশ্যেই না করলেন, বল্লেন ধর্ম না মানলে কি, সমাজ বলে তো কিছু একটা আছে, কাল বাদ পরশু বড় খোকার সমন্ধ আসবে, নতুন কুটুমকে মুখ দেখাবো কি করে, তারা তো আমার মত এতটা " আধুনিক " না ও হতে পারে।



সুতরাং, সমস্যা প্রায় সব পাড়ায় এক, কিন্তু মাত্র দেড় দিনেই তার সমাধান ও হয়ে গেল। সান্যাল দের বাড়ি, বুড়ো বুড়ি থাকে, ছেলে বিদেশ না কোথায়, তাদের ও একটা হিল্লে হল, সর্বক্ষনের কিছু সাথি পাওয়া গেল। কথাটা আধুনিকমনস্ক ঘোষ বৌদি কে বলতে, " উনাদের বয়স হয়েছে, ওতটা সামাজিক নন, কে থাকলো কে গেল, তাতে কি এসে যায় "।



আমার মাথা ঘুরে যাইনি, কিন্তু দাঁতের ফাঁকে মাংসের টুকরোর মত, মনের কোনে একটা খচকা জুড়ে গেল।



আধুনিকমনস্কতার নতুন স্বংগা পাওয়ার ঠেলায়।


.........চলবে

Saturday, 15 November 2014

চন্দ্রাহতের মন্ত্রনা

বুদ্ধিজীবি চেনার ঘরোয়া উপায়



আপনি নিশ্চই একজন আম পাবলিক। সকালে বাচ্চার জন্য দুধ আনা থেকে, অফিস ফিরতির সময় সস্তায় সব্জি খরিদের ধান্দায় থাকা মা-মাটি-মানুষ। সর্দির পোঁটা প্যান্টেই পোঁছেন। শ্বশুর বাড়িতে শালীর কাছে মর্যাদা নেই, মিষ্টির প্যাকেট ছারা উৎকোচে কিচ্ছু পান নি। সিগারেটের প্যাকেটে একআধটা সিগারেট ছারা বাকিটা বিড়ি দিয়ে ঠাসা থাকে। রঙ্গীন জাঙ্গিয়া পরেন। আর আজও বউকে লুকিয়ে নীল ছবি দেখেন।

তাহলে আমারই স্বগোত্রীয়। কিলিয়ে পাকানো ইঁচড় সদৃশ আম। তাহলে আপনার দুরদৃষ্টি নেই, বিশ্বাস না হলে মনে করুন, কতবারই তো মনিকা বৌদির দিকে এক্স-রে দৃষ্টি দিয়ে দেখেছেন, অবিন্যস্ত শ্রীফলের বিভাজিকা ছারা আর কি ই বা দেখেছেন। তাহলে বুদ্ধিজীবি কভাবে চিনবেন!! না হতাশ হবেন না। সামান্য কিছু টোটকা, দেখুন এপ্লাই করতে পারেনন কি না......

প্রথমে গ্যাদারিং থেকে, হনু ও জ্ঞানী টাইপের ব্যাক্তি গুলোকে শর্টলিষ্ট করুন। বেশি না জনা দশেক।তার জন্য সেধো পিরিত জমানোর চেষ্টা করুন। তবে সাবধানে, ওই দলে সত্যিকারের বুদ্ধিজীবি থেকে থাকলে, আপনি নিজেকে ঋতুবতী হিসাবে আবিষ্কার করে ফেলতে পারেন। সে যাই হোক....

এর পর তাদের আপনার বাড়িতে নিমন্ত্রন করুন। এবং চা জলখাবারের সাথে বিগবসের রাধে মা ও বুর্জ খলিফার প্রসঙ্গ উত্থাপন করুন। সরি ওটা মিয়া খলিফা, যদিও বুর্জ বলা চলে, তবে ওটা উনি লেহন ও ধারন করেন। এতে হনু ও জ্ঞানীরা চরম খুশি হবেন। কারন ওনারা ফ্রি খাবার ও মৌন যৌনতা চরম এনজয় করেন। আপনি সমাজসেবী হিসাবে আখ্যায়িত হবেন।

এবার আপনার পালা। একে একে ওই জ্ঞানীহনু ব্যাক্তিদের কাছে যান, এক বা একাধিক কম্পাউন্ডার এর সহযোগিতায় উনাদের দুই পায়ের সঙ্গম স্থলে সম্মুখ প্রান্তে, সজোরে আঘাত করুন। অবশ্যই সকল ইন্দ্রিয় দু কাঠি এক্সট্রা সজাগ রেখে। এবার নিরিক্ষনের পালা, নোট করুন।

যিনি আঘাত খেয়ে, উররে স্লা... বোক্কা*দা, হাদা হাদা.... ওটা হাদা হবে। বলে আপনাকে মাঘের বর্ষার মত খিস্তিবানে বিশ্রি ভাবে জবজবে করে ভিজিয়ে দেবেন,.....

নাহ উনি আমসত্ব পাবলিক। মানে অনেক আম মানুষের অভিজ্ঞতাতে পুষ্ট। বুদ্ধিজীবি নন। অনেকটা উকিল আর মোক্তারের ফারাকের মত। কারন ওনার অন্ডকোষ আছে।আর ওখানে লাগলে ব্যাথা লাগে, ওনার ও লেগেছে। উনি কখনই বুদ্ধিজীবি নন।

এবার যদি কেও ওই আঘাত খেয়ে মুখটা ফ্রিজেরাখা ন্যাতানো পিৎজার মত করে জ্যোতি বসু টাইপের হাঁসি দিয়ে বলবেন...


" কৃপয়া প্রতিক্সা কি জিয়ে, আপ পঙতিমে হ্যায়" এর পর ৩০-৪০ সেকেন্ড পর, পুরো ঘর টা মনমোহক খুশবুতে ভরে উঠবে, খানিক পর আপনি ওই আঘাত ক্ষেত্রের অকুস্থল থেকে একটা তাজা ওমলেট আবিষ্কার করবেন।

এখনো ধরতে পারলেন না তো!!! হে হে হে... উনিই বুদ্ধিজীবি। ওনাদের আন্ডাকোষ থাকে। ঐশ্বরিক দান।বিজ্ঞানের নিয়মে আঘাতের ফলে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছিল। আর উত্তাপে আন্ডা ভাজা হয়ে গেছে। যদিও হিংসুটেরা বলবেন ওটা বয়েল আন্ডা হলো না কেন! ইত্যাদি ইত্যাদি। কান দেবেন না। যাক আপনি এবার বীর দর্পে এগিয়ে বাংলার অন্যতম প্রতীক হিসাবে গনিত হবেন।

এখন ভাগ্য সুপ্রশন্ন থাকলে তবেই এই দৃশ্য অবলোকন করতে সমর্থ হবেন। নতুবা খিস্তিই খাবেন।

বিধিসম্মত সতর্কীকরণ: বাচ্চা বা বিরোধীদলের লোকেরা এটার প্রচেষ্টা করবেন না। বঙ্গশ্রী তো মিলবেই না উপরন্তু কুণালধাম অনিবার্য। আর শাষক দলের হলে, নিদেনপক্ষে ইশকুল পরিচালন কমিটির সেক্রেটারি পদ বাঁধা। সাজা হলেও বড়জোর মদনধাম। আর যারা গবেষনামূলক ভাবে এটা করবেন, তাঁরা যেন অবশ্যই প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয়ের হন।

###উন্মাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। গুজবে কান দেবেন না। কারন এটা শাষকদলের এথিক্সের মতন, বাস্তবে যাহার উপস্থিতি নেই। শুধুই অভিজ্ঞানমূলক, ফলিতবিদ্যায় প্রমানিত নয়।

১৫-১১-২০১৪

Saturday, 8 November 2014

তিস্তা পাড়ের প্রেম


তিস্তা পাড়ের প্রেম



শ্রেয়সী, কত দিন তোকে এই নামে ডাকিনি আমি, 
যদিও তুই ওই ডাকে দিসনি কভু সারা, 
হয়তবা তুই জানিসই না, এমনতর নামের হদিশ;
কিম্বা চিনিসিই না আমায়, যে তোর প্রেমে পাগলপারা।

সেই কবে ভোরের আলোয় দেখেছিনু তোরে,
এলিয়ে বেনী স্নানের ঘোরে, 
তিস্তানদীর পাড়।
চুইয়ে পরা রুপের ছটায় একটু একটু করে,
সেধিয়ে গেলাম অযাযিতই, তোর মনরেই দোরে,
শ্রেয়সী! তুই কিন্তু আমার।

