Tuesday, 26 February 2019

।। জুমলা ।।

আজ ২৬/০২/২০১৯ তারিখ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন, অবশ্যই দেশের হিতের জন্য, জঙ্গীদের আঁতুরঘর পাকিস্থানকে উচিৎ শিক্ষার জন্য, আগামীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ "সমবেত" গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে।
১০০০ কেজিরটা কি ট্রেলার ছিল? নাকি পরমানুবোমা ফেলবেন কিনা সেটা বাকি দলগুলোর কাছে জেনে নেবেন মোদীজি? আমি নিশ্চিত, আর যাই হোক লুডো খেলা হবেনা। সেই সাথে এই প্রশ্নটাও জন্ম দেয়- আজকের এটা মোটেই "গুরুত্বপূর্ণ" কিছু ছিলনা। থাকলে আজ আফটার "ফিনিস" বৈঠকের প্রয়োজন হতনা।
এছাড়াও, নিশ্চই মোদীজি এটার জন্য ডাকেননি যে, "IAF এর এই কৃতিত্বের আসল অধিকারী আসলে আপনারা, হাম তো ফাকির হ্যায়"।
হতেই পারে, আজকেরটা তাহলে মিডিয়ার জন্য ছিল!! কারন ১২ দিনে অনেকটাই চাপা পরে গেছিল উথলে ওঠা যুদ্ধপরিস্থিতি। ভক্তরা নিরাশ, ডায়লোগ দিয়ে ঘরই সামলানো যাচ্ছেনা তো বিরোধীদের কিভাবে সামলাবো!! ইত্যাদি ইত্যাদি
কিন্তু তো একটা ঘটেছেই ঘটেছে। নতুবা পাকিস্থান এমন মর্কট নাচ নাচতনা। ওদের ক্যালানি হয়েছে আওয়াজ হয়নি, তাই বুক ফাটলেও মুখ ফুটছেনা। চিন বিবৃতি দিচ্ছে, আমেরিকা বিবৃতি দিচ্ছে মিছিমিছি নয়। তাই যারা হামলা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে তারা মহাগান্ডু। কিন্তু যারা তুড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে তারা কোন প্রজাতির জীব? সেনার কৃতিত্বে গর্ব করার দিন, ভক্তেরা দেশজ বামপন্থী আর মুসলমানদের টিজ করতে লেগে গেছে কারন এরা BJP এর ভোট ব্যাঙ্ক নয়। সুতরাং সেনা নিয়ে বিজেপির এ এক চমৎকার রাজনীতি, দেশপ্রেমের সুরমা লাগিয়ে। ভোট শিয়রে। নতুবা গত ৫ বছরে বিজেপির আমলে কম সেনা শহীদ হয়নি পুলওয়ামার ৪৫ জন ছাড়াও। তাই সেনার এই আক্রমণ খুবই স্বতঃস্ফুর্ত, এই জন্য মোদীজির দুই দলের ক্রেডিটটা কোথায়?
অতএব আসল জঙ্গীঘাতী হামলাটা সম্মিলিত সিদ্ধান্তের পর আগামী কাল, পরশু বা তরশু বা তারও পরে হবেই। কারন আমাদের সেনা তো শুধু অর্ডারের প্রতিক্ষাতে, কিন্তু ৫.৬ ইঞ্চির ছাতিতে একটু ভালকরে সর্দি কফ, হুপিং কাশি বা হাঁফানি নেওয়া যায়না, যুদ্ধের মত সিদ্ধান্ত কোত্থেকে নেবেন!!
জঙ্গিরা আজ হোক বা কাল, নিশ্চিত সমুচিত জবাব পাবে, যেটা উচিৎ ও কাঙ্ক্ষিত।
কিন্তু BJP-RSS কি শঙ্কিত অন্য কারনে। ভোটের পালে দেশপ্রেমের হাওয়া কাজে লাগে, চাড্ডি বেয়ে পেটের মন্দবায়ুর হাওয়া নয়।
নির্লজ্জের মত সেনাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, মিডিয়ার জন্য একটা হালকা করে PUBG খেলে নেওয়া হল!! রাষ্ট্র বলছে তাই মানতে বাধ্য, কারন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বলিছেন, অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট না দিয়ে। সন্দেহ হবেই।
