Sunday, 21 May 2017

।। সুখে রাখুন ও সুখে থাকুন ।।

যখন কেও সুখের প্রাচুর্যে থাকে তখন সে বাস্তব ভুলে যায়; দু:খকে চিনতে পারেনা। সামান্য অহেতুক কারন গুলোকে এমন ভাবে উপস্থাপন করে যেন এর থেকে ভয়ঙ্কর কিছু আর পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। আসলে নেই নেই করাটা একধরনের মানসিক সঙ্কীর্ণতা ও স্থুল বুদ্ধির পরিচায়ক।
রিপুর চাহিদার শেষ নেই তার সে স্বপ্ন দেখে, যার কোনো সীমা নেই। এই স্বপ্ন দেখাটা এক সময় এমন অবাস্তব পর্যায়ে চলে যায় যে কল্পনা আর বাস্তবের ভেদাভেদটা চর্মচক্ষুতে উপলব্ধ হয়না। যে কোনো কিছুতে সেই চরম ফ্যান্টাসি প্রয়োগ হতে থাকে। সেই মুহুর্তগুলো আপন বোঝেনা, পর বোঝেনা, ভাল বোঝেনা, মন্দ বোঝেনা, পরিস্থিতি বোঝেনা, সমাজ, ধর্ম, রাষ্ট্র, সম্পর্ক কিচ্ছু বোঝেনা। তৈরি হয় এক বিচিত্র প্রকারের মানসিক স্থিতি। যেন যেনতেন প্রকারে নিজেকে নির্যাতিত প্রমান করতে পারলে তবেই আত্মসুখী হওয়া সম্ভব।
বুঝিয়ে, পরামর্শ দিয়ে, গল্পচ্ছলে বন্ধুবেশে এই পরিস্থিতিগুলোকে নিয়ন্ত্রন করা সাধ্যাতীত। অথচ সেই সময় উক্ত ব্যাক্তি দ্বারা এমন নেগেটিভ এনার্জি প্রবাহিত হয় অন্য ব্যাক্তি সেই স্রোতে খেই হারিয়ে উদভ্রান্ত হতে খুব বেশি সময় নেবেনা।
এই ধরনের মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যাক্তিরা কোনো অবস্থাতেই তার দোষ বা খামতি খুঁজে পাবেনা, এটা এই প্রাদুর্ভাবের প্রথম লক্ষণ ; কারন দোষগুন নিয়ে মানুষ হলেও এরা সেটা মানেনা। সর্বক্ষন ক্ষমাপ্রার্থনার ঢঙে স্টিমরোলার চালিয়েই আত্মতৃপ্তি। নিজেকে হেরো প্রমাণিত করেই শান্তি, যেন তার সাথেই যাবতীয় অন্যায় গুলো ঘটছে।
সর্বক্ষণ এদের পায়ের তলার মাটি খসে যায়, এতোটাই ভঙ্গুর জমিতে এরা বাস করে, যেখানে যেখানে আছাড় খাওয়া, হাত পা মাথা সহ গোটা শরীর টনটন ভনভন ও বনবন করে ঘোরা ইত্যাদিস্থানীয় নানা রকমের উপসর্গ হাজির করে ফেলে, সাথে অজস্র অশ্রুধারা। অথচ এদের কোনো পিছুটান সেই অর্থে থাকেনা, সামনে সোনালী ভবিষ্যত গড়া যায় একটু এডজাষ্ট করলেই, খাওয়া পরার সমস্যা হয়ত নেই অন্তত এই জীবনকালের জন্য, সারাটিক্ষন মাথার কাছে টিকটিক করার কেও নেই, স্বাধীন স্বচ্ছন্দতা যুক্ত স্বচ্ছল জীবনে একটাই প্রোমোদ.....
দু:খ বিলাস।
তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি কি?
না মেরে ধরে বা লক্ষবার বুঝিয়ে সুঝিয়ে কোনো লাভ হয়না বা হবেনা। কুত্তার ল্যাজের মত এ অপরিবর্তনীয়।
তবে একটা চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। বহু রোগের ক্ষেত্রে অব্যার্থ প্রমানিত "শক থেরাপি"। রোগটা মানসিক, মানে স্নায়ু সংক্রান্ত। তাই অত্যন্ত স্বযত্নে মানসিক ভাবে একটা দারুন আঘাতের প্রয়োজন, যাতে সেই রূপকথার কল্পরাজ্য থেকে বাস্তবের আলো-বাতাসে ফিরতে পারে। আর আসল যন্ত্রনা কাকে বলে সেটা হাড়েহাড়ে টের পায়। তাহলেই নকল বুঁদির কেল্লাটা ভাঙতে পারে নচেৎ নয়।
নাহ, মোটেই শারিরীক আঘাত নয়, ওটা সেরে যায়। আঘাত সকল সময় বিলো-দ্যা-বেল্ট হওয়া উচিৎ; এবং সেটাই বলুন যেটা সত্যি সত্যি আপনি করার হিম্মৎ রাখেন। চরম আঘাত করুন, এতে রোগ বা রোগী দুইয়েরই বিনাশের সম্ভাবনা, কিন্তু নিরুপায়।
এইবারে সেই ব্যাক্তি চরম উপলব্ধি করতে পারবে যে, চলমান নাটকের ঠিক আগের অঙ্কে জীবনটা ঠিক কতটা সুখের ছিল।
সুখ, বড় অভিমানি। সে থাকাকালীন তাকে অবজ্ঞা করলে, সে মুখে প্রস্রাব করে বিদায় নেবে।
যার ভালবাসাটা পাগলের মত হয়, ঘৃণার প্রকাশও সেই অনুপাতেই প্রকট হয়। যে টুকরো সুখের মালা গাঁথতে শেখেনি তার জীবনে কান্না ছাড়া কিচ্ছু অবশিষ্ট থাকেনা। সে না নিজে সুখী হয় আর অন্যকে সুখ দেবার তো কোনো প্রশ্নই নেই।
যার জন্যই তারা জিজ্ঞাসা করে...
"সুখ পাচ্ছো?"
আরে বাবা সন্দেহ দিয়ে গোয়েন্দাব্যাবসা চলতে পারে, সংসার নয়।
আসুন তাদের মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করি। সে যদি আপনার নিকট আত্মীয় হয় তাহলে তার সত্যিকারের কঠিন মানসিক যন্ত্রনার সাথে আপনার দৈনন্দিন সুখ ঠিক সমানুপাতিক। অতএব এদের জন্য যন্ত্রনার পরিসর তৈরি করুন, এরা যন্ত্রনা বিলাস করে; তাই আসল যন্ত্রনা দান করাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
সুখে রাখুন ও সুখে থাকুন।


No comments:

Post a Comment