তুই ফুলের সাথে খেলেছিলি, গেয়ে পাখির সাথে গান,
প্রজাপতির রঙিন ডানায় ভাবনা গুলো এঁকে,
লাজে রাঙা উদিত রবি, দেখে ভোরের বেলার স্নান;
সেদিন হতেই শ্রেয়সী নাম দিলেম আমি রেখে।

অনেক খুঁজেও আরেকটি বার পেলাম না তোর দেখা,
আয় দেখে যা, তোকে ছারা কতটা আমি একা।
নিটোল শরীর, ভরা যৌবন, মায়াভরা চোখ টানা
নিঝুম পাহাড়? নিঝুম বনে? কি তোর ঠিকানা!
নিঝুম মনের প্রেম-উন্মাদ দেবেই সেথায় হানা।
শ্রেয়সী, আমার করিসনে আজ মানা। 

উন্মাদ হার্মাদ
08/11/2014


Saturday, 25 October 2014

নিশি যাপন


নিস্তব্ধ রাত্রীর আঙিনায় একা
কুয়াশার সাথে কোলাকুলি ;
বিমূর্ত স্মৃতির দল জটপাকাচ্ছে,
থাকবো বলেই আছি, অন্ধ মনের গলি।

পর্নমোচীর পাতার মত হলুদ রস জমেছে,
ভাবনার আনাচে কানাচে, শিরায় শিরায়;
টুপটাপ হিম ঝরে চলেছে, অলক্ষ্যে
চিরহরিতের অসহ্য অট্টনাদ, হাওয়ায় হাওয়ায়।
নিষ্পলকে তারার দৃষ্টি, জ্বলছে রাতের পাখীও,
শিউলিবাড়ি প্রস্তুত, ঝরে পরার অপেক্ষায়;
হয়তো অনতি দূরেই ভোর, অমাবস্যার চাঁদ,
ফ্যাকাসে দেঁতোহাসি, অনিচ্ছার সঙ্গমে সায়।
যাবো বলে কি এসেছিলাম? ইচ্ছেরা কি মৃত!
একটা শরীর ক্ষুধা নিদ্রা তৃষ্ণাহীন ;
একমুঠো স্বপ্ন ধার দিতে পারো? সরল সুদে...
অনন্ত প্রতিক্ষায়, আমি যে তোমাতেই হব লীন।

Sunday, 12 October 2014

নামান্তর


উন্মাদীয় রবিবাসর
**************


একটি সম্পূর্ন উন্মাদীয় ভাবনার ফসল


নামের আমি নামের তুমি নাম দিয়ে যায় চেনা, শিশুকালেই আমরা আমাদের গুরুজন দের নিকট হইতে আমরা এই নাম নামক বস্তুটি পরিচয় হিসাবে সম্পূর্ন বিনামুল্যে পাইয়া থাকি, এটাই সামাজিক নিয়ম, এবং এই নামের মাহত্বেই, এই কোটি কোটি মানুষের ভীরে, একে অন্যের থেকে নিজেদের পৃথক করিয়া থাকে। কিন্তু ইহাতেই এই কাহিনির পরিসমাপ্তি ঘটে না। নিকটাত্মীয় গন তাহাদের নিজ নিজ পছন্দের নামেই ডাকিতে থাকেন। পিতামহ বা তদসম্পর্কীয়, খুড়োমহাশয় বা তদসম্পর্কীয়, মাতুল গৃহে নানাপ্রকারের চেনা অচেনা, তাহাদের নিজ নিজ পছন্দের প্রভুত নামে আমরা নামাঙ্কিত হইয়া থাকি। 

নানা সকল নামের অভ্যন্তরে “ভালো নাম” বা “বিদ্যালয়ের নাম” বলিয়া একটি নাম থাকে, যাহার দ্বারাই সমগ্র বাকি জীবন, পৃথিবীর নিকট সেই ব্যাক্তিটি পরিচিত হইয়া থাকেন। তার শৃষ্ট কর্মের মাধম্যে নির্ধারিত হয়, সেটি সুনাম না বদনাম, কোন হিসাবে পরিগনিত হইবে। মানব তার জীবন ধারার গুণে ভিন্ন ভিন্ন এবং অনন্য। প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব সত্তা বর্তমান, বিদ্বান হোক, বা নৃপতি, বা সনির্বন্ধ প্রার্থী, নিতান্তই  সে তষ্কর বৃত্তিতে যুক্ত থাকিলেও তাহার মাঝে কোন না কোন মৌলিকতা থাকবেই। ইহাই পরমেশ্বরের সৃষ্টির মাধুর্য।

কুকার্যে নিযুক্ত ব্যাক্তিরা কখনো কখনো পিতৃদত্ত নামের পরিবর্তন করিয়া থাকেন। খুব সীমিত সংখ্যক মানব শুধু মাত্র “বিশেষ” নাম পছন্দ হইয়াছে বলিয়া ও পিতৃদত্ত নামের পরিবর্তন ঘটাইয়া থাকেন, চলচিত্র তথা অভিনয় শিল্পের সাথে যুক্ত কেহ, কেহ জ্যোতিষ এর পাল্লায় পড়িয়া ভবিষ্যত সুরক্ষার তাগিদে, কোনো অনাথ নিজস্ব পরিচয় ফিরত পাইয়া, কেহ বিবাহসুত্রে, কেহ আবার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার্তে। উন্মাদীয় মতে কোন ব্যাক্তিই নিজ নাম হঠাৎ পরিবর্তন করিয়া মানসিক সুখ পাইতে পারেন না, নিতান্ত নিরুপায় হইয়াই উহা করিয়া থাকেন, যদিও ইহার মধ্যে ব্যাতিক্রম অবশ্যই রহিবে।

মহান ব্যাক্তিরা অবশ্য সমাজ বা রাষ্ট্র হইতে বিশেষ সম্মানিত নাম লভিয়া থাকেন। পরবর্তী সমগ্র জীবন, এমনকি মৃত্যুর পরও তাঁরা সেই নামেই অমর হয়ে যান। অবশ্য অধিকাংশ পিতাশ্রীর আপন কিশোর সন্তানের উদ্দেশ্যে, মুখনিঃসৃত সুললিত বানী সহযোগে প্রায় সারাটা জীবনই একবিশেষ ধরনের সার্বজনীন নামেই অবিহিত হয়ে থাকেন। যথা বরাহনন্দন, গাঁড়ল, ইত্যাদি ইত্যাদি।  

আর এক বিশেষ ধরনের ব্যাক্তি গন, স্বেচ্ছায় নাম পরিবর্তন করিয়া থাকেন, যাহারা মুলত লেখালেখির সহিত যুক্ত। এখানে উল্লেখ্য যে, আমি কিন্তু শুধু মাত্র বিখ্যাত লেখক গনদের উল্ল্যেখ করিতেছি না। সকল প্রকার লেখক দের কথাই বলিতে চাইছি, যাহারা প্রতিষ্ঠা পাইয়াছেন, তাহারা তো প্রাতঃস্বরনীয়। বাকি যাহারা ইহাকে পার্শ্ব পেশা হিসাবে লইয়াছেন, বা যাঁহারা ব্যার্থ হইয়াছেন, যাঁহারা নানান প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নতুন শিকড় অন্বেশনের তরে অহরহ প্রচেষ্টা চালাইতেছেন, তাহাদের নাম সাধারন মানুষ না জানিলেও, নাম পরিবর্তনের সাধু প্রচেষ্টা তাহারাও করেছিলেন।

তবে সে যাহাই হউক, আমার আজিকের মুল বিষয় হইলো এই “ছদ্মনাম” যাহাকে ইংরেজিতে “পেন নেম” নামে অবিহিত করা হইয়া থাকে।

কেহ বা আমাদিগের ন্যায়, বাস্তবে যাহাদের কোন অস্তিত্বই নেই, যাহারা মূলত অন্তর্জাল বিপ্লবী, শখের লেখক। ইন্টারনেট না এলে যাদের নাম নিজেদের কাছেই অজ্ঞাত হহিয়া যেত।শখের লেখা লিখতে এসে দুইচারিজনে সেই লেখনি নামের বমনিচ্ছার অন্তিমসংস্কার সম্পন্ন করিবার তরে, মদীয় লেখনীর পাঠোদ্ধার করিয়া ধন্য করেন। নামের মায়ায় আমরা লেখা ছারতে অপারগ, আবার আমাদেরকৃত লেখনি, প্রথম দিনের শ্মশানযাত্রী হয়, কারন যে মাত্র দু এক জন কষ্টপাঠ করেন, তাহারাও যে দ্বিতীয় আরেকটিবার ছুঁয়ে দেখেননা। 