প্রচারে ভয়ঙ্কর খরার সম্ভাবনা, কারন অষ্ট্রেলিয়া সিরিজ চলছে, সামনেই IPL, তার পরেই বিশ্বকাপ। দেশপ্রেমের দেখানোর মূল স্থান তো ক্রিকেট মাঠে, এবং সারা বছরের জন্য ওটাই স্বিকৃত। যুদ্ধ কি আর রোজ রোজ হয়! সেই কবে ৯৯তে পাকিস্থানের ঘুম হারাম করে এসেছিল আমাদের সেনারা। কিন্তু ক্রিকেট দেশপ্রেম দর্শাবার স্থান হিসাবে প্রমানিত। ক্রিকেট বনাম যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বলাই বাহুল্য, ক্রিকেটই জিতবে। কারন এটা লাইভ উত্তেজনা, স্বভাবতই খুব বেশি দিন এই দেশপ্রেম বেচা যাবেনা যুদ্ধের শো "শুনিয়ে"।
আজকে আপামর ভারতবাসী হেব্বি খুশি, এক্কেবারে জঙ্গীদের ভাষাতেই তাদের জবাব দেওয়াতে। কিন্তু এটা তো পালটা, হতেই হত। এটা স্বাভাবিক নয় কি? এ নিয়ে উচ্ছাসের কি আছে? বরং মাসুদ সহ লস্কর ও আরো যে কীট গুলো আছে, তাদের নিকেশ করাতেই তো উদযাপন।
ভক্ত, IT cell, আর গেরুয়া মিডিয়াতে যেমন দেখাচ্ছে, যেন মোদিজী উড়ন্ত গোমাতাকে মিসাইল খাইয়ে, তার পিঠে চড়ে স্বয়ং মোদীজি নির্দিষ্ট জঙ্গিঘাটিতে গোমাতাকে নাদিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকটা করে এলেন। যেন আমাদের সেনারা আসলে চামগুলতি নিয়ে চু কিতকিত খেলছিলেন পাকিস্থানের আকাশে।
আপনি হেব্বি দেশপ্রেমী, আপনি বা আপনারা যারা সার্টিফিকেট প্রদান করেন দেশপ্রেমের, এখানে তাদের খিস্তানোর জন্য সাদরে আমন্ত্রন রইল। আর হ্যা, এই ছোট প্রশ্ন- যেটা মিডিয়া আর মোদীজির জন্য তুলেছি- এটাকে দেশদ্রোহীদের কাজের সাথে সমতুল্য করে আমাকে পাকিস্থানে পাঠানোর আগে ভামপ্যান্টি/মুসলমান বলে দুই পাছাতে অবশ্যই স্ট্যাম্প লাগাতে ভুলবেননা।
ভক্তরাও প্রশ্ন করেনা, মোদীজি মন্দির কেন হলনা? মোদীজি প্রথম সার্জিক্যল স্ট্রাইকেই তো লঞ্চপ্যাড সহ জঙ্গি ঘাটি উড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাহলে আজকে এগুলো কোত্থেকে এলো?
জঙ্গিরাও প্রশ্ন করেনা 'হুজুর', বোমা হয়ে ফেটে ভারতীয় মারলে- ৭২ হুর, আর গ্যালন গ্যালন সুগন্ধি চোলাই যখন পাওয়া গ্যারান্টি, তাহলে আপনি কেন আগে যাননি?
ভক্তরাও দল বেঁধে প্রশিক্ষিত হয়, জঙ্গিরাও তাই। অশিক্ষা আর মিথ্যাই যে এদের বড় শত্র সেটা এরা কেউ মানতে চাইনা। দুই প্রজাতিই ঘৃণার আবহে লালিত পালতে হয়ে সমাজে এসে অশান্তি সৃষ্টি করে।
তাই, ভাবছি-
আজকের এই সর্বদলীয়টা কি উদ্দেশ্যে!! আপনি কোনো অবস্থাতেই ভাববেননা, শুধু দেখুন টিভি আর পড়ুন ফেসবুক। এরপর মাসুদ আজাহারের কোন কোন আত্মীয়েরা মারা যাবেন শুধু সেটার দিকে নজর রাখুন, যে সকল সম্পর্কের কথা জানেননা। যেমন আপনি আগে কি জানতেন - মাসুদ জঙ্গির শালা বা বট ভাই জংগী? কালকে আরো কতগুলো ভাই ও শালা দুমদাম জন্মামে সেটা শুধু নাগপুর আর বিকৃত মিডিয়াই শুধু জানে।
এর বেশি কিছু লিখলে আবার সেনা তুলে নিয়ে যেতে আরে বাওয়া। তার চেয়ে বরং রাত্রে 'নেশন ওয়ান্টস টু নো' দেখার জন্য প্রস্তুত হই।
_____________________
জয় হিন্দ,
জয়তু বীর ভারতীয় সেনাবাহিনী 
অখন্ড ভারত, অতুল্য ভারত।
RSS - জৈশ মুর্দাবাদ 
হে ভারতমাতা, হে গোমাতা 
ভক্তদের চৈতন্য হোক।

No comments:

Post a Comment