আমরা কি নীললোহিত, কালকূট, বনফুল, যাযাবর, মৌমাছি প্রমুখ নামগুলো সম্বন্ধে কম কিছু জ্ঞাত আছি!! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ বসু, বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়, বিনয় কৃষ্ণ মজুমদার, বিমল ঘোষ নাম গুলো কি অযোগ্য!! সমাজে অচল!! তাহারা কি খুনে আসামি ছিলেন!! তাহলে তারা কেন ছদ্ম নামের আড়াল গ্রহন করিয়াছিলেন।

শুধু মাত্র সাহিত্যের মাধুর্যের টানে।

এই ছদ্ম নামের কারন বিভিন্ন বিভিন্ন হইতেই পারে। উন্মাদীয় মতানুসারে তিন ধরনেরঃ-

১) ভিন্ন ভিন্ন পেশার ব্যাক্তিত্ব, সাহিত্যের জগতে পদার্পন করিলে, এই দুই টি স্বত্তার ভিতর , আসল পিতৃদত্ত পরিচয় ও পেশা টি কে, এবং লেখক মনন টি কে স্বতন্ত্র ভাবে রক্ষা করিবার প্রয়োজনের নিমিত্তে নামের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়। সেই ব্যাক্তি নিজ পেশা ক্ষেত্রে সুখ্যাতি বা কুখ্যাতি (অল্প, বা বিস্তর যাহাই হউক না কেন) নিশ্চই লভিয়াছেন যাহা তার পিতৃদত্ত স্বনামে রচনা সৃষ্টিতে অন্তরায় হইতে পারে সুতরাং এই ভাবনা থেকেও অনেক ছদ্মনামের সৃষ্টি হইয়া থাকে। 

স্বাধীন রচনার কোন নির্দিষ্ট ধারা হয় না। জীবন ধারার সুক্ষ সুক্ষ অনুভুতি গুলো, সুন্দর ও নিপূন ভাবে তাদের লেখনিতে ব্যাবহারকরার দরুন কেহ কেহ নির্দিষ্ট ধারার রচনা লিখিয়া খ্যাতি লাভ করিয়া যান। এখন সেই সমস্ত রচনা,  কাল্পনিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, যুক্তিবাদি, পৌরাণিক, ক্রীড়া বিষয়ক, সমকালীন ইত্যাদি নানাধরনের প্রজাতির হইতেই পারে। 

একটি নির্দিষ্ট রচনা সকলেই যে তুষ্ট হইবেই তাহার কোন নিশ্চয়তা নাই, সমালোচনামূলক হইলে, বিরুদ্ধ মতের প্রকাশ থাকিলে, এবং তাহা হইতে কেহ আঘাত পাইলে, সেই ব্যাক্তি বা সম্প্রদায় প্রতিহিংসা পরায়ন হইয়া ব্যাক্তি জীবনের ক্ষতিসাধন করিতে পারে।অনেক ক্ষেত্রেই অত্যচারি শাসকের ভয়ে এমনটা হামেশাই পরিলক্ষিত হয়। সেই ভীতি ও রোষানল, ছদ্মনাম গ্রহনের ক্ষেত্রে অনেক সময় কারক হইয়া থাকে। আমা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রম্যরচনার লেখকেদিগের মধ্যে, যারা বেশ ভালই পরিচিতি লভিয়াছেন ইতমধ্যে, স্বজ্ঞানে ছদ্মনামের মায়াজাল ব্যাবহার করিয়া থাকেন। পরিচিত বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি, আপন স্ত্রী পুত্র, নিজ সমাজের কাছে শুধুমাত্র লজ্জা গোপনের উদ্দেশ্যেই এই পদ্ধতির অবলম্বন। খুজিলে দেখা যাইবে যিনি হয়ত পাঠক মহলে " রমন রায়" নামে ভীষন ভাবে জনপ্রিয় মুচমুচে রচনার লেখক, দেখা যাইবে তাহার আসল নাম কানাইলাল পাকড়াশি, ইত্যাদি।

২) স্বনাম ধন্য লেখকেরা তাহাদের ভিন্ন ভিন্ন  ধারার রচনার মধ্যে স্বাতন্ত্রতা আনিবার জন্য , অথবা কখনো কখনো লেখনির গুন পরখ করিবার তরে ছন্মনাম ব্যাবহার করিয়া থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে জনপ্রিয় কবি বা সাহিত্যিকের নামে প্রকাশিত, কোন সাধারন মানের রচনাও সমাদর লাভ করিয়া যায়, লেখকের পূর্বপরিচয়ের সুবাদে। তাই সেই প্রতিষ্ঠিত ও আত্মবিশ্বাসী কবি বা লেখকে, নিজের যোগ্যোতা যাচাই করিবার এক মস্ত বড় সুযোগ করিয়া দেয় এই ছদ্মনামের আড়াল। অনেক ক্ষেত্রে বহু প্রকাশক সংস্থাও ভিন্ন স্বাদ সৃষ্টির জন্য লেখককে ছদ্ম নাম ব্যাবহারে উদ্দীপিত করিয়া থাকেন।অনেক বৃহৎ আন্তর্কাজতিক কোম্পানি যেমন “ব্রান্ড” এর রচনা করিয়া থাকেন, স্বনামধন্যরাও সেই সৃষ্টিশীলতার মধ্যে নিজেকে ঢলিয়া দেন।

৩) কখনো কখনো কোনো লেখক একটি নির্দিষ্ট ঘড়ানার লেখনির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকিয়া যান। অন্য কিছু ভাবনার লেখনি উদ্ভাবন করিলেই, পাঠক কুল হয়তো তাহাকে নিরাশ করিইয়া দেন। বা পূর্বের কোন নেতিবাচক লেখনীর দরুন সমাজে ঘৃণিত হইয়াছেন, ইত্যাদি। সেক্ষেত্রে এই ছদ্মনামের আড়াল, তাহাকে নতুন করিয়া, উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয়ে, পাঠক মহলে পরিচিত লভিতে  সাহায্য করিয়া থাকে। উদাহরন স্বরুপ উল্লেখ করা যাইতেই পারে যে, এরিক আর্থার ব্লেয়ার বলিলে অধিকাংশ জনগনই ভাবিবেই, ইহা নিশ্চই আন্দামানের পোর্টব্লেয়ার এর নিকটবর্তী কোন স্থান হইবে, নতুবা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের কোন আত্মীয়। কিন্তু মজার ঘটনা হইলো, বিখ্যাত লেখক জর্জ অরওয়েল আর এরিক আর্থার ব্লেয়ার একই ব্যাক্তি। যিনি পশুখামার নামক পৃথিবী বিখ্যাত নাটকের রচয়িতা। জর্জ অরওয়েল নামটাই হল ছদ্মনাম।

আমাদের বর্তমান কাল হইলো তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যাবস্থার স্বর্নযুগ, আজকাল ছাপা পুস্তকের ব্যাবহার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাতিরেকে, খুবই নগন্য। তথ্য আদানপ্রদান হইতে ব্যাবসায়িক ও দৈনন্দিন কর্ম সকলই “কম্পিউটার আর সফটওয়্যার” তথা ইন্টারনেট এর সুবিশাল দুনিয়ায় আটকা পড়িয়াছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামও উদ্ভূত হইয়াছে, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির ন্যায়। এই সকল ক্ষেত্রে একজন ব্যাক্তি বিভিন্ন নামে (স্বনামে সহ) “একাউন্ট খুলিয়া থাকেন।

এক্ষেত্রেও সেই নানা প্রকারের কারন।কিন্তু তাহার এতো বিশাল ব্যাপ্তি, যে, আমার মত উন্মাদের পক্ষে সেই সকল কারন লিপিবদ্ধ করা, একান্তই অসাধ্য। তথাপি উপরোল্লেখিত ছদ্মনাম গ্রহনের সকল কারন গুলি, এই ক্ষেত্রেও যে সমান ভাবে প্রযোজ্য, তাহা বলাই বাহুল্য।

উন্মাদীয় মতে “ নকল আদরা বা Fake Profile” বলিয়া কিছুই আসলে হয় না। কোন না কোন ব্যাক্তি এই একাউণ্টটিকে পরিচালনা করিতেছে, তাহার উদ্দেশ্য সাধু অসাধূ যাহাই হউক না কেন। ফেক বলিয়া যদি কিছু হইয়া থাকিয়া থাকে, তাহা হইলো তাহার উদ্দেশ্য, সেই ব্যাক্তির মানসিকতা। এই বিষয়ে গবেষনা তথা বিতর্কের প্রচুর অবকাশ লুকাইয়া আছে। আবার কোন এক নিষ্কর্মা দিবসে, এই বিষয়ের উপর। উন্মাদীয় ভাবনা প্রসুত আলোচনার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা করা করা যাইবে।

সর্বশেষে বলি, উন্মাদ হার্মাদ নামটিও আমার একান্ত পছন্দের একটি নাম, যাহা কিনা নিজে নিজেই প্রদত্ত। ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যরো কে দেখে অনুপ্রানিত হইয়া গ্রহন করা নাম, অনেকের নানা কৌতুহল, ঘৃনা, ভালোলাগা, ভালোবাসা, হাসি, ঠাট্টা, প্রেম, অভিমান, পুর্বরাগ, কলহ, অবিশ্রান্ত গালিবর্ষন, আমিষ নিরামিষ নানা প্রকারের পদের মধ্য দিয়ে দুই বর্ষ অতিক্রান্ত করিলাম। সকলের আশির্বাদ, প্রশ্রয়, আর ভালবাসার মেঘচ্ছায়ায় সমালোচোনার কেদারাতে আগামীর অন্তর্জালীয় জীবন উত্তরন করিবার প্রতিশ্রুতি দিলাম।

Thursday, 9 October 2014

পোতিবাদ-১

কোথায় গেলন গো সবাই,
স্লিভলেস চোখে রোদচসমা পরা মাসিমা বুদ্ধিজীবি, বগলের লোমে বার্গেন্ডিকালার করা পুং বুদ্ধিজীবি, ইন্ড্রাষ্টিতে কল্কে না পাওয়া শিল্পী বুদ্ধিজীবি, সরকারি কোটার ঝিঙ্কু বুদ্ধিজীবী, বা সান্ধ্য টেলিভিসনের খেউরে স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবিদের দল, আরে হ্যাঁগো তোমাদেরই বলছি, ওই যারা সাপের গালেও চুমুখান, আবার বেদের গালেও।
কলকাতা আমাদের প্রতিবাদের শহর। এই তো দু দিন আগেও একটা পোতবাদী মিছিল হলো। নিজের পাদে গন্ধ কেন! এই জন্য তো মিছিল করাই যায়।

গোমাংশ বন্ধের জন্য সেকুর আর বুদ্ধিজীবির দল বিফ ফিষ্ট , সোশ্যাল মিডিয়ায় বিফ ডিসের সামনে সেলফি স্থাপন, আরো কত্তোকি হলো।
উত্তরপ্রদেশে একটা পরিবার কে বিবস্ত্র করে অত্যাচারের ছবি এখন আর কারোর অজানা নেই। কিন্তু শহরের প্রতিবাদ কই? প্রতিবাদও কি শেষে গরিবগুর্বো কে করতে হবে? আচ্ছা মুশকিল... ওরা পেটের ধান্দা করবে ? না পোতিবাদ!!
কোলকাতার রাস্তায় একটা উলঙ্গ প্রতিবাদ মিছিল করলে কেমন হয়? যেখানে সবাই উলঙ্গ হয়ে হাতে মোমবাতি নিয়ে মিছিলে হাটবেন। (শুধু মাত্র হাতেই মোমবাতি এলাও, শরীরের অন্য কোথাও থাকলে সেটা অশ্লীলতা বলে গনিত হবে) । রমনে অব্যাবহৃত মোমবাতি গুলো জ্বালালে সবচেয়ে ভালো হয়।
বুদ্ধিজীবিরা, একটু ভেবে দেখবেন, জানি একটু কেমন কেমন শোনাচ্ছে, কিন্তু ভুলে যাবেন না, আপনারা কিন্তু বুদ্ধিজীবি।

Monday, 29 September 2014

উন্মাদ নামা ~ ১৬

কর্ম বা কার্য হইল জীবনিশক্তির বাহ্যিক প্রয়োগ। স্থবির ব্যাতিরেকে প্রতি প্রানশক্তি বিশিষ্ট বস্তু মাত্রই কিছু না কিছু কর্ম সম্পাদন করিয়া থাকে। তাহা সৎ কর্ম বা অসৎকর্ম উভয়ের সুযোগই সমান। জ্ঞান, মেধা, বিদ্যা, বুদ্ধি, অনুকুল পরিস্থিতি ও যোগ্য পারিপার্শ্বিক সহযোগিতার সঠিক সম্মেলন ঘটিলে কার্য সফলকাল বলিয়া ধার্য হইয়া থাকে।


সফল ব্যাক্তি বলিয়া আসলে দীর্ঘমেয়াদী কোন বন্দ্যবস্ত হইতে পারেনা, কারন 'সাফল্য' বস্তুটি প্রতিস্থাপন যোগ্য ও চুরান্ত আপেক্ষিক।


বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ধারাবাহিকভাবে সফলতার রেখাচিত্র অঙ্কনকৃত ব্যাক্তিকেই সফল ব্যাক্তি হিসাবে মান্য করা হইয়া থাকে।


আত্মপ্রিয় মনুষ্যপ্রজাতি অত্যন্ত তোষামোদপ্রিয়। সেই হেতু সেই ধারা বজায়রাখার নিমিত্ত কিম্বা গতানুগতিক একটা প্রবাহমান ধারার মাঝে রহিবার হেতু পশ্চাদগামী হইবার কোন কারন থাকে না। সুতরাং আত্মতুষ্টি ও অনুভব ক্ষমতার স্বল্পতার কারনেই বহুক্ষেত্রে অনেক কার্যই কাঙ্খিত লক্ষ্যভেদ করিতেতে সক্ষম হয় না, তাহা বলিয়া সেই সকল ব্যাক্তিবর্গের গরিমাও কোন অংশে কম হইতে পারেনা।

Sunday, 28 September 2014

***ছেলেবেলা***


*****ছেলেবেলা*****



সেটা নব্বই এর দশকের এক্কেবারে গোড়ার কথা।

বাড়ির অদুরেই ম্যারাপ বাঁধা হয়েছে। বাবার খুড়োতুতো এক বোন, মানে আমার এক পিসির বিবাহ উপলক্ষ্যে। সকলেই কমবেশি শশব্যাস্ত। বাড়িতে লোককুটুমে গমগম করছে। আমাদের সেই বৃটিশ কালের কড়িবরগার উঁচু উঁচু বাড়ি, বিয়ে উপলক্ষে কিছুদিন আগেই জানালা দরজায় আলকাতরার নতুন লেপ পড়েছে। জানালা ফাক গলে ফিনিকি দিয়ে ছিটকে পরা রোদ্দুর, নতুন এলামাটি করা দেওয়ালকে যেন আরো চকচকে করে তুলেছে।

তুতো ও সহোদরা ভাইবোনদের সাথে তখন নিয়মিত কানামাছি, বা কুমির ডাঙ্গা বা বিকালে গোল্লাছুট, হিঙ্গেডারি খেলা লেগেই থাকতো। তখন বাবা কাকারা সবে মাত্র আলাদা হয়েছে, হাঁড়িতে। কিন্তু কড়া-খুন্তির ওই সময় টুকু বাদ দিলে মেজকাকি মায়ের মাথায় প্যারাসুট নারকেল তেল লাগিয়ে দিতে দেখেছি, বা মা, কাকার ১ বছরের কন্যাটির জন্য রসুন পুড়িয়ে কাজললতায় নতুন কাজল পেরে দিতেন। শীতের সময় ঠাকুমা সহ মা কাকিমারা একসাথে আতপ চাল কুটতে যেতেন, একসাথেই পাড়ার ঢেঁকিতে। কাঁথা পাড়তেন, পরনিন্দা পরচর্চাও মন দিয়েই করতেন, একসাথে বসে। মাঝে মাঝেই ঝগড়াও হত, তবে সেটা ওই ২-৩ দিন স্থায়ী হতো, তারপর আবার... যে কে সেই। তাই আমাদের ভাইবোনেদের ভিতরে কখনোই নুন্যতম দুরত্ব ছিলো না।

সাতসকালে সক্কলের আগে ঠকুমাই নিদ্রাভঙ্গ করতেন, একে একে মা কামিমাদের পালা। তার পর বাবা কাকারা। এরপর আমরা ও সর্বশেষে দাদু। অনিদ্রা রোগের কারনে উনি ঘুমাতেনই ভোরের দিকটাতে।

ছোট বেলায় আমার অদ্ভুত অদ্ভুত শখ ছিল। যেমন কাঁচ ভাঙ্গা, ড্রেসিং টেবিল বা খরখরি যা ই বা হোক না কেন। নতুন পর্দা বা বিছানার চাদর কাটা। রাগ হলে, বাবার দাড়িকাটার রেজার দিয়ে পোষ্য মেনি বা ভুলোর লোম চেঁচে দেওয়ার মত বৈপ্লবিক কর্মকান্ডও ছিলো। নিজের হাত পায়েরও লোম চেঁচেছি বহুবার। সন্ধ্যাবেলা যতদিন না জলযোগ করেছি, তার থেকে বেশী প্রহারেনঃ ধনঞ্জয় হয়েছি। একবার তো আমাদের গাই টার লেজের লোমগুলোই কাঁচি দিয়ে জাষ্ট উড়িয়ে দিয়েছিলাম। বাবা খুব একটা মারধোর করতেন না, মা একাই যাথেষ্ট ছিলেন। সেই গাইয়ের বাছুর বাঁধার দড়ি দিয়ে বেধেই প্রহার হয়েছিল। তবে ত্রাতা হিসাবে ছিলেন আমার একমেদ্বিতীয় পিতামত- দাদু। ধুম্রপানের মত বহু স্পর্ষকাতর বিষয়েই যিনি আমার হাতে খড়ি দিয়েছিলেন সযত্নে।

চৈত্র বৈশাখ মাসে আকাশে কালো মেঘের দেখা দিলে, হাওয়া মোরগের মত আমাদের ও আবহাওয়া সেন্স বেশ বলে দিতো, ঝড় উঠবে কি না। সেই তখন মা এর মানা করার আগেই ভোঁ ভা দৌড়, আম বাগানের দিকে। কশি- আধপাকা-হড়হড়ে কাঁচা আর কোকিলে পাদা আমের দারুন ভোজ চলতো। বাড়িতে কিছু নিয়ে আসতাম, তবে তাতে পিটুনিটাই পিঠে পড়তো, বেয়াড়া পনার জন্য। কোকিলে পাদা আম গুলোর বিশেষত্ব ছিলো যে, ওগুলো বাকি সব আমের থেকে আগে পাকতো, এবং একটা অংশ কোন কারনে থেঁতলে কালো হয়ে যেত। বড় হবার পর সেই সব আম গুলোই মুখে নিয়ে দেখেছি, এত্তো টক... যে বাঁদরেও ছোবে না। অবশ্য সে সময় আমরা বাঁদরের বাড়াই তো ছিলাম। তাতে আর সন্দেহ কি!

স্কুলে অবশ্য একা একাই যেতাম, ভাই অন্যস্কুলে বোনেরা গার্লস স্কুলে পড়তো। সব্বাই বাসে বা সাইকেলে চড়ে যেত। স্কুল ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল। আমি হেঁটেই যেতাম, কারন ক্লাস ৫ পর্যন্তই চারটে সাইকেলের বলি চড়িয়েছিলাম সুতরাং বাড়ির কথা মত “বুদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আর নয়”। শুধু সাইকেলই বা কেন? জুতোজোড়াও আমার সাথে সমানে বিট্রে করে গেছে মাধ্যমিক পর্যন্ত। ক্লাস ৪ থেকে ক্লাস ৯ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় কমবেশি ৬ মাস খালি পায়েই স্কুল গেছি। বই খাতা পেন্সিল যে হারাই নি তা নয়, কিন্তু তাতে তো আমি চিরদিন খুশিই হয়ে এসেছিলাম।

স্কুল বাক্সে টিফিন থাকতো না। সাথে থাকতো একটা বাঁকা গাছের ডাল, চাঁচাছোলা ও সামনের মাথাটা সাপের ফনার মত একটু চওড়া ও বাঁকানো। ওটাই তো আমার বা আমাদের খেলার সরঞ্জাম ও অস্ত্র। তখন প্লাস্টিকের বলে ক্রিকেট খেলার খুব রেওয়াজ ছিল। যে বল গুলো আবার ওজনের হিসাবে বাজারে পাওয়া যেত। ১০০ গ্রাম, ৬০ গ্রাম, ৪০ গ্রাম ইত্যাদি নানা মাপের। ওই বলের আঘাতের দাগ এখনো শরীরের বহু স্থানে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। টিফিনের সময়টা আসতে যা দেরি ছিল, ব্যাস আমাদের সময় শুরু হয়ে যেত। কোন রকমে পঞ্চম পিরিয়ড টা শেষ করেই আবার শুরুহয়ে যেত। সন্ধ্যা না হওয়া পর্যন্ত স্কুল মাঠেই চলতো খেলা, এ্যালুমিনিয়ামের স্কুল বাক্স দিয়েই তো উইকেট হতো বেশিরভাগ দিন। এছারাও সবাই থাকলে কুমিরডাঙা, চোর-পুলিশ-ধাপ্পা, কানামাছি, ডাংগুলি, সামনে একজন নিল্ডাউন হয়ে তার পিঠের উপর দিয়ে জাম্প আর কত কি... আর একা একা থাকলে! সাইকেলের টায়ার চালানো, ঘুড়ি উড়ানো, অনির্দিষ্টকাল সাঁতার কাটা, ছিপ ফেলা, লাট্টু আর তার লেত্তিনিয়ে কেরামতি... সে এক এলাহি খেলার আয়োজন।

সন্ধ্যাবেলা পড়তে বসতাম সাধারনত পিসিদের ঘড়ে, আমরা সব তুতো ভাইবোন মিলে। পিসিদের ঘরটা আমাদের আর কাকাদের ঘরগুলোর মাঝে ছিল, ফুল পিসি আর ছোটোপিসির তখনো বিয়ে হয় নি। ওনাদের কাছেই ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছি। হ্যারিকেনের নরম আলো যেন চোখে সুড়সুড়ি দিতো, আধাঘন্টার মধ্যেই যাবতীয় শক্তি দিয়ে ঘুম, চোখের সাটার টেনে বন্ধ করে দিতে চাইতো, মায়ের পিটানির ভয়ে আমিও আলাদিনের জ্বিনের মত চোখ টেনে টেনে তাকিয়ে থাকার চেষ্টা করতাম। ওই জেগে থাকাই হতো, পড়াশোনা অশ্বডিম্ব। ভ্রাতা ভগিনীগণের ক্রম-নালিশ থেকে পরিত্রান পেতে, বুকে ভর দিয়ে, উবু হয়ে পড়তাম, মাথা নিচু করে। তাতে করে চোখটা আর দেখা যেত না। আবার কখনো কখোনো হ্যারিকেনের বাতিটা লম্বা করে দিতাম, স্বাভাবিক ভাবেই কালো ধোঁয়া কাঁচে কালির পোঁচ লেপে দিতো। তাতে আলোর উজ্জ্বলতাও কমত আর আমার চোখের দিয়ে নজর করতে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হত। এর পর একটু পাতলা পাতলা ঠ্যাঙানির সাথে সাইড ডিস হিসাবে মায়ের হাতে, অল্প ভাত খেয়েই দে ঘুম। একটু খানি প্যান্ট না ভেজা পর্যন্ত, হিসিও করতে যেতাম না।

ম্যারাপের ব্যাপার টা যখন ঘটেছিল, তখন ক্লাস ফাইভের হাফ ইয়ার্লি এক্সাম শেষ হয়েছে সবে। এই অনুষ্ঠানের দিন গুলোতে অবভাবকদের শাসনের নিয়মজাল প্রায় থাকতো না বললেই চলে। ওই সময় জেনারেটর আনা হত বড় অনুষ্ঠান হলে, আর ছোট হলে হ্যাজাক। গোয়ালের পাশে কলপাড়ের গা ঘেঁসে বিকট শব্দে সন্ধ্যা নামতেই জেনারেটর চালু। আমাদের পাকা রাস্তার ধারের বাড়ির একতলার ছাতেও ম্যারাপ বাঁধা হয়েছে, বিবাহ অনুষ্ঠানে আগত আত্মীয় কুটুম্ব ও পারিবারিক পুরুষ সদস্যদের রাত্রি বাসের স্থান।আমিও পাড়াতুতো কয়েকজন সমবয়সীদের সাথী করে ওই খানেই রাত্রি বাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারন খুব পরিষ্কার। রাত্রে ভিডিও দেখানো হবে। কাকার দলই সেই বন্দব্যাবস্থা করেছিল। মায়ের তীব্র আপত্তি অবশ্য কাকাদের কাছে টেকেনি, তবে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছিল যে আমি ঘুমিয়ে গেলে ঘরে পৌছে দিতে হবে।

তখন আনন্দ আর দেখে কে!! সম্পূর্ন সঙ্গত কারনে। অন্যান্য বাড়িতে ব্যাটারি চালিত টিভি থাকলেও, ওই ব্যাপারটা আমাদের বাড়িতে? জাষ্ট অকল্পনীয়। ঘরে টিভি আছে, এ কল্পনা করার থেকে, শক্তিমান আর ডাঃ জয়কাল একসাথে বসে তাস খেলছে, সেটা কল্পনা করা বেশী সহজ ছিলো। বছরে ২-৫ বার মামা-মাসি বা পিসির বাড়ি গেলে ওই কদিন সারাদিন খেলা করার পাশাপাশি দুমারে চলতো টিভি ভক্ষন। ক্রিকেটে দেখার ভুত তখনো মাথায় চড়ে বসেনি। ঠাকুমা কাকিমা রা অবশ্য তখন চিত্রহার- শ্রীরামকৃষ্ণ, শুধু প্রিয়তমা আর শুধু তোমার জন্য বা জননী বা জন্মভূমির প্রেমে পাগল। হিন্দি সিরিয়াল বলতে মহাভারত ও অবশ্যই শক্তিমান। আর মুঙ্গলিকে অস্বিকার করি কি ভাবে? বা আলিফ লাইয়া। মাঝে মাঝে বাংলাদেশী চ্যানেল ধরলে “মিঠু-মীনা” কার্টুনও দেখার সুযোগ মিলতো। কিন্তু সিনেমা? নৈব নৈব চ। ছুটির দিনের দুপুর গুলোতে কাকার টিভির ঘর থেকে ভেসে আসা সেই আওয়াজ “ চুপি চুপি পাগল হাওয়া এসে বলে গেলো, প্রিয়তমা ফিরে আসবে আবার, বলবে কিছু কথা ভালোবসার”

তবে রেডিও টা চলত। কোলকাতা ক থেকে অল ইন্ডিয়া রেডিও বা বিবিধ ভারতী। সেটা সকাল সন্ধ্যে দাদুর ঘরের খোলা জানালা দিয়ে ভেষে আসতো, আর খুব গরম করলে আমাদের ওই একতলার ছাতে ক্যাম্প খাট বিছিয়ে দাদুর রেডিও চালু হয়ে যেত। আর তার সাথে সুর তাল হীন দাদুর স্বরচিত মাথামুন্ডুহীন গান।। “একটি তারা দুটি তারা, তারার ভাই বাঘমারা” এই গোছের। এটাই বিভিন্ন সুরে রোজ গাইতেন উনি। ওখানেই নানা ধরনের গান শুনতাম। এই গানটাও ওখানেই শোনা। “বাহো মে বোতল, বোতল মে...” হিন্দি মানে রাষ্ট্রভাষা জানতাম না, জানার প্রশ্নও ছিল না। তাই গানটার মানেও জানতাম না, চেষ্টাও করিনি, কোন সিনেমার গান সেটাও জানতাম না। কিন্তু বড্ড ভালো লাগতো ওই গান টা শুনতে। কেমন যেন নাচ পেয়ে যেত, শুনলেই। আরো বেশ কয়েকটা গান ছিলো, ওই ভালো লাগার লিষ্টে। পিসিদের মুখে কিছু গান অবশ্য ছিলো। আশিকী সিনেমার। সেই ধরনের ড্রেসও নাকি পড়তেন। আমার অবিশ্যি ওই গান ভালো লাগতো না। আজ বুঝি সেই বয়সে ওই ভালো লাগাটাই আশ্চর্যের ছিলো।

সেই রাত্রে ছাতের ম্যারাপের ভিতর রাত নটা নাগাদ ভিডিও চালু হলো। গায়ে হলুদের রাত, কাল বিয়ে। ওমা... শুরুতেই গোলমাল। অনেক প্রচেষ্টার পর সাথের ছেলেটি খান দুয়েক ভিসিআর মেসিন পালটে আধা ঘন্টা পর ফের চালু হলো। সবার সেকি উৎকণ্ঠা। একদম নতুন একটা সিনেমা এসেছে, মাত্র বছর তিনেকের পুরোনো। আমাদের মফঃস্বলে ওটাই যদিও শুভমুক্তি। ওই শুরু রাতে প্রথমে ভিসিআর মেসিনে চালু হলো “ছোটো বউ”। সে কি ভিড় মানে মা কাকিমা থেকে শুরু করে পাড়াতুতো বিভিন্ন বয়সী স্ত্রীলোকের। সে রাত্রে আমার ঘুমেরা যেন নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছিলো। কান্নাকাটির সে এক মহাকুম্ভ। সকলের সাথে মিলে আমিও খানিক কাঁদলাম। যাক শেষ পর্যন্ত ওই সিনেমা শেষ হলো। এর পর হিন্দি সিনেমা চালানো হবে। মা কাকিরা সহ বেশিরভাগ স্ত্রীলোক শুতে গেলেন। আমি কিন্তু ঠায় বসে।

পরবর্তী সিনেমার নাম জানি না, যদিও সেটার দরকারও ছিলো না। যা ই হতো না কেন সেটাই তো দেখতাম। সিনেমা চালাতেই দেখলাম যুবক ছেলে ছোকরার দলের সে কি উল্লাস। সিটি ফিটি মেরে সে এক পরিস্থিতি। তার উপরে ওদিকে রাত প্রায় বারোটা। ছেলেদের ভীড়টা একটু বেড়ে গেলো। কয়েকজন তো গুরু গুরু বলে মাঝ রাত্রে এমন চেল্লানি জুড়ে বসলো যে , নিচেথেকে জ্যাঠার বাঁজখাই গলার আওয়াজকে প্রকট করে দিলো।

বেশ খানিক গনেশ বন্দনার পর সিনেমা শুরু হলো। প্রথমেই নাম দেখাবে। তাই হিসি করতে গেলাম। এসে বসতেই দেখি পর্দার আড়াল থেকে একটা মুখ বেড়িয়ে এলো। কপালে লাল টিপ, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, আর একটা অপার্থিব হাসি। চোখে ধাঁধাঁ লেগে গেলো। সেই প্রথম কাওকে দেখে বুকটা ধড়াস ধড়াস করে উঠলো। নাম জানিনা ওই মেয়েটির। মধুকাকাকে শুধাতে বললো ওটা নায়িকা, নাম মাধুরী। বেশ অনাগ্রহের সাথেই বললো। বললো একটু ওয়েট করতে, খানিক পরেই নাকি গুরু আসবে। আমার চোখ থেকে মন সবকিছুই অবশ্য ওই মাধুরিতেই আটকে ছিল। পরে অনেক নায়িকা দেখেছি ও দেখছি এবং দেখবোও। ওই প্রেম আর কারো সাথে হয়নি। লাভ এট ফার্ষ্ট সাইট, হে হে হে। হলুদ শিফন শাড়ি পরে, চুলের বিনুনি বুকের কাছে নিয়ে, আনমনে ওইভাবে খেলা করা, বা এ দাদ্দু বলে ডাক... বাস্তবেও কারো প্রতি ওটাই আমার প্রথম প্রেম। কতবার যে মাধুরির পোষ্টার দেখে, লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিয়েছি, তার ইয়াত্তা নেই।

সে যাই হোক গুরুকে দেখবো বলে অপেক্ষায় আছি, দেখি একটা বয়স্ক লোক এলেন আমার নায়িকার কাছে। কাকাকে শুধালাম – ইনিই গুরু? আবার গাঁট্টা খেলাম। হালকা করেই। চুপ মেরে গেলাম। এরপর দেখি একটা সব্জি বাজারের দৃশ্য, ছোটকা কাকা সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমাটা দেখেছে, ও ই চেচিয়ে সব্বাই কে চুপ করে যেতে বললো। আমি তো আগে থেকেই চুপ ছিলাম। দেখি একটা মোটা কালো করে লোক সকলের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে, খানিক পর একজন একজন দিতে অস্বিকার করলো, ওই মোটাটাকে টাকা দিতে, এবং ঘাড় ধাক্কাও দিয়ে দিলো। এর পর সব্বাই চুপচাপ, সবারির নজর সামনের দিকে, টিভিতেও ম্যারাপেও।

টিগ ডিগ ঢুশ... ট্যারারারারারা......
টিগ ডিগ ঢুশ... ট্যারারারারারা......
টিগ ডিগ ঢুশ... ট্যারারারারারা......

বেশ কয়েকবার ওই আওয়াজের পর দেখলাম মুখের এক কোনে জলন্ত বিড়ি, মুখে চোখে কাঠিন্য, গোল সাদা গলা বেগুনি গেঞ্জি, উপরে বোতাম খোলা হালকা হলুদ রঙের জামা পরিহিত কাধ পর্যন্ত চুলের এক মানুষের আবির্ভাব। সাথে সাথেই জ্যাঠার শাসানী উপেক্ষা করে রাত্রির নিঃস্বব্ধতাকে বিদীর্ন করে গগনভেদি সমস্বরে উচ্ছাস...

গু..............................রু...........................

আমি খানিকটা ভিরমি খেয়ে আরো চুপ মেরে গেলাম। বুঝলাম ইনিই গুরু। এর পর মারামারি... রক্ত গরম করা সংলাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। এর মাঝে একটা গানও হয়ে গেলো, তবে আমার নায়িকাকে ওই রান্না বিক্রি করতে দেখে খুব কষ্টই হয়েছিল। দাদুটাকে মদ খেতে দেখে বেশ ঘেন্নাই লাগছিলো। কারন মা ওটাই শিখিয়েছিলেন, মদ খুব খারাপ বস্তু। মদের দোকানের সিড়ি দিয়ে যখন, নাভিকুন্তলের সামান্য উপরে কাঁচুলি পরিহিতা, প্রশস্ত বিভাজিকা উন্মুক্ত করে মাথায় এক বেনী খোপা করে রসিলি বাই যখন নেমে এলেন, কাকাদের মাঝে আমার সে কি লজ্জা। কপট ঘুমের ভান করে শুয়েই পড়লাম। মাঝে মাঝে আড় চোখে দেখছি। গুরু আবার সেই মিউজিকের সাথে এন্ট্রি নিলেন, ভিতরে লাল গেঞ্জি, সাদা প্যান্টের সাথে, স্বচ্ছ সাদা জামা, বোতাম খোলা। বুঝলুম ওটাই গুরুর সিগনেচার স্টাইল। হয়ত ঘুমিয়েই যেতাম, ঠিক তক্ষনি...

“বাহো মে বোতল...”। সব ঘুমের নেশা দৌড় লাগালো। ফের ঠারো হয়ে বসলাম। দেখি ওই রসিলি বাই এর হেলে সাপের মত শরীর এঁকে বেকে , সে কি নাচ। বুকের ভুতর টা যেন খামচে দিচ্ছিল। কমন গান। আগে বহুবার শোনা। নাচতে ইচ্ছা যাচ্ছিলো। বহু কষ্টে সেই ইচ্ছা অবদমিত হলো, দেখলাম গুরুর বিনা বেল্ট পরার ফ্যসন। সাথে ব্রেক ডান্স। খানিক পরে সবাই নাচতে শুরু করলো, আমিই বা বাদ যাই কেন!

খানিক পরেই ক্লান্ত হয়ে গেলাম, তারপর কখন ঘুমিয়ে গেছি খেয়াল নেই। বিয়ে মিটলো। আবাঁর আমার থোর বরি খাড়া জীবন শুরু হলো। তবে তখন থেকে গান শুনলেই সিনেমার নাম আর নায়ক নায়িকার নাম, সুযোগ সুবিধা মতন কাওকে ঠিক শুধিয়ে নিতাম। আর তক্কে তক্কে থাকতাম, পছন্দের গানের সেই সিনেমা কবে দেখা যাবে, তার জন্য।

আজও গানটা অনেক স্থানে পথ চলতি শুনতে পাই। শরীর নাচাতে না পারলেও , মনটা ঠিকিই নেচে উঠে। এটা তো এখন মাতালদের জাতীয় সংগীত সম, আর যে কোন আরঙে এই গান ছারা জৌলুশ অধরা সেটা বলাই বাহুল্য।

এখনো গুরু বললে মিঠুন কেই বুঝি, আর প্র্থম প্রেম??

হা হা হা..................

(উন্মাদীয় বানানবিধী অনুদৃত)
উন্মাদ হার্মাদ

Friday, 26 September 2014

উন্মাদীয় আবেদন

একটি উন্মাদীয় আবেদন।


গরু কে গোয়ালে রেখে, শুয়োরকে খোয়ারেই চড়তে দিন। ওগুলোই ওদের প্রকৃত স্থান। গল্পের গরু ফ্রিজে এলেও, রক্তটা সেই মানুষেরই ঝরে।
মা কি কোন জাতের হয়?
পাঁচটা ভিন্নধর্মের বাঙালী জাতির বাচ্চা যখন স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে মা মা করে প্রথম স্কুলের দিনে কাদে,পারবেন তখন , কোনটা কো ধর্ম-জাতির বাচ্চা , সেই ফারাকটা করে দিতে। পারবেন না, কারন পারা যায় না। ওই বাচ্চারাও যানে না , বড় হলেই জাত নামের একটা জাঁতা কলে বাকি জীবনটা পিষতে হবে।। বড় হলে বুদ্ধি হবার সাথে সাথে আমরা বোধহয় নির্বোধ হয়ে যায়।
পূজা মানে আরাধনা করা, নামাজ মানেও তাইই হবে। কজন করছি? মসজিদে যায় ফতোয়া দিতে বা শুনতে। আর পুজো করি ছূটি পাওয়া যায়, আর আমোদ করার জন্য। এটাই নিশ্চই কোন তর্ক থাকবে না।
বিয়ের পরে আজকের সমাজ যেখানে নিজনিজ জন্মদাদা বাবা-মা কে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন সেখানে ... বাকিটুকু বুঝে নিন।
আমাদের দেশের সংখ্যলঘু মানুষের দল, তারাতো আর বিদেশ থেকে আসেননি, শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি যে, নির্লজ্জ ব্রাম্ভন্যবাদের অত্যচারের শিকার হয়ে তৎকালীন সমাজের নিম্ন(!)বর্গীয় মানুষের দল ধর্মান্তরিত হয়েছিল। সুতরাং তাদের মাঝে যে অশিক্ষা কুশিক্ষার হার বেশী থাকবে এটার মধ্যে আশ্চর্যের কিছু নেই।
মানুষ যেখানে সহজে একটা আধুলি ত্যাগ করতে চায় না, সেখানে এই নিম্নশ্রেনির সমাজে ধর্ম ত্যাগের কারন বিশ্লেষণ করলে, থুথু টা আমাদের মত তথাকথিত উচ্চ বর্গীয়দের মুখের উপরেই এসে পড়বে।
সহিষ্ণু বা অসহিষ্ণুতা এগুলোর বিচার তাঁরাই করুক , যারা এর একক জানে। আমরা বাবা জানি না। তাই এগুলো মাথার উপর ডাক করে দেওয়াই বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আমরা যেগুলো করে চলেছি সেগুলো আসলে বন্ধ্যা আলোচোনা। এগুল থেকে কিছুই জন্মাবেনা।
আসুন না সকলে এই বিগত কিছু দিনকে একটা দুঃস্বপ্ন ভেবে আবার সবকিছু স্বাভাবিক করে নিই।
কুত্তার দল চেল্লাবে, তাদের কোন জাত নেই, হানাহানি লাগলে তো আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই, স্বজন বিয়োগ আমাদেরই হয়, সম্পত্তির হরন ও আমাদেরই হয়, আমরা কেউ ই তো নেতা মন্ত্রী হবার তেমন স্বপ্ন দেখিনা, পন্মভূষণ বা বিভুষনে কি পেট ভরে, নিশ্চই না। তাহলে আমরা মর্কট সেজে নেচে লাভ কি?

উস্কিবাজের দল ফিকির খুজবেই।
তাদের মুখে জাষ্ট মুতে দিন।
হালকা হাসি, বাকা হাসি, এক চিলতে হাঁসি, পেট ফাঁপা হাঁসি, খিলখিলিয়ে হাঁসি, মিট্মিটিয়ে হাঁসি, অট্টহাসি, বোকা হাঁসি, সেয়ানের হাঁসি, মুচকি হাঁসি...... আরো কত রকমের যে হাঁসি আছে তাঁর কি আর লিখে শেষ করার য আছে।
আসুন না আমরা হাসতেই থাকি। বড়দার ভূমিকায় স্পাইক থাকুক। আরে সেই মোটা হোদকা কুকুরটা।
মোল্লা বললে মোল্লা ওমর কে না বুঝে মোল্লা নাসিরুদ্দিন কে বুঝি, বীর বললে হিন্দু বীর না ভেবে বীরবল কে ভাবি।
মারামারি করবো টম জেরির মত। প্রতিযগিতা থেকে খেয়ো খেয়ি সবই হবে, শুধু কেও মারা যাবো না, আর তৃতীয় শত্রু এলেই সমবেত ভাবে ঝাপিয়ে পরব।
আমরা উলুখাগড়া, রাম রহিমের বিতন্ডায় আমরা আখেরে কি পায় বলুন তো? হাতে রইলো পেনসিল... সেটুকুও থাকে না দিনের শেষে। হাভাতে না হলেও, আমাদের গতর না খাটালে পেটের ভাত হয়না। সেখানে ভাতার মেরে নাঙের গীত গেয়ে লাভটা কি? আমরা আকচা আকচি করে কাদা ছোরাছুরি করে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পরছি, অন্তত মানসিক ভাবে। আর দীর্ঘ মানসিক অসুস্থতা শরীরের উপর ছাপ ফেলতে বাধ্য।
অন্যকে সম্মান করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিদানে সেই সম্মান্টুকু পাওয়া যায়। যারা সেই মর্যাদা দেবেন না? সোজাকথা... সংস্রব ত্যাগ করেদিন। আমরা হলফ করে বলতে পারবো না যে, কাল থেকে একটা বিশিষ্ট জনগষ্ঠী কে বা জাতি গোষ্ঠীকে আমার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন নাই। তাহলে ভাবের ঘরে কাঁঠাল ভাঙ্গা কেন।
আপনি না বলুন, দেখুন ধান্দাবাজের দল অন্য ব্যাবসা শুরু করবে।
দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভালো। উফ এখানেও গরু। তবে থাক এ বড় ভালো গরু। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আগামী শীতে কমলালেবু খেতে খেতে, পূরাতন খারাপস্মৃতি গুলো, ওই লেবুর খোসা ছারাবার মত ছাল ছারিয়ে ডাষ্টবিনে ছুরে ফেলে দিন। দেখবেন সুস্বাদু নির্যাসটুকুই অবশিষ্ট আছে।

Sunday, 7 September 2014

মোসায়ের দলে

ভুল করে ভুল করে দেখা দেখি, কেমন ভাইপো হয়েছিস দেখি।


টাচ ফোনের বিক্রি ৭০% কমতে বাধ্য। সোনাপোনা দিলে নীল-সাদা খাম বেড়োবে।

আমি কিন্তু এখনো মোসায়ের দলেই আছি। রংহীন জীবনে একা কুম্ভের টিকে থাকার কড়াই... পানু দেখে দেখে মাথা টা গেছে, ওটা বড়াই.. ছি:। লড়াই। মোসায়ের দলে বাওয়া।

কোলাঘাটের ইলিশে নাকি টেষ্ট বেশি?? ভাবছি বাংলাদেশে গিয়ে ব্যাপার টা একবার চাক্ষুস না করলেই না। শালা ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকছে না, রোজ সকালে হামবুর্গে মর্নিং ওয়াকে গেলে কেমন হয়?? তবে ইলিশে ওমেগা থ্রি আছে। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স... ডক্টর হতেই হবে আমাকে। অন্তত বিজ্ঞাপনে তক সেটার উল্লেখ করলাম।


কি সব ছাইভস্ম খাও!! আমায় দেখো, তোমার মাথা ছারা কিচ্ছুটি আর এখন ভালো লাগে না। ভেবেছিলাম ভবান্তরী হবো। কিন্তু "পুরো মাখন" এর নাশা আমার জিভের ডগে। পারলে ওটা কি আর জ্যান্ত থাকবে?? মায়ের থানে ওটাই আগে বলিতে চড়বে।



দেখো আমি কত অসহায়... হায়। মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। পোষ্ট মর্টেমের পর ডোমের কি কাজ?? ওই রমনের আগে কন্ডোমের যা....
সেন্সর কর, কাঁচি চালা। শালা ঊডবার্ণ ওয়ার্ড কি ফাঁকা আছে গান্ডু।

তবে সহজে ওটি হচ্ছে না। কারন হবার কথা ছিলো না তাই। পিলপিল করে সন্দেহ রা আসন গ্রহন করছে। ওরা কিন্তু অনাহুত। বরাবরের মত।


আমি তোমার কাছে কিচ্ছু চাই না.... চাইলে দিচ্ছে টা কে?? আর কি ই বা দিতে পারি?? ফনা উঁচিয়ে বসে আছেন, আপাত নিরিহ সর্পিলাকৃতি পথ। আচ্ছা ভুমধ্য সাগর কে ভূ-স্থলের মধ্যেই হতে হবে? বেষ্পতিতে কি কেউ খোঁজ নিয়ে দেখেছে??



দশ শব্দের খেল?? চতুর্দিকের আওয়াজ..... বাল বাল বাল... থুক্কুরি সিব টা জিব দিয়ে বেড়োই নি।

লন্ডনে কি আলিপুর আছে?? বা পিজি?? জোর আন্দোলন চাই। মনটা খুব খারাপ, সন্ত্রাস আর সন্ত্রাস। অরবিন্দ দা হেডলাইনে আসতেই পারছেন না।


কেউ কেউ ৫ ঘন্টার দাম চাই। সুদে আসলে। আমিই একমাত্র হাতিয়ার বেঁচে থাকার। আবার আমিই চুরান্ত ঘৃনার পাত্র। কেলটে মোদী কে দেখে প্যাসন কিছুই শেখা গেলো না। প্যারিস হিলটন ললিত কলাতে মুগ্ধ, কলা টাই যদিও মেন।


রকেটে চেপে সর্বদায় মহাশুন্যে যাওয়া যায়। সেখানে প্রথমে তেল না থাকলেও তেলতেলে একটা ভাব থাকে।তারপর গ্যাস। আরে বাবা জ্বালানি। বুদবুদযুক্ত ফেনিল বাকি অবশিষ্ট বিশ্ব। রাজনীতি কোলাহল, মাঝখান থেকে ইস্তিরি টা ই নষ্ট হলো।


সেদিন থেকেই দুজনার পথ দুদিকে চলে গেছে। তবে কেমন হয়েছে! আমি বলবো নি। ঘড়ে ষাঠোর্ধ পিসি। শুধু আইন তার নিজশ্ব পথে চলছে।



একদা ডাইনোসর ছিলো। তাদের চাটার্ড বাসভূমি ছিলো। সারা গায়ে ছুলি ভর্তি। এ তুমি কি সুখ দিলে?? না এতে আবার টাকার গন্ধ লেগে। প্রশাসক লেঙ্গি দেবে এক্ষুনি। তার আগে বন্যা দর্শনে বেড়োবো। ডাইনোসর কখনো চসমা পরেনি। আসলে প্রথম হোটেল টা ই তো ভুল ছিলো। রং নাম্বার।



কাসেম চাচা লম্বা দাড়ি নেড়ে বললেন, হিন্দু মারতে আমার ও বেশ ভালো লাগে। ও মা যেন না শোনা ভাইপোর আবদার, ও পিতি... আমি ও জঙ্গি পুষবো। দে.. আগে একটা স্ট্যাটাস দে। ওরে পাগল সামনেই পুজো, মোনাজাতের ছবি গুলো নামা। দে মা আমায় তবিলদারি।



এবার মাথা চুলকে, আঁ........ বজরঙ্গী থুরি বাহুবলী ভাইজান, চল বেটা সেলফি লে লে রে। ইউসুফ কে কি কেউ শুধিয়েছিল, এই যে আপনি মড়তে চলেছেন কি ভাবছেন এই সম্বন্ধে?? একটা স্ন্যাপ হবে নাকি??

মাথায় Goods উঠে গেলে এমনই হয় জ্যেঠু। ধুর্মারা.....


নানু সাইট বন্ধ, দেখতে কে বারন করেছে?? বাঁদরামি.... সানি লিওনির ছাতি ৫৬", অন গড, আজই দেখলাম।

নে... এবার পারমুটেসন কম্বিনেশন করে নিজের মতন করে সাজিয়ে নে।


দেখ কেমন লাগে। মগজে কার্ফু।